১ টা চকবাজারের শাহ সাহেবের বিরিয়ানি এবং আরেকটা শাহসাব বাড়ি বাজারের মতি মিয়ার ফালুদা ।দুইটার নামে মিল থাকায় ভাবলাম যে একই জায়গায় হবে হয়তোবা, তাই এই দুটিকে সিলেক্ট করা।
আজকে একটু বেলা করেই বের হয়েছিলাম চকবাজারের শাহ সাহেবের বিরিয়ানি এবং শাহসাব বাড়ি বাজারের মতি মিয়ার ফালুদা চেখে দেখার উদ্দেশ্যে সেই গল্পই শোনাবো আপনাদের । ১২ ঘটিকার সময় আমি এবং
আমার আরেকজন ভোজনরসিক বন্ধু কে নিয়ে রওনা হলাম চকবাজারের উদ্দেশ্যে। চকবাজারে গেসি কিন্তু নুরানী কোল্ড ড্রিংক্সের জোসিলা লাচ্ছি খাই নাই এমন হ্য় নাই। তো প্রথমেই ঢু মারলাম নুরানী লাচ্ছির দোকানে।
এই দোকান সম্পর্কে ব্লগে আগেই লেখা হয়েছে তাই বাড়তি আর কিছু বললাম না। ফডুক দেখেন
দুইটা লাচ্ছি আর দুইটা লেবুর শরবত পার্সেল নিয়ে হাটা ধরি শাহ সাহেবের বিরিয়ানির খোজে। কিন্তু পথে পরে বিখ্যাত ফেন্সি কাবাবের গাড়ি। এখান থেকে একটা কিছু না খেলে অন্যায় হতে পারে বিধায় এখানেও থামতে হল। এখানে ৭/৮ রকমের কাবাব পাওয়া যায় যার সবগুলিই ভালো। তো আমরা আজকে আজকে দুইটা খাসির কাবাবের বার্গার নিলাম।
খেতে বরাবরের মতই অসাধারন।
ইহা চিকেন কাবাব বার্গার
কাবাব বার্গারের পরে আবার সেই শাহ সাহেবের বিরিয়ানির খোজ। খোজ নিয়ে জানা গেল যে উহা সকাল ৭ থেকে বিক্রি শুরু হয় এবং ৯ টা অবধি শেষ হয়ে যায়
যাই হোক শাহ সাহেবের বিরিয়ানি যেহেতু পাওয়া গেল না সেটা আরেকদিনের সিডিউলে ফেলে দিতে হল এই আরকি। তারপর শাহসাবের বাজার টার খোজ নিতে গিয়ে জানা গেলো জে ঐটা আজিমপুরের ছাপরা মসজিদের আশে পাশে কোথাও। মনের দুঃখে তো চকবাজারের ঘুপচি টাইপের একটি দোকানে ঢুকে কাচ্চি আর বোরহানির অর্ডার দিয়ে ফেললাম। অ্যাভারেজ টাইপের বিরিয়ানি আর বোরহানী খেয়ে দোকান হতে বের হয়ে হাটা ধরলাম আহসান মন্জিলের উদ্দেশ্যে। কারন ব্লগের পোস্ট থেকে জানা গেছে যে ফালুদার দোকান রাত ১০/১২ টা পর্যন্ত খোলা থাকে। এখন বাজে মাত্র ৩ টা। তাই আহসান মন্জিলের উদ্দেশে রওয়ানা দিলাম।
আহসান মণ্জিলে ঘন্টা দুই অতিবাহিত করার পর গেলাম বংশালে মজিবর এর ফুসকার উদ্দেশে। মজিবর এর ফুচকার টেস্ট একেবারে অন্যরকম। যারা প্রচুর ঝাল দিয়ে ফুচকা চটপটি খেতে পছন্দ করেন তাদের জন্য মজিবরের চটপটি টেস্ট করা বাধ্যতামুলক ব্যাপার। যারা টেস্ট করতে আগ্রহী তারা বংশালে হোটেল আল রাজ্জাকের বাম পাশের গলির মুখে গেলেই পেয়ে যাবেন মজিবরের ফুচকার গাড়ি।
তেতুল লেবুর মিশেলে সেইরকম টক
যারা চরম ঝাল খেয়ে কলিজা জ্বালায় ফেলতে চান তারা এই ইস্পিসাল ঝাল মসলা এক অথবা দুই চামচ টকের সাথে মিশিয়ে নিবেন। পাঠক সাবধান আসলেই কলিজা জ্বলে যাবে কিন্তু
এই হল টক দই য়ের টক। এটার সাথেই ঐ ঝাল মসল্লা টা মিশিয়ে খেতে হবে
যারা নিহারি অথবা গরুর পায়া খেতে পছন্দ করেন তাদের জন্য সুখবর এই যে মজিবরের গাড়ির পাশেই এক চাচা বসে এক ডেকচি গরুর পায়া আর পায়ার হালিম নিয়া। মজিবর ফুচকা বানাতে বানাতে দুই বন্ধু মিলে গোটা দুয়েক পায়া ফিনিস করলাম..কি করব ফুচকা দিতে দেরি হচ্ছে যে
এই সেই হাড়ি ভর্তি পায়া
দেখসেন নলীর ভিতরের জিনিসগুলি কেমন লক লক করতেসে
এট্টু কাছ থেকে দেখেন
এবার একটা সাইড ভিউ
যাই হোক মজিবরের গাড়ি যেহেতু আলরাজ্জাকের পাশে সেহেতু আমাকে আলরাজ্জাকের পাশে যেতে হইছে। আর আলরাজ্জাকের পাশে গেছি আর রাজ্জাকের ফালুদা খাই নাই এটা হয় নাই কখনো। কিন্তু আজকে এই অন্যায়টা করতে হইছে কারন হল পুরান ঢাকার শাহসাব বাড়ির মতি মিয়ার ফালুদা খেতে হবে না!!
মাঝখানে বিরতি নিতে হল মাগরিবের নামাজের জন্য। নামাজ থেকে বের হয়ে দেখি আমার পুরান স্যান্ডেল খানা হাপিইইইস। হইছে কাম! এর মধ্যে নামছে আবার বৃস্টি। মেজাজ পুরাই খারাপ। আধা ঘন্টা ধইর্যা ট্রাই মাইরা এক চাচারে রাজি করাইলাম পলাশির মোড়ে নামায় দেয়ার জন্য। চাচা নামায় দিলে ঐখান থেকা আরেকটা রিকশা নিয়া সোজা শাহসাব বাড়ির বাজারে। ঐখানে গিয়া পাক্কা দুই ঘন্টা খালি পায়ে কাদা পারাইছি মাগার কোন হালায় মতি মিয়ার নাম হুনে নাইক্যা। অগত্যা ছাপড়া মসজিদের পাশে বইস্যা গরুর ভুড়ি আর খেতাপুড়ি চিবাইলাম। তারপর রিশকা নিয়া ঘরের ছেলে সোজা বাসায় ফিরলাম।
আরে ধুর ধুর আজকের দিনটাই খারাপ গেলো, যেই দুইটা জিনিস খাইতে বের হইলাম তার একটাও মিলে নাইক্যা
বি: দ্র: কেউ কি বলতে পারবেন মতি মিয়ার ফালুদার দোকান টা কোথায়, অথবা শাহসাব বাড়ি বাজার কি আজিমপুর ছাড়া আর কোথাও আছে কিনা।