somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্কুল জীবনের পুরানো বন্ধুরা...

০৩ রা মার্চ, ২০১২ দুপুর ১২:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ক্লাস সেভেন এইটে থাকতে আমাদের ক্লাসের ছেলেদের সাথে মেয়েদের সবসময়ই মারমার কাট কাট লেগে থাকতো। আমাদের একজন ম্যাডাম ছিলেন শিপ্রা ম্যাডাম উনার কাছেই দুই দল আমরা নালিশ করতাম, ম্যাডাম মিটমাট করে দিতেন আমরা আবার ২দিন পর ক্যাচাল করতাম। একারণেই স্কুলে থাকতে ছেলেদের সাথে মেয়েদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তো দূরের কথা কেমন আছো ভাল আছো বলাও হতো না।
ক্লাস নাইনে বেশ কিছু ছেলে মেয়ে আমাদের স্কুলে ভর্তি হল, এদের মধ্যে আমরা একজনের নাম রাখলাম লাউ। লাউ একটু মেয়েলী টাইপ ছিল। আমরা ওকে লাউ বলে ডাকতে ডাকতে ওর আসল নাম ভুলে গিয়েছিলাম। বেচারা লাউ দীর্ঘ ১২বছর ধরে স্মৃতিকে ভালবেসে যাচ্ছে কিন্তু স্মৃতির দেখা নেই!

ক্লাস নাইনে একটা মেয়ে ভর্তি হল ওর নাম ছিল জেসমিন। ওর কথাবার্তা যথেষ্ট কর্কশ ছিল তাই প্রথমে আমরা ওকে ভালভাবে নিতে পারি নি। একবার লাস্ট বেঞ্চের কোণার সিটটা নিয়ে জেসমিনের সাথে স্মৃতির ক্যাচাল হল। স্মৃতি সিটটা ছাড়বে না দেখে জেসমিন কান্নাকাটি শুরু করলো। স্মৃতি তারপরও সিটটা ছাড়লো না! তখন আমরা আমাদের রো তে কোণার সিটটা জেসমিনকে দিলাম। যে জেসমিনের সাথে হ্যা না তে জবাব দিলেও আমার বান্ধবীরা আমাকে শাস্তি দিতো এই তারাই ২দিন পর বুঝলো জেসমিন কত উপকারী! জেসমিন সাথে থাকলে গোলাম আজম স্যার আমাদের পড়া ধরতো না। আমরা পড়া না করেও বসে থাকতাম। একবার আমরা কথা বলে চুপ করে গেলাম জেসমিন হাসতে গিয়ে ধরা খেল। তাকে ম্যাডাম দাড় করিয়ে দিল। জেসমিনের বড় ভাই ওইদিন ই স্কুলে এসে জানালা দিয়ে দেখলো তার বোন দাড়িয়ে! জেসমিন বাসায় গিয়ে মার খেলো এই কারণে। এই মেয়েটা আমাকে কেন জানি খুব পছন্দ করতো। এই মেয়েটার মানসিক সমস্যা ছিল এটা সে নিজেও বুঝতো। কিন্তু তার সমস্যাটা তার ফ্যামিলি বুঝতো না। ওদের ফ্যামিলি বেশ গোড়া ছিল। একদিন জেসমিন বাসা থেকে একা একা বের হয়ে গিয়েছিল শুনেছিলাম। এরপরের খবর আর জানি না।

বকুল নামে একটা ক্লাসমেট ছিল আমাদের সাথে। সারাদিন তার কোন অজানা কারণে মেজাজ খারাপ থাকতো ওকে নকল করে আমরা মজা নিতাম। আরেকটা ছেলে ছিল খৈয়াম, ক্লাস টেনে থাকতে সে তার থেকে ৩/৪বছর বড় এক মেয়েকে বিয়ে করলো। তার মা তাকে বাসা থেকে বের করে দিল। কয়েকদিন সে তার ভাই তখন কুয়েটে পড়তো সেখানে ছিল। তারপর বউকে ছেড়ে ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে গেল।


বানীর নাম ছিল সৈয়দা রেজা বানী। সে নিজের খাতার উপর রেজা লিখে মজা পেতো। আমরা তার নাম রেজাকে রাজু করে দিলাম। এইবার সে রাগ করলো। কেন তার ফুলের মত পবিত্র নাম কে বিকৃত করলাম আমরা! স্কুলে বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের একটা নাটকে এক ছেলের রোল ছিল রাজু নামে এক বখে যাওয়া ছেলের বাবার। বানী রাজুর বাবাকে বিভিন্ন কোণায় চিপা চুপা থেকে আব্বা বলে ডাকতো আর মজা নিতো! বানী মোটামুটি ফাজিল ছিল। সে ক্লাসের সবচেয়ে ছোট সাইজের ছেলে চৈতণ্য পালের প্রেমে পড়ার ভান শুরু করলো একবার। তার সবকথায় থাকতো আমার চৈতা! চৈতণ্যর সাইজ ছিল ৪ফুট ৮ইঞ্চির মত যখন এসএসসি পাশ করি আমরা। ২বছর পর কে যেন বলল, আমাদের চৈতা আর সেই পিচ্চি নাই এখন সে অনেক লম্বা হয়ে গিয়েছে। লম্বা চৈতণ্যকে আমি দেখিনি। আর কখনো দেখতেও পাবো না। আজকে সকালে সে আমাদের ছেড়ে চলে গিয়েছে। জানি না কি কারণে সে নিজেকে এই পৃথিবী থেকে সরিয়ে নিয়েছে। শুধু এটাই বলতে চাই যেখানে থাকিস, ভাল থাকিস চৈতা!
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা মার্চ, ২০১২ দুপুর ১২:৩৯
১৪টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাসূলের (সা.) ওয়ারিশের সর্ববৃহৎ দলের আমলে যা আছে সেইটা দ্বীন, এর বাইরে থাকা সব কিছু বিদয়াত

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৪ ঠা মে, ২০২৫ বিকাল ৫:০৬




সূরাঃ ৫ মায়িদাহ, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩। তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত, রক্ত, শূকরমাংস, আল্লাহ ব্যতীত অপরের নামে যবেহকৃত পশু, আর শ্বাসরোধে মৃত জন্তু, প্রহারে মৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত গেলেন সন্তু লারমা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা মে, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৪২





বাংলাদেশ বড় একটা গেইমে পড়তে যাচ্ছে আর এই গেইমের ট্র্যাম্পকার্ড সন্তু লারমা!!

আমি হাসিনারে বিশ্বাস করলেও এই সন্তুরে বিশ্বাস করতে চায়না। সন্তু মোদি আব্বার কাছে যাচ্ছে শান্ত্ব... ...বাকিটুকু পড়ুন

সৃষ্টির ঋণ....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৪ ঠা মে, ২০২৫ রাত ৮:২৭

সৃষ্টির ঋণ....

মধ্য দুপুরে ডেল্টা হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে সিএনজি, বাইক, উবার কিছুই পাচ্ছিনা। অনেকটা পথ হেটে বাংলা কলেজের সামনে বেশকিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে একটা রিকশা পেয়েছি....ঘর্মাক্ত ষাটোর্ধ কংকালসার রিকশাওয়ালাকে দেখে এড়িয়ে যাওয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

হেফাজত ইসলামের মহাসমাবেশ: প্রধান ইস্যু কি কেবল নারী সংস্কার কমিশন বাতিল ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৪ ঠা মে, ২০২৫ রাত ১১:১৪


হেফাজত ইসলাম মে মাসের তিন তারিখ এক বিশাল সমাবেশ আয়োজন করে। সমাবেশ থেকে সরকারের কাছে প্রায় বারো দফা দাবী তুলে ধরা হয়। সরকার যদি বারো দফা দাবী মেনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ভাঙ্গা ল্যাপটপ

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৫ ই মে, ২০২৫ সকাল ১১:০৬


শুক্রবার রাতে আমার মনে হলো, আমি আমার ল্যাপটপে লিনাক্স ওএস সেটআপ দেব। যদিও আমি সারা জীবন উইন্ডোজ ব্যবহার করে এসেছি এবং লিনাক্স সম্পর্কে তেমন কিছুই জানি না। রাতে শুয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×