আগের পর্বে সিভি রাইটিং এর ক্ষেত্রে বেসিক কিছু দিকনির্দেশনা ও সিভি তৈরীর বেসিক টিপস্ ছিল...... এ পর্বে সিভি তৈরী করার বাদবাকী টিপস্ নিয়ে আসলাম....
সাদামাটা সিভি সবাই তৈরী করবে আর তোমার সিভি যদি সবার থেকে আলাদা বৈশিস্ট্যের হয় তাহলে অবশ্যই তা নিয়োগকারীর চোখে পড়বে। আর প্রথমেই যদি পজিটিভ ইম্প্রেশান তৈরী করতে পারো তাহলে ইন্টারভিউতে তার ভালো এফেক্ট পড়বে নিশ্চয়।
তাহলে কি করবে সিভি তৈরীতে :
আগের পর্বে তোমাদের সিভির ইন্ট্রুডাকশান বোডির কথা বললাম আর এ পর্বে মূল পর্বে আসি............
তোমার চাকরীর অভিজ্ঞতা যদি থাকে তাহলে তা চমৎকার ভাবে বর্ননা করবা। তবে খুব বেশী ডিটেইলস্ এ যাওয়ার দরকার নাই। সংক্ষেপে কিন্তু প্রতিটা কাজের যতটুকু পারো বর্ননা দিবা। সেটা বুলেট আকারে বা প্যারা আকারেও দিতে পারো। নিজের ঢোল পিটানোর এটাই সবচেয়ে উপযুক্ত জায়গা। তুমি বর্তমানে কি কি কাজ করো বা অতীতে তুমি কি কি কাজ করেছো তার ও উল্লেখ করতে পারো। নিচের ফর্মেটটা ফলো করতে পারো....
Title/Position : তোমার ডেজিগনেশান কি তা লিখবা।
Organization : অর্গানিজেশানের নাম উল্লেখ করবা।
Location and duration : তোমার পোস্টিং কোথায় বা কোন জেলায় তা উল্লেখ করবা। তোমার জয়েনিং ও ছেড়ে যাওয়ার তারিখ উল্লেখ করবা। বর্তমানের অর্গানিজেশান হলে তার ও উল্লেখ করবা।
My responsibilities : উপরে উল্লেখ করেছি যে কিভাবে তোমাদের কাজের বর্ননা দিবা। তবে যে কাজ তুমি করোনি তা উল্লেখ করবা না। আরেকটা কথা, প্রতিটি জব এ্যাড এ পোস্টের বিপরীতে কাজের বর্ননা উল্লেখ থাকে। তুমি যদি সে সব কাজের কিছুটাও করে থাকো তাহলে সে কাজকেই বেশী হাইলাইট করবা। মানে প্রতিটি জব এপ্লিকেশান তাদের রিকোয়ারমেন্ট এর উপর মিল রেখে তোমার সিভির কাজের বর্ননা চেইন্জ করে নিবা। গড়পড়তা একই সিভি সব যায়গায় না দেয়াটাই ভালো। প্রতিটা জব এপ্লিকেশানের আগে এক ঘন্টা সময় দিবা আবশ্যই।
আরেকটা বিষয়, তুমি যে অর্গানিজেশানে বর্তমানে কাজ করছো তার খুব সংক্ষেপে বর্ননা দিতে পারো। এতে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ তোমার অর্গানিজেশানকে আগে না চিনলেও ধারনা করত পারবে।
তারপর তোমার আইটি স্কিল বর্ননা করতে পারো। এতে যদি তোমার কোন দক্ষতা থেকে থাকে তার উল্লেখ করবা। এ প্যারা তুমি এখানে বা ইন্ট্রুডাকশান বোডিতে ও উল্লেখ করতে পারো। তবে বেশি বেশি লিখা বা অপ্রয়োজনীয় কিছু উল্লেখ না করাই বোধহয় ভালো।
এবার আসি শেষ প্যারায়, অনেকে তার হবি উল্লেখ করে আমি খুব একটা এর পক্ষে না। প্রাথমিক ইম্প্রেশান তৈরীতে অনেক সময় তা ধাক্কা খেতে পারে। যেমন তুমি এমন কিছু উল্লেখ করেছো যা নিয়োগকারী পছন্দ করেনি তাহলে হিতে বিপরীত হতে পারে। তাই বেশি কিছু না লিখাই ভালো।
এবার সবার শেষে তুমি তোমার রেফারেন্স উল্লেখ করবা কমপক্ষে তিনজন। বর্তমান অর্গানিজেশানের আপার লেবেলের কারো নাম দিতে পারে তবে সুপারভাইজার হলে ভালো হয়। তবে সাবধান.... বসের সাথে সম্পর্ক ভালো না হলে তার নাম ভুলেও দিবা না। তাইলে চাকরীর দুকুলেই যাবে। অনেক অর্গানিজেশান কোথাও এপ্লাই করা ভালো চোখে দেখে না তাহলে তাদের নাম রেফারেন্স উল্লেখ করা থেকে ১০০ হাত দূরে থাকবা। তবে ইন্টারভিউতে বলে দিবা একমাত্র চাকরী হলেই তবে তারা রেফারেন্স চেক করতে পারবে নতুবা না। কারন বর্তমান অর্গানিজেশানে এতে খারাপ ইম্প্রেশান তৈরী হয় যে তুমি তাদের অর্গানিজেশান ছেড়ে যেতে চাইছো। আর অবশ্যই যাদের নাম রেফারেন্স উল্লেখ করবা তাদের জানিয়ে রাখবা।
ও আরেকটি কথা, তোমার বর্তমান অর্গানিজেশানের যদি কোন এচিভমেন্ট থেকে থাকে তাহলে তোমাদের কাজের বর্ননা দিবার পর তোমার এচিভমেন্ট উল্লেখ করতে ভুলো না কিন্তু।
আজ থাক ... পরে পর্বে ইন্টারভিউর টিপস্ নিয়ে আসবো আশা করি .. কি বলো...........
সবশেষে অপ্রয়োজনীয় উপদেশ আবার দেই.... আজকালকার পোলাপান প্রায় দেখি সারাদিন ফেইসবুক, নেট, চ্যাট আর মুভি নিয়ে ব্যস্ত থাকে। কারনে অকারনে ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দেয়া চাই ই চাই। কোথায় গেলাম, কি খেলাম, কি করলাম... ঘন্টায় ঘন্টায় জানানো চাই ই চাই। আবার আরেক দল আছে যাবতীয় জ্ঞানের আঁধার যেন সে। ফিলসফি মার্কা কথাবার্তা আর হাল আমলে রাজনীতি নিয়ে উচ্চীয় মার্গের কথাবার্তা।
আমার প্রথম কথা, ফেইসবুক আর মুভি দেখে কি জীবন চলবে??? স্ট্যাটাস এর মাধ্যমে সারাদিন নিজের ইতিহাস গেয়ে লাভ কি?? সারাদিন ধরে অন্যের স্ট্যাটাস বা নিজের স্ট্যাটাস এ কমেন্ট বা লাইক বা ডিজলাইক দিয়ে লাভ কি?? ফেইসবুক বা মুভি রিক্রেশানের জন্য বাট রিক্রেশানের যদি তোমার সময় বা জীবনই খেয়ে ফেলে তা কি আর ফিরে আসবে?????? আজ যারা সিরিয়াস, তাদের নিয়ে যারা হাসবে কাল কিন্তু তোমরাই তাদের নিয়ে হাসবে। তাই নয় কি.............................
এ কথাগুলা অামি আগেও বলেছি আবার ও বললাম........
.. আগের পর্ব যাদি পড়তে চাও.........
http://www.somewhereinblog.net/blog/belablog/29936975
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:০৬