এই পর্বটা শুধু বাংলাদেশীদের সমস্যা গুলো নিয়ে লিখবো। অনেকেই হয়তো জানেনা আমাদের দেশ থেকে আফ্রিকার কোন ভিসা নেই। যারা আসতেছে সব অবৈধ। বাংলাদেশে আফ্রিকান দূতাবাস নেই। ব্যবসা বা স্যুটিং এর জন্য যারা আসছে সবার ইন্ডিয়া বা শ্রিলংকা থেকে ভিসা করে আনতে হয়। আর যারা কাজের জন্য আসছে তাদের ভিসা বলতে কিছুই নেই। পাসপোর্টে ২-৩ ভূয়া ভিসা দিয়ে এয়ারপোর্ট কন্ট্রাক্টের মাধ্যমে পাস হয়ে যাচ্ছে।
টাকার উপরে নির্ভর করে ফ্লাইট ডিরেক্ট আফ্রিকা ল্যান্ড করবে নাকি আফ্রিকার আশে-পাশের দেশে হবে সেখান থেকে বর্ডার ক্রস করে ঢুকতে হবে। কষ্টের শুরুটা হয় বর্ডার থেকেই। গ্রুপ ভাগে ভাগে বর্ডার ক্রস হয়। ১০ জনের একটা টিম যদি থাকে এর মধ্যে কেউ একজন যদি কোন কারনে জংগলে অসুস্থ হয়ে পড়ে সবাই তাকে ফেলে আসতে বাধ্য। সবাই যার যার নিজের চিন্তা করবে। ২-৩ দিন না খাওয়া একজন মানুষ পাথরের পাহাড় আর জংগলে কতক্ষন হাটতে পারে?? তারকাটা আছে ৩-৪ টা আবার এপার থেকে ওপার হওয়ার সময় আছে বৈদ্যুতিক তার যার মধ্যে শরীর স্পর্শ করলে মৃত্যু ৯০% নিশ্চিত। আবার কপাল ভাল হলে বেচেও যেতে পারে। বর্ডারে এই পরিস্থিতিতে যদি কারো মৃত্যু হয় তাহলে তার লাশ সেখানেই পচে গলে যাবে লাশ টা দেশে পাঠানোর কোন সম্ভাবনা নেই।
আফ্রিকার ভেতরে ঢুকে যাওয়ার পর বিপদের শেষ নেই। যার কাছে সে যাবে সেই আত্মীয়ের কাছে যাওয়া পর্যন্ত পুলিশের খপ্পরে পড়তে হবেনা এমন কোন গ্যারান্টি নেই। আর পড়লে তো অনেক টাকা দিয়ে সাময়িকভাবে ছুটতে হবে। আফ্রিকান বৈধ কাগজপত্র না হওয়া পর্যন্ত এভাবেই চলবে।
আর কাগজের কথা কি বলবো ইচ্ছা ছিল ওই অফিসের সামনের কিছু ছবি তুলে আপলোড করবো কিন্তু হল না।
"হোম এফেয়ারস"
রিপাব্লিক অফ সাউথ আফ্রিকা"
এই অফিস থেকে দেয়া হয় কাগজ যাকে বলা হয়, "এসালাম"
প্রতি শুক্রবার হয় এশিয়ানদের কাগজ। আর শুক্রবারই অফিসের সবার ধান্ধার দিন। অফিসের আশে পাশে শত শত দালাল আর চোর।
আফ্রিকা আসার অর্ধেক শখ মিটে যাবে এই অফিসের সামনে আসলে।
লাইন ধরে দাঁড়িয়ে আছে হাজার মানুষ। একজনের মাঝখানে আরেকজন জোড় করে ঢুকিয়ে দিচ্ছে দালাল, কিন্তু কারো কিছু বলার নেই। যে যার মত লাইন বানিয়ে ফেলছে। কখন কোন লাইন থেকে ভেতরে নেয়া হবে তা বলা যাচ্ছেনা। আর লাইনে থাকা অবস্থা যে কেউ এসে বলতে পারে ১০০ টাকা দাও নয়তো লাইন থেকে বের করে দিবো। যে দিচ্ছে সে আছে, আর যে দিচ্ছেনা তাকে ঘাড় ধরে বেড় করে দেয়া হচ্ছে। এই টাকাটা দেয়ার পরেও আরো কয়েকজন এসে চাইতে পারে। অথচ, যে ১০০ টাকা দাবি করলো তার সাথে এই অফিসের সাথে কোন সম্পৃক্ততা নেই। লাইনে এতো ধাক্কাধাক্কির কারনে লোকজন এলোমেলো হওয়াতে গেটের সিকিউরিটিরা কোমরের বেল্ট আর একটা লাঠি দিয়ে একেকজনকে কুকুরের মত পেটাচ্ছে। কুকুরকে এভাবে মারলেও মানুষের মায়া লাগবে।
পোস্ট বড় হয়ে যাচ্ছে, শেষ করতে পারলাম না এই পর্বটা ২ ভাগে দিবো বাকিটা আগামী পর্বে।
চলবে......