(ডিচক্লেইমারঃ এই সিরিজের পোস্টগুলা শুধু বিনুদনের জন্য! জিন্দা কিম্বা মুর্দা কারুর সাথে কাহিনী মিল্লা গেলে কেউ দায়ী নহে!!!)
বয়স যখন ১৯-২০ ছিল তখন মনের মধ্যে একটা রাফ রোডম্যাপ ছিল যে কোন বয়সের মধ্যে কি কি কমপ্লিট করা লাগবে। মনে করছিলাম ২৪ এর মধ্যে কলেজ শেষ করমু তারপরে, দুই বছর জব কইরা ( পড়তে হবে হাফটাইম এর বিরতি দিয়া ) ২৬ এর মধ্যে বিয়া কইরা লাইফের সেকেন্ড হাফ শুরু করমু। কিন্তু তা আর হইয়া উঠল কই? কলেজ শেষ করতেই এই অধমের ২৫ লাইগা গ্যাছে। তাও ২৬ এর মধ্যে বিয়া করা যাইত, কিন্তু ফাইন্যান্সিয়াল লাইফ বাগড়া দিয়া দিল। টাকারে কোনদিন বেশি প্রায়োরিটি নাই বইলা যখন টাকা সেভ করা শুরু করলাম তখন দেখতাছি এই কামটা ভয়াবহ রকমের কঠিন কাজ। দেখলাম টাকা আসলেই হাতের ময়লা। থামতেই চায় না। বাংলাদেশের লোকজন মনে করে আম্রিকায় টাকা উড়ে/গাছের পাতার মত একটা জিনিস। খালি ঝাড়ু দিয়া বস্তায় ঢুকাইলেই হয়। আর কি কি মনে করে ওইগুলা আর নাই কইলাম…।
ক্যাল্কুলেট কইরা দেখলাম বিয়া করা ব্যাপারটা একটা এক্সপেন্সিভ ব্যাপার। রাফ এস্টিমেট দেইখাই ভিরমি খাইছি। যেহেতু শ্বশুড় বাড়ির কাছ থেইকা যৌতুক নেওয়ার কোন পিলেন ছিল না, সেহেতু পুরা ব্যাপারটা আমারেই ফাইন্যান্স করা লাগবে। কিছু সময় কাজ করার পর মনে হইল যে ২০২০ এর শেষে যাইয়া বিয়া করার মত ফাইনান্সিয়ালি স্টেবল হইতে পারব।
আমি আবার আশেপাশের লোকের ভুলগুলা দেখা শিক্ষা লইতে পছন্দ করি।এদের কাছ থেইকা শিখছি যে বিয়া করা ব্যাপারটা টাইম কন্সিউমিং আর ইমোশনালি ড্রেইনিং একটা প্রসেস, এইজন্য মনে করলাম প্রসেসটা একটু আর্লি শুরু করা উচিত। যেহেতু কোন পিরিতের পাবলিক ছিল না সেহেতু উপরআলার নাম নিয়া বাড়িতে গ্রিন সিগন্যাল দিয়া দিলাম যে “কইনা দেখা শুরু কর”!!!
আর আমি এইদিকে আমার সাইড থেইকা শুরু করলাম। কয়েকজন বন্ধু-বান্ধবরে কইয়া রাখলাম যে বিয়া করমু, আমার সাথে ম্যাচ করার মত সুন্দরি থাকলে আমারে যেন জানায়। যদিও আমি জানতাম সবাই মুটামুটি এক কান দিয়া শুইনা আর এক কান দিয়া বাইর কইরা দিবে ব্যাপারটা তারপরেও কইছি কারন না কইলে কইবে আমারে বলিসও নাই? অনেকে আবার কইল এইটা কুনু কথা হইল? এখন কেউ এইভাবে বিয়া করে? গালফ্রেন্ড বানাও নাই ক্যারে? কেউ তো খালি নাই।
এক সদ্য বিবাহিত বন্ধু আমারে পরামর্শ দিল যে কয়েকটা ডেটিং এপে সাইন-আপ কইরা ট্রাই মারতে। ওইগুলায় নাকি অনেক সুন্দরি!!! এই এপগুলার উপ্রে আমি কোনকালেও কনফিডেন্ট ছিলাম না। আমি জানতাম যে এইগুলা দিয়া হইবে নাহ। কিন্তু ব্যাপারটা ট্রাই কইরা দেখার জন্য ব্রেনের ভিত্রে দুষ্ট পোকা কুট কুট কইরা কামড়াইতেছিল। তাছাড়া ট্রাই না করলে সারা গেবনের জইন্ন একটা আপচুস থাইকা যাইত। সুতরাং আমি তখন লাফাইতে লাফাইতে মুসলমানদের বিয়া করার জন্য বানানো দুইটা এপে সাইন-আপ করলাম। ফিল্টারও (বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত + আম্রিকান/ব্রিটিশ) দিয়া দিলাম কিছু। তারপর তো খালি সোয়াইপিং লেফট আর রাইট!!! এত্ত সুন্দরি যে সোয়াইপ কইরা শেষ করতে পারি না।
কুনকালে এক গিয়ানি লোক বলছিলেন যে “If something is worth doing, it's worth doing well”। এই মূলমন্ত্র মনে রাইখা একটা এপে প্রিমিয়াম ফিচারও কিনা লাইলাম। দুই সপ্তাহ লেফট-রাইট কইরা পুরাই বিরক্ত হইয়া গেলাম। যেই সুন্দরিদের সাথে ম্যাচ হয় তাদের অধিকাংশের ভাবগতিক সুবিধার মনে হয় না(আই নো,আমিও মানুষরে জাজ করি, কিন্তু কিছু কই না)। যাদের একটু সুবিধার মনে হয় তারা আমারে আন্ম্যাচ দিয়া দ্যায়। কিছু উদ্ভট এক্সপেরিয়েন্সও হইছে। এক সুন্দরির সাথে একদিন চ্যাট শুরু করতেই কয়, আমার জন্ম কই? আমি যখনই কইলাম বাংলাদেশ… সুন্দরি কয় তাইলে হবে না!!! আমি যখন জিগাইলাম ক্যারে, তুমি তো বাংলাদেশি??? কয় যে তার জন্ম এইখানে, মেন্টালিটি ম্যাচ করবে না। কইয়া আন্ম্যাচ। দিল তো আমার ইগোর ল্যাঞ্জায় আগুন লাগাইয়া!!!
আরেক সুন্দরি কয় “ভেনমো মি ফাইভ ডলারস এন্ড সি হোয়াট হ্যাপেন্স!!!”। আমি মনে মনে কই হ্যারে সুন্দরি… কাজে (পড়তে হবে অফিসে) যে এন্টি-ফিশিং ট্রেইনিং দ্যায় তুমারে টাকা দেওয়ার জন্য? তাড়াতাড়ি কইরা আন্ম্যাচ দিয়া নিজের ইগোর ল্যাঞ্জা সেভ করলাম।
আরেক সুন্দরির সাথে ম্যাচ হইল, সুন্দরি নাকি মিশিগানের বাংলাদেশি। কথার শুরুতেই কয় যে হ্যাঁয় এক বাচ্চার মা। ডিভোর্সড!!! শুইনাই তো আমার মাথা ঘুইরা গেল। নিজেরে যতই ওপেন-মাইন্ডেড মনে করি না কেন, কিছু কিছু রিয়াকশন আসলেই ভিসেরাল হয়। নিজের রিয়াকশন দেইখা নিজেই তব্দা খাইয়া গেলাম। শুইনাই বুঝলাম হইবে না। এর সাথে কথা বলাও ঠিক হবে নাহ। সুন্দরি যদি কোনমতে আমার মাথা বিলা কইরা দিয়া পটাইয়া ফালায় তাইলে আমার বাংলাদেশে যাওয়া বন্দ হইয়া যাবে। কয়েকটা কথা কইয়া সুন্দরিরে গুড লাক দিয়া বিদায় হইলাম। তার সাথে কথা বইলা আমার/তার সময় নষ্ট করার কুন মানে হয় না।
যাইহোক এইগুলা তো ইন্টারেস্টিং ছিল। কিন্তু কয়েকটা ম্যাচ আমারে জেনুইনলি ইন্টারেস্টেড করছিল।
(চলতে থাকপে...।)
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে মার্চ, ২০২০ সকাল ৯:০৪