বিদেশে একজন তরুন সর্বোচ্চ ২১ থেকে ২২ বছরে গ্রাজুয়েশান শেষ করে প্রফেশনাল লাইফে ঢুকে। আর আমরা প্রায় ২৫ থেকে ২৭ বছর বয়সে ইউনিভাসিটি থেকে বের হয়ে চাকরির পিছনে যখন দৌড়াই তখন দেখি দুনিয়া অনেক কঠিন। বড় জোর ৩০বছর বয়স সীমায় ২টা বিসিএস এটেন্ড করতে পারি আর বিসিএস সোনার হরিণ ধরতে না পারলে তো চাকরির বাজার যে কতটা খারাপ তা হাড়ে হাড়ে টের পা্ই তখন।
আজ যদি আমরা ২২/২৩ বছরে প্রফেশনাল লাইফে ঢুকতে পারতাম তাহলে আমাদের হাতে থাকতো ৭/৮ বছর আর বিসিএস এটেন্ড করতে পারতার ৬/৭ টা, জীবনটা স্টাবলিশ করতে সময় পেতাম অনেক। এখন দেখুন আমার আপনার জীবনের ৪ থেকে ৬ টা বছর কিভাবে নস্ট হয়ে গেল আর তার জন্য আমরা নিজেরা কোনক্রমেই দায়ী নই অথচ তার মাশুল গুনতে হচ্ছে আমার আপনার প্রতিটি মুহূর্তে। বাবার পকেটের টাকা, আপনার আমার হতাশা, আত্বীয় স্বজনের কটাক্ষ, প্রেমিক/প্রেমিকার ধাক্কা (আর মেয়ে হলে তো কথাই নেই.... বাড়তি চাপ হিসেবে আইবুড়ো খেতাবের ধাক্কা....... ) সবই কিন্তু আপনার আমার জন্য অথচ আপনি বা আমি এর জন্য দায়ী নয় কিছুতেই।
আমার কাছে অনেকেই আসে কেরিয়ার কাউন্সিলিং এর জন্য....... হতাশার মাঝে একটু আশার বাণী শুনতে............ আর তাই আমার অভিজ্ঞতার আলোকে এ ধারাবাহিক লিখা যাতে তোমাদেরকে কিছুটা হলেও আলোর দিশা দিতে পারি।
আমার আগের উপদেশ :
http://www.somewhereinblog.net/blog/belablog/29904526
যা বলছিলাম,
পাবলিক বা ভালো প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি ঢুকতে পারো তাহলে ও কথা আছে, কোন সাবজেক্ট পেলা তা একটা বড় বিষয়। কারন বাংলাদেশে চাকরীর বাজার ভয়াবহ, ইউনিভার্সিটি থেকে পাশ করলেই যে চাকরী পাবা তার কোন গ্যারেন্টি নেই কোনক্রমেই। অনেক ভালো সাবজেক্ট থেকে ভালো রেজাল্ট করেও মামা চাচার রেফারেন্স না থাকলে চাকরী পাওয়া কঠিন। তাই তোমাদের যাদের মামা চাচার রেফারেন্স নাই তাদের জন্য উপদেশ, আজকের লিখা;
এক : চোখ বন্ধ করে বিসিএস এর জন্য ট্রাই করো। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবা আর বিসিএস প্রিলিমিনারি ও মেইন গাইড কিনবা। সময় পেলেই পড়বা, প্রয়োজনীয় নোট করবা, প্রতিদিন পেপার পড়বা আর নিজেকে যেকোন নিউজে আপটুডেট রাখবা। বিসিএস হয়ে যাবে আশা করি।
দুই: যদি বিসিএস না হয় প্রথমবারে তাহলে অবশ্যই হতাশ হবে না। আবার চেস্টা করবা অবশ্যই সঙ্গে প্রাইভেট জবের চেস্টা করবা। যেকোন জবকেই ছোট করে দেখবা না। যেকোন অভিজ্ঞতাই জীবনে কোন না কোন কাজে লাগে। আগে চাকরী তারপর হিসাব তা ছোট না বড়।
তিন: কাজের ক্ষেত্রে.... পরিশ্রম, সততা, কাজের প্রতি ডেডিকেশান, সিনসিরিয়াটি, সদ্বব্যবহার, সবার সঙ্গে সুস্ম্পর্ক তোমাকে অবশ্যই ভালো জায়গায় নিয়ে যাবে। সব প্রতিষ্ঠানেই অনেক পলিটিক্স থাকে আর নিজেকে তার থেকে দূরে রাখাই বুদ্ধিমানের কাজ।
চার: চাকরী জীবনের প্রথমেই টাকার পিছনে দৌড়াতে হয় না। আগে নিজেকে এ ফিল্ডে প্রতিস্ঠিত কর দেখবে টাকা তোমার পিছনে এমনিতেই দৈাড়াবে। কারন বাংলাদেশে এখনো অভিজ্ঞতার দাম আছে। ভালো কাজ জানলে চাকরীই কিছুদিন পর তোমার পিছনে ছুটবে।
এবার আসি আসল কথায়... চাকরী খুঁজলেই যে চাকরী হবে তা কিন্তু না। কাজেই হতাশ হবে না কিছুতেই। ওয়েব সাইট, পেপার, অনেকভাবেই চাকরীর খোঁজ তুমি পাবা। তবে ভালো হয় বিভিন্ন প্রতিস্ঠানে তোমার সিভি ড্রপ করা। নেক্সট্ লিখায় তোমাদের জন্য কিছু ওয়েব সাইট এড্রেস নিয়ে আসবো, সেখানে তোমরা সিভি ড্রপ করে রাখলে প্রয়োজনে তারা তোমাকে ডাকবে।
এর পর আসি সিভি প্রসঙ্গে, অবশ্যই একটি চমৎকার সিভি তৈরী করবা তোমরা। নেক্সট্ কোন লিখায় তোমাদের জন্য সিভি তৈরীর গাইড লাইন নিয়ে আসবো আশা করি।
চাকরীর বিকল্প অনেক কিছুই আছে...... সেটা তোমাকেই খুজেঁ দেখতে হবে... .............।
আজ এটুকুই থাক......... চাকরীর বিকল্প ও ওয়েব সাইট এড্রেস নিয়ে পরের পর্ব লিখি ......... কি বলো.........