অনেক আগের কথা আমেরিকায় তখন চাকুরীর বাজার খুব খারাপ। আন্ডারগ্র্যাজুয়েট করে ও ভালো চাকুরী সহজে পাওয়া যেত না। অবস্হাটা
এমন দাড়িয়েছে যে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট করে ও মানুষ পিয়নের চাকুরির জন্য আবেদন করত আর তাদের ই একজন ছিল মিঃ ডগলাস। তিনি আন্ডারগ্র্যাজুয়েট করার পর অনেক জায়গার আবেদন করলেন কিন্তু কোথাও হতে ভাইভার জন্য তার ডাক পড়ে না অন্যদিকে তার সঞ্চয় করা টাকা দ্রুত শেষ হয়ে আসতে লাগলো। মিঃ ডগলাস উদ্বিগ্ন হয়ে পড়তে লাগলেন ভবিষ্যত এর কথা ভেবে কিভাবে তিনি যাবতীয় খরচ বহন করবেন। অবশেষে উপায় না দেখে তিনি ও পিয়নের পদের জন্য আবেদন করতে লাগলেন এবং একদিন তাকে ভাইভার জন্য ডাকা হলো। মিঃডগলাস ভাইভা দিতে যাচ্ছে আর ভাবছে তিনি আন্ডারগ্র্যাজুয়েট করছেন তাই অন্ততপক্ষে তার এই পিয়নের চাকুরী পেতে তেমন কোন কষ্ট হবে না কিন্তু ওয়েটিং রুমে চাকুরীপ্রার্থীর সংখ্যা দেখে ডগলাস এ চোখ কপালে উঠার অবস্থা।অনেকক্ষন অপেক্ষা করার পর ডাক পেলেন ভাইভার জন্য এবং ভাইভা ও হলো মোটামুটি। ডগলাস বাসায় ফিরে আসার সময় তার মনের মাঝে উকিঁ দিচ্ছে পিয়নের চাকুরী খানি ও বোধহয় তার কপালে জুটবে না। বিধাতার অশেষ কৃপায় মিঃ ডগলাসকে প্রাথমিক বাঁচাইয়ে নির্বাচন করা হলো এবং তাকে সেটা চিঠির মাধ্যমে জানানো হলো এবং তাকে বলা হলো তার একটি ইমেইল এড্রেস দিতে যাতে করে তার সাথে পরবর্তীতে যোগাযোগ করা হবে কিন্তু ডগলাস এর কোন ইমেইল এড্রেস ছিল না তিনি সেটা জানিয়ে দিলেন। কিছুদিনপর ডগলাস কে জানানো হলো তার ইমেইল এড্রেস না থাকায় থাকে বাদ দেওয়া হলো কারন যে প্রতিযোগীর ইমেইল এড্রেস নাই এই ধরনের প্রতিযোগীর তাদের দরকার নাই। এই দিকে ডগলাস পড়ে গেলেস অথৈ সাগরে কি করবেন ভেবে কূল পাচ্ছেন না অন্যদিকে পকেটের সঞ্চয় ও তলানিতে এসে পৌঁছেছে। তার হাতে আছে মাত্র ২০ ডলার। ডগলাসের এই ২০ ডলার ই যেহেতু তার শেষ সম্বল তাই কোন ভাবেই এই ডলাসগুলা খরচ করবেন না বলে চিন্তা করলেন কিন্তু খরচ না করলে খাবে কি? এই চিন্তায় ও তার আর ঘুম আসে না। অনেক ভেবে তিনি চিন্তা করলেন তিনি ব্যবসা করবেন এবং যথারীতি শুরু ও করলেন। ২০ ডলার দিয়ে তিনি সবজি কিনলেন বিক্রীর উদ্দ্যেশে। ২০ ডালার এর সবজি বিক্রী করলেন ৩০ ডলারে এবং ৩০ ডলার দিয়ে সবজি কিনে আবার বিক্রী করলেন ৫০ ডলারে এইভাবে চক্রবৃদ্ধি হারে তার ব্যবসা বাড়তেই থাকলো। শুরুর দিকটা ব্যবসার ভালোভাবে চললেও কিছুদিন পর ক্ষতির সন্মুখীন হলেন ডগলাস কিন্তু হাল ছাড়লেন না তিনি চালিয়ে গেলন তার ব্যবসা। সততা এবং কঠোর প্ররিশ্রম এর কারণে ডগলাস কে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি ডগলাস হয়ে উঠলেন বড় একজন ব্যবসায়ী শুধু তাই নয় হয়ে ক্রমে হয়ে উঠলেন একজন বড় সবজি রপ্তানিকারক। রপ্তানির সুবাদে তার সাথে পরিচয় হতে লাগলো অনেক বড় বড় ব্যাসায়ীর সাথে একদিন একজন বড় ব্যবসায়ী তার ইমেইল এড্রেস চাইলো তার সাথে যোগাযোগ করার জন্য। ডগলাস ঐ ব্যবসায়ীকে বললেন তার কোন ইমেইল এড্রেস নাই কারন জানতে চাইলে তিনি বলেন তার যদি ইমেইল এড্রেস থাকত তবে তিনি আজ বড় একজন ব্যবসায়ী হতেন না হতেন একজন পিয়ন।
আমাদের সবার জীবনেই কম বেশী অপ্রাপ্তি আছে আর এই অপ্রাপ্তি গুলোই আমাদের ক্রমাগত ঠেলে দেয় হতাশার জগতে কিন্তু এই অপ্রাপ্তি গুলোর অনেক ভাল দিক ও আছে সেটা কি আমরা কখনো ভেবেছি? যে মানুষটি এই অপ্রাপ্তি গুলোকে চ্যালেন্জ হিসাবে নেয় সে এগিয়ে সামনের দিকে এবং সমৃদ্ধি ই তার শেষ ঠিকানা অন্যদিকে যে হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়ে সে থাকে ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে অন্ধকার ই তার নিত্য সঙ্গী।এই জীবনে আমরা সবাই কমবেশী তীর ছুড়েছি এবং এটা ও জানি তীরের এ্যারো যতো পিছনে টেনে ছুড়বেন এ্যারো ততবেশী দূরে যাবে এবং তার গতি ও হবে তীব্র।
পরিশেষে, সকল হতাশা ও অপ্রাপ্তি ই হোক আমাদের এগিয়ে চলার মূলমন্ত্র।
প্লিজ ভুল ভ্রান্তি হলে ধরিয়ে দিবেন।এডিট করে নিবো।