ঘুরি রাজবংশ ছিলেন পূর্ব ইরানীয় সুন্নি মুসলিম রাজবংশ। এই রাজবংশ তাজিক বংশোদ্ভূত বলে ধারণা করা হয়। সাম্রাজ্যের সর্বোচ্চ সীমায় থাকাকালে আধুনিক আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, তাজিকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান এবং ইরান এর অন্তর্ভুক্ত ছিল। ৮৯৭ থেকে ১২১৫ সাল পর্যন্ত এই রাজবংশ শাসন ক্ষমতায় ছিল এবং গজনভিদের উত্তরাধিকারী হয়। ঘুরি রাজবংশের কেন্দ্র ছিল বর্তমান আফগানিস্তানের ঘুর প্রদেশ বা মান্দেশ। এটি পশ্চিমে বৃহত্তর খোরাসান এবং পূর্বে বঙ্গ পর্যন্ত পৌছেছিল।প্রথম রাজধানী ছিল ঘুরের ফিরোজকোহ। পরবর্তীতে তা হেরাতে স্থানান্তর করা হয়। এর পাশাপাশি গজনি ও লাহোরকে অতিরিক্ত রাজধানী হিসেবে ব্যবহার করা হত, বিশেষত শীতের সময়। ঘুরিরা পারস্য সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন।ঘুরিদের পর পারস্যে খোয়ারিজমীয় সাম্রাজ্য এবং ভারত উপমহাদেশে দিল্লি সালতানাতে মামলুক সালতানাত ক্ষমতায় আসেন।মুইজউদ্দিন বা মুহাম্মদ শিহাবউদ্দিন অথবা মুহাম্মদ ঘুরি ছিলেন ঘুরি সাম্রাজ্যের সুলতান। তার ভাই গিয়াসউদ্দিন মুহাম্মদের সাথে তিনি ১১৭৩ সাল থেকে ১২০২ সাল পর্যন্ত শাসন করেন। তারপর ১২০২ সাল থেকে ১২০৬ সাল পর্যন্ত তিনি সর্বোচ্চ শাসক হিসেবে শাসন করেন।মুইজউদ্দিন ঘুরি সাম্রাজ্যের অন্যতম মহান শাসক ছিলেন। দক্ষিণ এশিয়ায় মুসলিম শাসনের ভিত্তি তিনি স্থাপন করেছেন। তার শাসনাধীন অঞ্চলসমূহের মধ্যে রয়েছে বর্তমান আফগানিস্তান, ইরান, তুর্কমেনিস্তান, তাজিকিস্তান, পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং ভারত।১১৭৩ সালে মুইজউদ্দিন গজনি শহর দখল করে নেন। তিনি উত্তর ভারতে অভিযানের জন্য এই শহরকে সূচনাস্থল হিসেবে ব্যবহার করেন।সে সময় পশ্চিম এশিয়ায় বৃহত্তর খোরাসানের আধিপত্য নিয়ে খোয়ারিজমীয় সাম্রাজ্যের সাথে প্রতিযোগীতায় তিনি তার ভাই গিয়াসউদ্দিনকে সহায়তা করেন। ১১৭৫ সালে হামিদ লুদি রাজবংশের কাছ থেকে মুইজউদ্দিন মুলতান জয় করেন। হামিদ লুদিরা পশতু ছিল তবে ইসমাইলি শিয়াদের সাথে তাদের সংযোগের কারণে অনৈসলামিক বলে অভিযোগ ছিল। ১১৭৫ সালে তিনি উচ অধিকার করেন। তাছাড়াও তিনি ১১৮৬ সালে লাহোরের গজনভি রাজ্যকে নিজ অধিকারে নিয়ে আসেন। এটি ছিল তার সর্বশেষ পারস্যায়িত প্রতিপক্ষ।১২০২ সালে গিয়াসউদ্দিনের মৃত্যুর পর মুইজউদ্দিন ঘুরি সাম্রাজ্যের শাসক এবং ১২০৬ সালে নিহত হওয়ার আগ পর্যন্ত শাসন করেন।সে সময় ঘুরি নেতৃবৃন্দের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখা দেয়। ১২১৫ খ্রিষ্টাব্দের দিকে খোয়ারিজমীয়রা ঘুরি সালতানাতের উপর জয়ী হয়। ঘুরি সাম্রাজ্য ভেঙে পড়লেও তৈমুরীয়দের আগমনের আগ পর্যন্ত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কিছু ঘুরি রাজ্য টিকে ছিল। মুইজউদ্দিনের বিজয় অভিযান ভারতে মুসলিম শাসনের ভিত্তি স্থাপন করে। মুইজউদ্দিনের একজন সাবেক দাস কুতুবউদ্দিন আইবেক দিল্লির প্রথম সুলতান ছিলেন।
মুইজউদ্দিন ১১৪৯ সালে বর্তমান আফগানিস্তানের ঘুর অঞ্চলে জন্মগ্রহণ করেন। তার জন্মের প্রকৃত তারিখ অজ্ঞাত। তার বাবা প্রথম বাহাউদ্দিন সাম ছিলেন ঘুরের একজন স্থানীয় শাসক। মুইজউদ্দিন বড় ভাই ছিলেন গিয়াসউদ্দিন মুহাম্মদ। জীবনের প্রথমদিকে তাদের চাচা আলাউদ্দিন হুসাইন তাদের দুজনকে বন্দী করেন। কিন্তু পরে তার ছেলে সাইফউদ্দিন মুহাম্মদ তাদের মুক্তি দেন। ১১৬৩ সালে সাইফ মারা যাওয়ার পর ঘুরি অভিজাত ব্যক্তিরা গিয়াসউদ্দিনকে সমর্থন দেন এবং তার ক্ষমতালাভে সহায়তা করেন। গিয়াসউদ্দিন এরপর মুইজউদ্দিনকে ইসতিয়ান এবং কাজুরানের শাসনভার দিয়েছিলেন। বেশ কয়েকজন ঘুরি নেতৃবৃন্দ সিংহাসনের দাবি নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জড়িয়ে পড়লে তাদের পরাজিত করার জন্য মুইজউদ্দিন তার ভাই গিয়াসউদ্দিনকে সহায়তা করেন।গিয়াসউদ্দিন এরপর তার চাচা ফখরউদ্দিন মাসুদের তরফ থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখতে পান। ফখরউদ্দিন নিজেকে সিংহাসনের উত্তরাধিকার দাবি করেন এবং হেরাত ও বলখের সেলজুক গভর্নর তাজউদ্দিন ইলদিজের সাথে মিত্রতা করেন। রাগ-ই জার নামক স্থানে গিয়াসউদ্দিন এবং মুইজউদ্দিন এই জোটকে পরাজিত করেন। যুদ্ধের সময় সেলজুক গভর্নর নিহত হন ও গিয়াসউদ্দিন এবং মুইজউদ্দিন জামিন্দাওয়ার, বাগিয়াস ও গুজগান জয় করেন। গিয়াসউদ্দিন ফখরউদ্দিনকে ছেড়ে দেন এবং তাকে বামিয়ানের শাসক হিসেবে পুনরায় নিযুক্ত করেন। সিস্তান থেকে মুইজউদ্দিন অভিযান শেষে ফিরে এলে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য কান্দাহারের শাসনভার লাভ করেন। ১১৭৩ সালে তারা গজনি আক্রমণ করে অগুজ তুর্কিদের বিতাড়িত করেন। ইতিপূর্বে অগুজ তুর্কিরা গজনভিদের কাছ থেকে শহরটি দখল করে নিয়েছিল। মুইজউদ্দিনকে গজনির শাসক নিযুক্ত করা হয়।১১৭৫ সালে দুই ভাই হেরাতের সেলজুক গভর্নর বাহাউদ্দিন তুগরিলের কাছ থেকে হেরাত জয় করেন। এছাড়া তারা পুশান জয় করেন। সিস্তানের শাসক তাজউদ্দিন হারব ইবনে মুহাম্মদ এবং কিরমানের অন্যান্য অঘুজ তুর্কিরা ঘুরিদের সার্বভৌমত্ব মেনে নেয়।একই সময়ে খোয়ারিজমীয় সুলতান শাহ তার ভাই আলাউদ্দিন তেকিশ কর্তৃক বহিষ্কৃত হন। তিনি ঘুরে আশ্রয় নেন এবং গিয়াসউদ্দিনের কাছে সামরিক সহায়তা চান। তবে গিয়াসউদ্দিন এই আহ্বানে সাড়া দেননি। সুলতান শাহ কারা খিতান খানাতের কাছ থেকে সহায়তা অর্জন করতে সক্ষম হন এবং উত্তরের ঘুরি অঞ্চলে হামলা চালান।
মুইজউদ্দিন তার ভাইকে সাম্রাজ্য বিস্তারে সহায়তা করার পর ভারতের দিকে মনোনিবেশ করেন। অল্পকাল পরে তিনি ভারত আক্রমণ করেন। প্রথমে তিনি ১১৭৫ হতে ৭৬ সালে মুলতান অধিকার করেন। এরপর তিনি উচ জয় করেন। তিন বছর পর তিনি গুজরাট আক্রমণ করেন। তবে হিন্দু রাণী নাইকিদেবী তাকে পরাজিত করেন। মুইজউদ্দিন পেশাওয়ার এবং শিয়ালকোট জয় করতে সক্ষম হয়েছিলেন। ১১৮৬ সালে মুইজউদ্দিন এবং গিয়াসউদ্দিন একত্রে গজনভি সাম্রাজ্যের সমাপ্তি ঘটান। সে সময় লাহোর জয় করা হয় এবং গজনভি শাসক খসরু-মালিককে হত্যা করা হয়। মুলতানের ইসমাইলি শাসকদের বিরুদ্ধে মুইজউদ্দিনের অভিযান সফল হয়। তিনি দক্ষিণ দিকে অগ্রসর হন এবং তার সেনাবাহিনীকে মুলতান থেকে উচের দিকে নিয়ে আসেন। এরপর মরুভূমির মধ্য দিয়ে গুজরাটের দিকে আনিলওয়ারার রাজধানীর দিকে নিয়ে আসেন। ১১৭৮ সালে মুইজউদ্দিন কায়াদারার যুদ্ধে পরাজিত হন।সে সময় অল্পবয়স্ক শাসক দ্বিতীয় ভীমদেব সোলানকি গুজরাট শাসন করছিলেন। রাজার মা নাইকিদেবী সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব দেন। মরুভূমির মধ্য দিয়ে যাত্রার সময় মুইজউদ্দিনের সেনাবাহিনী ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নাইকিদেবী কায়াদারা গ্রামের কাছে মুইজউদ্দিনকে পরাজিত করতে সক্ষম হন।যুদ্ধে মুইজউদ্দিনের সেনাবাহিনী ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং তারা মরুভূমির মধ্য দিয়ে মুলতান ফিরে আসে।মুইজউদ্দিন তারপর ঘুর ফিরে আসেন। বামিয়ান এবং সিস্তানের শাসকদের সাথে তিনি সুলতান শাহের বিরুদ্ধে তার ভাই গিয়াসউদ্দিনকে সহায়তা করেন। ১১৯০ সালে মার্ভে সুলতান শাহকে পরাজিত করা হয়। তারপর তিনি সুলতান শাহের অধীনস্থ বৃহত্তর খোরাসানের অধিকাংশ অঞ্চল নিজ রাজ্যে যুক্ত করেন।কুতুবউদ্দিন আইবেক ১১৯৩ সালে আজমির দখল করে নেন।এবং শীঘ্রই উত্তর এবং মধ্য ভারতে ঘুরিদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেন। স্বরস্বতি, সামানা, কোহরাম ও হনসির মত হিন্দু রাজ্যগুলো সহজে জয় করা হয়। চূড়ান্তভাবে তার সেনারা দিল্লির দিকে অগ্রসর হয়। চান্দওয়ারের যুদ্ধে কনৌজের রাজা জয়চাঁদকে পরাজিত করে দিল্লি দখল করা হয়। একবছরের মধ্যে মুইজউদ্দিন উত্তর রাজস্থান এবং গঙ্গা-যমুনা দোয়াবের উত্তর অংশের নিয়ন্ত্রণ লাভ করেন।আজমির রাজ্য এরপর গোলার হাতে সমর্পণ করা হয় এই শর্তে যে তিনি ঘুরিদের নিয়মিত কর পরিশোধ করবেন।মুইজউদ্দিন গজনি ফিরে এসে তার পশ্চিম সীমান্তের অস্থিতিশীলতা মোকাবেলায় নামেন। তিনি কুতুবউদ্দিন আইবেককে উত্তর ভারতে তার আঞ্চলিক প্রশাসক হিসেবে নিযুক্ত করেন। তার সেনাবাহিনী মূলত তুর্কীয়দের নিয়ে গঠিত হয়েছিল। এই সেনাবাহিনী উত্তর ভারতের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হয়ে বাংলা পর্যন্ত পৌছায়।
খোয়ারিজমীয় ও ঘুরি নেতাদের সাথে যুদ্ধ
১২০০ সালে তেকিশ মারা যান এবং মুহাম্মদ খান তার উত্তরসুরি হন যিনি আলাউদ্দিন উপাধি ধারণ করেন। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে গিয়াসউদ্দিন এবং মুইজউদ্দিন তাদের সেনাবাহিনী নিয়ে খোরাসানের দিকে অগ্রসর হন। নিশাপুর জয় করার পর মুইজউদ্দিনকে রাইয়ের দিকে অভিযানে পাঠানো হয়। তবে তিনি গুরগানের চেয়ে সামান্য কিছুদূর অগ্রসর হতে পেরেছিলেন। তার ফলে তিনি গিয়াসউদ্দিনের সমালোচনার সম্মুখীন হয় যা এই দুই ভাইয়ের মধ্যে একমাত্র ঝগড়ার ঘটনা বলে উল্লেখ করা হয়।কয়েক মাস অসুস্থ থাকার পর ১২০২ সালে গিয়াসউদ্দিন হেরাতে মারা যান। মুইজউদ্দিন ভারত থেকে ঘুর ফিরে আসেন এবং ঘুরি অভিজাত ব্যক্তিদের সমর্থন লাভ করে ফিরোজকোহে ঘুরি সাম্রাজ্যের সুলতান হন। তার ক্ষমতালাভের অল্পকাল পর দ্বিতীয় মুহাম্মদ তার সাম্রাজ্যে আক্রমণ চালান এবং হেরাত অবরোধ করেন। মুইজউদ্দিন এই আক্রমণ প্রতিহত করেন এবং এরপর খোয়ারিজমে তাকে ধাওয়া করেন। মুইজউদ্দিন তাদের রাজধানী গুরগঞ্জ অবরোধ করেছিলেন। দ্বিতীয় মুহাম্মদ কারা-খিতান খানাতের কাছে সহায়তা চান। তারা দ্বিতীয় মুহাম্মদের সাহায্যার্থে সেনাদল প্রেরণ করেন। কারা-খিতানদের কাছ থেকে চাপ আসায় মুইজউদ্দিন অবরোধ তুলে ফেরত আসেন। তবে ঘুর ফেরার পথে ১২০৪ সালে আন্দখুদে তিনি পরাজিত হন। মুইজউদ্দিন ঘুর পৌছাতে সক্ষম হন এবং খোয়ারিজমীয় ও কারা-খিতানদের বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণের প্রস্তুতি নেন। এর কিছুকাল পর পাঞ্জাব ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে বিদ্রোহ দেখা দেয়। ফলে পাল্টা আক্রমণের পরিবর্তে তাকে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে মনোনিবেশ করতে হয়।
১২০৬ সালে মুইজউদ্দিন ভারতের বিষয় মীমাংসা করেন।তিনি ভারতের দায়িত্ব তার দাস কুতুবউদ্দিন আইবেকের হাতে সমর্পণ করেন।গজনি ফেরার সময় তার কাফেলা শোহাওয়ার কাছে দামিয়াকে বিশ্রামের জন্য থামে। এটি বর্তমানে পাকিস্তানের পাঞ্জাবের অন্তর্গত। ১২০৬ সালের ১৫ই মার্চ মাগরিবের নামাজ পড়ার সময় তিনি নিহত হন। তার হত্যাকারীর প্রকৃত পরিচয় নিয়ে বিতর্ক আছে। কারো কারো মতে এই হত্যাকান্ড স্থানীয় গাখারদের দ্বারা সংঘটিত হয়েছিল। আবার কারো মতে তিনি খোখার বা ইসমাইলিদের হাতে নিহত হয়েছিলেন।হাসান নিজামি এবং ফিরিশতার বর্ণনা অনুযায়ী মুইজউদ্দিন গাখারদের হাতে নিহত হন। তবে ফিরিশতা খোখারদের গাখার হিসেবে বিবেচনা করে থাকতে পারেন।ফিরিশতার পূর্বের সকল ঐতিহাসিক একমত যে গাখাররা নয় বরং খোখাররা মুইজকে হত্যা করে তাছাড়া কেউ দাবি করেন যে মুইজ ইসমাইলিদের হাতে নিহত হয়েছিলেন।ভারতীয় লোককাহিনীতে পৃথ্বিরাজকে মুইজউদ্দিনের হত্যার কারণ হিসেবে দেখানো হয়।তবে এই তথ্য ঐতিহাসিকভাবে সঠিক নয় কারণ পৃথ্বিরাজ তার অনেক আগেই মারা যান।
উত্তরাধিকার
মুইজউদ্দিনের কোনো সন্তান ছিল না। তিনি তার তুর্কি দাসদের সাথে সন্তানের মত আচরণ করতেন। তারা সৈনিক এবং প্রশাসক উভয় হিসেবে প্রশিক্ষণ লাভ করেছিল এবং তাদের উৎকৃষ্ট মানের শিক্ষা দেয়া হয়। তার সেনাবাহিনী ও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে অনেক দাস অধিষ্ঠিত ছিল সুলতানের কোনো উত্তরসুরি নেই বলে দরবারের এক সদস্য মাতম করলে মুইজউদ্দিন উত্তর দেনঃ
"অন্য সম্রাটদের একজন বা দুইজন সন্তান থাকতে পারে আমার সহস্র সন্তান আছে আমার তুর্কি দাসরা যারা আমার শাসনের উত্তরাধিকারী হবে এবং এসকল অঞ্চলে যারা আমার পরে আমার নাম খুতবায় সংরক্ষণ করবে।"
মুইজউদ্দিনের অনুমান সত্য প্রমাণিত হয়। তার মৃত্যুর পর তার সাম্রাজ্য দাসদের মধ্যে বিভক্ত হয়। তাদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হলেনঃ
কুতুবউদ্দিন আইবেক ১২০৬ সালে দিল্লির শাসক হন এবং দিল্লি সালতানাত প্রতিষ্ঠা করেন। এর মাধ্যমে ভারতে মামলুক রাজবংশের সূচনা হয়। নাসিরউদ্দিন কাবাচা ১২১০ সালে মুলতানের শাসক হন। তাজউদ্দিন ইলদিজ গজনির শাসক হন। ইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজি বাংলার শাসক হন।
স্মরণ
মুইজউদ্দিনের স্মৃতির উদ্দেশ্যে পাকিস্তান সামরিক বাহিনী তাদের তিনটি মধ্য-পাল্লার ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র মুইজউদ্দিনের নামে নামকরণ করেছে। এগুলো হল ঘুরি-১, ঘুরি-২ ও ঘুরি-৩
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:০৯