ছবি - daily-bangladesh.com
বিশ্বাস ,ভালবাসা এবং সন্তুষ্টি খুবই ছোট তিনটি শব্দ কিন্তু মানুষের জীবনে এদের প্রভাব সীমাহীন।মানুষের পুরো জীবনই এই তিনটি শব্দকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হয়।যার বা যাদের জীবনে এই তিনটি শব্দের যথাযথ প্রয়োগ বা ব্যবহার হয় তার বা তাদের জীবনই হয়ে উঠে সুখ সাফল্যে ভরপুর।ক্ষুদ্র পরিসরের এক জীবন মানুষের।আর এই জীবনকে সুখী, সুন্দর ও সফল করার জন্য মানুষ কত কিছুই না করে বা করতে চেষ্টা করে ।অথচ এই ছোট তিনটি শব্দের (বিশ্বাস ,ভালবাসা,সন্তুষ্টি) চর্চাই মানুষের জীবনকে সুখী ও সফল করে তুলতে পারে যে কোন অবস্থায় ও পরিস্থিতিতে।
একটুকরা বরফকে প্রশ্ন করা হলো, " তুমি এত ঠান্ডা কেন"?
বরফ উত্তর দিল," আমার অতীত জল (পানি),আমার ভবিষ্যতও জল (পানি)। তাহলে আমার জীবনে গরমের (অহংকার) কি কোন স্থান আছে ? অথচ, পৃথিবী সৃষ্টির মূলেই আছে পানি (বরফ) ও পানি ছাড়া এই পৃথিবীর কোন কিছুরই সৃষ্টি বা বেঁচে থাকা সম্ভব না এবং পানির কোন নির্দিষ্ট আকার-আকৃতি নেই ও যে পাত্রে বা যেখানে রাখা হয় সেই পাত্রের আকার ধারন করে (নমনীয় বা সহজবশ্য )।
ছবি - transcendantal.blogspot.com
আমাদের মানুষের জীবনও পানির মতই হওয়া উচিত।কারন,আমাদের জীবনে অহংকার করার মত আছেই বা কি ? আমরা সবাই এ দুনিয়াতে খালি হাতে এবং নাংগা (উলংগ বা ন্যাংটা) অবস্থায় এসেছি এবং এ দুনিয়া যখন ছেড়ে যাব তখনও খালি হাতেই এবং নাংগা হয়েই যাব (যদিও যাওয়ার সময় তিন টুকরা কাপড় দিয়ে ঢেকে দিবে যা শুধু লজ্জা নিবারনের জন্য)। তার মানে ,মানুষের অবস্থাও পানির মত একই রকম।মানুষের অতীত খালি (হাত) এবং ভবিষ্যতও খালি (হাত)।এই আসা-যাওয়ার পথে এবং সময়ে কিছুটা সময় নিজের মত করে কাটানো যায় এটা সত্য তবে আবার এটাও সত্যি যে, কোন কিছুই এ দুনিয়া থেকে নিজের করে নিজের মত করে নিয়ে যাওয়া যায়না। তাইতো গীতিকার লিখেছেন," ঘণ্টা (খালি) লেকে আয়া তু ঘণ্টা (খালি) লেকে যায়েগা " (খালি হাতে এসেছেন আপনি,খালি হাতেই যাবেন) ।এই আসা-যাওয়ার ক্ষেত্রে সকল দল-মত-ধর্ম-ধনী-গরীব নিবিশেষে সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের একই অবস্থা। তাহলে মানুষের কিসের এত অহংকার? এই আসা-যাওয়ার মাঝে সৃষ্টিকর্তা মানুষে মানুষে কোন ভেদাভেদ (পার্থক্য) রাখেন নি বা করেন নি অথচ আমরা মানুষ, মানুষে মানুষে নানা রকম শ্রেণীভেদ (পার্থক্য) তৈরী করি এবং সেভাবে মানুষকে বিচার করতে চেষ্টা করি।
ছবি - bengal95.com
মানুষের একজীবনে চলার পথে কিছু কিছু বিষয়ে যেখানে মানুষে-মানুষে যতই বিভাজন তৈরী করিনা কেন কিন্তু প্রকৃতি বা সৃষ্টিকর্তা কিভাবে যেন সব কিছুতে মিল বা ভারসাম্য রক্ষা করে রেখেছেন আমাদের অজান্তে।
১। আমরা ধর্মীয় ভাবে মানুষে মানুষে বিভাজিত অথচ যদি ধর্মীয় প্রতিকগুলির দিকে দেখি তাহলে দেখব MASJID এ যেমন ছয়টি অক্ষর আছে তেমনি TEMPLE এবং CHURCH এও ঠিক ততটাই অক্ষর আছে যতটা আছে মসজিদে। মানে হল, আমরা যদিও মানুষে মানুষে বিভাজন (ধর্মীয়) করি তবে অদৃশ্য কেউ একজন সবকিছুতেই সমতা বিরাজ করে রেখেছেন।যেখানে মানুষে মানুষে কোন ভেদাভেদ নেই।আর সকল ধর্মের মূল বিষয়ই হল,"অহিংসা ও মানবপ্রেম"।
২। আবার,QURAN এ যেমন যেমন পাঁচটি অক্ষর আছে তেমনি GEETA এবং BIBLE এও ঠিক ততটাই অক্ষর আছে যতটা আছে QURAN এ।এখানেও অদৃশ্য একজনের ইশারায় সবকিছুতেই সমতা বিরাজমান করে রেখেছেন।
৩। মানব জীবনে ভালবাসা এবং ঘৃণা এই দুটি শব্দের প্রভাব বলে শেষ করা যায়না। ভালবাসা যেমন দুনিয়া এবং জীবনকে করে তুলতে পারে রংঙীন ও সাফল্যময় ঠিক তেমনি ঘৃণা এ দুনিয়াকে এবং দুনিয়ার সবকিছুকে ধ্বংস করার জন্য যথেষ্ট। এখানে LOVE (ভালবাসা) লিখতে যে কয়টা অক্ষর দরকার ঠিক তেমনি HATE ( ঘৃণা ) তেও একই।এখানেও রয়েছে বিস্ময়কর মিল।তা কি শুধু কাকতালীয়?
৪। আবার ,LIFE (জীবন) এ যেমন আছে চারটি অক্ষর তেমনি DEAD (মরণ) এও ঠি তাই।এ কিসের ইংগিত?(জীবন+মরণ)= খালি হাত নয় কি?
ছবি - newmuslim.net
৫। আশা - সন্তুষ্টি জীবনের ইতিবাচক দিক । এই গুনগুলিই মানুষকে জীবনে এগিয়ে চলতে সাহায্য করে।আবার নিরাশা-অসন্তুষ্টি মানুষের জীবনকে করে তোলে ব্যর্থ ।আর তাই POSITIVE (ইতিবাচক) এর দিকে যদি নজর দেই তাহলে যতটা অক্ষর দেখব তাহলে কাকতালীয় ভাবে NEGATIVE (নেতিবাচক) এও তাই দেখব।
৬। সাফল্য-ব্যর্থতা জীবনের ই অংশ। এই সাফল্য-ব্যর্থতার দিকে যদি দেখি তাহলে ,SUCCESS (সফলতা) যে কয়টা অক্ষর আছে তাহলে দেখব FAILURE (ব্যর্থতা) এর থেকে কম-বেশী কিছু নেই। এখানেও সমানে সমান।
৭। মানুষের জীবনকে আমরা ধনী-গরীব,উপর-নীচ ভেদাভেদ করি বা বিচার করি। তবে যদি আমরা এ দিকেও দেখি BELOW (নীচ) এবং ABOVE (উপরে) কোন প্রার্থক্য খুজে পাবোনা ।উভয়ের মাঝেই পাঁচটি করে অক্ষর বিরাজমান।তাহলে আমরা কেন তৈরী করি মানুষে মানুষে এত ভেদাভেদ ?
৮। মানুষের জীবনে সুখ-দুঃখ ওতপ্রোতভাবে জড়িত।এ দুটি আছে বলেই মানুষের জীবন এত সুন্দর ও বৈচিত্রময়। সুখ-দুঃখ (আনন্দ-কান্না) তেও যদি দেখি তাহলে দেখব JOY (আনন্দ) তে যতগুলি অক্ষরের অবস্থান CRY(কান্না) তেও একই।তাহলে এর মানে কি দাড়াচছে ?চিন্তা করার অবকাশ কি আমাদের আছে?
৯। আবার, ANGER (রাগ) এ যে কয়টা অক্ষর HAPPY(সুখী) তেও তাই খুজে পাব আমরা যদি খুজতে চাই সঠিক ভাবে ও পথে।
১০। মানুষের জীবনে ভূল-সঠিক এ দুইটি জিনিষের অবস্থান অনেক বেশী। মানুষ তার সারা জীবনে যা করে তা এ দুইয়েরই সমষ্ঠি।এখন যদি RIGHT ( ঠিক - সঠিক ) এর দিকে দেখি তাহলে দেখব WRONG (ভূল - বেঠিক) কেও সমান সমান অক্ষরের অবস্থান।
১১। মানুষ সমাজে বরাবরই দু শ্রেণীতে বিরাজমান (মানুষের তৈরী) তবে অদৃশ্য কেউ এখানে সমতা বিরাজমান করে রেখেছেন RICH (ধনী) এবং POOR (দরিদ্র) এর মাঝে।
১২। দুনিয়ার প্রতিটা মানুষই সফল হতে চায় এবং তার জন্য তার প্রচেষ্টার কোন কম থাকেনা । তারপরও সবাই সফল হয়না কেউ কেউ ব্যর্থও হয়। এখানেও যদি আমরা দেখি তাহলে PASS (সফল) এবং FAIL (ব্যর্থ) তেও কোন প্রার্থক্য খুজে পাবনা।
ছবি - es.dreamstime.com
মানুষের অল্প সময়ের এক জীবন। এই অল্প সময়ের জীবন সুখী, সুন্দর ও সফল করার জন্য বা ভাল ভাবে বেঁচে থাকার জন্য খুব বেশী কিছু প্রয়োজন হয়না। স্রষ্টায় তথা স্রষ্টার উপর বিশ্বাস রেখে,তার সৃষ্টিকে ভালবেসে এবং জীবনের সকল অবস্থায় (সুখে-দুখে) সন্তুষ্ট থাকার অভ্যাস চর্চা এবং ভাল আচরনের মাধ্যমে আমরা খুব সহজেই সুখী হতে পারি বা ভাল ভাবে বেঁচে থাকতে পারি।
মানুষের জীবনে নিজের ইতিবাচক ইচছাশক্তির সাথে সাথে বিশ্বাস-ভালবাসা-সন্তুষ্টি এ তিনটি নিয়ম যথাযথ অনুশীলন করলে সহজেই সুখী হওয়া যায় বলে আমার বিশ্বাস। আর নিয়ম-কানুন ও অনুশাসন না মেনে নিজের ইচছামত চললে মানুষের একজীবনে সুখ অধরাই থেকে যায় বা যাবে।আর এসকল ছোটখাট বিষয়গুলি অনুসরনই হতে পারে আপনার-আমার জীবনে সুখের নিয়ামক।আর সুখ হল মানুষের মনের একটি পজেটিভ অবস্থা।তাই সবসময় মনকে বুঝুন এবং মনের কথা শুনতে চেষ্টা করুন ।
==================================================================
উপলব্ধি - ৪ Click This Link
উপলব্ধি - ৩ Click This Link
উপলব্ধি - ২ Click This Link
উপলব্ধি - ১ Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ২:৪৭