somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সোহানী
হাজার হাজার অসাধারন লেখক+ব্লগারের মাঝে আমি এক ক্ষুদ্র ব্লগার। পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া লেখালেখির গুণটা চালিয়ে যাচ্ছি ব্লগ লিখে। যখন যা দেখি, যা মনে দাগ কাটে তা লিখি এই ব্লগে। আমার ফেসবুক এড্রেস: https://www.facebook.com/sohani2018/

দুই টাকার হালুয়া রুটির জন্য নিজের আত্মা বিক্রি নাই বা করি!!

২৪ শে জুলাই, ২০২৪ সকাল ৯:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমি কখনই কোন রাজনৈতিক দলে যোগ দেইনি বা কখনই কোন রাজনৈতিক দলের সমর্থনে কিছু করিনি। কারন আমি “আই হেইট পলিটিক্স” এর দলে। আমি একজন পুরোপুরি বাংলাদেশী। দেশের পতাকা হাতে অনেকবারই দেশকে রিপ্রেজেন্ট করেছি। আমার দেশ আমার ভালোবাসা। কোন রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় আসলো গেলো তা নিয়ে কখনই চিন্তিত না, শুধু দেখতে চাই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের মাঝে গর্বভরে নিজের দেশের পতাকা যেন তুলে ধরতে পারি।

কিন্তু আমি জীবনভর যেটা করেছি তা হলো কালোকে কালো বলেছি, সাদাকে সাদা। দীর্ঘ বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের বাইরে যেকোন অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমি দাঁড়িয়েছি এবং এখনো দাঁড়াই। হলের সূর্যাস্ত আইনের বিরুদ্ধে, নেতাদের হস্তক্ষেপে সিট বন্টনে বৈসম্য অথবা ডাইনিং এর খাবারের মান নিয়ে আন্দোলনে কিংবা শাহবাগ আন্দোলন সবসময়ই আমি সোচ্চার ছিলাম।

গতবার যখন দেশে গেলাম চারপাশের দেশের উন্নতি দেখে অসম্ভব ভালো লেগেছিল ও সেটা নিয়ে একটা লিখাও লিখেছিলাম। জ্বালাও পোড়াও এর রাজনীতি থেকে বের হয়ে দেশে স্থিতিশীল রাজনীতির দিকে হাঁটছে, এটাইতো চেয়েছিলাম সারাটা জীবন।

আমাদের দেশের দূর্নীতি প্রায় জগৎ বিখ্যাত। সবসময়ই কিছু না কিছু ছিল। তাই ভাবছিলাম দেশ যেখানে এগিয়ে যাচ্ছে সেখানে সামান্য দূর্নীতির প্যারা না হয় সহ্য করি। কিন্তু দূর্নীতির এ প্যারার কিছু নমুনা দেখে মারাত্বক ধাক্কা খেলাম। দেখলাম এক পুলিশের আইজি হাজার কোটি টাকার মালিক, একজন কাস্টমস্ কর্মকর্তা শত কোটির মালিক, প্রধানমন্ত্রীর পিয়ন চারশ কোটির মালিক। নিজেকে প্রশ্ন করলাম তাহলে বাকি মন্ত্রী মিনিস্টার, এমপি, ছাত্র নেতারা কত কোটির মালিক? এর মাঝেই খবর আসলো বিসিএস ড্রাইভার চক্র প্রশ্নপত্র ফাঁস করে কোটি টাকার মালিক। আরে দেশেতো দেখি কোটিপতির অভাব নেই।

এত কোটিপতির খবরের মাঝে কোটা আন্দোলন আবার সামনে আসলো। কারন যা বাতিল করেছিলো ২০১৮ তে তা আবারো ফিরিয়ে আনলো। তাই ছোট ছোট বাচ্চাগুলো কোটা বরাদ্দ বাতিলের দাবীতে মাঠে নামলো। ছোট বাচ্চা বল্লাম কারন ঠিক এ বয়সী আমারো একটি ছেলে ইউনিভার্সিটিতে পড়ে। আর একজন মায়ের কাছে সব সময়ই সন্তানই ছোট বাচ্চা।

ভাবতে বসলাম, এ বাচ্চাগুলো কেন এরকম স্বতস্ফূর্তভাবে মাঠে নামলো কোটা বরাদ্দ বাতিলের দাবীতে? কি এমন বিষয়?? চাকরী পাবে তার ঠিক নাই কিন্তু তা নিয়ে এমন হৈচৈ। উত্তরটা খুঁজতে লাগলাম ও পেয়েও গেলাম। এই যেমন;

স্বাধীনতার পরবর্তীতে দেশে চাকরীর বাজার বলতে গেলে তেমন করে তৈরী হয়নি। লাখ লাখ ছেলে-মেয়ে ইউনিভার্সিটি কলেজ থেকে পাস করে বেকার। প্রচন্ড হতাশাগ্রস্থ তারা। তাইতো দেশে একমাত্র নির্ভরযোগ্য চাকরী এখন সরকারী চাকরী। আর সেখানে কোটা আর দূর্নীতির জন্য সে সামান্য চাকরীও তাদের ভাগ্যে জুটছে না।

এদিকে চারপাশে কোটিপতিদের ছড়াছড়ি রাস্তায় লেটেস্ট মডেলের গাড়ি, হাতে আইফোন ১৫ নিয়ে ঘুরে কিন্তু সাধারন মানুষগুলো সামান্য চাল ডালের হিসেব কষতে কষতে দিশেহারা। ঘরে ভাত নেই, সন্তানের চাকরী নেই, চিকিৎসা নেই, শীতে কাপড় নেই।

এমন অবস্থায় যারা পারছে দেশ ছাড়ছে কিন্তু যারা পারছে না তারা মরিয়া হয়ে গেছে। আর দেয়ালে যখন পিঠ ঠেকে যায় তখন কি করছে বা করবে তার হিসাব কষা কঠিন। তাইতো এ ছেলেগুলো মরিয়া হয়ে মাঠে নেমেছিল।

এখন আমার প্রশ্ন;

এ ছেলেগুলোর সাথে একটু ঠান্ডা মাথায় কথা বলে একটা সমাধানে কি আসা যেত না? এমনতো কোন কঠিন দাবী তাদের ছিল না।
মাঠে গুন্ডা নামিয়ে, পুলিশ আর্মি দিয়ে তাদেরকে থামানোর চিন্তা কেন আসলো?
তারা আমার দেশের শক্তি, দেশের সম্পদ তাদের বিরুদ্ধে বন্দুক ট্যাংক নিয়ে কেন মাঠে নামতে হলো, কেন তাদেরকে ঠান্ডা মাথায় গুলি করা হলো?

সঠিক উত্তরটা হয়তো আমরা জানি না কিন্তু অনুমান করতে পারি। তবে আবারো প্রশ্ন, এর পর কি হবে? কিছু মরেছে আর বাকি বাচ্চাগুলো মার খেয়ে ঘরে ফিরে গেছে। এভাবে গলা টিপে কতদিন পর্যন্ত সবার মুখ বন্ধ রাখা যাবে?

তবে অবাক হয়েছি কিছু মানুষের নির্লিপ্তটা দেখে বা এতগুলো মৃত্যুকে স্বাভাবিক ধরে নেয়াকে, প্রতিবাদ না করে উল্টো উপহাস করাকে। আরো একপক্ষ দাঁড়িয়ে গেছে প্রতিবাদকারীদের থ্রেট দিতে। নির্বিচারে হত্যাকে বৈধতা দিতে। এতো ছোট ছোট বাচ্চাগুলোকে হত্যা নিয়ে তাদের দু:খবোধ নেই।

সামান্য হালুয়া রুটির ভাগের জন্য নিজের আত্মাকে বিক্রি করতে আপনাদের লজ্জা লাগে না???? ধিক্ আপনাদের।

একটাই প্রশ্ন তাদের কাছে আমার, সাঈদের মৃত্যুর ভিডিও টা দেখেছেন কি?
একবারও কি আপনাদের বুক কাঁপেনি তার মৃত্যুতে?
মায়ের কান্না কি একটি বারও আপনাকে বিচলিত করেনি?
নিজের সন্তানকে একবার সাঈদের জায়গায় দাঁড় করিয়ে ভাবুন!!!!! আপনি কি মানুষ??

আমার বুকটা ফেটে যাচ্ছে কষ্টে এ বাচ্চাগুলোর জন্য। হে দেশ, তোমার কাছে আমি আর ফিরে যাবো না। ভালো থাকো আমাকে ছাড়া।

সোহানী
জুলাই ২০২৪
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জুলাই, ২০২৪ সকাল ৭:২৪
২০টি মন্তব্য ২০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পাগলের প্রলাপ' যখন সত্যি হয়......

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:১৯

'পাগলের প্রলাপ' যখন সত্যি হয়......
[/সব

আমার এক মামা ততকালীন পূর্ব পাকিস্তানে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে জব করতেন হোটেলের শুরু থেকেই। সেই মামা মাঝেমধ্যে আমাদের জন্য হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল থেকে মুখরোচক কেক, পেস্ট্রি ছাড়াও বিভিন্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তার চাওয়া পাওয়ার কিছু ছিল না, তবুও

লিখেছেন খাঁজা বাবা, ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:৩২



শেখ হাসিনার নাকি বায়ক্তিগত চাওয়া পাওয়ার কিছু ছিল না। শেখ মুজিবের বেয়ে নাকি দুর্নীতি করতে পারে না। সে এবং তার পরিবার যে হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি করতে পারে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশের বর্তমান পরিস্থিতি সংক্রান্ত বিষয়ে সামু কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি

লিখেছেন সাড়ে চুয়াত্তর, ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৬

ছাত্র-জনতার সম্মিলিত অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গত ৫ আগস্ট, ২০২৪ তারিখে ফ্যাসিস্ট হাসিনা এবং তার দলের পতন ঘটানো হয়। এটা আমাদের একটা জাতীয় গৌরবের দিন। এটা নিয়ে কারও সন্দেও থাকলে মন্তব্যে লিখতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জ্বীনভুতে বিশ্বাসী বাংগালী ও ঢাকায় ৫০ হাজার ভারতীয় একাউন্টটেন্ট

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৩




ব্লগার সাড়ে চুয়াত্তর ব্লগে লিখেছিলেন যে, উনার ভগ্নিপতিকে জ্বীনেরা তুলে নিয়ে গিয়েছিলো; ২ সপ্তাহ পরে ভগ্নিপতিকে দিয়ে গিয়েছে; এই লোক, সামুর কাছে আমার বিরুদ্ধে ও অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

বেছুর নিজস্ব একটি জ্বীন ছিলো!

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:২৪



আমাদের গ্রামের খুবই সুশ্রী ১টি কিশোরী মেয়েকে জংগলের মাঝে একা পেয়ে, প্রতিবেশী একটা ছেলে জড়ায়ে ধরেছিলো; মেয়েটি ঘটনাকে সঠিকভাবে সামলায়ে, নিজের মাঝে রেখে দিয়েছিলো, এটি সেই কাহিনী।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×