ব্লগারদের মনোজগত - ১
ক্রনিক রিলিজিয়াস ব্লগএ্যাংজাইটি : এ শ্রেণীর ব্লগাররা হয় অতি আস্তিক কিংবা অতি নাস্তিক হয়ে থাকে। অতি আস্তিক শ্রেণীর ব্লগারদের ধর্মানুভূতি থাকে অতি প্রবল এবং স্পর্শকাতর। চাঁদে পানি পাওয়া গেছে এ ধরনের খবরেও তাদের ধর্মানুভূতি নড়ে উঠে। যে কোন ধরনের সংশয়বাদী, নাস্তিকতাবাদী কিংবা যুক্তিবাদী পোস্টে মাইনাস দেয়াটাকে তারা উত্তম ইবাদত হিসেবে গণ্য করে।
অন্য দিকে অতি নাস্তিক শ্রেণীর ব্লগার যারা এ রোগে আক্রান্ত তাদের অবস্থাও অথৈবচ। যে কোন ধরনের ধর্মীয় পোস্ট সেটা যে ধর্মেরই হোক না কেন মাইনাচ দেয়াকে তারা নিজেদের স্মার্টনেস হিসেবে দেখে। বিভিন্ন ধর্মীয় পোস্টে গিয়ে উস্কানী মূলক মন্তব্য না করা পর্যন্ত্ মানসিক পরিতৃপ্তি লাভ করে না। এই উভয় শ্রেনীর ব্লগারদেরই ঘন ঘন জেনারেল, ওয়াচে কিংবা ব্যান খেতে দেখা যায়।
এ্যাংজো ব্লগিংলুলাইটিস ডিসঅর্ডার : সঙ্গত কারনে গবেষক এ রোগের বর্ননা দিতে অনীহা প্রকাশ করছেন। শুধু জেনে রাখা প্রয়োজন ব্লগীং জগতে এটি একটি ভয়াবহ রোগ। আক্রান্ত ব্লগারকে প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসা দেয়া না হলে পরবর্তীতে রোগের প্রকোপতা মারাত্মক আকার ধারন করতে পারে, যা রোগী এবং ব্লগ উভয়ের জন্যই ক্ষতিকর।
পয়েট্রিটাইটিস ডিসঅর্ডার ও এন্টিপয়েট্রিটাইটিস ডিসঅর্ডার : এ রোগে আক্রান্ত ব্লগারগন দু'শ্রেণীর হয়ে থাকে। কবিতা প্রেমী এবং কবিতা বিরোধী। কবিতা প্রেমী ব্লগাররা নিয়মিতভাবে তাদের কবিতার পোস্ট দিয়ে যান তা কেউ পড়ুক বা না পড়ুক। সাধারন এ রোগে আক্রান্ত ব্লগারদের কবিতা ছাড়া অন্য কোন পোস্ট দিতে দেখা যায় না। তারা খুব কমই অন্যের পোস্টে কমেন্ট করেন যাও করেন তা হয় কবিতার পোস্ট কিংবা কবিতা সংক্রান্ত পোস্ট। সোজাকথা এ শ্রেণীর ব্লগাররা কবিতার বাইরে কিছু চিন্তাই করতে পারেন না। অন্যদিকে এন্টিপয়েট্রিটাইটিস ডিসঅর্ডার-এ আক্রান্ত ব্লগাররা হয় প্রথমপক্ষের সম্পূর্ন বিরোধী ঘরনার। তারা কবিতা কিংবা কবিতার পোস্ট সহ্যই করতে পারেন না। কবিতার পোস্টে মাইনাস দেয়া সহ মাঝেমাঝেই এদের কবিতা বিরোধী পোস্ট দিতে দেখা যায়।
ব্লগীং সেলেব্রিটাইটিস সিনড্রোম: এরা রোগে আক্রান্ত হন সাধারন ত্রিশোর্ধ্ব ব্লগাররা। এ রোগে আক্রান্ত ব্লগাররা নিজেকে ব্লগের সেলিব্রেটি হিসেবে মনে করে। তাদের ভাবখানা এমন আমার মতো লোক ব্লগে লেখে এতেইতো অমুক ব্লগ ধন্য। তারা সাধারনত খুব কম পোস্ট দেয় এবং অন্যের পোস্টেতো মন্তব্য করেই না। তাদের পোস্টে করা অন্যের মন্তব্যের উত্তর দিতেও তাদের অনীহা। পরিচিত ব্লগারদের বাইরে সাধারনত তারা কমেন্টের উত্তর দেন না। ব্লগীয় আড্ডায় কিংবা এ ধরনের কোন অনুষ্ঠানে তাদের গম্ভীর ভাব নিয়ে বসে থাকতে দেখা যায় এবং মাঝে মাঝেই তাদের ব্লগে আগের পরিবেশ নাই জাতীয় হাপিত্যেশ করেতে দেখা যায়।
ফ্রন্টপেইজম্যানিয়াক ডিসঅর্ডার : এ রোগে আক্রান্ত ব্লগারদের প্রথম পাতার প্রতি অত্যধিক দূর্বলতা পরিলক্ষিত হয়। প্রথম পাতা থেকে এদের পোস্ট সরে যাওয়ার সাথে সাথে এরা পুনরায় নতুন পোস্ট দিতে থাকে। দিনে ১০ থেকে ১৫টি পর্যন্ত পোস্ট এরা দিয়ে থাকে। এ রোগে আক্রান্ত ব্লগাররা মাসে দেড় দুইশ পর্যন্ত পোস্ট দিয়ে থাকে। পরবর্তীতে অবশ্য অধিকাংশ পোস্টই ড্রাফট করতে দেখা যায়। সাধারনত প্রথম পাতায় একসেস পাওয়ার প্রথমদিকেই এ রোগের প্রকোপ থাকে বেশী। আশার কথা যে ব্লগে আয়ু বাড়ার সাথে সাথে এ রোগের প্রকোপ কমতে থাকে।
ম্যানিয়াক এডাল্টোরোটাইটিস : এ রোগে আক্রান্ত ব্লগারদের প্রায়শই ১৮+ পোস্ট দিতে দেখা যায়। রোগের প্রার্দুভাব বেড়ে গেলে এরা ভয়াবহ রকমের অশ্লীল পোস্ট দিতেও কার্পন্য করে না। ফলে প্রায়শই তারা ব্যান খায় কিংবা জেনারেল হয়ে থাকে। এ রোগে আক্রান্ত ব্লগারদের সঙ্গত কারনেই অন্য ব্লগার কতৃক নামের শেষে গুপ্ত লাগানোর পরামর্শ দিতেও দেখা যায়। এরোগে আক্রান্ত ব্লগার মাঝে মাঝে সমালোচিত হলেও তাদের পোস্টে কিন্তু হিটের অভাব হয় না।
ডিজেবল পার্সোনালিটিস ডিসঅর্ডার : এ রোগে আক্রান্ত ব্লগাররা নিজের লিঙ্গ পরিচয় লকিয়ে পুলক লাভ করে। এ রোগে আক্রান্ত ব্লগাররা সাধারনত পুরুষ ব্লগার নারী নিকে এবং নারী ব্লগার পুরুষ নিকে ব্লগিং করে থাকে। পুরুষদের মধ্যেই এ রোগে আক্রান্তের হার বেশী। তারা প্রায়শই তাদের প্রোফাইল পিকে ফেইসবুক কিংবা অন্য কোথাও থেকে ধার করা মেয়ের ছবি দিয়ে থাকে। তবে তারা বেশী দিন তাদের আত্মপরিচয় লুকিয়ে রাখতে পারে না। কখনো কখনো তাদের অতিমাত্রায় ন্যাকা ন্যাকা কথাবার্তা কিংবা হিটের আশায় আমি বন্ধু হতে চাই ইত্যাদি শিরোনামে পোস্টে দেয়ার পর তারা ব্লগারদের কাছে ধরা পড়ে যায়। পরবর্তীতে তাদের নিক পরিবর্তন করে ব্লগীং করতে দেখা যায়। মাঝে মাঝে এ রোগে আক্রান্ত ব্লগাররা অন্য ব্লগারদের নিকট সাইয়া উপাধি পেয়ে থাকে।
সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ: এটি একটি নির্ভেজাল ফান পোস্ট। জীবিত কিংবা মৃত কোন ব্লগারের সাথে উপরোক্ত রোগের কোন মিল খুজেঁ পাওয়া গেলে তা নিছকই বকতালীয়
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই নভেম্বর, ২০০৯ রাত ১১:০৫