somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইহা আমাদের বাংলার সাগর!!

১৮ ই অক্টোবর, ২০১১ রাত ১১:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



۞۞ ঘটনা ১- আমার জাহাজ তখন সিঙ্গাপুর আউটার এঙ্করে, কাল পোর্টে বার্থিং আছে। আমরা বাংলাদেশ থেকে কন্টেইনার নিয়ে এসেছি। কন্টেইনারগুলো এখানে ডিসচার্জ করে আবার নতুন কন্টেইনার লোড করে বাংলাদেশে ব্যাক করব। সব কিছু ঠিক ঠাক।

জাহাজের কার্গো হোল্ড চেক করতে গিয়ে টের পেলাম জাহাজের কোন একটা হেভি ওয়েল (অনেকটা আলকাতরার মত কালো ঘন এক প্রকারের জাহাজের জালানি তেল) ট্যাংক টপ ফুটো হয়ে পুরো ট্যাংক টপে থিক থিকে তেল ছড়িয়ে গেছে, আরও ভয়ানক ব্যাপার হলো সেই কালো তেল পুরা ৩ নং হোল্ড এর ট্যাংক টপ এ ছড়িয়ে পড়েছে সেই সাথে নিচের দিকের কন্টেইনারের তলার দিকে লেপটে গেছে। আমি আর দেরি না করে সাথে সাথে চিফ অফিসারকে ইনফর্ম করলাম। চিফ অফিসারের মাথায় বাজ পড়ল মনে হয়। কারন জাহাজে তেল লিক করা কিংবা সমুদ্রে তেল ফেলা অনেক বড় অপরাধ। আর সিঙ্গাপুরে এটা খুব বেশি কড়া (দেশ ভেদে আইনের প্রয়োগ আর কি !! ) সে কারনে জাহাজের চিফ অফিসার, ক্যাপ্টেন এবং ডিউটি অফিসারের জেল জরিমানা সহ কোম্পানির বিরুদ্ধে কড়া বেবস্থা নেওয়া হয়।

অতঃপর জাহাজে ইমার্জিন্সি ঘোষণা করা হল, জাহাজের সব ক্রু এবং অফিসারকে স্ট্যান্ডবাই করা হল, কিন্তু যতক্ষণ কন্টেইনার না নামানো হচ্ছে ততক্ষন তো জাহাজের ট্যাংক টপ পরিস্কার করা যাবে না তাই জাহাজ পোর্টে ভিড়া মাত্রই সবাইকে হোল্ড এ নামানো হলো, ট্যাংক টপ থেকে যেই মাত্র একটা কন্টেইনার উঠছে সাথে সাথে সবাই সেই ফাঁকা ট্যাংক টপ সি ক্লিনার, জুট আর বাকেটিং করে তেলগুলো সংগ্রহ করা হলো। সে এক দেখার মত দৃশ্য!!!




۞۞ ঘটনা ২- বাংলাদেশী একটি শিপ মালায়শিয়ার আউটার এঙ্করে নোঙ্গর করে আছে। সারাদিন অনেক বৃষ্টি হয়েছে, বার্থিং হতে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে, জাহাজের কার্গো হোল্ড এ অনেক পানি জমা হয়ে গেছে। কার্গো লোডিং করার আগে অবশ্যই হোল্ড এর পানি আউট করতে হবে।

বিলজের পানি আউট করার জন্য সাধারনত ইঞ্জিন রুমের বড় পাম্প ইউজ করা হয়, তাই চিফ অফিসার সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ারকে একটা নোটিস দিলেন যেন কার্গো হোল্ড বিলজ এর পানি পাম্প আউট করা হয়। সময় মত সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার পাম্প চালু করলেন। কিন্তু বিলজের পানি আউট করার সময় হেভি ওয়েলের একটা লাইন কানেক্ট হয়ে যাওয়ায় পানির সাথে সাথে থিক থিকে হেভি ওয়েল চলে গেল সাগরের পানিতে। সেই তেল মিস্রিত পানি দেখে ফেলল একটা পাইলট ভেসেল। আর যায় কোথায়!!

আধা ঘণ্টার মধ্যে সেই জাহাজ এরেস্ট করা হলো, সব সার্টিফিকেট জব্দ করা হলো। সব শেষ প্রায় ১ মাস পরে জাহাজটি ৬ কোটি টাকা জরিমানা দিয়ে ছাড়া পেল।





۞۞ সমুদ্র জলে তেল পড়লে কি কি ক্ষতি হতে পারে? - সাগরের জলে তেল পড়লে সামুদ্রিক জলজ প্রানি এবং উদ্ভিদের জীবন বিপন্ন হয়ে পড়ে, প্রাকৃতিক বিপর্যয় হয়ে ধ্বংস হতে পারে আমাদের এই সুন্দর পৃথিবী। ফলশ্রুতিতে আমাদের এই সুন্দর পৃথিবী এক সময় হয়ে যেতে পারে বসবাসের অযোগ্য। এটা আর নতুন করে বলার কিছু নাই। সবাই এখন মোটামুটি এ ব্যাপারে জানি। আসুন কিছু ছবি দেখি-









যেহেতু সাগরের তেল পড়ার একটা অন্যতম উৎস সমুদ্র গামী জাহাজ, তাই জাহাজে তেল ব্যাবহারের উপর অনেক বিধি নিষেধ আছে।



জাহাজের আবর্জনা ফেলার জন্য সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এই ছবিটা দেখলে কিছুটা বুঝতে পারবেন।


এবং



আর জাহাজের এই সকল নিয়ম কানুন বা রুলস আর রেগুলেশান যেখানে আছে তার নাম International Convention for the Prevention of Pollution from Ships (MARPOL) যা প্রত্যেক মেরিন অফিসারকে এই রেগুলেশান পড়ে আসতে হয় এবং এই বিষয়ের উপর পরীক্ষায় পাশ করতে হয়, তাছাড়া জাহাজে সেই রেগুলেশান মানা হচ্ছে কিনা তা বিভিন্ন সার্ভেতে চেক করা হয়।



۞۞ ঘটনা ৩ (আমাদের বঙ্গোপসাগরে কি হচ্ছে?)- এই তো কিছুদিন আগেই এক্সাম শেষ করে ঘুরে আসলাম চিটাগং থেকে। আমার একটা ফ্রেন্ডের জাহাজ এসেছে জাপান থেকে প্রায় ৩ মাস পরে, তার অনুরোধ আর আমার ছুটি দুই যখন একসাথে মিলে গেল ভাবলাম ঘুরেই আসি চিটাগং থেকে। তার জাহাজ জাপান থেকে সিমেন্ট ক্লিঙ্কার নিয়ে এসেছে, ডিসচার্জ করছে পতেঙ্গা আউটারের আলফা এংকরেজে।

এঙ্করে থাকা জাহাজে যেতে হলে স্পীড বোটে যেতে হয়, তাই সন্ধ্যায় একটা স্পীড বোটে করে গেলাম সে জাহাজে (ভাড়া ১০০০ টাকা :( ) , জাহাজ অনেক বড় প্রায় ৪৫,০০০ টন সিমেন্ট ক্লিঙ্কার নিয়ে এসেছে, তাই সে এঙ্কর করেছে অনেক দূরে। যাই হোক, রাতে জাহাজেই ছিলাম। অনেক দিন পরে জাহাজে গিয়ে ভাল লাগলো, সামনের দিকে এক্সাম শেষ করে আমিও ইন্সাল্লাহ এরকম একটা জাহাজের থার্ড অফিসার হিসাবে জয়েন করব। ভালই লাগছে স্বপ্নের জাল বুনতে!

পরদিন আমি আবার স্পীড বোট জাহাজে কল করলাম, স্পীড বোট আসলো, আমি বন্ধু থেকে বিদায় নিলাম। পতেঙ্গার পাড়ে ব্যাক করছি হঠাৎ দেখলাম সাগরের পানিতে কালো কালো তেল!!



একটু পরেই দেখলাম ঘনত্ব বাড়ছে-




তেলের গতিপথ খেয়াল করলাম।



এখন ভাটার সময়, তেল আসছে উজান থেকে, এই তেল ভাটার পানিতে ভাসতে ভাসতে চলে যাবে ভাটিয়ারি কিংবা সন্দিপের দিকে। আমি স্পীড বোটের ড্রাইভারকে বললাম, তেলের উৎসের দিকে বোট নিয়ে যেতে।



আমি আমার মোবাইল দিয়ে সেই তেলের ছবি তোলার চেষ্টা করলাম।


আমি ভাবছি, যেখানে দিনের বেলায় তো দূরে থাক রাতের বেলায় অন্য দেশে সাগরে কেউ তেল ফেলার আগে হাজার বার ভাববে। কারন কেউ স্বেচ্ছায় তেল ফেলেছে প্রমান হলে তার সার্টিফিকেট বাতিল হয়ে যেবে, সে আর কখনোই জাহাজে চাকুরি করতে পাড়বে না। আর আমাদের দেশে দিনের বেলায়ই এই কাজ করছে কে!!



একটু দূরে যেতেই দেখি একটা ইন-ল্যান্ড (লাইটার ভেসেল) ভেসেল।!! নাম - রজনী গন্ধা - টু!! এই জাহাজ বড় জাহাজ থেকে তেল লোড করে দেশের অভ্যন্তরে নিয়ে যায় বিভিন্ন তেলের ডিপোতে। ওখানে গিয়ে দেখালাম ওদের কার্গো হোলড পরিস্কার করছে পানি দিয়ে এবং সেই তেল মিশ্রিত পানি সোজা ডিসচার্জ করছে সাগরের পানিতে!!



অথচ, এই জাহাজের প্রায় ৩ নটিক্যাল মেইল দুরেই বাংলাদেশ নেভির "বনৌজা ইশা খাঁ"!! আর তার কাছেই আছে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড এর ঘাঁটি!! এরা কি কিছুই দেখছে না?? আফসোস!

এভাবেই হয়ত একসময় ধ্বংস হয়ে যাবে আমাদের সামুদ্রিক পরিবেশ, এভাবে চলতে থাকলে একসময় হারিয়ে যাবে আমাদের সামুদ্রিক সম্পদ।


উপরে উল্লখিত ঘটনা ১, ২, ৩ পরস্পর বিশ্লেষণ করলেই বুঝতে পারবেন আমাদের দেশের সমুদ্র এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট সবাই কেমন উদাসিন আইন মানার ব্যাপারে।

=================================

▲ ▲ রজনী গন্ধা টু জাহাজ টি ইউনি-গ্লোবাল কোম্পানি লিমিটেড এর একটি লাইটার ভেসেল। (লিঙ্কের জন্য ক্র্যাক প্লাটুন কে অনেক ধন্যবাদ)


▲▲ আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন মোস্তফা কামাল পলাশ , আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। -

১) তেলের মধ্যদিয়ে সূর্যের আলো পানিতে প্রবেশ করতে পারে না (কয়েক মিটার এর বেশি)

২) পর্যাপ্ত সূর্যের আলোর অভাবে ফাইটোপ্লান্কটন জন্মানোর হার কমে যায় এমনকি বন্ধও হয়ে যেতে পারে নিসঃরিত তেলের পরিমানের উপর নির্ভর করে। সামুদ্রিক প্রানি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে খাদ্যের জন্য পুরোপুরি নির্ভর করে ঐ ফাইটোপ্লান্কটন এর উপর।

৩) নিসঃরিত তেল পানিতে অক্সিজেন দ্রবিভূত করতে বাধা দেয়। ফলশ্রুতিতে পানিতে দ্রবিভূত অক্সিজেন এর পরিমান কমে যায় ফলে সমুদ্রে (হাইপোক্সিয়া জোন) বা ডেড জোন সৃষ্টি হয়। ঐ সকল জায়গায় উদ্ভিদ বা প্রানি জন্মানোর হার মারাত্নক পরিমানে কমে যায়।

৪) যেহেতু সামুদ্রিক সকল উদ্ভিদ বা প্রানি ১ টা খাদ্য শৃঙ্খল অনুসরন করে ফলে ঐ শৃঙ্খলের ১টা স্তরের ক্ষতি হলে অপর স্তরও ক্ষতির সম্মূখীন হয় (ঠিক যেমন করে সুন্দরবনে হরিন বা বন্য শুকুর এর অভাবে মারাত্নক ভাবে কমে যাচ্ছে আমাদের গর্ব রয়েল বেঙ্গল টাইগার)।

পরিশেষে বলতে চাই, সেই দিন হয়ত খুব বেশি দূর না যেদিন সুন্দরবনের টাইগার কে মিরপূর স্টেডিয়ামেই দেখা যাবে। ইতিহাস বইয়ে পড়ে যেমন আমরা জনতে পাই নবাব শায়েস্তাখাঁ এর আমলে ১ টাকায় ৮ মন চাউল পাওয়া যেত ঠিক তেমনি ভবিষ্যত প্রজন্ম জানতে পারবে পৃথিবীর সবচেয়ে সুস্বাদু মাছ ইলিশ পাওয়া যেত বঙ্গপোসাগর এ ।





▼▼ আরও কিছু চমৎকার তথ্য দিয়েছেন ব্লগার আরিফ শাহরিয়ার , (অনেক ধন্যবাদ আপনাকে)। -
বাংলাদেশের সামুদ্রিক সীমা হল ৪০ হাজার বর্গকিলোমিটার যা বাংলাদেশের স্থল সীমার দুই তৃতীয়াংশ। প্রতি বছর বঙ্গোপোসাগরে নিঃসরিত ৬ হাজার টন তেলের ৪ হাজার টনই নিঃসরিত হয় বাংলাদেশ থেকে।

তেল কেন নিঃসরণ করা হয়?

জ্বালানী তেলের পাশাপাশি জাহাজে বিশাল বিশাল যন্ত্রাংশে ব্যবহার করা হয় লুব্রিকেন্ট। এই লুব্রিকেন্টগুলো নির্দিষ্ট সময়, নির্দিষ্ট দূরত্ব অতিক্রান্ত হওয়ার পর পরিবর্তন করতে হয় কারণ এর ভিস্কোসিটি (পিচ্ছিলকরণ ক্ষমতা) শেষ হয়ে যায়। দেশীয় জাহাজগুলো সাধারণত তীরের কাছাকাছি এসে এই লুব্রিকেন্ট তেল নিঃসরণ করে। এছাড়া জ্বালানী তেলের বাংকার পরিষ্কার করে তেলমিশ্রিত পানি ফেলা হয় সাগরে। একে বলে বাংকার ওয়াটার।
আর দূর্ঘটনা জনিত বড় বড় নিঃসরণের ঘটনা তো আছেই!

বাংলাদেশের জলজ সীমায় কয়েকটি বড় বড় তেলবাহী জাহাজ দূর্ঘটনাঃ
• ১৯৮৯ সালে সাইপ্রাসের পতাকাবাহী একটি জাহাজ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সমুদ্র সীমায় ৩০০০ হাজার টন তেল নির্গত করে।
• ১৯৯০ থেকে ১৯৯২ সালের মধ্যে একাধিক বিপুল পরিমানে তেল নির্গমনের ঘটনা পর্যবেক্ষণ করে খুলনা শিপিং কর্পোরেশন- যদিও কে করেছে এই কাজ তা খুঁজে বের করতে পারেনি।
• ১৯৯৪ সালে পানামার পতাকাবাহী জাহাজ নিসৃত তেলের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।
• ২০০৪ সালে বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের মালিকানাধীন সরকারী জাহাজ ‘বাংলার সৌরভ’ ২০ ঘন্টা ধরে কর্ণফুলী নদীর মোহনায় ১৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে তেল নিঃসরণ করে।

জাহাজ নিসৃত তেলের ব্যপারে দেশে কোনো আইন আছে কি না
সুনির্দিষ্ট করে জাহাজ নিসৃত তেল দূষণের বিরুদ্ধে কোন আইন আজ অবধি বাংলাদেশে প্রণয়ন করা হয়নি।
বিদ্যমান কয়েকটি আইনে ভাসা ভাসা করে কিছু বলা আছে, যেগুলো প্রধান প্রধান অংশ উল্লেখ করছিঃ

জাতীয় পরিবেশ নীতি’১৯৯২ এর ৩.১০নং অনুচ্ছেদে বলা আছে-
‘দেশের উপকূলীয় ও সামুদ্রিক ইকো-সিস্টেম এবং সম্পদের পরিবেশ সম্মত সংরক্ষণ এবং উন্নয়ন নিশ্চিতকরন’ এবং ‘উপকূলীয় ও সামুদ্রিক এলাকায় সকল প্রকার আভ্যন্তরীণ এবং বৈদেশিক দূষণমূলক কর্মকান্ড প্রতিরোধকরণ’।

এছাড়া বাংলাদেশ যদিও International Convention for the Prevention of Pollution From Ships, 1973 as modified by the Protocol of 1978 (MARPOL 73/78) চুক্তি সাক্ষর করেছে এবং র‍্যাটিফাইও করেছে, তবু আজ অবধি এটাকে আইনে পরিণত করতে পারেনি।

এছাড়া আমাদের পরিবেশ সংরক্ষণ আইন’১৯৯৫ এ বলা আছে ‘দূর্ঘটনাজনিত কারণে পরিবেশ দূষণের জন্য দায়ী ব্যক্তি বা সংস্থা’কেই দায়ীত্ব নিতে হবে’।

১৯৯৪ সালে প্রণিত কোস্ট কার্ড এক্ট- এ কোস্ট গার্ডকে সকল প্রকার পরিবেশগত দূষনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা আছে।

পোর্ট এক্ট’১৯০৮ এর ৬,১৪ এবং ২১ নং অনুচ্ছেদে বলা আছে – ‘এই আইন বন্দর এলাকা’কে তেল নিঃসরণ, হেভি মেটাল কিংবা আবর্জনা জনিত দূষণের কিংবা বাংকার ওয়াটার থেকে রক্ষা করার জন্য প্রণিত’

চট্টগ্রাম ও মংলা পোর্ট অথরিটি অর্ডিনেন্স’১৯৭৬ অনুযায়ী বন্দর এলাকায় পানি কিংবা পরিবেশ দূষণের সর্বোচ্চ শাস্তি হল ১০০০০০ টাকা জরিমানা।

এখন শুনুন সবচেয়ে অবাক করা কথা-
বাংলাদেশে আভন্তরীন এবং উপকূলীয় ব্যবহারের জন্য ১৫০ গিগাটনের বেশি ক্ষমতা সম্পন্ন ১০৪ টি তেলবাহী ট্যাংকার আছে যেগুলোর বেশিরভাগই সেকেন্ড হ্যান্ড এবং পুরোনো। এই ১০৪ টির মধ্যে শুধুমাত্র ২৪ টি ট্যাংকার MARPOL 73/78 Protocol গ্রহনের পরে বানানো হয়েছে। এর অর্থ হল ২৪ টি ছাড়া বাকিগুলোতে MARPOL 73/78 Protocol নিয়মানুযায়ী তেল দূষণ নিরোধক ব্যবস্থা নেই। এছাড়াও এদেশের ৫০০০ টি নিবন্ধনকৃত জাহাজ আছে যেগুলোর বেশির ভাগ পুরোনো এবং আধুনিক তেল দূষণ নিরোধক ব্যবস্থা নেই!

যদিও চট্টগ্রাম পোর্ট মেজিস্ট্রেসি’র মতে ২০০৫-২০০৮ এই সময়কালের মধ্যে ৭০০ টি জাহাজকে জরিমানা করা হয়েছে, কিন্তু সত্যিকার অর্থে তেল নিঃসরন কি বন্ধ হয়েছে?
তাহলে ব্যপারটা কি দাঁড়ালো? বাংলাদেশে বিদ্যমান কোনো আইনে মনে হয় না এই জাহাজের কোনো বিচার করা যাবে বা করার আদৌ কোনো ইচ্ছা কারো আছে!!

তবু...শুরু করলেন- সাথে আছি।

(তথ্যসূত্রঃ দ্যা ডেইলি স্টার, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন, চিটাগং পোর্ট অথরিটি এবং অন্যান্য)


=================================

লেখকের কথা- এই লেখাটা আরও তথ্য সমৃদ্ধ করব ভেবেছিলাম কিন্তু সময় আর লেখাপড়ার চাপের কারনে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য অ্যাড করতে পারি নাই, আপনারা গুগুলে একটু সার্চ দিলেই পেয়ে যাবেন। সমুদ্র দূষণ কত ভয়াবহ হতে পারে তার একটু পরিসংখ্যানে চোখ বুলালেই চোখ আকাশে উঠে যাবে নিশ্চিত। আর কিছুদিন আগে ধ্বংস হওয়া ব্রিটিশ পেট্রোলিয়াম এর একটা সামুদ্রিক খনি বিস্ফরিত হবার পর যে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছিল তা আর কারো অজানা নয়।

আশা করি, বাংলাদেশের নৌ বাহিনী, কোস্ট গার্ড এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে নজর দিবেন।



ভাল থাকুন সবাই, ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে অক্টোবর, ২০১১ রাত ৮:২১
৩০৬টি মন্তব্য ১৯৭টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান।

লিখেছেন আহা রুবন, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫০





ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান। আমরা দিন দিন কোথায় যাচ্ছি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আপনার দলের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলবাজি নিয়ে তো মহাব্যস্ত! সে পুরাতন কথা। কিন্তু নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৩




সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৩

ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)

সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×