দান খয়রাতে পাওয়া সহায় সম্পত্তিও রক্ষা করা যাচ্ছে না। সেখানেও নজর সন্ত্রাসীদের। লুট করে নিয়ে যাচ্ছে তারা। ভিক্ষুকের সম্পদেও সন্ত্রাসীদের হানা।
তাই দান খয়রাতে পাওয়া বাঁচার শেষ সম্বলটুকুও ঘরে রাখতে পারলেন না শত বছরের আম্বিয়া। নিজের কিছুই ছিল না। প্রয়াত এক অর্থমন্ত্রী দু’টি গরুর বাছুর দিয়েছিলেন আম্বিয়াকে। পরে প্রয়াত আরেক অর্থমন্ত্রীর স্ত্রী তাকে দিয়েছিলেন একটি ছাগল। স্বামী, পুত্র কন্যা নেই আম্বিয়ার। ভিক্ষাই জীবিকার অবলম্বন। এর উপার্জিত অর্থে নিজে না খেয়ে গরুর জন্য খাবার কিনেছেন। এমনই কষ্টে বড় করা দু’টি ষাঁড় ও একটি ছাগল গত ১৮ই অক্টোবর রাতের অন্ধকারে সন্ত্রাসীরা নিয়ে গেছে। এ ঘটনায় বৃদ্ধা আম্বিয়া খাতুন বাদী হয়ে গুলশান থানায় চুরির মামলা করেন পরের দিন ১৯শে অক্টোবর। মামলা নম্বর ৬৩। এতে ৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, মামলা এখন আদালতে আছে। তবে আমরা তদন্ত করছি। গরু কোথায় নেয়া হয়েছে- এসব খোঁজ খবরও নিচ্ছি। আসামিদের আদালত থেকে জামিন দেয়া হয়েছে। এদিকে চুরি যাওয়া গরু তিনটি খুঁজে পাওয়ার জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তবে গরু ও ছাগল দু’টি চুরি যাওয়ার পর আম্বিয়াকে সাহায্য করছেন তার পরিচিতরা। আম্বিয়া পাগলপ্রায়। বললেন, “কি কমু- না খাইয়া এগুলানরে খাইতে দিছি। থাহার জাগা নেই বাপ। বিলে ঝিলে নিয়া গেছি। এগুলানরে নিয়া পড়ে থাকছি। বড় হইবি। বেচলে টাকা পামু। কোন কষ্ট হইব না। হাত পাততে হইব না তোমাগো কাছে। কইতে পার কোথায় নিছে।” আম্বিয়া এখন পথে নেমেছে গরু ও ছাগল দু’টির খোঁজে। রাস্তায় যাকে পাচ্ছেন তাকেই ধরছে গরু ও ছাগল খুঁজে দেয়ার জন্য। ১৮ই অক্টোবর রাতে গরু চুরির সেই ঘটনার বর্ণনা করে আম্বিয়া বলেন, রাতে ঘরে ঢুকে আমাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখে সন্ত্রাসীরা। এরপর নিয়ে যায় গরু ও ছাগলগুলো। কারা গরু চুরি করেছে জানতে চাইলে ইব্রাহিম, গোলাম মওলা, মোজাম্মেল, বুলবুলসহ ৫/৬ জনের নাম বলেন তিনি। এদিকে মামলা করার পর ১০০ বছরের বৃদ্ধ আম্বিয়া বেগমকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে সন্ত্রাসীরা। তিনি বনানী ঝিলের পাড়ে ৫০ বছর ধরে বসবাস করে আসছেন।