somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রসঙ্গ : মসজিদ ভিত্তিক গণশিক্ষা কি জাতির জন্য উদ্বেগজনক?

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ সকাল ৯:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


শয়াতনগোষ্ঠীর একটি জরুরি মিটিং চলছে। এ মিটিং-এর মূল উদ্দেশ্য হলো কে কিভাবে এবং কোন প্রকারে মানুষকে বিভ্রান্ত করে অসৎ কাজে নিয়োজিত বা ঠেলে দিতে পেরেছে, তার রিপোর্ট পর্যালোচনা ও মূল্যায়ন করা। শয়তান গোষ্ঠীর দলপতি মাঝখানে বসে আছে। সকলে তাদের দৈনন্দিন কার্যাবলীর রিপোর্ট পেশ করে চলেছে। কেউ বলছে, আমি দুইজন মানুষের মাঝে ঝগড়া বাধিয়ে দিয়েছি, কেউ বলছে, আমি মানুষকে সুদ, ঘুষ, ধর্ষণ এবং দুর্নীতি করতে প্ররোচিত করেছি। কেউ বলছে, আমি একজন মানুষকে কুমন্ত্রণা দিয়ে আর একজন মানুষকে হত্যা করিয়ে ছেড়েছি। শয়তান গোষ্ঠীর দলপতি এদের পেশ করা রিপোর্ট নির্বিকারভাবে শুনে যাচ্ছে। কোন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছে না। কিন্তু উপস্খিত শয়তানদের ভেতর এক শয়তান তার রিপোর্টে উল্লেখ করলো যে সে একজন তালেবুল ইল্ম অর্থাৎ দ্বীনী জ্ঞানার্জনকারী ছাত্রকে বহুত কোশেশ করে তার কানে কুমন্ত্রণা এমনভাবে ঢেলে দিয়েছে যে এখন সে লেখাপড়া ছেড়ে দিয়ে যা ইচ্ছা তাই করে বেড়াচ্ছে। চমৎকার! সাবাস!! সাবাস!!! বলে শয়তান গোষ্ঠীর দলপতি পরম উল্লসিত হয়ে ঐ রিপোর্ট পেশকারীর পিঠ চাপড়াতে শুরু করলো আর সকলকে বলতে লাগলো এ একটা কাজের মতো কাজ করেছে। একে আমি সবচে বড় পুরস্কার দেবো। তারপর­­ শয়তান দলপতি মহাখুশিতে হাত-পা ছড়িয়ে বসে সকলকে উদ্দেশ্য করে বললো, তোদের খুন, হত্যা, ধর্ষণ, সুদ, ঘুষ, দুর্নীতির কুমন্ত্রণা এর রিপোর্টের কাছে একেবারে ছার। সকল শয়তান মনে মনে চিন্তা করতে লাগলো খুন, হত্যা, ধর্ষণ, ঘুষ, সুদ, দুর্নীতির চেয়ে বড় হলো কি-না একটা পুচকে ছাত্রকে লেখাপড়া থেকে মন ঘুরিয়ে দেয়ার কাজ। আর যে এই সামান্য কাজটি করেছে তাকে নাকি দেয়া হবে পুরস্কার। আল্লাদে আর বাঁচা যায় না। সভা স্খলে হৈ চৈ শুরু হলো। দলপতি শয়তান সকলকে থামিয়ে মাথা নেড়ে বিজ্ঞের মতো বললো, আহা! তোমরা বিষয়টি বুঝতে পারোনি তাই এমনভাবে হৈ-চৈ করছো। এবার মনোযোগ দিয়ে শোন এ কথার গুঢ় তাৎপর্য অর্থাৎ বিষয়টার ভেতরের আসল কথা। সকল শয়তান হৈ-চৈ থামিয়ে উৎকর্ণ হয়ে শুনতে লাগলো। শয়তান দলপতি বললো, ইল্ম বা বিদ্যার্জন বিশেষ করে দ্বীনী ইল্ম­­ (ধর্মীয় জ্ঞান) অর্জনকারী ছাত্র সে যেমন নিজে উপকৃত হবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করার পথ পরিষ্কার করবে তেমন সমাজের আরও অনেক মানুষকে সৎ বানিয়ে ফেলবে। এই সৎ মানুষগুলো আবার দেশের বৃহত্তর গণ্ডিতে গিয়ে সকল মানুষকে সৎ বানিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করাবে। মানুষরা যদি দলে দলে জান্নাতে প্রবেশ করে তাহলে আমাদের এত সব জারিজুরি সবই বৃথা। আমাদের সর্ব প্রধান লক্ষ্যই হলো মানুষকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা। এই চ্যালেঞ্জই তো করে এসেছে আমাদের শয়তানের বড় শয়তান আজাজিল আব্বাজান। তাই যতো পারো ততো বেশি বেশি ধর্মজ্ঞান শিক্ষা ঘেষা ছাত্রদেরকে বিদ্যালয়ে যাওয়া থেকে দূরে সরিয়ে ফেলো তাহলে দেখবে আমাদের কাজ হালকা হয়ে গেছে। ওরাই তখন আমাদের পক্ষ থেকে মানুষকে জাহান্নামে ঠেলে দেয়ার পথ পরিষ্কার করে যাচ্ছে। ওরা তখন মানুষের আকৃতিতে থাকলেও আমাদের শয়তান সম্প্রদায়েরই দলভুক্ত হয়ে যাবে। এখন চিন্তা করো, আমি এই শয়তান সদস্যের রিপোর্টটি শ্রেষ্ঠ বলে মূল্যায়ন করে ভুল করেছি? সমবেত শয়তানের দল সমস্বরে মহাউল্লাসে ফেটে পড়লো, সাবাস! সাবাস!! না, না, আপনি ভুল করেননি। ঠিকই করেছেন। আমরা কথাটা আপনার মতো গভীরভাবে ভেবে দেখিনি।

সম্প্রতি এ সরকারের অত্যন্ত সাফল্যমণ্ডিত মসজিদভিত্তিক শিশু গণশিক্ষা কার্যক্রম ব করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে একদল ইসলামবিদ্বেষী চিহ্নিত তথাকথিত বুদ্ধিজীবী পরভোজীরা। এদের কাছে ইসলাম কথাটা শোনামাত্রই গাত্রদাহ শুরু হয়ে যায়। যেহেতু মসজিদ একজন মুমিন মুসলিমের ইবাদতগাহ্ সেহেতু ঐ চিহ্নিত ইসলামবিদ্বেষী মহলের আক্রোশ পড়েছে এই ভেবে যে, এখান থেকে কোমলমতি শিশুরা অন্য বিষয়ের শিক্ষার্জনের সাথে সাথে ইসলামী জ্ঞানার্জন করে একজন প্রকৃত মুসলিম হিসেবে গড়ে উঠবে তখন এদেরকে আর কখনও ইসলামবিমুখ বা ইসলামদ্রোহী করা যাবে না। তাই সুপরিকল্পিতভাবে অত্যন্ত ফলপ্রসূ এই মসজিদভিত্তিক শিশু গণশিক্ষা কার্যক্রমকে উৎখাত করার জন্য প্রধান উপদেষ্টার কাছে আবেদন জানিয়ে চিঠি দিয়েছে ঐ সব বুদ্ধিজীবী মহল। ঐ চিঠির একটি অনুলিপি পাঠানো হয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরীর কাছে। যথোপযুক্ত ব্যক্তির কাছে একেবারে ঝোপ বুঝে কোপ মারা হয়েছে অনুলিপিটি পাঠিয়ে। এই সেদিনকে যিনি কুরআন ও সুন্নাহর পবিত্র আইনকে লঙ্ঘন করে নারীনীতি বাস্তবায়নের প্রধান উদ্যোগী ভূমিকা নিয়েছিলেন। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, মসজিদভিত্তিক শিশু গণশিক্ষা কার্যক্রম ‘উদ্বেগজনক'। প্রণিধানযোগ্য এই যে, সরকারের মন্দিরভিত্তিক শিশু গণশিক্ষা কার্যক্রম বরে জন্য ঐ বুদ্ধিজীবী মহল কোনরকম উচ্চবাচ্য করেননি। এখানে উনারা দাঁতে কুলুপ এঁটেছিলেন। আসলে বিদেশী সাহায্যপুষ্ট পরভোজী একটি গোষ্ঠী বিভিন্ন সময়ে গোলটেবিল বৈঠক, কখনো কাল্পনিক অভিযোগ তুলে মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষার বিরুদ্ধে সরকারি নীতিনির্ধারকদের বিভ্রান্ত করার অপপ্রয়াস চালিয়ে আসছে। এর একমাত্র উদ্দেশ্যই হলো ইসলামী মন মস্তিষ্কের ধারক বাহক জনগোষ্ঠী ধীরে ধীরে যেন এ বাংলাদেশের বুক থেকে বিলীন হয়ে যায়। তাই ঝোপ বুঝে কোপ মারা হয়েছে এই মসজিদভিত্তিক শিশু গণশিক্ষা কার্যক্রমকে সমূলে উৎখাত করতে। অথচ সরকারের এই প্রকল্পে ব্যয় খুবই কম। কিন্তু দেশের বিশাল জনসাধারণকে অনানুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ায় প্রাথমিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এ শিশু গণশিক্ষা কার্যক্রম একটা সুদূরপ্রসারী ভূমিকা পালন করতে সর্বোতভাবে সক্ষম। এমন একটি কার্যক্রমকেই এই প্রতিক্রিয়াশীল ইসলামবিদ্বেষী তথাকথিত বুদ্ধিজীবী চক্র ব করে দেয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। এদের এই হীন তৎপরতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে দেশের সর্বস্তরের জনগণকে। এরা প্রকারান্তরে ইসলাম, মুসলমান এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের ওপর প্রতিশোধ নিতে উদগ্রীব।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ সকাল ৯:১২
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশে সমবায় সমিতির দুর্নীতি: সাধারণ মানুষের স্বপ্ন ভেঙে চুরমার

লিখেছেন শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু, ২১ শে জানুয়ারি, ২০২৫ ভোর ৬:৩৪

বাংলাদেশে সমবায় সমিতি গঠনের মূল লক্ষ্য ছিল সাধারণ মানুষের আর্থিক স্বাধীনতা অর্জন এবং সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখা। কিন্তু দুঃখের বিষয়, বর্তমানে অনেক সমবায় সমিতিই নিজস্ব লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হয়ে সাধারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের সাইকেল!! :B#

লিখেছেন গেছো দাদা, ২১ শে জানুয়ারি, ২০২৫ সকাল ৯:৫৮

সাইকেল চালানো বাংলাদেশ সহ যেকোনও দেশের অর্থব্যবস্থার জন্য ক্ষতিকারক।

এটা হাস্যকর মনে হলেও কিন্তু চিরসত্য যে
সাইকেল চালানো ব্যক্তি দেশের জন্য একটি বিপদ।
কারণ -
■ সে গাড়ি কেনে না।
■ সে লোন নেয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে বেরিয়ে যেতে নির্বাহী আদেশে ট্রাম্পের সই

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২১ শে জানুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১১:৫০





মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবারের (২০ জানুয়ারি) এই শপথ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দ্বিতীয় মেয়াদে দেশটির রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসলেন তিনি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেঘ বালিকা

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২১ শে জানুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১২:১৮



বৃষ্টি এলে মেঘ বালিকা ভিজতে থাক তুমি
জ্বর না উঠে সেই দিকেতে খানিক খেয়াল রাখ
আকাশ তলে নদীর জলে আনন্দ ঢেউ খেলে
তারাও ভিজে তোমার মত সুখের ভেলায় ভেসে।

প্রসারিত দু’হাত দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গতকাল বিকেল থেকে ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা কমার শুরু করেছে।

লিখেছেন জেনারেশন৭১, ২১ শে জানুয়ারি, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:২৯



গতকাল ট্রাম্পের শপথের অনুষ্ঠানে ২ লাখ মানুষকে আমন্ত্রণ করে টিকিট দেয়া হয়েছিলো; প্রচন্ড শীতের কারণে বাহিরে শপথ নেয়া সম্ভব হয়নি। পার্লামেন্ট ভবনের ভেতরে শপথ হয়েছিলো, সেখানে প্রাক্তন প্রেসিডেন্টগণ, বিচারপতিরা,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×