somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তবু এখনো যাদের মাঝে বিজয় দেখি

২০ শে ডিসেম্বর, ২০১২ দুপুর ২:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমরা যারা এ প্রজন্মের নাগরিক আমরা জন্ম থেকেই আমাদের প্রবীণদের কাছে, বই পত্রে মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনে আসছি। কিন্তু এই গল্প কিংবা গল্প থেকে পাওয়া চেতনাকে নিজের মধ্যে ধারণ করার শক্তি কিংবা সাহস আমাদের মধ্যে নেই বললেই চলে। তাই আমরা এখনো অস্থির হয়ে খুজি মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে, পেতে চাই প্রেরণা। কিন্তু কেন জানি পেয়েও পাই না। কিন্তু তবু কিছু কিছু দুর্লভ মানুষ আছেন যারা নিজেদের মেধা, শক্তি, সাহস আর দেশপ্রেম দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পরেও আমাদের বিজয়ের আনন্দ দিয়েছেন। নিজেদের মাঝে ধারণ করেছেন বিজয়ী বীরের ব্যক্তিত্ব, উদ্বেলিত করেছেন জাতিকে।

ডঃ মুহম্মদ ইউনুস



বাংলাদেশকে যারা বিশ্বের কাছে নতুন করে চিনিয়েছে, নিয়ে গেছে অনন্য উচ্চতায় তাদের মধ্যে আশা করি ডঃ ইউনুসের নাম আলাদা করে বলে দেওয়া লাগবে না। ২৮শে জুন, ১৯৪০ সালে জন্মগ্রহণ করা ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস বাংলাদেশকে এনে দিয়েছে সেই সাফল্য যার জন্য সারা বিশ্ব প্রতি বছর তাকিয়ে থাকে। ডঃ ইউনুস ও তার প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ ব্যাংক আমাদের এনে দিয়েছে নোবেল পুরস্কার। আমাদেরকে সুযোগ দিয়েছে গর্ব করে বলার যে আমরাও পারি, বিজয়ী হতে পারি। যদিও তার মত বিশ্ব বরেণ্য ব্যক্তির সম্মান আমরা রাখতে পারি নি তবু তিনি আমাদের দেখিয়েছে বিজয়, তার মাঝে, তার কর্মের মাঝে।


হুমায়ুন আহমেদ



হিমু, শুভ্র কিংবা মিসির আলীর নামে জানে না এমন লোকের সংখ্যা বাংলাদেশে মনে হয় হাতে গুণে বের করা যাবে। আর এই কালজয়ী চরিত্রগুলোর শিল্পি আর কেউ নন আমাদের সবার প্রিয় হুমায়ুন আহমেদ। ১৩ই নভেম্বর, ১৯৪৮ সালে জন্ম নেওয়া এই সাহিত্যিক স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বাংলা সাহিত্যকে পৌছে দিয়েছেন বিশ্ব দরবারে। সাহিত্যের পাশাপাশি সুস্থ্য ধারার চলচিত্র নির্মাণে ও রেখে গেছেন অসামান্য অবদান। বর্তমান সময়ে সারা বিশ্বের হলে হলে বাংলাদেশী চলচ্চিত্র প্রচার হওয়ার পিছনে অনেক বড় অবদান হুমায়ুন আহমেদের। দুঃখজনক হলেও মাত্র কিছুদিন আগে (১৯শে জুলাই, ২০১২) আমাদের সবাইকে ছেড়ে তিনি চলে গেছেন না ফেরার দেশে। তবু তিনি ‘জোছনা ও জননীর গল্প’, ‘ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল’, ‘শ্যামল ছায়া’, ‘জলিল সাহেবের পিটিশন’ এর মত সৃষ্টির মাধ্যমে নতুন প্রজন্মকে শুনিয়ে গেছেন বিজয়ের গল্প আর দেখিয়ে গেছেন বিজয়। তার আমি তার মাঝেও বিজয় দেখি।


মুসা ইব্রাহিম



আমরা আবেগপ্রবণ জাতি। আমরা স্বপ্ন দেখি, যে স্বপ্নের সীমা নেই,‌ যে স্বপ্নে বাধা নেই। এরকম বহু স্বপ্ন আমরা বাস্তব করে দেই। মুসা ইব্রাহিম হলেন তেমনই একজন যার স্বপ্ন বাংলাদেশ থেকে শুরু হয়ে শেষ হয়েছে এভারেষ্টের চুড়ায়। তিনিই প্রথম বাংলাদেশী যিনি বিশ্বের কাছে আবার নতুন করে দেখিয়েছেন আমরা বাংলাদেশী, পাকিস্তানি হানাদার কিংবা ইন্ডিয়ান পাহাড়ের চুড়া কোনো কিছুই আমাদের আটকাতে পারে না, আমরা অকুতোভয়, জন্ম থেকেই বিজয়ের পিপাসায় পিপাসার্ত সৈনিক।


তারেক মাসুদ



৬ ডিসেম্বর, ১৯৫৬ সালে জন্মগ্রহণ করা যে ব্যক্তিটি সকল গোড়ামির বিরুদ্ধে চেতনার সংগ্রামে যুদ্ধ করে গেছেন নিজের শিল্প দিয়ে আশা করি সেই তারেক মাসুদকে আর নতুন করে চিনিয়ে দেওয়া লাগবে না। ‘মুক্তির নাম’, ‘মাটির ময়না’ কিংবা ‘রানওয়ে’ এর মত মুভি বানানোর মত সাহস আসলেই সবার থাকে না। কিন্তু যার জন্মই হয়েছিল মানুষকে বিজয়ের গল্প বলার জন্য তাকে কে আটকাবে। তার সৃষ্টি ‘মাটির ময়না’ অর্জন করেছে ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অফ ফিল্ম ক্রিটিক অ্যাওয়ার্ড সহ আরো অনেক আন্তর্জাতিক পুরস্কার। যদিও তিনি এখন আর আমাদের মধ্যে নেই কিন্তু তার শিল্প যেগুলো এ প্রজন্মকে এখনো বিজয়ী হওয়ার প্রেরণা দেয় টিকে থাকবে সারা জীবন।


সাকিব আল হাসান



কাউকে যদি প্রশ্ন করা হয় ১৯৭১ এর পরে সবচেয়ে বেশী মানুষ দলমত নির্বিশেষে কাদের জন্য পতাকা উড়িয়ে বাংলাদেশ বাংলাদেশ বলে চিৎকার করেছে, কারা সবচেয়ে বেশীবার আমাদের বিজয়ের উল্লাসে উল্লাসিত করেছে তাহলে নিঃসন্দেহে নাম আসবে বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমের যেখানে কোন রাজনীতি নেই, ধর্মের দোহাই নেই যেখানে শুধুই উল্লাস বাংলাদেশের জন্য। আর এ উল্লাস সৃষ্টির অন্যতম নায়ক সাকিব হাল হাসান, মাঠে যার খেলা আমাদের মাঝে সৃষ্টি করে এগিয়ে যাওয়ার উল্লাস, বিজয়ের উল্লাস, নতুন করে বিজয়ী হওয়ার উল্লাস।

————————————————————




এ লেখাটি পরে কার কেমন লাগবে জানি না। কিন্তু অন্যায়, দূর্নীতি, রাজনীতি, নেতাদের ভন্ডামিতে আমাদের মধ্য থেকে হারিয়ে যাওয়া সেই বিজয়কে আমি এখনো তাদের মাঝে এখনো খুজে পাই। এখনো তারা, তাদের সৃষ্টি আমাকে দেশপ্রেম শেখায়, দেশের জন্য নিজেকে বিলিয়ে দেওয়ার প্রেরণা যোগায়। তাই “আমি এখনো তাদের মাঝে বিজয় দেখি”।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×