দেশের শিক্ষাক্রমে ডারউইনের বিবর্তনবাদের অন্তর্ভুক্তি এবং এর প্রেক্ষাপটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও মূলধারার মিডিয়ায় নানা আলোচনা-সমালোচনার প্রেক্ষাপটে -
ছবিঃ মানব বিবর্তনের ধারার আধুনিক ছবি (উৎস ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক)
সম্প্রতি (২০১৩ সাল থেকে ) আমাদের দেশের জাতীয় শিক্ষাস্থরের বিভিন্ন পর্যায়ের পাঠ্য বইয়ে বিবর্তনবাদ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ (বিবর্তনবাদ) মতবাদ অনুসারে মানুষ ও বানরের পূর্ব পুরুষ একই অর্থ্যাৎ মানুষের উৎপত্তি বানর জাতীয় কোন সাধারন পূর্ব পুরুষ থেকেই হয়েছে। ডারউইন নামক বিজ্ঞানী ১৮৫৯ সালে সর্বপ্রথম বিবর্তনবাদ তত্ত্ব মানুষের সামনে তুলে ধরেন। তিনি তার এই তত্ত্বে দেখাতে চেয়েছেন, প্রাণীরা সময়ের সাথে সাথে প্রাকৃতিক নিয়মে ধীরে ধীরে কীভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। চার্লস ডারউইনের "অন দ্য অরিজিন অফ স্পেশিস " নামে বইটি প্রকাশিত হয় ১৮৫৯ সালে। তিনি তার এই বইতে বিবর্তনবাদকে সংজ্ঞায়িত করতে গিয়ে বলেছেন, "এটি এমন একটি প্রক্রিয়া যাতে কোনো প্রাণী ক্রমাগত অভিযোজনের ফলে আপন পরিবেশের জন্যে বিশেষায়িত হতে হতে এক সময় নতুন একটি প্রাণীতে রূপান্তরিত হয় "। তার এই প্রক্রিয়াকে ইংরেজিতে বলা হয় ন্যাচারাল সিলেকশন বা প্রাকৃতিক নির্বাচন যার মাধ্যমে একটি প্রাণীর জনগোষ্ঠী থেকে নতুন প্রজাতির উদয় ঘটে। আধুনিক বিজ্ঞানের যতগুলো গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার তার অন্যতম ব্রিটিশ বিজ্ঞানী চার্লস ডারউইনের বিবর্তনবাদের তত্ত্ব। আসুন দেখি, পরিবর্তন বা বিবর্তন কি এবং এর ফলে কি এক প্রাণী বা প্রজাতি থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন আরেক এক প্রাণী বা প্রজাতি তৈরী হতে পারে কি?
পরিবর্তন এবং বিবর্তন কি?
পরিবর্তন একটি চলমান এবং প্রতিনিয়ত ঘটমান একটি প্রক্রিয়া। জীব মাত্রই পরিবর্তনশীল যার ফলে প্রতিনিয়ত তার আকার-আকৃতিতে পরিবর্তন ঘটে। তবে প্রতিটা জীবের মূল যে বৈশিষ্ট্য তা অনেকটাই ঠিক থাকে।
আর বিবর্তন বা অভিব্যক্তি হলো এমন একটি জীববৈজ্ঞানিক ধারণা যা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে জীবের গাঠনিক ও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের ক্রমপরির্তনকে বুঝায়। কোনো জীবের বংশধরদের মাঝে যে জিনরাশি ছড়িয়ে পড়ে তারাই বংশপ্রবাহে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য সৃষ্টি করে। জিনের পরিবর্তনের মাধ্যমে জীবের নির্দিষ্ট কোনো বংশধরে নতুন বৈশিষ্ট্যের উদ্ভব হতে পারে বা পুরনো বৈশিষ্ট্যের পরিবর্তন ঘটতে পারে।বিবর্তনের মূল ভিত্তি হচ্ছে বংশপরম্পরায় জিনের সঞ্চারণ। যা একটি জীবের বংশগতভাবে প্রাপ্ত বৈশিষ্ট্যগুলোর জন্য দায়ী, তা-ই জিন। যদিও একটি প্রজন্মে জীবের বৈশিষ্ট্যের যে পরিবর্তন সাধিত হয়, তা খুবই সামান্য।
মানুষ সৃষ্টি সম্পর্কে বিবর্তনবাদ তত্ত্ব কি বলে -
ব্রিটিশ বিজ্ঞানী চার্লস ডারউইনের বিবর্তনবাদের তত্ত্ব বলছে যে, মানুষ আর পথিবীর বুকে চড়ে বেড়ানো অন্যান্য বাদঁর কিংবা বন-মানুষেরা অনেক অনেককাল আগে একই পূর্বপুরুষ থেকে উদ্ভুত হয়ে বিবর্তিত হয়েছে এবং আলাদা আলাদা ধারা বা লিনিয়েজ তৈরি করেছে। সে হিসেবে আমরা আধুনিক বানরগুলোর সাথে সম্পর্কযুক্ত হলেও সরাসরি উত্তরসূরী নই। আমরা আসলে এসেছি বহুদিন আগে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া এক ধরনের সাধারণ পূর্বপুরুষ হিসেবে কথিত এপ / প্রাইমেট থেকে। (সহজ করে বলতে গেলে, মানুষ প্রথমে মানুষ হিসাবে সৃষ্টি বা তৈরী হয়নি। সে অন্য প্রাণী থেকে পরিবর্তীত হতে হতে মানুষ হিসাবে যাত্রা শুরু করেছে বা মানুষ হয়েছে। তবে বানর থেকে পরিবর্তীত হয়ে মানুষ হয়েছে এটা তারা যেমন মানেন না, আবার তেমনি সঠিকভাবে কোন প্রাণী থেকে পরিবর্তীত হয়ে মানুষ হয়েছে এ ব্যাপারেও তাদের কাছে সঠিক ধারনা নেই )।
এখন আমরা দেখি মানুষ সৃষ্টি সম্পর্কে ইসলাম ধর্মে কি বলে -
মহান আল্লাহ পাক রাববুল আলামিন এই পৃথিবীতে প্রায় ১৮,০০০ মাখলুকাত সৃষ্টি করেছেন ।আর এই সকল সৃষ্টির মাঝে শ্রেষ্ট হল মানুষ। মানুষকে আল্লাহ পাক তৈরী করেছেন সুন্দর আকার এবং আকৃতিতে আর তাকে দিয়েছেন চিন্তা করার এবং স্বাধীন ভাবে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা ।এই চিন্তা করার এবং স্বাধীন ভাবে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা আল্লাহ পাক তার আর কোন সৃষ্টিকে দেননি ।মহান আল্লাহ পাক পবিত্র কোরআনে মানুষ সৃষ্টি সম্পর্কে বলেন - "নিশ্চয় আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি মিলিত শুক্রবিন্দু হতে, যাতে আমি তাকে পরীক্ষা করি, এই জন্য আমি তাকে করেছি শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন" (সুরা আল ইনসান -আয়াত- ২ )।
মানুষ সৃষ্টি সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ আরো বলেন-"হে লোকসকল! যদি তোমরা পুনরুত্থানের ব্যাপারে সন্দিগ্ধ হও, তবে (ভেবে দেখ-) আমি তোমাদেরকে মৃত্তিকা থেকে সৃষ্টি করেছি। এরপর বীর্য থেকে, এরপর জমাট রক্ত থেকে, এরপর পূর্ণাকৃতিবিশিষ্ট ও অপূর্ণাকৃতিবিশিষ্ট মাংসপিন্ড থেকে, তোমাদের কাছে ব্যক্ত করার জন্যে। আর আমি এক নির্দিষ্ট কালের জন্যে মাতৃগর্ভে যা ইচ্ছা রেখে দেই, এরপর আমি তোমাদেরকে শিশু অবস্থায় বের করি; তারপর যাতে তোমরা যৌবনে পদার্পণ কর। তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ মৃত্যুমুখে পতিত হয় এবং তোমাদের মধ্যে কাউকে নিষ্কর্মা বয়স পর্যন্ত পৌছানো হয়, যাতে সে জানার পর জ্ঞাত বিষয় সম্পর্কে সজ্ঞান থাকে না। তুমি ভূমিকে পতিত দেখতে পাও, অতঃপর আমি যখন তাতে বৃষ্টি বর্ষণ করি, তখন তা সতেজ ও স্ফীত হয়ে যায় এবং সর্বপ্রকার সুদৃশ্য উদ্ভিদ উৎপন্ন করে"। (সূরা হজ্জ - আয়াত ৫)।
পৃথিবীর সব কিছু সৃষ্টির মূল উপাদান পানি। এই মৌলিক উপাদান পৃথিবীর সব জীবদেহের মধ্যে বিদ্যমান।পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন -"অতএব, মানুষের দেখা উচিত কি বস্তু থেকে সে সৃজিত হয়েছে। সে সৃজিত হয়েছে সবেগে স্খলিত পানি থেকে। এটা নির্গত হয় মেরুদন্ড ও বক্ষপাজরের মধ্য থেকে"। (সূরা তারিক - আয়াত ৫-৭)।
এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ আরো বলেন, "আর প্রাণবান সমস্ত কিছু সৃষ্টি করলাম পানি থেকে" (সুরা আম্বিয়া, আয়াত - ৩০)। পবিত্র কোরআনে আরো বলেন "অতঃপর তিনি তার বংশধর সৃষ্টি করেছেন তুচ্ছ পানির নির্যাস থেকে"। (সুরা আস সাজদাহ -আয়াত ৮)।
জীববিজ্ঞানের মতে, সাগরের অভ্যন্তরের পানিতে যে প্রটোপ্লাজম বা জীবনের আদিম মূলীভূত উপাদান রয়েছে তা থেকেই সব জীবের সৃষ্টি। আবার সব জীবদেহ কোষ দ্বারা গঠিত। আর এই কোষ গঠনের মূল উপাদান হচ্ছে পানি। ভিন্নমতে, পানি অর্থ শুক্র বা বীর্য।
আসুন আমরা দেখি মানুষ সৃষ্টি সম্পর্কে বিজ্ঞান কি বলে -
ছবি - webneel.com
সাধারনভাবে আমরা দেখি যে, নর-নারীর যৌন মিলনের ফলে মানুষের জন্ম বা মানব সন্তানের জন্ম। মানব সন্তানের জন্মের জন্য নারীর ডিম্বাণু এবং পুরুষের শুক্রাণুর প্রয়োজন হয়। তার মানে হল - নারীর ডিম্বাণু এবং পুরুষের শুক্রাণু মিলেই মানব শিশুর জন্ম হয়।মানব জন্ম অর্থ্যাৎ মানব ভ্রুন সম্পর্কে বিজ্ঞানের যে শাখায় আলোচনা করা হয় তাকে (Embryology) বা ভ্রূণতত্ত্ব বলে। আল কুরআন এবং হাদীসে ভ্রূণতত্ত্ব সম্পর্কিত বর্ণনাগুলোকে একত্রিত করে ইংরেজীতে অনুবাদের পর কানাডার টরেন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের ভ্রূণতত্ত্ব বিভাগের চেয়ারম্যান এবং আধুনিক ভ্রূণতত্ত্বের বিখ্যাত বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডঃ কিথ মুরকে সেগুলোর ব্যাপারে মন্তব্য করতে বলা হয়। ডঃ মুর ভালভাবে সেগুলো অধ্যায়নের পর বলেন, "কুরআন ও বিশুদ্ধ হাদীসে ভ্রূণতত্ত্ব (মানব জন্ম) সম্পর্কে যা এসেছে, ভ্রূণবিদ্যার ক্ষেত্রে আবিষ্কৃত বৈজ্ঞানিক তথ্যের সাথে সেগুলোর অধিকাংশের পূর্ণ মিল রয়েছে, কোন অমিল বা বৈসাদৃশ্য নেই।(Keith L. Moore) -
https://en.wikipedia.org/
ডঃ কিথ মুর কুরআন নিয়ে রিসার্চ করার পূর্বে 'The Developing Human' নামক একটা বই লিখেছিলেন। কিন্তু কুরআন থেকে জ্ঞান সংগ্রহের পরপরই তিনি তার ঐ বইয়ের ৩য় সংস্করণ প্রকাশ করেন। বইটি একক লেখকের সর্বোত্তম চিকিৎসা বই হিসেবে পুরষ্কার লাভ করে। বইটি বিশ্বের অনেক ভাষায় অনূদিত হয়েছে এবং ১ম বর্ষের মেডিকেল কলেজের ছাত্রদের জন্য ভ্রূণবিদ্যায় পাঠ্যবই হিসেবে গৃহীত হয়েছে। ভ্রুণবিদ্যা সম্পর্কিত কুরআনের তথ্যগুলো ডঃ কিথ মুরকে এতটাই অভিভূত করেছিল যে, অমুসলিম হয়েও দাম্মামে অনুষ্ঠিত একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে তিনি কুরআনকে " সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত " বলে স্বীকার করে নিয়েছিলেন!
ছবি - webneel.com
নর-নারীর যৌন মিলন ছাড়াও মানব সন্তানের জন্ম দেবার আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি আবিষ্কার করেছে বিজ্ঞান। বিজ্ঞান আবিষ্কার করেছে " টেস্ট টিউব বেবি" কৃত্রিম উপায়ে জন্ম দেওয়া কোনো শিশু । এ কৌশলের একটি হচ্ছে আইভিএফ। এ পদ্ধতিতে স্ত্রীর পরিণত ডিম্বাণু ল্যাপারেস্কোপিক পদ্ধতিতে অত্যন্ত সন্তর্পণে বের করে আনা হয়। তার পর সেটিকে প্রক্রিয়াজাতকরণের পর ল্যাবে সংরক্ষণ করা হয়।একই সময়ে স্বামীর অসংখ্য শুক্রাণু সংগ্রহ করে তা থেকে ল্যাবে বিশেষ প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে বেছে নেওয়া হয় সবচেয়ে ভালো জাতের একঝাঁক শুক্রাণু।এই ডিম্বাণু ও শুক্রাণুকে সংরক্ষণ করা হয় মাতৃগর্ভের পরিবেশ অনুরূপ একটি ইনকিউবিটরে।টেস্ট টিউব বেবির ক্ষেত্রে স্ত্রীর ডিম্বাণু ও স্বামীর শুক্রাণু সংগ্রহ করে সেটি একটি বিশেষ পাত্রে রেখে বিশেষ যন্ত্রের মধ্যে সংরক্ষণ করা হয় নিষিক্তকরণের জন্য।নিষিক্তকরণের পর সৃষ্ট ভ্রূণকে স্ত্রীর জরায়ুতে সংস্থাপন করা হয়। পুরো প্রক্রিয়ায় সময় লাগে ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা। সূচনার এই সময়টুকু ছাড়া বাকি সময়টাতে শিশু একদম স্বাভাবিক গর্ভাবস্থার মতোই মাতৃগর্ভে বেড়ে ওঠে। তার মানে হল - এখানেও নর-নারীর মিলন ছাড়া মানব শিশুর জন্ম হয়নি।
মানব সন্তানের জন্ম দেবার আধুনিক আরেকটি পদ্ধতিতে আবিষ্কার করেছে বিজ্ঞান এবং তা হল " মানব ক্লোন "।মানব ক্লোনিং হলো একটি মানুষের জেনেটিক্যালি হুবহু প্রতিকৃতি তৈরি করা। মোটকথা,কৃত্রিমভাবে একটি মানুষ তৈরি করা। মানব ক্লোনিং খুবই জটিল এবং ব্যয়বহুল প্রক্রিয়া । বিজ্ঞানীদের অনেক দিনের গবেষনার ফল হলো এই ক্লোনিং। এই ক্লোন পদ্ধতিতে সন্তান জন্ম দিতে গেলেও পুরুষের জীব কোষের বা শুক্রাণু ও নারীর ডিম্বাণুর প্রয়োজন। অর্থাৎ একজন পুরুষের জীব কোষ বা শুক্রাণু ব্যতীত একজন নারী সন্তান জন্ম দানে অক্ষম। কেননা নারীর ডিম্বাণু ক্রোমোসোম (XX) এবং পুরুষের শুক্রাণু ক্রোমোসোম (XY) পুত্র-কন্যা সন্তান গঠনে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
যদিও বর্তমানে পৃথিবীর প্রায় সব উন্নত দেশেই ভবিষ্যত প্রজন্মকে ক্ষতিকর প্রভাব হতে রক্ষা ও মানব জাতির কল্যাণের জন্য মানব ক্লোনিং নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে এর পর ও কোন কোন দেশ বা সংস্থা গোপনে এটি পরিচালনা করছে বলে শোনা যায়। এর মাধমে বিখ্যাত বা কুখ্যাত কোন মৃত বা জীবিত ব্যক্তিকে পুনরায় সৃষ্টি করা হতে পারে বা বিকলাঙ্গ শিশু তৈরি হতে পারে এমন আশঙ্কা করেন অধিকাংশ বিজ্ঞানী।তবে,চাইলেই যে মানব ক্লোনিং করে যে কারো পুনর্জন্ম ঘটানো সম্ভব তা কিন্তু নয়। এক্ষেত্রে অনেক কিছু মাথায় রাখতে হবে। প্রথম ক্লোন ভেড়া জন্মগ্রহণ করার আগে ২৭৬ টি ভ্রুনের মৃত্যু ঘটে। এখন যদি মানব ক্লোনিং করা হয় তবে অবশ্যই কিছু না কিছু অপরিপক্ব শিশু ভ্রুণ মারা যাবে যা মানবিক দিক দিয়ে কখনো এটাকে সমর্থন করা যায় না। পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই ভ্রুণ হত্যা একটি মারাত্মক অপরাধ। তবে,যে কেউ চাইলেই তার নিজের পছন্দসই প্রাণীর ক্লোন করিয়ে নিতে পারে। এক্ষেত্রে, এটি খুবই ব্যয়বহুল।আর তাই এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, পৃথিবীর নানা দেশে মানব ক্লোনিং সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। সেন্টার ফর জেনেটিক্স অ্যান্ড সোসাইটির মতে, বিশ্বের ৪৬ টি দেশে ক্লোনিং নিষিদ্ধ, এবং ৩২ টি দেশে রি-প্রোডাক্টিভ ক্লোনিং (মানব ক্লোনিং) সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তবে, চিকিৎসা ক্ষেত্রে ক্লোনিং এখনো নিষিদ্ধ হয় নি। যুক্তরাষ্টের ১৫ টি রাজ্যে ক্লোনিংয়ের মাধ্যমে কোনো কিছু জন্মদান সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ, এবং ৩ টি রাজ্যে সরকারী অর্থায়নে এটি নিষিদ্ধ।
আর এত সব আলোচনা থেকে যা দাড়ায়,তার মানে হল - ধর্ম এবং আধুনিক বিজ্ঞানের মতে,নারী-পুরুষের (নারীর ডিম্বাণু এবং পুরুষের শুক্রাণু) মিলনের ফলেই মানব শিশুর জন্ম বা মানুষের জন্ম হয়েছে।এ ছাড়া আর কোন ভাবেই মানুষ জন্ম নিতে পারেনা বা সম্ভব না।
বিজ্ঞানের দাবী কে সত্য হিসাবে ধরে অনেকেই একটি প্রশ্ন করেন বা মনে প্রশ্ন জাগে, " যদি নারী-পুরুষের মিলনের ফলেই সকল মানুষের জন্ম হয় তাহলে সকল ধর্মমতেই যদি আদম (আঃ) আদি ও প্রথম মানব ও হাওয়া (আঃ) আদি মানবী হয় তবে হযরত আদম (আঃ) ও হযরত হাওয়া (আঃ) এবং হযরত ঈসা (আঃ) কি থেকে বা কিভবে সৃষ্টি হয়েছেন" ? (কারন,ধর্ম মতে আদি ও প্রথম মানব আদম (আঃ) ও হাওয়া (আঃ) মা-বাবা ছাড়া সৃষ্টি হয়েছেন এবং ঈসা (আঃ) বাবা ব্যতীত মার্তৃগভে জন্ম নিয়েছেন )।
আদি মানব আদম (আঃ) কি থেকে সৃষ্টি?
এখানে প্রশ্ন " আদম (আঃ) যদি প্রথম মানুষ হবে, তাহলে তাঁর কি পিতা-মাতা নেই? অথবা পৃথিবীতে তাঁর উদ্ভব কিভাবে হলো? মূল প্রশ্ন হলো - পৃথিবীতে প্রথম মানুষের পদযাত্রা শুরু হলো কিভাবে"?
এ সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ এই প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন এভাবে - "যিনি তাঁর প্রত্যেকটি সৃষ্টিকে সুন্দর করেছেন এবং কাদামাটি থেকে মানব সৃষ্টির সূচনা করেছেন"।(সুরা আস সাজদাহ - আয়াত - ৭)।
আল্লাহ আরো বলেন - "আপনি তাদেরকে (মানুষকে) জিজ্ঞেস করুন, তাদেরকে সৃষ্টি করা কঠিনতর, না আমি অন্য যা সৃষ্টি করেছি? আমিই তাদেরকে সৃষ্টি করেছি এঁটেল মাটি থেকে"। (সুরা সফফাত - আয়াত ১১)।
আল্লাহ আরো বলেন," তিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন পোড়া মাটির ন্যায় শুষ্ক মৃত্তিকা থেকে। (সূরা আর রাহমান,আয়াত - ১৪)।
স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন আসে, হযরত আদম (আঃ) মাটি থেকে সৃষ্টি, কিন্তু মা হাওয়া (আঃ) কি দিয়ে সৃষ্টি?
কারণ, আল কুরআনে বলা হয়েছে, - এক পুরুষ এবং এক নারী থেকে আমাদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে। কিন্তু আদম (আঃ) যখন একা ছিলেন, তখন হাওয়াকে কিভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে? এ সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে,"তিনি সৃষ্টি করেছেন তোমাদেরকে একই ব্যক্তি থেকে। অতঃপর তা থেকে তার যুগল সৃষ্টি করেছেন"। (সুরা যুমার -আয়াত ৬)।
কুরআনে আরো বলা হয়েছে -"মানব সমাজ! তোমরা তোমাদের পালনকর্তাকে ভয় কর, যিনি তোমাদেরকে এক ব্যক্তি থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং যিনি তার থেকে তার সঙ্গীনীকে সৃষ্টি করেছেন; আর বিস্তার করেছেন তাদের দু’জন থেকে অগণিত পুরুষ ও নারী"। (সুরা নিসা - আয়াত ১)।
আল কুরআনে আরো বলা হয়েছে-"এই যে, তিনি তোমাদের জন্যে তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের সংগিনীদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তিতে থাক এবং তিনি তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক সম্প্রীতি ও দয়া সৃষ্টি করেছেন"। (সুরা রূম -আয়াত ২১)।
এখন আমরা দেখি মানুষ সৃষ্টি সম্পর্কে বিবর্তনবাদ তত্ত্বের বিশ্লেষণ বা বিস্তাারিত -
ছবি - sachalayatan.com
বিবর্তনবাদ তত্ত্ব অনুসারে, কোনো প্রাণী ক্রমাগত অভিযোজনের ফলে আপন পরিবেশের জন্যে বিশেষায়িত হতে হতে এক সময় নতুন একটি প্রাণীতে রূপান্তরিত হয়। মানুষ সৃষ্টি হয়নি, বরং আজকের হোমো সেপিয়েন্স এ রুপ নিয়েছে মাত্র। বিবর্তন তত্ত্ব অনুযায়ী, মানুষ আর পৃথিবীতে বিদ্যমান অন্যান্য নরবানরেরা অনেককাল আগে একই পূর্বপুরুষ থেকে উদ্ভূত হয়ে বিবর্তিত হয়েছে এবং ভিন্ন উৎসজাত অন্যান্য শাখাগুলো থেকে অতীতে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার পর বর্তমানে বিদ্যমান শিম্পাঞ্জি ও গরিলা থেকে আলাদা ধারা বা বংশানুক্রম তৈরি করেছে। অর্থ্যাৎ বানর জাতীয় কোন সাধারণ পুর্বপুরুষ থেকেই মানুষের জন্ম হয়েছে।
আমরা যদি এভাবে দেখি ," এখানে বানর জাতীয়" বলতে প্রাইমেট বুঝানো হচ্ছে বা হয়েছে , মাঙ্কি (বানর) নয়। শুধু মানুষই নয়, শিম্পাঞ্জি, গরিলা এবং ওরাংওটাং-এর মতো প্রাণীকূলেরও উদ্ভব ঘটেছে সেই একই সাধারণ পূর্বপুরুষ (common ancestor) থেকে। তার মানে দাড়াল,একসময় তাদের সবার (মানুষ-বানর-গরিলা-শিম্পাঞ্জি-ওরাংওটাং) এক কমন (সাধারণ) পূর্বপুরুষ ছিলো। সহজ ভাবে বললে এরা সবাই একই পূর্বপূরুষ থেকে উদ্ভুত হয়েছে।
এখানে মূল প্রশ্ন হচ্ছে, আমরা 'বানর' বলতে ঠিক কি বুঝব। যারা এ প্রশ্নটি করেন তাদের অনেকেই ভুলভাবে ভেবে থাকেন যে, জঙ্গলে গাছের ডালে কিংবা চিড়িয়াখানায় খাঁচার রডে ঝুলে থাকা আধুনিক বাদঁর (মাঙ্কি) বা শিম্পাঞ্জিগুলো থেকেই বুঝি মানুষের উদ্ভব হয়েছে। আসলে ব্যাপারটা তা নয়। বিবর্তন তত্ত্ব বলছে যে, মানুষ আর পথিবীর বুকে চড়ে বেড়ানো অন্যান্য বাদঁর কিংবা বনমানুষেরা অনেক অনেককাল আগে একই পূর্বপুরুষ থেকে উদ্ভুত হয়ে বিবর্তিত হয়েছে এবং আলাদা আলাদা ধারা বা লিনিয়েজ তৈরি করেছে। সে হিসেবে আমরা আধুনিক বানরগুলোর সাথে সম্পর্কযুক্ত হলেও সরাসরি উত্তরসূরী নই। আমরা আসলে এসেছি বহুদিন আগে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া এক ধরনের সাধারণ পূর্বপুরুষ হিসেবে কথিত প্রাইমেট থেকে।
ছবি - ডারউইন ও তার বিবর্তনবাদের তত্ত্ব নিয়ে ফরাসী একটি ম্যাগাজিনে কার্টুন।
প্রায় ১৬৪ বছর (১৮৫৯ - ২০২৩) আগে যখন চার্লস ডারউইন প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে বিবর্তন তত্ত্ব সম্পর্কে বলেছিলেন, তখনকার সময় থেকে এখন পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা এর পক্ষে-বিপক্ষে তীব্র তর্ক-বিতর্ক করেছিলেন এবং করছেন। খোদ চার্লস ডারউইনকেও তার বিবর্তনবাদের তত্ত্বকে নিয়ে কথা বলার জন্য নানা ভাবে ও নানা জায়গায় বিপদে পড়তে হয়েছিল, তাঁকে নিয়ে বানরের আদলে ব্যাঙ্গাত্মক কার্টুন আঁকা হয়েছিল। আরও শুনতে হয়েছিল তার দাদা এবং দাদীর মধ্যে কে বানর ছিলেন?
তবে সময়ের সাথে সাথে এবং ধীরে ধীরে জীবাশ্মবিদ্যা, জেনেটিক্স, প্রাণীবিদ্যা, আণবিক জীববিজ্ঞান এবং বিজ্ঞানের অন্যান্য ক্ষেত্রের ব্যাপক প্রমাণ ধীরে ধীরে যুক্তিসঙ্গত ভাবে বিবর্তনের ধারনাকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। আজ বিবর্তনের সেই ধারনা বিজ্ঞানের প্রায় সর্বত্র জয়লাভ করেছে তবে একমাত্র সাধারন মানুষ তথা জনসাধারণের মন ছাড়া। এটা ঠিক যে,একবিংশ শতাব্দীতে এসেও এবং বিজ্ঞানের সর্বোচ্চ উৎকর্ষতার মাঝেও বিশ্বের সবচেয়ে বৈজ্ঞানিকভাবে উন্নত জাতির মধ্যেও এ বিশ্বাস প্রবল যে সৃষ্টিকর্তা মানুষ সৃষ্টি করেছেন এবং এখনও সকল সাধারন মানুষ ,এলিট, রাজনীতিবিদ, বিচারক তথা প্রায় সকল নাগরিকরা এটা বিশ্বাস করেন যে ,বিবর্তন একটি ত্রুটিপূর্ণ ধারনা এবং দুর্বলভাবে সমর্থিত কিছু মানুষের কল্পনা। এখনো বিজ্ঞানের ক্লাসরুমেও সচেতনভাবে বিবর্তনের বিষয়টা এড়িয়ে যাওয়া হয়।কারন,এটা একটা বিতর্কিত এবং অপ্রমাণীত বিষয়।
সাধারন মানুষের নিকট বিবর্তন তত্ত্বের বিরোধিতা একটি ধর্মীয় বিশ্বাসগত বিষয় অথবা বৈজ্ঞানিক অবস্থান, যাতে মানুষের উদ্ভবের ও বিকাশের বিবর্তন তত্ত্ব কে অস্বীকার করে। বিবর্তনবাদের ধারণা ঊনিশ শতকে দৃষ্টিগোচর হওয়ার পর বিজ্ঞানী, ধর্মতত্ববিদ এবং সাধারণ মানুষ স্ব স্ব দৃষ্টিকোণ থেকে এ তত্ত্বের বিরোধিতা শুরু করে। অধিকাংশ মানুষ পৃথিবীতে মানুষের আবির্ভাবকে ঈশ্বরের সিদ্ধান্ত ও অবদান বলে বিশ্বাস করে। এ বিশ্বাস দুনিয়ায় প্রচলিত সকল ধর্মগ্রন্থে সমর্থিত। বিবর্তনের মাধ্যমে মানুষের উদ্ভবের তত্ত্ব সাধারন মানুষের সাথে সাথে বৈজ্ঞানিকদের ও প্রবল বিরোধিতারও সম্মুখীন হয় কারণ বিবর্তনবাদের বয়ান যৌক্তিক প্রতীয়মান হলেও এ মতবাদ প্রমাণ করা কোন ভাবেই সম্ভব ছিল না।
আমাদের দেশেও পাঠ্যপুস্তকে এ বিষয়ের অন্তর্ভুক্তির পর পরই এর পক্ষে বিপক্ষে নানা আলোচনা সমালোচনা হচছে।**পাঠ্যপুস্তক থেকে ‘বিবর্তনবাদ’ শিক্ষা বাতিলের দাবি কেন তুলেছি?(দৈনিক ইনকিলাব,১৯ জানুয়ারি ২০২৩)- https://m.dailyinqilab.com/article/233358/ ,যে কোন বিষয়েই যখন আলোচনা-সমালোচনা-বিতর্ক হয় তখনই মানুষ সেই বিষয় সম্পর্কে বিশদভাবে জানতে-বুঝতে পারে। আর জানা-বুঝার জন্য এই ( আলোচনা-সমালোচনা-বিতর্ক) আদর্শ পথ । এ থেকেই সবচেয়ে ভালভাবে আলোচ্য বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্তে আসা সহজ হয়। যে কোন বিষয়ের যেমন দুটি দিক (ভাল-খারাপ) থাকে ঠিক তেমনি আলোচ্য বিষয়েরও দুটি দিক আছে । আলোচনা-সমালোচনা থেকে সবাই যার যার বিবেক-বুদ্ধি প্রয়োগ করে সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারবে বলেই আমার বিশ্বাস
** পাঠ্যপুস্তক থেকে ডারউইনের ‘বিবর্তনবাদ’ বাদ দিতে হবে - বাবুনগরী,(দৈনিক যুগান্তর ১২ জুলাই ২০১৯, - https://www.jugantor.com/politics/198465/
পরিশেষ -
একবার অক্সফোর্ডে ব্রিটিশ এসোসিয়েশনের সম্মেলনে বিবর্তনের তীব্র বিরোধিতাকারী খ্রিষ্টান ধর্ম বিশপ স্যামুয়েল উইলবারফোর্স ডারউইনের তত্ত্বকে ঈশ্বরবিরোধী ব্যক্তিগত মতামত বলে আক্রমণ করেন। তখনই তিনি হঠাৎ করে সভায় উপস্থিত বিজ্ঞানী হাক্সলিকে উদ্দেশ্য করে জানতে চান তার দাদা এবং দাদীর মধ্যে কে আসলে বানর ছিলেন। তারই উত্তরে হাক্সলি বিবর্তনবাদের পক্ষে বিভিন্ন যুক্তি তুলে ধরেন এবং বক্তৃতার শেষে এসে তিনি এও বলেন যে,"যে ব্যক্তি তার মেধা, বুদ্ধিবৃত্তিক অর্জন ও বাগ্মিতাকে কুসংস্কার ও মিথ্যার পদতলে বলি দিয়ে বৌদ্ধিক বেশ্যাবৃত্তি করে, তার উত্তরসুরী না হয়ে আমি বরং সেইসব নিরীহ প্রাণীদের উত্তরসুরী হতে চাইবো যারা গাছে গাছে বাস করে, যারা কিচিরমিচির করে ডাল থেকে ডালে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ায়"।
এখানে, বিজ্ঞানী হাক্সলি তার পছন্দ বা চাওয়াকে গুরুত্ব দিয়েছেন ও বেছে নিয়েছেন। আর বাকী সবাইও যার যার পছন্দ অনুসারে এর পক্ষ কিংবা বিপক্ষকে বেছে নিবে। তবে যার যাই মতামত (পক্ষ কিংবা বিপক্ষ) হোক না কেন, তা হতে হবে গঠনমূলক ও যুক্তি তর্কের উপর। জোর জবরদস্তির মাধ্যমে নয়। আর এর ফলেই সত্য প্রতিষ্ঠিত হবে এবং এটাই সঠিক পথ।
================================================
প্রাসংগিক লেখা-
১। মানব জীবন - ১ মানুষের জন্ম প্রক্রিয়ার ইতিকথা - Click This Link
২।" ডারউইনের বিবর্তনবাদ " - কৌতুহল ও ফিরে দেখা - ১। মানুষ কি এপ-প্রাইমেট (বানর) থেকে এসেছে বা পৃথিবীতে মানুষের শুরু কিভাবে হয়েছে? এ ব্যাপারে ধর্ম ও বিজ্ঞানেরই বা কি অভিমত ? - Click This Link
৩।" ডারউইনের বিবর্তনবাদ " - কৌতুহল ও ফিরে দেখা - ২ । মানুষ কি এপ-প্রাইমেট (বানর) থেকে এসেছে বা পৃথিবীতে মানুষের শুরু কিভাবে হয়েছে? এ ব্যাপারে ধর্ম ও বিজ্ঞানেরই বা কি মত ? - Click This Link
=======
তথ্যসূত্র -
*উইকিপিডিয়া
*আল কোরআন,
** বিবর্তনের পথ ধরে, বন্যা আহমেদ, (পরিমার্জিত ও পরিবর্ধিত ২০০৮)। - https://thinkschool.org/uploads/ebooks/.pdf
*** Stringer, C and Andrews, P, The complete Wrold of Human Evolution, Thames and Hudson Ltd, London, 2005।
**** ড. ম. আখতারুজ্জামান, বিবর্তনবিদ্যা, বাংলা একাডেমী (১৯৯৮), ২য় সংস্করণ, হাসান বুক হাউস (২০০৪)।
**** Mark Isaak, The Counter-Creationism Handbook, University of California Press, 2007।
*****Dr. Keith Moore and the "Islamic Additions" - https://wikiislam.net/wiki/Dr._Keith_Moore
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ২:৩৭