somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চলচ্চিত্রে সরকারী অনুদানপ্রথা: কিছু প্রশ্ন, কিছু মন্তব্য এবং শুভ কামনা

১৪ ই মে, ২০১৪ বিকাল ৪:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পূর্ণদৈর্ঘ্য কাহিনীচিত্রের জন্য এ বছরের সরকারি অনুদানের ঘোষণা হয়ে গেল। মোট সাত জন পাচ্ছেন এই অনুদান। অনুদানে থাকবে প্রত্যেক নির্মাতাকে নগদ ৩৫ লাখ টাকা, পরিচালক পাবেন ৫০ হাজার, কাহিনিকার ৫০ হাজার আর এফডিসি থেকে ১০ লাখ টাকা মূল্যের সেবা৷ অর্থাৎ ৪৬ লাখ টাকা।

প্রতিবছর ভালো চলচ্চিত্রের জন্য সরকারের এই অনুদানের ব্যবস্থা আমাদের জন্য অত্যন্ত উৎসাহব্যঞ্জক। জনগনের করের টাকা থেকে একজন চলচ্চিত্রকারকে তার চিত্রনাট্য বিবেচনা করে এই যে ৪৬ লাখ টাকা বা সমমূল্যের সেবা প্রদান করা হচ্ছে তা কিন্তু একজন নির্মাতার চিরস্থায়ী আমানত হয়ে যাচ্ছে। কারণ নিয়মানুযায়ী নির্মিত চলচ্চিত্রের মালিকানা নির্মাতার। সরকার অনুদান দিচ্ছে শুধুমাত্র একটি ভালো চলচ্চিত্র নির্মিত হোক এই আশায়। একই কারণে জনগণের পয়সার এই ব্যয় জনগন মেনে নেয়। ফলে অনুদানের মাধ্যমে একজন নির্মাতার নিজের পায়ে দাঁড়ানোর সুযোগ তৈরি হয়। কিন্তু অদ্ভূত ব্যাপার হলো প্রতি বছর অনুদানপ্রাপ্ত চলচ্চিত্রগুলোর কাজ প্রতি বছর শেষ হচ্ছে না! আবার চলচ্চিত্রটি নির্মিত হওয়ার পর দেখা যাচ্ছে তৃতীয় কোনো ব্যক্তি অথবা প্রতিষ্ঠান এই চলচ্চিত্রগুলোর প্রযোজনা অর্থাৎ মালিকানা নিয়ে নিয়েছে। ফলে জনগনের টাকায় নির্মিত এই চলচ্চিত্রগুলো দেখতে সাধারণ মানুষকে সিনেমাহলে পয়সা দিয়ে টিকেট কেটেই ঢুকতে হয়। সেখানে সরকারী অনুদানের চলচ্চিত্র বলে কম টাকায় সিনেমাটি দেখা যাবে এমনটি হচ্ছে না!

জনগণের টাকা নিয়ে ছবি নির্মাণ করা হবে সেই ছবি আবার জনগণকে টিকেট কেটে দেখতে হবে কেন?

প্রতিবছর অনুদানের ছবি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্মিত হবে না কেন?

সরকারী অনুদানপ্রাপ্তির পর দায়সারা গোছের কিছু একটা বানিয়ে অনুদানের টাকা লোপাটকারী নির্মাতাদের বিষয়ে কি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় বা হয়েছে তা কেউ জানে না!

অনুদানের ছবির মালিকানা যদি নির্মাতা স্বাধীনভাবে নিজের কাছে রাখতে না পারেন তাহলে তা তৃতীয় ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছে হস্তান্তর করার মধ্য দিয়ে এক ধরনের বাণিজ্য হচ্ছে বলে প্রতিয়মান হচ্ছে। যা প্রজাতন্ত্রের অর্থে অনুচিত বলে বিশ্বাস করি।

অনেক নির্মাতা দাবি করেন অনুদানে যে অর্থ প্রদান করা হয় তাতে একটি ভালো ছবি নির্মাণ করা সম্ভব নয়। এ দাবি করে তারা একধরণের ক্ষোভ প্রকাশ করেন। নিশ্চয়ই এই দাবির যুক্তি সঠিক এবং অনুধাবনযোগ্য কিন্তু তিনি যদি সরকারের নির্ধারিত বাজেটে ছবি নির্মাণ করতে সক্ষম না হন তাহলে তিনি কেন অনুদান প্রাপ্তির জন্য আবেদন করেন। প্রজাতন্ত্রের টাকা নিয়ে দায়সারা গোছের কাজ করা অথবা অনুদানপাপ্তির পর তা 'বিক্রি' করার এই প্রবণতা সমর্থনযোগ্য নয়। তারা বরং অনুদানের অর্থ বৃদ্ধির জন্য আন্দোলন করে তা বৃদ্ধির পর অনুদানপ্রাপ্তির আবেদন করতে পারেন।

বি.দ্র. এবার সাতটি ছবিতে অনুদান দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তথ্য মন্ত্রণালয়৷ এর মধ্যে রয়েছে পাঁচটি কাহিনিচিত্র ও দুটি শিশুতোষ চলচ্চিত্র৷ কাহিনিচিত্রগুলো হলো সাজেদুল আওয়ালের ছিটকিনি, প্রসূন রহমানের সুতপার ঠিকানা, নাদের চৌধুরীর নদী উপাখ্যান (কাহিনি ইমদাদুল হক মিলন), ড্যানি সিডাকের কাঁসার থালায় রুপািল চাঁদ এবং রওশন আরা নীপার মহুয়া মঙ্গল৷ শিশুতোষ ছবি দুটি হলো জানেসার ওসমানের পঞ্চসঙ্গী (কাহিনি শওকত ওসমান) ও মুশফিকুর রহমান গুলজারের লাল-সবুজের সুর (কাহিনি ফরিদুর রেজা সাগর)।

আশা করি নির্মাতারা অধিক যত্ন এবং নিষ্ঠার সঙ্গে আমাদের কিছু ভালো চলচ্চিত্র উপহার দিবেন।

১৬৩ বার পঠিত
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শুধু হিংস্র, আগ্রাসী নয় ভারত লুটেরা, লোভী এবং সাম্রাজ্যবাদীও বটে.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৪:১৪

শুধু হিংস্র, আগ্রাসী নয় ভারত লুটেরা এবং লোভীও....

জন্মলগ্ন থেকেই ভারতের হিংস্র ও আগ্রাসী। পাকিস্তানের সাথে যোগ দিতে চাওয়া এবং স্বাধীন থাকতে চাওয়া কিছু অঞ্চল যেমন হায়দ্রাবাদ, ত্রিবাংকুর, ভূপাল, যোধপুর, জুম্ম-কাশ্মীর,... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গলা-বুক জ্বালা দেখে অম্বলের ওষুধ দিয়েছিলেন চিকিৎসক, চ্যাটজিপিটি ধরল ক্যানসার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৪:২৯






ক্যানসার ধরল চ্যাটজিপিটি! চিকিৎসকেরা ভুল ওষুধ দিয়েছিলেন। তাতে অবস্থা আরও খারাপ হয় মহিলার। চ্যাটজিপিটিই বলে দেয়, কী রোগ বাসা বেঁধেছে তলে তলে। চিকিৎসকেরা ধরতেই পারেননি। কিন্তু চ্যাটজিপিটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

২০০৮- ২০২৪, হাসিনা ভারতের জনম জনমের ঋণের কিছুটা শোধ করেছেন মাত্র

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:১০

২০০৮- ২০২৪, হাসিনা ভারতের জনম জনমের ঋণের কিছুটা শোধ করেছেন মাত্র

এআই দ্বারা তৈরিকৃত রাজনৈতিক কার্টুন—যেখানে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের অসাম্যতা ও রাজনৈতিক নির্ভরতার প্রতীকী উপস্থাপন করা হয়েছে।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিক্ষকদের দ্বৈত চরিত্র এবং বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার বেহাল দশা!

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৮:১৬


বাংলাদেশে শিক্ষার মান নিয়ে সবার মুখে নানা রকম কথা শোনা যায় । কেউ কেউ বলছেন দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নতি হচ্ছে , কেউ বলে দিন দিন তা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। এপিআই প্ল্যান্ট

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৯:১৮




ওষুধে দুটো উপাদান থাকে। ওষুধের যে রাসায়নিক উপাদানটি মূলত রোগ সাড়ানোর কাজ করে, সেটিকে বলে এপিআই। দ্বিতীয় উপাদানটিকে সহকারি উপাদান বলে, যেমন— স্টার্চ, রং বা ফ্লেভার।

এপিআইয়ের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×