somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাঙালি মুসলিম কমরেডদের সরুপ সন্ধান। না ঘরকা না ঘাটকা। পর্ব-১

১৭ ই মার্চ, ২০০৯ রাত ১২:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মার্কসবাদী মানেই বাই ডিফল্ট নাস্তিক।লোকে সাধারানত সেটাই ধরে নেয়।
কিন্তু সবার ক্ষেত্রে যে কথাটি সত্যি এমন নয়।এমন কিছু মার্কসবাদী নজর পড়ে যাদের ঠাকুর দেবতার প্রতি ভক্তিভাব থাকে।কেউ কেউ মনের এই ভাবটাকে প্রচ্ছন্ন রাখেন।আবার কেউ কেউ তেমন কোন প্রয়োজন আছে বলে মনে করেন না।এই শেষোক্তরা রাস্তার পাশে শনি ঠাকুর দেখলেও হাত উঠিয়ে প্রনাম করেন।তারা আপন আপন গৃহে গৃহদেবতার সামনে কি করেন সেটা পরিবারের বাইরে আর পাঁচজনের নজর পড়ার কথা নয়।কিন্তু যেগুলি নজর পড়ে ,ধর্মীয় আচার আচরন মানার ক্ষেত্রে তাদের অনেকেই বেশ নিষ্ঠা পরায়ন।যারা বোঝেন ধর্মীয় আচার নিষ্ঠায় মার্কসবাদের অনুমদোন নেই,তারা সাধারনত পারিবারিক রেওয়াজের দোহাই দিয়ে থাকেন।

একটু খেয়াল করলেই পাঠক বুঝবেন,এ ধরনের মার্কসবাদিরা অবশ্যই অমুসলিম।তাদের হিন্দু কমরেড ও বলা যায়।কিন্তু সেটার রেওয়াজ নেই।'মুসলিম কমরেড' এটা অবশ্য খুবই চালু।কিন্তু কেন চালু? তথাকথিত মুসলিম কমরেডদের মধ্যে মুসলমানিত্ব কি কিছু থাকে? বলা যেতে পারে ,অন্তত তাদের নাম শুনলে কি রকম কি রকম 'মুসলমান' একটা গন্ধ পাওয়া যায়।আরবি-ফারসি শব্দ সহযোগে নামকরনের যে রেওয়াজ বাঙালি মুসলমানদের মধ্যে থেকে গেছে সেটা পুরাপুরি নির্মুল করার কথা এখন ও ভাবা হয়নি।হয়ত কৌশলগত কারনেই ভাবা হয়নি।কারন,মার্কসবাদিদের তো আবার জনসংযোগ রক্ষা করতে হয়।মুসলিম কমরেডদের দিয়ে মুসলমানদের মন জয় করতে হলে ,তাদের নামটা শুনে যেন মুসলিম পাবলিকের মালুম হয় এই কমরেডরা আমাদের জাত ভাই।কিন্তু ব্যাস ঐ নাম পর্যন্তই।এ এর বাইরে নিজেদের মুসলিম পরিচয় জাহির করার কোন প্রয়োজন নেই।মুসলিম কমরেডদের বেশিরভাগ অবশ্যই এ ব্যাপারে খুবই নিষ্ঠাবান।ধর্ম ও ধর্মীয় আচরন নিয়ে তাদের কোন ভন্ডামী নেই।পুরো ব্যাপারটাকে তারা কুসংস্কার হিসেবেই গন্য করেন।হিন্দু কমরেডদের মতো এব্যাপারে পারিবারিক রেওয়াজের দোহাই দিয়ে আপস করার কথা তারা ভাবতেই পারেনা।মার্কসবাদী ভাবাদর্শ অনুসারে নিজেদের সাচ্চা সেক্যুলার আচার আচরন প্রদর্শন করাটাকে তারা কর্তব্য জ্ঞান করেন।এ ক্ষেত্রে সেকুলার আচার আচরন বলতে অবশ্যই নেতিবাচক ব্যাপারটাই বুঝতে হবে।অর্থাৎ তারা নামাজ পড়েন না।রোজা রাখেন না।কাউকে সালাম দেন না।কেউ সালাম দিলে সেটাকে ফিরিয়ে দেওয়া বা উত্তর জানানোর গরজ অনুভব করেন না।নমস্কার দিলে অবশ্য অন্য কথা।কেউ কেউ বলেন নমস্কার নাকি খুবই সেকুলার সম্ভাষন।তাদের যখন বলা হয় "আসসালামুআলাইকুম" যার অর্থ আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক। এবং এর উত্তর "ওয়ালাইকুমুসসালাম"
যার অর্থ আপনার উপর ও শান্তি বর্ষিত হোক। এ সম্ভাষনটাই বা সেক্যুলার নয় কোন অর্থে?মুসলিম কমরেডদের মধ্যে এই প্রশ্নটা নিয়ে ভেবে দেখার গরজ তেমন লক্ষ্য করা যায়না।অবশ্য এ ক্ষেত্রে বাঙালি মুসলিম কমরেডদের কথা বলা হচ্ছে ।উর্দূ ভাষী মুসলিম কমরেড নয়।তাদের কথা স্বতন্ত্র ভাবে আলোচ্য।উর্দূ ভাষী মুসলিম কমরেড হয়ে গেলে ও তাদের কথা বার্তা,আচার আচরনে ইসলামি কিছু অনুষঙ্গ থেকেই থাকে।সে গুলোকে তারা ঝেড়ে ফেলার কথা চিন্তা ও করেনা। সালাম বিনিময় ছাড়াও কথায় কথায় ইনশাআল্লাহ,মাশাল্লাহ, বা বিদায় মূহুর্তে তারা আল্লাহ হাফেজ বা খোদা হাফেজ উচ্চারনে হিন্দু পরিবেশকে ও তারা ভ্রুক্ষেপ করে।কিন্তু বাঙালী মুসলিম কমরেডরা মুসলিম অনুষঙ্গগুলি পুরোপুরি বর্জন করার পক্ষপাতি।বেশিরভাগেরই অবশ্য নিজেদের ধর্ম ও সাংস্কৃতিক উত্তরোধিকার সম্পর্কে প্রাথমিক ধারনা টুকু ও নেই।এর জন্য তারা অবশ্য লজ্জিতবোধ করেন না।এক মুসলিম কমরেড বলেছেন, উর্দূভাষী কমরেডরা ইসলামি অনুষঙ্গ ছাড়তে না পারায় হিন্দুদের সাথে তাদের ঐক্য কিছুতেই গড়ে উঠছেনা। কথাটা কি সত্যি? শাহরুখ খান বা যে মহিলা নাচের তালিম দেন সরোজ খান তারা তো ইসলামি অনুষঙ্গ নিয়েই হিন্দুদের মধ্যে যথেষ্ট জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন।অবশ্য যদি এরকম নাও ঘটত, তাহলেও কি মুসলমানদের পক্ষে হিন্দুদের সঙ্গে একাত্ততায় ব্যাঘাত ঘটবে বলে নিজেদের ধর্ম সংস্কৃতির উত্তারোধীকার বিসর্জন দেওয়াটা অভিপ্রেত।
মুসলিম সংস্কৃতির বেলায় বিশেষ কিছু হিন্দু এলিটদের মাঝে প্রকট হয়ে উঠে।মুসলমানদের দাড়িঁ টুপি শুধু নয়,মুসলমানদের প্রকাশ্য ধর্মাচারন তাদের পছন্দ নয়।তারা বুঝতে চান না মুসলমানদের ধর্মাচারনের ধরনটাই এমন যে প্রকাশ্য কিছু প্রদর্শনী ছাড়া সেটার অনুষ্ঠান সম্ভব নয়।এটা কেবল মনে মনে স্রষ্টাকে সৃন করার ব্যাপার নয়।বাঙালী মুসলিম মার্কসবাদীরা ব্যাপারটা জানেন ঠিকই কিন্তু এ ব্যাপার নিয়ে হিন্দু কমরেডদের সাথে কখনও তর্ক করেন না।তারা শুধু প্রমান করতে ব্যস্ত থাকেন,ধর্মাচারনের এই প্রদর্শনী তাদের ও পছন্দ নয়। এভাবেই তারা নাস্তিক্য চর্চার পরাকাষ্ঠা দেখিয়ে থাকেন।









২১টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×