somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ডিজুস মাইয়া পটানোর দূর্দান্ত স্টেপসমূহ

২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রেম অথবা বিয়ে করার চাহিদা কমবেশী সব ছেলেদেরই আছে। কিন্তু এই চাহিদায় ইদানিং বৈচিত্র্যের সমাহার দেখা যাচ্ছে। তবে অনেক ছেলেদেরই যদি জিজ্ঞেস করা হয় যে আপনার কেমন গার্লফ্রেন্ড লাগবে তাহলে জবাবটা আসে হট মেয়ে লাগবে, মাল লাগবে অথবা এই টাইপ কথাবার্তা। শুদ্ধ ভাষায় আমরা এটাকে বলি, "ডিজুস মেয়ে"। ডিজুসে মেয়ে বলতে মূলত এক প্রকার কমনসেন্সহীন নারী সমাজ'কে বোঝায় যারা সর্বদা নিজেকে প্রদর্শনের একটা নোংরা তাগিদে ব্যস্ত থাকে। তাই ডিজুস মেয়ের সাথে প্রেম করার কালচারটা আমার পছন্দ না তবু অভিজ্ঞদের কাছ থেকে খোজ খবর নিয়ে, অনেকের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার আলোকে ডিজুস মেয়ের বয়ফ্রেন্ড হওয়ার প্রয়োজনীয় স্টেপগুলো আলোচনা করলাম।


স্টেপ ১ (ঘেটিস হওয়া): খাঁটি বাংলা ভাষায় ঘেটিস বলতে বোঝায় "যে ব্যক্তি অন্যের পোঁদে লেগে থাকে"। 'পোঁদ' শব্দটি এখানে রুপক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। এর মানে হচ্ছে সারাক্ষণ ২৪*৭ ঘন্টা আপনার তাকে সাপোর্ট দেওয়া লাগবে। ১০০ জন ছেলে বন্ধু মিলে আড্ডা মারছে কিংবা কোথাও যাচ্ছে এমন কিছু ত্যাগ করেও তাকে আপনার মেন্টাল সাপোর্ট দিতে হবে। মেন্টাল সাপোর্ট শব্দটি ও এখানে রুপক। এর মানে সে গরুকে ঘোড়া বললেও আপনাকে তা মেনে নিতে হবে। টমেটো দেখাইয়াও যদি বলে এটা মালয়েশিয়ান আপেল তাহলে আপনাকে ও সেটাই বলতে হবে। ঠোটে ক্যাটক্যাটা কালারের লিপষ্টিক, মুখে ৩০ কেজি ফেইস পাউডার লাগাইয়া পেত্নী সাইজাও যদি আপনার সামনে আসে তাহলেও সুরে সুরে আপনাকে ওয়াও বলতে হবে।



স্টেপ ২ (ফ্রেন্ড হওয়া): এই ফ্রেন্ড মানে বন্ধু না এক্ষেত্রে ফ্রেন্ড বলতে একজন ডেডিকেটেড চামচা বোঝায়। ইংরেজী 'ফ্রেন্ডশীপ' শব্দটার অর্থ এখানে 'চামচামি'। এজন্য প্রথমেই আপনাকে একজন নির্লজ্জ লম্বা জিহ্বার মালিক হতে হবে, যে জিহ্বা দিয়ে প্রয়োজনে ডিজুস কন্যার আদেশে কুত্তার গু পর্যন্ত চাটার মানসিকতা ও থাকতে হবে। সেই সাথে এই স্টেপে আপনাকে অনেক কেয়ারিং অ্যাটিচিউড দেখাতে হবে। 'কেয়ারিং অ্যাটিচিউড' শব্দটিও রুপক। একটি উদাহরণ দিলেই আশা করি ব্যাপারটা ক্লিয়ার হয়ে যাবেন। ধরুন, আপনার শরীরে পুষ্টিহীনতা দেখা দিল। ডাক্তার ভিটামিনের ওষুধ দিল। এখন ডিজুস বালিকা এক দলা থুথু ফেলে বলল, "তারচেয়ে এটা খাও, এটা বেশী পুষ্টিকর"। তাহলে সেটা খেয়েই আপনাকে পুষ্টি আহরণে প্রস্তুত থাকতে হবে। অনেকে হয়ত ভাবছেন এটার সাথে কেয়ারিং অ্যাটিচিউডের কি সম্পর্ক। তাদের জন্য বলি সব কিছু মেনে নেওয়াকেই ডিজুস জেনারেশনে কেয়ারিং অ্যাটিচিউড বলে।


স্টেপ ৩ (গুড ফ্রেন্ড হওয়া): ডিজুস মাইয়ার পাল্লায় পইড়া তো কুত্তার গু থেকে শুরু করে দলায় দলায় থুথু পর্যন্ত সব খানেই মুখ দিলেন। এবার সময় হয়েছে কিছু পাওয়ার। এই স্টেপটাকে বলে গুড ফ্রেন্ড স্টেপ। এই স্টেপে আপনি রিকশায় ঘোরা থেকে শুরু করে আর ও কিছু অ্যাডভান্টেজ নিতে পারবেন। তবে এখানে পর্দা প্রথা মেনে চলতে হবে। 'পর্দা প্রথা' শব্দটিও এখানে রূপক। এ ব্যাপারটি বোঝার জন্য আপনি ডিজুস মেয়েটি'কে একটি কলার সাথে তুলনা করুন। এ কলার উপরে আপনার সব অধিকারই আছে, তবে আপনি কলার খোসা ছাড়াতে পারবেন না। তবে খোসা না ছাড়িয়ে আপনি যেকোনো প্রকার অ্যাডভানটেজ নিতে পারবেন। তবে এখানে কিছু বোনাস মডিউল আছে। যেমনঃ হাত ধরে বৃষ্টি'তে ভেজা, শীতের সন্ধ্যায় এক চাদরে দুজন ঢুকা ইত্যাদি ইত্যাদি।



স্টেপ ৪ (বয়ফ্রেন্ড হওয়া): নিজেকে সকল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ করে সব স্টেপ পার হয়ে অবশেষে এবার সময় এল ফেইসবুকে 'ইন এ রিলেশনশীপ' স্ট্যাটাস দেওয়ার। তবে এখানেও কিঞ্চিত পর্দা প্রথা আছে। এই স্টেপে আপনি কলার অর্ধেকটা পর্যন্ত খোসা ছাড়াতে পারবেন। বাকি অর্ধেকটা সেসব ছেলেদের জন্য সংরক্ষিত যারা ম্যাট্রিক ইন্টারে এ+ পেয়ে ভাল ভার্সিটিতে পড়ে এখন বাইরে কোথাও পিএইচডি করছে। অর্থাৎ কলার খোসা পুরোপুরি ছাড়ানোর জন্য অবশ্যই আপনাকে 'প্রতিষ্ঠিত' হতে হবে। প্রতিষ্ঠিত শব্দটিও এখানে রুপক। এর মানে এমন একজন ব্যাক্তি যার বাড়ি, গাড়ি, টাকা পয়সা, ভাল চাকরি, ভবিষ্যত সম্ভাবনা এবং অবশ্যই একটি ডিএসএলআর ক্যামেরা থাকবে যা দিয়ে নিয়মিত সস্ত্রীক কভার ফোটো আপলোড করতে পারবে। আপনার এরকম কোনো সম্ভাবনা নেই। কারণ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সময়টা পুরোটাই আপনি উপরের স্টেপগুলো অনুসরণ করেছেন। তবে আপনার জন্য বলব, "অর্ধেকটা কলা খাওয়ার মধ্যেও মজা আছে যদি সেটা তৃপ্তি করে খেতে পারেন।"


লেখকের অভিমত
লেখাটা পুরোপুরি মজা করার জন্য লেখা। লেখাটি কার কেমন লাগবে জানি না তবে পাশ্চাত্য সংস্কৃতির প্রভাবে এমন ছেলে এবং মেয়ের সংখ্যা ইদানিং আসলেই আশঙ্কাজনকহারে বেড়ে যাচ্ছে। যার ফলে ছেলে মেয়েদের মধ্যে এখন আর আগের মত শ্রদ্ধা কিংবা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠছে না। কেউ কাউকে বিশ্বাস ও করতে পারছে না। ফলশ্রুতিতে, গত কয়েকবছরে 'ব্রেক আপ' শব্দটার বিস্তৃতি আশংকাজনকহারে ছড়িয়ে পড়ছে তরুণ সমাজে। আগে যেখানে ভালবাসার পরিণতি পাওয়ার জন্য মানুষ জীবন দিত সেখানে এখন ভালবাসাকে 'টাইম পাস' নামক নোংরা প্যাকেটে ঢুকিয়ে বিকৃত করা হচ্ছে। এর ফলে অনেকে মজা পেলেও অনেক ছেলে নষ্ট করছে অনেক ভাল মেয়ের জীবন, আবার অনেক মেয়েও ধ্বংস করে দিচ্ছে ভাল ছেলেদের জীবন। তবে এরপরেও ভাল লাগে যখন দেখি অনেক ভাল ছেলে মেয়েকে, যারা এখনো নিজের ব্যক্তিত্ব থেকে এই নোংরামি জিনিষ'টাকে দূরে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করছে। তাদের মধ্যে যারা 'ইন এ রিলেশনশীপ' তাদের ভালবাসা'কে আসলেই শ্রদ্ধা না করে পারা যায় না। আবার এদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা এখনো ভাল কারো জন্য অপেক্ষা করছে। যারা অপেক্ষা করছে তাদের কতদিন অপেক্ষা করতে হবে জানি না, তবে দোয়া করব তারা যাতে 'ডিজুস সংস্কৃতি'র এই নোংরা কালচারের শিকার না হন। সবার উদ্দেশ্যে তাই একটা কথাই বলব, "আমাদের সংস্কৃতি আন্তরিকতার সংস্কৃতি, তাই আসুন সকল প্রকার নোংরামি'কে না বলি। তার বদলে তৈরী করি একটি সুন্দর, শ্রদ্ধা ও বন্ধুত্বপূর্ন সমাজ।"


***ছবিগুলো ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত***
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ৯:০৬
২৫টি মন্তব্য ২২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×