এ কয়েকদিন শাহরুখ খানের কনসার্ট নিয়ে আমরা খুব বেশী মনযোগী ছিলাম বলেই হয়তো ব্লগে বাংলাদেশী জাহাজটির জিম্মি হয়ে থাকা ২৬ জন হতভাগা এবং তাদের উদ্বিগ্ন স্বজন কথা মনে হয়নি আমাদের। সমকাল পত্রিকার সারোয়ার সুমনের এই প্রতিবেদনে আসুন জেনে নেই তাদের সবশেষ অবস্থা।
২৬ নাবিক ও ত্রুক্রসহ ছিনতাই হওয়া বাংলাদেশের জাহাজটি ছাড়তে ৯০ লাখ ডলার মুক্তিপণ দাবি করেছে সোমালিয়ান জলদস্যুরা। দাবিকৃত এ টাকা পেঁৗছে দিতে সর্বোচ্চ পাঁচ দিন সময় দিয়েছে তারা। জাহাজের জ্বালানি তেল ও খাবার ফুরিয়ে আসায় অপহরণকারীরা এ সময়সীমা বেঁধে দেয়। রোববার রাতে জাহাজে জিম্মি থাকা কয়েকজন নাবিক এ তথ্য জানিয়েছেন তাদের স্বজনদের। জিম্মিরা বলছেন, যথাসময়ে মুক্তিপণের
টাকা না পেলে জাহাজ থেকে নামিয়ে তাদের অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়ারও হুমকি
দিয়েছে দস্যুরা। গত ৫ ডিসেম্বর আরব সাগর থেকে 'এমভি জাহান মনি' নামের জাহাজটি ছিনতাই করে জিম্মি ২৬ নাবিক ও ত্রুক্রকে সোমালিয়ান আস্তানায় নিয়ে যায় জলদস্যুরা।
জলদস্যুদের মুক্তিপণ চাওয়ার বিষয়টি মালিক পক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার না করলেও সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে এ ব্যাপারে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া গেছে। ছিনতাই হওয়া জাহাজে জিম্মি সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার আবুল বাশার তার স্ত্রী উর্মিলা শারমিনের কাছে ফোন করেন রোববার রাত ৮টা ২৮ মিনিটে। দস্যুরা তাকে তিন মিনিট ৩২ সেকেন্ড স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার সুযোগ দেন। ময়মনসিংহে থাকা উর্মিলা শারমিন এ কথার সত্যতা স্বীকার করে সমকালকে বলেন, 'তিন মিনিট ৩২ সেকেন্ডের আলাপচারিতায় আমার স্বামী ভালো আছে বলে জানায়। সে বলে অপহরণকারীরা ৯ মিলিয়ন ডলার (বাংলাদেশি ৬৩ কোটি টাকা) মুক্তিপণ চেয়েছে । পাঁচ দিনের মধ্যে এ টাকা পেঁৗছে দিতে বলেছে তারা। তোমরা সবাই একত্র হও। প্রয়োজনে সরকারের কাছে সাহায্য চাও। অন্যথায় দস্যুরা আমাদের তাদের স্থল আস্তানায় নিয়ে যাবে বলেছে। কারণ জাহাজে যে জ্বালানি তেল ও খাবার আছে তা দিয়ে বড়জোর পাঁচ দিন চলা যাবে।' এ কথা বলার পরপরই দস্যুরা সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার আবুল বাশারের ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় বলে সমকালকে জানান তার স্ত্রী।
বিষয়টি স্বীকার করে ব্রেভ রয়েল শিপিং ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোঃ শাহজাহান বলেন, 'স্বজনদের আশ্বস্ত করতেই জিম্মিরা কথা বলার সুযোগ দিয়েছিল। রোববার রাতে বিভিন্নজনের সঙ্গে তাদের এভাবে কথা বলার সুযোগ দিলেও সোমবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত জলদস্যু কিংবা জিম্মিদের সঙ্গে কারও কোনো যোগাযোগ হয়নি।' জলদস্যুরা মালিক পক্ষের কোনো প্রতিনিধির কাছে এখন পর্যন্ত মুক্তিপণের টাকাও চায়নি বলে জানান তিনি।
(বিস্তারিত আজকের দৈনিক সমকাল পত্রিকায়)