somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অনন্য এক ‘বর্বর’ সভ্যতার ইতিবৃত্ত

১৮ ই নভেম্বর, ২০১২ দুপুর ১:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
বারবার গোষ্ঠীর একজন মানুষ। বারবাররা রোহিঙ্গা এবং কুর্দিদের মতো একক রাষ্ট্র গড়ে তুলতে ব্যর্থ উত্তর আফ্রিকার এক হতভাগ্য জাতি। যে কারণে বহিরাগত লোকজন এদের বারবার (বর্বর?) আখ্যা দিয়েছে। যদিও এরা নিজেদের বলে বলে ‘আমাঝিঘ’ । আমাঝিঘ শব্দের মানে- ‘মুক্ত এবং অভিজাত মানুষ’। সত্যিই এদের দমিয়ে রাখতে প্রাচীনকালে ঘাম ঝরেছে রোমানদের, মধ্যযুগে আরবদের। এদের জীবনধারা, পোষাক ও শিল্পসংস্কৃতি দেখে এদের আভিজাত্য উপলব্দি করা যায়। বারবার জাতি প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে উত্তর অফ্রিকায় বসবাস করে আসছে। বর্তমানে উত্তর অফ্রিকায় মরক্কো, আলজেরিয়া, তিউনিশিয়া, লিবিয়া এবং মিশর প্রভৃতি রাষ্ট্রের উদ্ভব হওয়ায় বারবাররা এসব দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। বর্তমানে অধিকাংশ বারবার অবশ্য বাস করে মরোক্কো এবং আলজেরিয়ার এটলাস পাহাড়ে। অনেকেই আবার ইউরোপেও অভিবাসী, বিশেষ করে ফ্রান্সে। এই জাতির মাতৃভাষা তামাজিগট- মানবজাতির প্রাচীনতম ভাষার একটি। অতুলনীয় এই ‘বর্বর’ সভ্যতার কয়েকজন জগদ্বিখ্যাত মানুষ হলেন রোমান সম্রাট সেপটিমাস সেভেরুশ, খ্রিস্টান ধর্মতাত্ত্বিক সেন্ট অগাস্টিন, মরোক্কার পর্যটক ইবনে বতুতা এবং ফরাসি ফুটবলার জিনেদিন জিদান ...



উত্তর-পশ্চিম আফ্রিকার মানচিত্র। মরক্কো, আলজেরিয়া, তিউনিশিয়া, লিবিয়া ও মিশরে বারবার ভাষাগোষ্ঠীর মানুষ বাস করে। ধর্মে এরা মুসলিম এবং বিশাল অঞ্চলে একে অন্যের থেকে বিচ্ছিন্ন; যাদের ৮০% বারবার বংশোদ্ভূত, তবে এর অর্ধেকই বারবার সংস্কৃতিবিচ্ছিন্ন।

আজও সাহারা মরুভূমিতে নীল পোশাক পরা টুয়ারিগস নামে যাযাবর বারবারদের দেখা মেলে। স্বাধীনচেতা এই জাতি উত্তর আফ্রিকার হাই এ্যাটলাস পাহাড়ে অবস্থান করে ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দ অবধি ফরাসি এবং স্প্যানিশ আগ্রসন ঠেকিয়ে রেখেছিল। বারবারদের সর্ম্পকে চতুর্দশ শতকের তিউনিশিয়ার মুসলিম সমাজবিজ্ঞানী ইবনে খালদুন বলেছেন:: "They belong to a powerful, formidable, brave and numerous people; a true people like so many others the world has seen - like the Arabs, the Persians, the Greeks and the Romans. The men who belong to this family of peoples have inhabited the Maghreb (উত্তর আফ্রিকা) since the beginning."



উত্তর আফ্রিকার হাই এ্যাটলাস পাহাড়ে বারবার জনগোষ্ঠীর মানুষ।

সুপ্রাচীনকালে উত্তর আফ্রিকায় বারবার সভ্যতার সূত্রপাত হয়েছিল । সভ্যতাটির সূচনালগ্ন অন্তত ২০০০ খ্রিস্টপূর্ব। এদের সঙ্গে প্রাচীন ফিনিশিয় সভ্যতার অত্যন্ত ঘনিষ্ট সর্ম্পক ছিল। ভূমধ্যসাগরের পূর্ব উপকূলে গড়ে ওঠা নগরকেন্দ্রিক ফিনিশিয় সভ্যতা উত্তর আফ্রিকায় ঔপনিবেশে গড়ে তুলেছিল । বারবার জাতির এদের সঙ্গে বানিজ্যিক সর্ম্পক ছিল। পরবর্তীকালে আর্ন্তবিবাহের মাধ্যমে ফিনিশিয়দের সঙ্গে বারবার জাতির সংমিশ্রণ ঘটে। বারবারদের আমাঝিঘ ভাষার মধ্যে আজও খ্রিস্টীয় পঞ্চম শতকের ফিনিশিয় ভাষাটি টিকে রয়েছে। বারবার ভাষার বর্ণমালা কে বলা হয়: টিফিনাঘ। এই বর্ণমালা ফিনিশিয় বর্ণমালা থেকে উদ্ভুত হয়েছে।




বারবার শিশু। এদের পূর্বপুরুষ অতুলনীয় সভ্যতার অধিকারী হলেও আজ আপন ঘরে পরবাসী। এদের বলা হয় অনুন্নত বর্বর ...

সুপ্রাচীনকালে উত্তর আফ্রিকায় বারবার সভ্যতার সূত্রপাত হলেও তাদের উৎস সর্র্ম্পকে তেমন কিছু জানা যায়নি। শপয তারা যে ৫০,০০০ বছর আগে থেকেই উত্তর আফ্রিকায় ছিল, জেনেটিক তথ্য প্রমাণের মাধ্যমে সেটি জানা গেছে। নৃতাত্ত্বিক দিক থেকে বারবাররা মূলত শঙ্কর জাতি ।The Amazigh, much like the overwhelming majority of the people of this (Arab) "world," belong to a wide variety of ethnic groups that are different in blood, tradition, language, literature, art and history, and should not be lumped together as a single people.
http://phoenicia.org/berber.html

প্রাচীন মিশর যখন পশ্চিম সীমান্তে লেবু-র (লিবিয়) বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছিল তখন এদের কথা প্রথম জানা যায়। লেবু ৯৪৫ খ্রিস্টপূর্বে মিশর জয় করে এবং মিশরে তারা ২৬তম রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করে।



নুমিডিয়া সাম্রারাজ্যের মানচিত্র। বর্তমানে যেখানে আলজেরিয়া এবং পশ্চিম তিউনিশিয়া খ্রিস্টপূর্ব সময়ে উত্তর আফ্রিকায় বারবারদের নুমিডিয়া সাম্রাজ্যটি গড়ে উঠেছিল।


বারবারদের নুমিডিয়া সাম্রাজ্যের সময়কাল ছিল ২০২-৪৬ খ্রিস্টপূর্ব। নুমিডিয়া সাম্রাজ্যটি পরবর্তীকালে রোমানরা দখল করেছিল। বারবাররা রোমানদের বলে ‘আরুমি’। আজও। আজও কোনও শ্বেতকায় উত্তর আফ্রিকার বারবার গ্রামে গেলে শিশুরা ‘আরুমি’ ‘আরুমি’ বলে চেঁচিয়ে ওঠে! রোমানদের বিরুদ্ধে বারবারদের বেশ কটা যুদ্ধ হয়েছে। সেই যুদ্ধের স্মৃতি আজও বারবাররা বহন করছে। ১১১ খ্রিস্টপূর্বে বারবার রাজা জুগুরর্থা রোমানদের পরাজিত করেছিল।



রোমান শাসনামলে উত্তর আফ্রিকার মানচিত্র। আসলে কোনও জাতিকে শাসন করতে হলে তাকে মানসিকভাবে দূর্বল করে রাখতে হয়। যে কারণে একটি প্রাচীন ও উন্নত সভ্যতাকে বর্বর বলা হয়েছে!


উত্তর আফ্রিকায় বহিরাগতরা বারবারদের জাতিসত্ত্বা নিয়ে বিভ্রান্ত ছিল। গ্রিকরা বারবারদের ‘লিবিয়’ বলেছে, রোমান এবং ইউরোপীয়রা বলেছে ‘আফ্রিকান’ ‘নুমিদিয়ান’ এবং ‘মুর’; আরব এবং ইউরোপীয়রা বলেছে বারবার । পরবর্তীকালে বারবার অধ্যূষিত উত্তর আফ্রিকা রোমানরা দখল করে রেখেছিল। তখনই প্রথম ‘বারবার’ শব্দটি প্রচলিত হয়। এক রোমান কনসাল আমাঝিঘ অধ্যূষিত নুমিডিয়া সাম্রাজ্যকে "barbarian" বলে উল্লেখ করেছিলেন। বাংলা বর্বর শব্দের উদ্ভব এই শব্দ থেকেই। কিন্তু, রোমানরা আমাঝিঘ দের বারবারিয়ান বলত কেন? গ্রিকরা অন্য যে কোনও ভাষাকে ব্লা ব্লা বলে উল্লেখ করত। এই ব্লা ব্লা কে রোমানরা বলত ‘বার- বার’; যা পরে মুসলিম শাসনামলে হয়ে ওঠে‘আল -বারবার’। আরব মুসলিমরা উত্তর-পশ্চিম আফ্রিকা কে বলত : মাঘরেব। কালক্রমে বহিরাগত আরবদের চোখে মাঘরেব- এর জাতি ও ভাষার নাম হয় বারবার।



সপ্তম শতকে আরব বিজয় অভিযানের মানচিত্র । বারবার দের প্রতিরোধ ছিল আরব কর্তৃত্বের বিরুদ্ধে, ইসলামের বিরুদ্ধে নয়।

From its beginning, Islam has been a central feature in Africa. Africa was the first continent into which Islam expanded, and it has become an integral part of many African cultures and histories.
http://en.wikipedia.org/wiki/Islam_in_Africa
ইসলামের নবীর মৃত্যুর সাত বছর পর অর্থাৎ ৬৩৯ খ্রিষ্টাব্দে আরবদের আফ্রিকায় অভিযান সূচিত হয় । দুটি প্রজন্মের মধ্যেই আরবরা উত্তর আফ্রিকায় ছড়িয়ে পড়ে। পরের শতকে ব্যবসা-বানিজ্য ও
সুফিসাধকদের ইসলাম প্রচারের পর পশ্চিম আফ্রিকায় আরবদের রাজনৈতিক প্রভাব বৃদ্ধি পেয়েছিল। উমাইয়া খলিফা উমর ইবনে আবদুল আজিজ (৭১৭-৭২০ খ্রিস্টাব্দ)- এর শাসনামলে আফ্রিকার গর্ভনর ছিলেন ইসমাইল ইবনে আবদুল্লাহ। তাঁর ন্যয়বিচার বারবাদের মন জয় করে নিয়েছিল। তাঁর সময়ে বহুসংখ্যক বারবার ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়।



বারবার তাঁবুর ভিতরের দৃশ্য


আবদুল্লাহ ইবনে ইয়াসিন নামে এক সুফির প্রচার প্রচারণাও বিপুলসংখ্যক বারবার ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেছিল। বারবাররা পরবর্তীকালে ৭১১ খ্রিস্টাব্দে স্পেনে মুসলিম বিজয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। উত্তর আফ্রিকায় এদের ভূমিকা অনন্য। এরা যেমন বিদ্রোহ করেছেন নতুন শাসনের বিরুদ্ধে তেমনি মেনেও নিয়েছে একই সাথে নিজস্ব স্বকীয়তা বজায় রেখেছে। উত্তর আফ্রিকায় শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে আরব গোত্রের বিরুদ্ধে তাদের লড়াই চলছিল। Some Berbers resisted the rules and regulations of Islam; many more accepted it, while others took on the role of reformers. Some Berbers became Christians, but evolved their own austere and uncompromising Donatist doctrine. This put them in direct conflict with the Church in Alexandria, which regarded them as heretics.
Click This Link




এটলাস পাহাড়। উত্তর আফ্রিকায় এই পাহাড়ের বিস্তার ১৬০০ মাইল । বহিরারগত সভ্যতার আগ্রাসনে এই পাহাড়ে বারবার জাতি তাদের নিজস্ব স্বকীয়তা বজায় রেখেছে।

তিন ভাগে উত্তর আফ্রিকার বারবার অধ্যূষিত অঞ্চলে ইসলামীকরণ সম্পন্ন হয়েছিল। (এক) সপ্তম শতকে আরবদের বিজয় অভিযান দুই) একাদশ শতকে আরব বেদূঈনদের উত্তর আফ্রিকায় আগমন । এবং (তিন) পঞ্চদশ এবং সপ্তদশ শতকে আন্দালুসিয়া থেকে উত্তর আফ্রিকায় আরব উদ্বাস্তুদের আগমন । সে সময়ই বারবাররা এটলাস পাহাড়ে চলে যায়। বারবারদের আমাঝিঘ ভাষায় এটলাস পাহাড় কে বলা হয়: ‘ইদুরার এন ওয়াটলাস’। যে পাহাড় ছড়িয়ে আছে মরক্কো আলজেরিয়া এবং তিউনিশিয়ায়। এ পাহাড়ে হাজার বছর ধরে বারবার জাতির বাস। এক ইউরোপীয় পর্যটক এটলাস পাহাড়ে বারবার ভাষাগোষ্ঠীর জীবনধারা দেখে মন্তব্য করেছেন : Isolated in Morocco's High Atlas range, the mountain Berbers take pride in holding on to a traditional culture now largely lost to their urban kin. But life is still a hard climb in these rugged hills.



উমাইয়া সেনাপতি তারিক ইবনে জিয়াদ (মৃত্যু ৭২০)

৭১১ খ্রিস্টাব্দে ভিসিগথ জাতি অধ্যূষিত স্পেনে যে মুসলিম অভিযান পরিচালিত হয়েছিল তার অগ্রভাগে ছিল বারবাররা। উমাইয়া সেনাপতি তারিক ইবনে জিয়াদ ছিলেন বারবার।| He is considered to be one of the most important military commanders in Spanish history. দামেস্কে তখন খলিফা আবদুল মালিক ইবনে মারওয়ান। ৭১২ খ্রিস্টাব্দে স্পেন অভিযানের সৈনরাও ছিল আরব ও বারবার। এই অভিযানের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন উত্তর আফিকার ভাইসরয় মুসা ইবনে নুসায়র। তিনি আল আন্দালুস এর উমাইয়া খলিফা প্রতম আবদুর রহমানকে সমর্থন দিয়েছিল। এর মা ছিলেন একজন বারবার। মধ্যযুগের আরবি স্পেনের সভ্যতা ছিল মূলত বারবার সভ্যতা । বারবাররা মুসলিম সংস্কৃতি গ্রহন করেছিল। আরবি ছিল লিখিত ভাষা। মরক্কোর বারবার আলমোহাডস রাজবংশ স্পেন শাসন করেছিল। ওই সময়ে স্পেনের প্রভূত উন্নতি হয়। অবশ্য জনসংখ্যার দিক থেকে বারবাররা ২০% শতাংশের বেশি ছিল না।



আলমোরাভিডস সাম্রাজ্যের মানচিত্র। সাম্রাজ্যটির সময়কাল ১০৪০-১১৪৭ খ্রিস্টাব্দ ।

মরক্কোয় মধ্যযুগে বারবার জাতির আলমোরাভিডস সাম্রাজ্য গড়ে উঠেছিল। দ্বাদশ শতকে প্রতিষ্ঠিত সাম্রাজ্যটির বিস্তার ছিল পশ্চিম আফ্রিকা থেকে স্পেন অবধি। আলমোরাভিডস সাম্রাজ্যের রাজধানী ছিল মাররাকেশ নগর। ১০৬২ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত নগরটি আজও জমজমাট। আলমোরাভিডস সাম্রাজ্য বারবারদের নিজস্ব আন্দোলনের ফসল । যে আন্দোলনের প্রাণপুরুষ ছিলেন আবদুল্লা ইবনে ইয়াসিন। মধ্যযুগে উত্তরপশ্চিম আফ্রিকায় আরও কিছু বারবার রাজবংশের উদ্ভব হয়েছিল। আলমোরাভিডস ছাড়াও চতুর্দশ শতকের মুসলিম সমাজবিজ্ঞানী ইবনে খালদুন তালিকা প্রণয়ন করেছেন: জিরিয়াদ, বানু ইফ্রান, মাঘরাওয়া, হাম্মদিদ, আলমোহাডস, আবদালওয়াডিড, ওট্টাসিদ মেকনাসা এবং হাফসিদ।



মরোক্কোর মাররাকেশ নগরের একটি গলি।

বারবার বলতে যতটা না অবিমশ্র জাতি বোঝায় তারচে বেশি বোঝায় ভাষা । বারবাররা যে প্রাচীন ফিনিশিয় ভাষাটি টিকিয়ে রেখেছে, এটা আগেও বলেছি। বারবার (বা আমাঝিঘ ) ভাষাটি আফ্রো-এশিয়াটিক ভাষা পরিবারের সদস্য। এর কয়েকটি আঞ্চলিক রূপও রয়েছে।১/ টাকহেলহিট;২/ টামাজিগ্ট এবং ৩/তারিফিট। আরবিতে একত্রে এই তিনটি ভাষা কে বলে -শিলহা। বারবার মূলত মৌখিক ভাষা। সে যাই হোক। উত্তর আফ্রিকার আরববিশ্বের জনগণ যে সম্পূর্ণ ভিন্ন এক ভাষায় কথা বলে- এটা অনেককেই বিস্মিত করে।



বারবার বর্ণমালা।

রাজনৈতিকভাবে আরবরা বারবার ভাষা ও সংস্কৃতিকে দমিয়ে রাখতে চেয়েছে। তবে তারা তেমন সফল হয়নি। ভাষাও নির্মূল করতে চেয়েছে। This also holds true of the present leaderships in independent Morocco and Algeria, who up to now have tried to establish an Arab identity for their countries. In recent years the North Africa/Tamazgha -- Morocco, Algeria, Tunisia and Libya -- (= "land of the setting sun" in Arabic, i.e. the western part of North Africa) has experienced an awakening of Berber consciousness.
http://phoenicia.org/berber.html




বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে লিবিয়ার রাজপথে বারবারদের আন্দোলন।

তবে আরব কর্তৃত্বের বিরুদ্ধে বারবার প্রতিরোধ তেমন সফল হয়নি। বাট দে হ্যাভ অ্যাট লিস্ট লেড টু দ্য ইনট্রোডাকশন অভ ফরম্যাল টিচিং অভ বারবার ইন সাম মরোক্কান অ্যান্ড আলজেরিয়ান স্কুল অ্যান্ড ইউনিভারসিটিজ। বারবারদের জাতীয় আত্মপরিচয়ের এই তীব্র আকাঙ্খা বারবারই মূর্ত হয়ে উঠছে। ২০০১ এবং ২০০২ সালে বেশ কয়েকবারই মরোক্কো এবং আলজেরিয়ার রাজপথ তীব্র প্রতিবাদে মূখর হয়ে উঠেছে। সরকারি স্বীকৃতি বারবার পরিচয়ের আর বারবার ভাষার জন্য রাষ্ট্রীয় তহবিল।



বারবার গ্রাম

অনেকেরই ধারণা বারবাররা যাযাবর। তারা মরুভূমি তে উট । আসলে বারবাররা স্থায়ী ভাবে কৃষিকাজ করে। অনেকেই ব্যবসা করে । তবে কৃষিকাজ নীচুজাতের লোকের কাজ বলে ভাবা হয়। বণিকেরা সমাজে উঁচু শ্রেণির প্রতিনিধি । বণিক শ্রেণির শোষন থেকে বাঁচাতে কৃষকরা স্থানীয় সর্দারকে কৃষকরা কর দেয়। কৃষিকাজের পাশাপাশি বারবারা পশুপালনও করে। মূলত তারা গরু, ছাগল ও ভেড়া চড়ায়। পাথর খনি ময়দার মিল কাঠখোদাই মৃৎশিল্প অলঙ্কার। অনেকেই স্পেন এবং ফ্রান্সে মাইগ্রেট শ্রমিক



অতুলনীয় এক ‘বর্বর’ সভ্যতার নারী

বারবার সংস্কৃতি গ্রামীণ বলে মরক্কোতে এদের অনুন্নত মনে করা হয়। শিশুরা স্কুল ছেড়ে আরবি শিখে। বয়স্করা ভাষার কারণে অফিশিয়াল কাজকর্মে সমস্যায় ভোগে। বারবার ভাষাটি মরোক্কোতে সরকারি ভাবে স্বীকৃত নয়। যদিও ঔপনিবেশিক আমলের ফরাসি ভাষা স্বীকৃত! ১৯৯৬ সালে বারবারদের আন্দোলনের ফলে সংবিধান সংশোধন করে বারবার ভাষার স্বীকৃতি দেওয়া হয়। আলজেরিয়া বাদে মিশর লিবিয়া তিউনিশিয়া মরক্কো নাইজার এবং মউরাতিনিয়ায় টামাজিগ্ট (বারবার ভাষার আঞ্চলিক রূপ) বলা হয়। | there have been bans imposed on the practice and baptizing their children with names of Berber origin.
Click This Link



অতুলনীয় এক ‘বর্বর’ সভ্যতার অলঙ্কার

এতো সব দমন-পীড়ণ সত্ত্বেও বারবার সংস্কৃতি অপ্রতিরোধ্য। বারবার বাংলার নকশী কাঁথার মতন কারপেট বিশ্ব জয় করেছে। নারীরা গৃহকর্ম ছাড়াও বুনন মাটির কাজ করে। গ্রামে ছাগলের রোমের তাঁবু তৈরি করে । বড় গ্রামে পাথরের বাড়ি। বারবার সমাজের লেকেরা জিন বিশ্বাস করে । পুরুষেরা কোরানের আয়াত লেখা তাবিজ ধারণ করে । বারবারদের সামাজিক গড়নটি গোত্রতান্ত্রিক। এক জন নেতা নির্বাচন করা হয় নেতৃত্বের জন্য। মধ্যযুগে অনেক নারীই গোত্র শাসন করেছিলেন। কাহিনা, টাজোওঘ্রেট, তিন হিনান চেমচি ফাটমা -প্রমূখ বিচক্ষণ নারীদের নাম লেখা রয়েছে বারবার ইতিহাসে । এছাড়া লালা ফাটমা ফরাসিদের বিরুদ্ধ লড়াই করেছেন।



এই বারবার/ আমাঝিঘ খাবারে নাম কুসকুস।কুসকুস বানাতে নাকি খরচ কম!


বারবারদের কুসকুস মরক্কোর অন্যতম খাবার। এছাড়া তিউনিসিয়া ও আলজিরিয়ায় খাবারটি দারুন জনপ্রিয় । তবে বারবার রান্না অঞ্চলভেদে একেক রকম। বারবারদের খাদ্য তালিকায় রয়েছে শষ্য, বার্লি, ভেড়ার দুধ, ছাগলের মাংস, চিজ, মাখন, মধু, মাংস ও পাখির মাংস ছাড়াও গমের রুটি ও প্যানকেক। মাখন মাখানো আস্ত ভেড়ার রোস্ট যে কোনও উৎসবের প্রধান আইটেম । বারবার রান্নায় রোমান, আরব, ও ফরাসি প্রভাব রয়েছে।



অতুলনীয় এক ‘বর্বর’ সভ্যতার বাদ্যযন্ত্র।

বারবার সংস্কৃতির চিহ্ন হল ভাষা, ঐতিহ্যবাহী পোশাক, সংগীত ও নৃত্য। বারবার সংগীত উত্তর আফ্রিকার ঐতিহ্যবাহী সংগীতের অর্ন্তগত। অঞ্চল ভেদে এর রূপ একেক রকম। এর মধ্যে অন্যতম হল মরক্কোর গাশবা এবং আলজেরিয়ার চাউয়ি ছাড়াও নাইজার মালি এবং বুরকিনা ফাসো-র তুয়ারেগ সংগীত। বেনডির (বড় ড্রামস); এবং গামব্রা (বাঁশী) নাচ গানের সঙ্গে বাজানো হয়।Much of the most interesting Berber music is not pop at all, but rather village and urban folk music.
http://en.wikipedia.org/wiki/Berber_music
বারবার গানে বারবারদের ভাষার লড়াই ফুটে ওঠে। নীচে আমাঝিঘ ভাষায় একটি গানের ডাউনলোড লিঙ্ক দেওয়া হল। শিল্পীর নাম নওমাডিয়া। অ্যালবামের নাম এম্মা। গানের সুর ও তাল আমাদের একেবারে অপরিচিত লাগবে না ...
http://www.mediafire.com/?klgyapr52qsuert
আমাঝিঘ ভাষায় আরও গানের ডাউনলোড লিঙ্ক ।

http://www.agraw.com/amazigh-music/



আমাঝিঘ ভাষায় লেখা দুটি লাইন।
বাংলা উচ্চারণ:

ইমদানেন, আককেন মা লান ট্টলালেন ইলেলিয়েন মসাওয়ান দি ইহউইয়েরমা দ ইযেরফান-ঘুর সেন তামসাকউইট দ লাকুয়েল ইউ ইসেফক অ্যাড-টিলি টিমমাট গার আসেন।

বাংলা অনুবাদ:

সব মানুষ জন্ম স্বাধীন এবং অধিকার এবং মর্যাদায় সমান। তারা যুক্তিতে বলীয়ান এবং সচেতন আর একে অন্যের প্রতি ভ্রাতৃত্ববোধে উজ্জ্বীবিত হয়ে কাজ করবে।




অতুলনীয় এক ‘বর্বর’ সভ্যতার কারপেট।


ছবি: ইন্টাররেট।

তথ্যসূত্র:
Click This Link
http://looklex.com/e.o/berbers.htm
Click This Link
Click This Link
Click This Link
Click This Link
Click This Link
Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই নভেম্বর, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৩৫
৪২টি মন্তব্য ৩৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান।

লিখেছেন আহা রুবন, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫০





ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান। আমরা দিন দিন কোথায় যাচ্ছি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আপনার দলের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলবাজি নিয়ে তো মহাব্যস্ত! সে পুরাতন কথা। কিন্তু নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৩




সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৩

ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)

সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×