সত্যিই বাসি কিন্তু এই সোনার বাংলাতে আজি চলাফেরা করতে ভীষণ ভয় পাই। যাদের হাতে ক্ষমতা, যাদের হাতে অস্ত্র তারাই আজ যা খুশী তাই করছে। যে সন্ত্রাসী হউক কিংবা সরকারী পালিত কোন দলই হউক (র্যাব,পুলিশ...)
প্রতিটি দেশেই জনগনের সুবিধার্থে আইন শৃংঙ্খলা বাহিনী থাকে। তাদের দায়িত্ব জনগনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। বিশ্বের মনে হয় আমরাই একমাএ সৌভাগ্যবান(!) জাতি যারা নিরাপত্তা প্রদানকারী বাহিনীর কাছে প্রতিনিয়ত নিরাপত্তাহীনতায় ভুগী। পুলিশ নাকি জনগনের বন্ধু...!! এই কথা শুনলে যে অনুভূতি হয় তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারি না যখন মনে হয় এই বন্ধুরাই জনগনের হাতে তুলে গনপিটুনীর জন্য.........
বাংলাদেশে যখন র্যাব গঠিত হয় এবং তাদের কার্য্যক্রমে আমরা সাধারন জনগনরা কিছুটা হলেও স্বস্তি লাভ করেছিলাম। কিন্তু আজকাল উনাদের কর্য্যক্রম আপনাদের স্বস্তি দেয় কিনা জানি না তবে আমি কোন স্বস্তি পাই না বরং অস্থিরতায়,আতংকে থাকি। কারন আজ র্যাব মানেই মৃত্যু। কিন্তু মৃত্যুই কি সব কিছুর সমাধান?? হয়তো আজকাল আমরা তাই-ই ভাবি..... এজন্যই মানুষকে মারতে,নিজের হাতে আইন তুলে নিতে আমরা এতটুকুও কুন্ঠা বোধ করি না।
দেশের শান্তি শৃংঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে যেমন আইন শৃংঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা অসীম তেমনি মিডিয়াও একটি বিশাল শক্তি। আজকাল আমাদের আইন শৃংঙ্খলা বাহিনী যেমন কুলুষিত হয়ে গেছে তেমনি মিডিয়াও আজ এক শ্রেনীর রক্ষাবাহক ও সংবাদ পরিবেশনার কাজ করে যাচ্ছে (যদিও সবাই এক নয় কিন্তু ভালোর পরিমান এবং তাদের কাজের পরিধি খুবই সংকীর্ণ) যাতে আমার অস্থিরতা দিন দিন বেড়েই চলছে। আজকাল র্যাবের প্রতিটি হত্যা কান্ডের পর আমরা যে সংবাদ পাই তা আর বিশ্বাসযোগ্য মনে হয় না। আমরা সাধারন জনগন হয়তো কিছুই করতে পারিনা কিন্তু প্রতিদিন তো ঘাস খাই না........অন্তত সাধারন জ্ঞাণ-বুদ্ধি তো আমাদের আছে। যা দ্বারা আমরা এতটুকু তো বুঝতে পারি যে ইচ্ছেমতো ছাই পাশ বক্তব্য আমাদের জোর করে গিলানো হচ্ছে।
আমার এই পর্যন্ত লিখা পড়ে হয়তো কেউ কেউ বলতে পারেন- যারা মরে তারা কি খুব ভালো নাকি?? তাদের নিয়া আপনার এতো দরদ ক্যান!!!!
আমি শুধু এইটুকুই বলতে চাই.... কোনদিনও সন্ত্রাসীর সমর্থন দেই না কিংবা সন্ত্রাসী কার্য্যকর্মেরও সমর্থন করি না। মৃত্যু তো সব কিছুর সমাধান হতে পারে না। মানবিক চিন্তা করলেও তো আঁতকে উঠার কথা যে আত্নপক্ষের কোন কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই এইভাবে হত্যাকান্ড ঘটানো কতটা যুক্তি সংঙ্গত? আর সরকারী বাহিনী কিংবা অস্ত্র ব্যবহার করার বৈধতা আছে বলেই তাদের সব কর্মকান্ডই বৈধ নাকি? যারা মারা যাচ্ছে তারা সবাই কি ভয়ংকর? বাংলাদেশে এর চেয়েও ভয়ংকর লোকজন প্রতিনিয়ত ঘুরে বেড়াচ্ছে আমাদের আশেপাশে যাদের এতো ক্ষমতা যে তাদের লোম স্পর্শ করার ক্ষমতাও আমাদের প্রশাসনের নেই। সরিষার মধ্যে যদি ভূত থাকে তবে সেই সরিষা দিয়ে কি আর ভূত তাড়ানো যায়??
আমি কঠিন হিসাব কিতাব বুঝি না। সাধারন জনগন হিসেবে নিজের নিরপত্তা চাই। সন্ত্রাসীদের কাছে থেকে এবং সরকারী অস্ত্রধারীদের কাছ থেকেও। না হলে হয়তো একদিন আমিও কোন এক রাস্তারধারে পড়ে থাকবো এক মস্তবড় সন্ত্রাসী পরিচয়ে। সংবাদ পত্রে ফলাও করে আসবে র্যাবের/পুলিশের/দু'পক্ষের বন্দুক যুদ্ধে অমুকের মৃত্যু ও অনেক অস্ত্র উদ্ধার।
অথচ খবরের অন্তরালেই থেকে যাবে মৃত যুবকের পকেটে ছিলো মায়ের জন্য কেনা ঔষধ কিংবা আদরের স্ত্রী বা কন্যার জন্য কেনা লাল চুড়ি.............
...................................................................................................
যখন আমি এই লেখাটি পোষ্ট করি তার কিছুক্ষন পরেই জানতে পারি আমাদের চলচ্চিত্র অঙ্গনের এক উজ্জল নক্ষত্রের পতনের সংবাদ............. মৃত্যু চিরন্তন সত্য কিন্তু এমন মৃত্যু মেনে নেয়া সত্যিই অনেক কষ্টের। প্রথমে বিশ্বাস করতে খুব কষ্ট হচ্ছিলো। প্রতিদিন,প্রতিনিয়তন ঝরে যাচ্ছে অমূল্য কত প্রাণ। আমরা কি এমন একটি স্বাধীন দেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম যেখানে আমাদের জীবনের কোন মূল্য নেই? প্রতিনিয়ত অংতঙ্কিত প্রহর কাটাতে হয়... আজকাল মনে হূয় আমার সোনার বাংলাতে সব কিছুর মূল্য বাড়লেও দিন দিন কমছে মানুষের জীবনের মূল্য। তাই বিধাতার কাছে সব প্রার্থণার সাথে এই প্রার্থণাও করতে হচ্ছে....... আল্লাহ..আমার মৃত্যুটা স্বাভাবিকভাবে করো
যারা চলে গেলেন তারা আর ফিরবেন না। সময়ের স্রোতে হয়তো এদের কথাও এক সময় বন্দী হয়ে যাবে নির্দিষ্ট মৃত্যু দিবসের গন্ডিতে। সরকার,প্রশাসনের নিকট একজন সাধারন মানুষ হিসেবে আকুল আবেদন দয়া করে এই ঈদ মৌসুমে নতুন করে আর একটি জীবনও যাতে ঝরে না যায় সেই ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।
জীবন একটাই............. সময় মূল্যবান কিন্তু জীবন তাঁর চেয়েও বেশী। দয়া করে সবাই সাবধানে থাকবেন।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই আগস্ট, ২০১১ রাত ৯:২০