অদ্য একখানি কাজে পুরাতন ডিভিশনে গেসলুম | সেইখানে প্রবেশিতে না প্রবেশিতে হাসির হুল্লোড় বহিয়া গেল | তাজ্জব বনিয়া গেলাম | ভাবিলাম নিজেকে ক্যাবলার মতন দেখাইতেসে নাতো ? হাত দিয়া শার্টের কলার পরখ করিয়া লইলাম , নাহ কলার সজারুর কাঁটার ন্যায় খাড়া হইয়া নাই | টাইয়ের নটও তো জায়গামত আছে প্রতীয়মান হইল | ট্রাউজারও তো টাইট হইয়া কোমড় জরাইয়া রাখিয়াছে, কিছুমাত্র ঢিলা তো হয় নাই | মুহুর্ত বাদে চক্ষুযুগল একটি বিষয়ে স্থির নিপতিত হইল | ঠোটেঁ ফুটিয়া উঠিল বিমল হাসির রেখা | নিজেকে হাসির কারণ হইতে অপনোদিত দেখিয়া চিত্ত উত্ফুল্ল হইয়া উঠিল | তাইলে কাহিনী এই আর আমার টাইমিংটাও হইয়াছে বেশ ........................
তাহা হইলে ব্যাপার হইল আমার পুরাতন ডিভিশনে একখানি নয়, দুদুখানি নতুন প্রিন্টারের আগমন ঘটিয়াছে | এসেছে নতুন শিশু, তাকে ছেড়ে দিতে হবে স্থান – দূর কিসের মধ্যে কি লিখিতেসি | যাহা হউক, জসিম সাহেব ( ভিন্ন নাম ) প্রিন্টার ইনস্টল করিতেছেন, তাকে ঘিরিয়া আছেন কিছু সহকর্মী | প্রিন্টারগুলো পলিথিনে জড়ানো আর স্কচটেপ দিয়া মুড়ানো | এইরূপ কোনো একটা স্কচটেপের অংশ উনার পিছনদিকে কে যেন সাটাইয়া দিয়াছে | দেখিয়া আমারও বিতলামি করিতে ইচ্ছা হইলো |
আমি জসিম ভাইএর কাছে গিয়া সিরিয়াস ভঙ্গিতে বলিলাম , “ ভাই গতকল্য নেচার এর এক অনলাইন সংখ্যায় একটি ডারউইনিয় বিবর্তনবাদের বিপরীতে রিভার্স বিবর্তনবাদ বিষয়ক চাঞ্চল্যকর আর্টিকেল পড়িলাম | আপনি পড়িয়াছিলেন কি ?” উনি বলিলেন , নাতো , বলেন কি ? কি লেকসে সেইখানে ?”
আমি : “ বলছে যে একটা নির্দিষ্ট সময় পর ডারউইনিয় বিবর্তনবাদের বিপরীতে রিভার্স বিবর্তনবাদ ঘটিবে | অর্থ্যাত মানুষ প্রথমে বানর থেকে আসিয়াছে |এখন উল্টা হইবে, মানুষ আবার বানর হইয়া যাইবে” | উনি টাসকি খাইলেন , সোর্স চাইলেন , বলিলাম মেইল করিয়া দিমুনে | এইদিকে আবারও ছররা গুলির ন্যায় অন্যদের হাসি | জসিম ভাই এখনো কিছু বুঝিয়া উঠিতে পারিলেন না, কাজে মনোনিবেশ করিলেন |
খানিক বাদে উনি কার্যরত অবস্থায় আবার আরেকজন দ্বিতীয় স্কচটেপ উনার পিছনদিকে সাটাইয়া দিল | উনাকে ঘিরিয়া রাখা লোকজন হাসি চাপিয়া রাখিল মজা দেখার আশায় | আমি আবারও বলিলাম , “ জসিম ভাই সেই থিওরির আরো কিছু মজার ব্যাপার আছে |”
উনি বলিলেন তাই নাকি ?
আমি : “ তবে আর বলছি কি ? ডারউইনিয় বিবর্তনবাদে মানুষ এক ল্যান্জা বানর হইতে আসিয়াছে | আর রিভার্স বিবর্তনবাদে মানুষ বানর হইবে – শুধু তাই না দুই ল্যান্জা বিশিস্ট বানরে পরিণত হইবে | আবার সবাই হো হো করিয়া হাসিয়া উঠিল | এইবার জসিম ভাইয়ের সম্বিত ফিরিল | উনি পিছনদিক হাতাইয়া দেখিলেন | তারপর আমাকে বলিলেন : ভাই আপনে রিভার্স বিবর্তনবাদের কথা বলিয়া উপকার করিয়াছেন | অল্পতেই আমি দুই ল্যান্জার হাত হইতে রক্ষা পাইলাম |”
বলা বাহুল্য, আমি যেই কাজে গিয়াছিলাম সেই কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত ধুলিবালি ঝাড়ার ছলে আমার সাথে কেউ কোনো অপকর্ম ঘটাইবার প্রয়াস চালাইতেছে কিনা সেই ব্যাপারে সতর্ক পর্যবেক্ষণে ছিলাম |
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ১১:৫০