ঠিক এমনটাই শিরোনাম করেছে প্রথম আলো । একি বিষয়ে খবর এসেছে কমবেশি সবগুলো কাগজ ও অনলাইন মিডিয়ায়। বিষয়টা হলো ধারাবাহিক পরাজয়ে বিধ্বস্ত বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের মানসিক সহায়তার জন্য বিসিবি ক্রিয়া মনোবিদের সাহায্য নিচ্ছেন। কানাডা প্রবাসী একজন পেশাদার ক্রিয়া মনোবিজ্ঞানী খেলোয়ারদের স্বল্প-সময়ের জন্য কিছু কাজ করছেন। উদ্যোগটা চমৎকার এবং অতীব প্রয়োজনীয়। বিশ্বের পেশাদার সব খেলোয়াড় মনোবিদের সহায়তা নিয়ে থাকেন। একটা রুটিন কাজ। প্রশ্ন হলো, একজন খেলোয়াড় বা পুরোদলের এই মনোবৈজ্ঞানিক সেবা নেয়ার বিষয়টা কীভাবে এবং কেন এত ডিটেইলে ছবি সহ খবর হচ্ছে?
যেভাবে খবরগুলো বেড়িয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, কে কখন, কত ঘন্টা সেশন নিচ্ছে, কার কি লাভ হয়েছে, কে অপেক্ষমান ইত্যাদি ইত্যাদি। আবার সেশন নিয়ে কীবাবে মন ৩৬০ ডিগ্রী (?) ঘুরে গেল তাও আবিস্কার করেছেন প্রথম আলোর প্রতিবেদক। কিভাবে ক্রিকেটাররা গ্রুপ সেশন করছেন, তার ছবিও ছাপিয়েছে। আজব ব্যাপার???
আমার প্রশ্ন, যারা এগুলো ছাপাচ্ছেন তারা কি কোনো লিখিত বা মৌখিক সম্মতি নিয়েছেন, খেলোয়াড় এবং বিসিবি’র কাছ থেকে। মনোবৈজ্ঞানিক সেবা নেয়া কী তাদের ব্যাক্তিগত বিষয়ের মধ্যে পড়েনা? তিনদিনে তারা যা ডেভলাপ করবেন, এই নিউজগুলো দেখে কি তারা তা ধরে রাখতে পারবেন? কে কতক্ষণ একক সেশন নিচ্ছেন, সেটা প্রকাশ করে ঐ খেলোয়াড়ের মানসিক দুরাবস্থার দিকেই বেশি ফোকাস করা হচ্ছেনা কি? সেই খেলোয়াড় কি সেটা প্রকাশ করতে সম্মতি দিয়েছিল?
মনোবৈজ্ঞানিক সেবা যেমন, কাউন্সেলিং বা সাইকোথেরাপীর অন্যতম উপাদান এবং অত্যাবশ্যকীয় শর্ত হলো, গোপনীয়তা। অর্থাৎ সেবা দাতা এবং গ্রহীতার মধ্যে একটা বিশ্বস্থ সম্পর্ক তৈরি হবে যেখানে সেবা গ্রহীতার সম্মতি ছাড়া তার পরিচয়, আলোচ্য বিষয় প্রকাশ করা যাবে না। ক্রিটারদের ক্ষেত্রে যেভাবে নিউজগুলো এসেছে, বিষেশকরে প্রথম-আলো, বাংলানিউজ২৪ -এ তাতে ক্রিকেটারদের মনে হতে পারে তারা কি মানসিকভাবে অসুস্থ? আমার আশঙ্কা, এই ফলাও করে প্রচার তাদের লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশি করবে! এখন থেকে তাদের অন্যান্য বিষয়ের সাথে মানুষজন জিজ্ঞেস করবে, মনোবিদের সাহায্য নিচ্ছ, কিছু হচ্ছে? সাংবাদিকরা তো আছেই। প্রথম আলোর ক্রীড়া প্রতিবেদক একধাপ এগিয়ে গিয়ে মনোবিদকে জিজ্ঞেস করেছেন, খেলোয়াড়দের মনে কি কোনো ধরণের নীরাপত্তাহীনতা দেখেছেন ??? আচ্ছা, নীরাপত্তাহীনতা আছে কি নাই সেটা কেন মনোবিদ প্রকাশ করবে? আর সেটা কেনইবা জাতির সামনে তুলে ধরতে হবে?
মন্তব্যঃ
১। খেলোয়াড়দের মনোবিদের সাহায্য নেয়া খুব স্বাভাবিক এবং প্রয়োজনীয় ব্যাপার। দু’একদিন নয়, তাদের জন্য অন্তত একজন স্থায়ী ক্রীড়া মনোবিদ দরকার।
২। আর এটা নিয়ে অতিরঞ্জিত এবং বিস্তারিত খবর প্রকাশ করা উচিৎ নয়।
১. ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১:২৮ ০