somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কিছু ভ্রান্তির অপনোদন (সাবধান- নারীদের প্রবেশ নিষেধ)

৩০ শে নভেম্বর, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রান্না করা নারীদের দায়িত্ব কিনা

ইসলামী ফিকাহবিদগণ একটি নাজুক মাসআলা বলেছেন।
যে মাসআলাটি বললে অনেকেই অসন্তোষ প্রকাশ করেন। মাসআলাটি হলো, ঘরে রান্নাবান্না করা নারীদের জন্য শরয়ী কর্তব্য নয়। অর্থ্যাৎ তাদেরকে রান্নাবান্না করতেই হবে, এটা ফরয, এমন কোন নির্দেশ শরীয়ত দেয়নি। এমনকি ফুকাহায়েকেরাম বলেছেন- মেয়েদের মধ্যে দুটি শ্রেণী আছে। যথা-
এক. যারা পারিবারিকভাবে বাবার সংসারে ঘরকন্যার কাজে অভ্যস্ত।
দুই. যারা পারিবারিকভাবে বাবার সংসারে ঘরকন্যার কাজে অভ্যস্ত নয়। বরং চাকর-নওকরের সাহয্যে তার গৃহস্থলী কাজগুলো করায়।
দ্বিতীয় শ্রেণীর মেয়েদের সম্পর্কে কথা হলো, এরা স্বামীর ঘরে আসার পর রান্না করা তাদের দায়িত্ব বলে বিবেচিত হবে না। ইসলামের দৃষ্টিতে বিচারের কাঠগড়ায়, চরিত্রের মাপকাঠিতে তথা যে কোন অবস্থাতে এটা তাদের কর্তব্য বলে বিবেচিত হবেনা। বরং স্ত্রী স্বামীকে একথা বলার অধিকার রাখে যে, আমার ভরণ-পোষণ তোমার দায়িত্বে। রান্নাবান্না করার দায়িত্ব আমার নয়। কাজেই প্রস্তুতকৃত খাবার আমাকে দিতে হবে। ফিকাহবিদগণ লিখেছেন, স্ত্রী যদি এরুপ দাবি করে তাহলে স্বামীর কর্তব্য স্ত্রীকে প্রস্তুতকৃত খাবার এনে দেয়া। স্বামী এ ব্যাপারে বাধ্য থাকবেন। স্বামী রান্নাবান্নার জন্য স্ত্রীকে বাধ্য করা বা চাপ প্রয়োগ করতে পারবেন না। তাই তো হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অত্যন্ত স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন- স্ত্রীদের প্রতি তোমাদের অধিকার হলো তারা তোমাদের গৃহে অবস্থান করবে। এবং তারা তোমাদের অনুমতি ছাড়া বাইরে যেতে পারবেনা। এছাড়া শরীয়ত নির্দেশিত কোন অধিকার তোমাদের নেই।
আর মেয়েটি যদি হয় প্রথম শ্রেণীর । অর্থ্যাৎ মেয়েটি পারিবারিকভাবে বাবার সংসারে রান্নাবান্নার কাজে অভ্যস্ত ছিল। তাহলে রান্নাবান্না করা আইনগতভাবে তার কর্তব্য নয়। তবে হ্যাঁ, ধার্মিকতা, দ্বীনদারী এবং মানবিক দৃষ্টিকোণে রান্নাবান্না করা তার উপর অবশ্য কর্তব্য। অর্থ্যাৎ আইনের মাধ্যমে তাকে রান্নাবান্নার জন্য চাপ দেয়া যাবেনা। তবে তার চারিত্রিক দাবি এটাই যে, সে নিজ হাতে নিজের খাবার রান্না করবে। এক্ষেত্রে স্বামীর দায়িত্ব হলো, রান্নাবান্নার যাবতীয় সরঞ্জামাদি জোগাড় করে দেয়া।

অবশিষ্ট থাকল স্বামী ও সন্তানদের খানা রান্না করার ব্যাপার

এটাও কিন্তু স্ত্রীর কর্তব্য হিসেবে বিবেচিত হবেনা। আবার স্বামীর নিকট এ দাবীও করতে পারবেনা যে আমাকে প্রস্তুতকৃত বাজারের খাবার এনে দিতে হবে। স্ত্রী রান্না করতে অস্বীকৃতি জানালে আইনের আশ্রয় নিয়ে তাকে বাধ্য করে রান্না করানোও যাবেনা। সার কথা এ সম্পর্কে ফিকাহবিদগণের বিশদ আলোচনা রয়েছে।
আরো জেনে নিন, ছেলের কর্তব্য হলো মা-বাবার সেবা যতœ করা। হবে হ্যাঁ ছেলের বউ যদি শ্বশুর-শ্বাশুরীর খেদমত করে যদি তাদের সেবা যতœ সানন্দে করে তাহলে সেটা তার জন্য এক পরম সৌভাগ্যের বিষয়। তাই বলে স্বামী তার স্ত্রীকে তার মাতা-পিতার খেদমত করতে বাধ্য করতে পারবেনা। এটা স্ত্রীর ইচ্ছা বা খুশীর ব্যাপার। তদ্রুপ শ্বশুর শাশুরীও ছেলে বউকে খেদমত করার জন্য চাপ প্রয়োগ করতে পারবেন না। তবে পরিবারের সুখ শান্তি ও সমৃদ্ধির দিকে লক্ষ্য করে, নিজের সৌভাগ্যের বিষয় ও সাওয়াবের আশায় শ্বশুর-শাশুরীর খেদমত করা ছেলের বউয়ের নৈতিক দায়িত্ব। তার কাছে এটা এক প্রত্যাশাও বটে।
গ্রন্থসুত্র: ইসলাহী খুতুবাত- জাস্টিস মাওলানা তাকী উসমানী
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

"বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ হবে বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রধান চালিকা শক্তি".....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ৩০ শে মে, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:০৬

"বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ হবে বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রধান চালিকা শক্তি".....


বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ হতে হবে বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রধান চালিকা শক্তি। হতে হবে সকল প্রেরণার উৎস। বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের এই দর্শনের নিহিত রয়েছে আত্মসামাজিক,... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ঢাকায় শান্তিতে বসবাসের জায়গাগুলো

লিখেছেন শাহ আজিজ, ৩০ শে মে, ২০২৫ রাত ৯:৪৪






ঢাকায় শান্তিতে বসবাস করা যায় যেসব এলাকা: একটি বাস্তবভিত্তিক পর্যালোচনা

ঢাকা, বাংলাদেশের রাজধানী শহর, জনসংখ্যা ও যানজটের দিক থেকে অন্যতম ব্যস্ততম নগরী হলেও এখানকার কিছু কিছু এলাকা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হেজেমনি, কাউন্টার-হেজেমনি ও বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক যুদ্ধ !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ৩১ শে মে, ২০২৫ রাত ১২:২৪


একটি রাষ্ট্রের সবচেয়ে নিঃশব্দ অথচ গভীর যুদ্ধ চলে তার ইন্টেলেকচুয়াল সেক্টরে। গোলা-বারুদের বদলে এখানে অস্ত্র হয় কলম, টকশো, নাটক, পাঠ্যবই, এবং ইউটিউব। বাংলাদেশে এই হেজেমনি বহুদিন ছিল প্রথম আলো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে দলীয় সরকার কখনই জনগণের সরকার হয় না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩১ শে মে, ২০২৫ রাত ১২:২৫



সবাই মিলে দেশ স্বাধীন করলেও আওয়ামী লীগ সেটা স্বীকার করলো না। সেজন্য তারা বাকশাল নামে একদলীয় শাসন শুরু করে ছিল। কিন্তু সেনা বিদ্রোহে তাদের বাকশালী শাসনের অবসান ঘটে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাতক্ষীরার হিম সাগর আম

লিখেছেন শাহ আজিজ, ৩১ শে মে, ২০২৫ দুপুর ১:৪৪




আম খাচ্ছি , সাতক্ষীরার হিম সাগর আম । সিজনে প্রথম । রাসায়নিক মুক্ত । খুব মিষ্টি ভাই । এরপর কুষ্টিয়া , চাপাই , রংপুরের আম আসবে । আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×