সারাদিন ঝিরঝির, ঝরঝর বৃষ্টি উপভোগ করিয়া,মুখবহিতে কয়েকজনের বাইরে বের হওয়ার বিড়ম্বনার স্টাটাস এ উপহাস মূলক মন্তব্য করিয়া বিকেল বেলা একটা কাজে বাসা থেকে বের হইলাম। দূরত্ব মোহাম্মদপুর শেখেরটেক হইতে কলাবাগান।জলাভূমি রূপ রাস্তা কোনরূপে পার হইয়া এক মাত্র বাস রাজধাণীর কাউন্টারে গিয়া দেখিলাম কোন বাস নাই। অনন্যোউপায় হইয়া মোহাম্মদপুর বাস স্টান্ডে যাওয়ার সিদ্ধান্তে উপনীত হইলাম।সামনে রাস্তার উপর একটা খাল(!!) আছে বলিয়া রিকশা লইলাম। দুরত্ব সামান্যই। রিকশাওলা ৬ টাকার ভাড়া ১২ টাকা নিবেই নিবে, সে এর কমে নাকি যায় না! যাই হোক ভাংতি না থাকায় সে ১০ টাকা লইয়া গজ গজ করিতে করিতে প্রস্থান করিল। আমি আবার এক মাত্র বাস এ টি ছি এল কাউন্টারে গিয়া পুনরাবৃত্তি দেখিলাম। বাস নাই।দিকভ্রান্ত হইয়া উপায় না দেখিয়া একটা শ্যামলী গামী লেগুনাতে ঊঠিলাম।পকেটে ভাংতি নাই,আশংকাতেই আছি। এখানে সেখানে থামাইয়া খাদ খাল অতিক্রম করিয়া সে শ্যামলী পৌছাইয়া ১০০ টাকার নোট নিয়ে ৫ টাকার ভাড়া ১০ টাকা রাখিয়া কিছু না বলিয়াই চলিয়া গেল।আমি নির্বাক। এরপর শুরু হল যুদ্ধ,কোন বাসে পা রাখার জায়গা নাই। হায় শুক্রবার! হায় বৃষ্টি!কোনকিছুই এই জনস্রোতকে আটকাইয়া রাখিতে পারে নাই,পারিয়াছে! পারিয়াছে ভাড়া দ্বিগুণ করিতে, পারিয়াছে শুকনো জামাকে কাদাতে ভিজাইয়া একাকার করিয়া দিতে পারিয়াছে।বাদর ঝোলা হয়ে একটা বাসে কোনরকম ঠাই পাইলাম।বাসের ভিতর এক অদ্ভুত একপাক্ষিক তর্ক,লেডিস সিটে এক বলশালী পুরুষ বসিয়া আছেন, সামনে ভিড়ের মধ্যে একজন নারী দাঁড়াইয়া আছেন, উনি ছিট ছাড়িবেন না।পিছন থেকে আরো কয়েকজন পুরুষ(!) তাকে সমর্থন জানাইতেছেন, কেন ছাড়িবে, কেন? যখন ৩ টাকা কিংবা ভাড়া ফাকি দিয়ে কেনা পৈত্রিক বাসের পুরুষ ছিটে নারীরা বসেন? কে বুঝায় তাহাদের সংরক্ষিত আসনের মানে? একবার বুঝাইতে উদ্দ্যত্ হইয়া আমার দূর্বল হাড়ের কথা চিন্তা করিয়া নিবৃত্ত হইলাম। কলাবাগান নেমে অবশেষে গন্তব্যে পৌছাইলাম। গিয়আছিলাম তাজউদ্দিন আহমেহ উপর ৪/৫ টা বই তাজউদ্দিন পাঠচক্রের আলমগীর ভাই এর কাছ থেকে আনিবার জন্য।তখন পৃথীবির সবথেকে বড় পরিহাস অপেক্ষা করিতেছিল আমার জন্য। বৈরী আবহাওয়ার জন্য আজ পাঠচক্র হবে না!!
