somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কেন আপনি হাততালি দিচ্ছেন? জেনে নিন হাততালি নিয়ে মজার তথ্য

১১ ই জুলাই, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জীবনে কখনও হাততালি দেন নি এমন লোক পাওয়া বিরল। শিশুর বয়স এক বছর পূর্ণ হবার আগেই সে শিখে যায় কীভাবে হাততালি দিতে হয়। কখনও আনন্দে, আবার কখনও কেবল দৃষ্টি আকর্ষণের জন্যও শিশুরা হাততালি দিয়ে থাকে। আবার এমনও হয় যে কোন নির্দিষ্ট কারণ ব্যতিতই অবুঝ শিশু হাততালি দিচ্ছে। শিশুতো অবুঝ। কিন্তু আপনি কেন হাততালি দিচ্ছেন? কখন দিচ্ছেন আবার কখন এড়িয়ে যাচ্ছেন? খেয়াল করেছেন কখনো? কত রকমভাবে হাততালি দেয়া যায় সেটা কি কখনও খেয়াল করেছেন?

কে প্রথম হাততালি দিয়েছিলেন? এর উত্তর অজানা। বলা হয়ে থাকে মানব ইতিহাস আর হাততালির ইতিহাস শুরুর সময় কাছাকাছি। প্রাচীন রোমান সাম্রাজ্যে হাততালির কিছু নির্দিষ্ট ভূমিকা ছিল। এমন কি কিছু কিছু ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানেও হাততালির প্রচলন দেখা যায়।

হাততালি যে কেবল প্রশংসাসূচকই হবে এমন কোন কথা নেই। তীব্র ব্যাঙ্গাত্মকও হতে পারে। তবে যেমনই হোক এটা যে একটা সংক্রামক সেটা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। মাঠে বসে খেলা দেখছেন। ম্যাড় ম্যাড়ে টেস্ট ম্যাচ। হঠাৎ কেউ একজন হাততালি দিয়ে উঠলো। পাশ থেকে আর দু-একজন দিলো। ব্যস, আর যায় কোথায়! দেখবেন কোন কারণ ছাড়াই স্টেডিয়ামে এক দফা হাততালি ছড়িয়ে গেলো। এটার কারণ কি?

অথবা এমনটি নিশ্চয়ই দেখে থাকবেন কোন রাজনৈতিক সভা-সেমিনারে। নেতা মঞ্চে উঠছেন...প্রবল করতালি। নেতা বসলেন... প্রবল করতালি। নেতাকে বক্তৃতা দিতে আহবান...তালি আর তালি। বক্তৃতা শুরু...অথবা শেষ কিন্তু তালি আর থামে না। কিন্তু এই তালি শুরু করে কে। আর থামানোর ইঙ্গিত দেয় কে?

-Towards Awareness By Hemant Chopra 191

সবসময় যে কিছু ছোকড়া তালি শুরু করবে এমন নয়। স্বতস্ফুর্তভাবেও শুরু হতে পারে। তবে স্বতস্ফুর্তভাবে শুরু হবার জন্য ঘটনা লাগে। আবেগ লাগে। শুরু যেভাবেই হোক শেষ হবে যতক্ষণ না তার চারপাশের মানুষ তালি দেয়া বন্ধ করছে। এটা একটা ধন্দ। এই ধন্দের মধ্যেই তা বন্ধ হয়।

কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, ১) প্রত্যেকেই একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তালি দেন ২) একটা হলরুমের বেশির ভাগ মানুষ যখন তালি দেন তখন বাকি অংশও তাই করেন B-) ৩) নিকটে থাকা মানুষ যখন তালি দেন তখন তারাও তালি শুরু করেন।

সুইডেনের আপসালা বিশ্ববিদ্যালয়ের(Uppsala University) গবেষক Richard Mann বলেছেন যে তালির সাথে অনুষ্ঠানের গুণগত মানের কোন সম্পর্ক নেই বরং আপনার চারপাশে সবাই দিচ্ছে কিনা তার উপর নির্ভর করে। আপনার চারপাশের সবাই যদি তালি দেয় তা আপনার উপর একটি সামাজিক চাপ সৃষ্টি করবে এবং আপনি তালি দিবেন। কেউ যদি তালি না দেয় অনুষ্ঠান অনেক ভালো হলেও আপনি কিন্তু তালি দিবেন না। আবার আপনি একা তালি শুরু করেও একটা তালির ঢেউ শুরু করতে পারেন। বিজ্ঞানীরা বলছেন তালি অনেকটা সংক্রামন রোগের মত এটি ছড়িয়ে পড়ে। তবে এ রোগের চিকিৎসার বোধহয় প্রয়োজন নেই। এটা নিয়ে বিবিসি'র একটা চমৎকার রিপোর্ট আছে। এখনই পড়ে নিতে পারেন।

আরও বিস্তারিত জানতে এই লেখাটা পড়ুন।

তাই বলছি, হাততালি দেখে কোন অনুষ্ঠানের পারফর্মেন্স বিচার করবেন না। মানুষ কিছু না বুঝেই হাততালি দিতে পারে। আবার এতটাই বুঁদ হয়ে থাকতে পারে যে একটা চমৎকার পরিবেশনার পরেও স্তব্ধ হয়ে থাকতে পারে। কোন কোন অনুষ্ঠানের মাঝপথে হাততালি দেয়া ঠিক নয়। একটা ক্লাসিক্যাল মিউজিকের প্রোগ্রামে আপনি মাঝপথে হাততালি দিয়ে পুরো পরিবেশনাটিই মাটি করে দিতে পারেন। অপেরা হাউজে তাই এটা বলে দেয়াই থাকে। হাততালি দেয়ারও একটা নীতিমালা আছে দেখা যায়! :|

ভজন-সঙ্গীত বা সমবেত প্রার্থনায় কিংবা আরতীতে কিছু ধর্মাবলম্বীরা ছন্দময় হাততালি দিয়ে থাকেন? এটারই বা কি কারণ? ধারণা করা হয়ে থাকে একটা যোগ ব্যায়াম। কিছুটা আকুপাংচার মেথড। দুই হাতে থাকা পয়েন্টগুলোকে সক্রিয় করে স্নায়ুকে নিয়ন্ত্রণ করা।

নিয়মিত হাততালি দিয়ে আপনি সহজেই কিছু রোগ নিরাময় করতে পারেন। [ বলে রাখা ভালো, এই পোস্ট কোনভাবেই রোগ নিরাময় সংক্রান্ত পোস্ট নয়। ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা তথ্য উপস্থাপনমূলক পোস্ট। ] আকুপাংচার চিকিৎসায় এরকমটিই বলা হয়ে থাকে। দেখে নিন কোন হাতের কোন জায়গায় কি পয়েন্ট লুকিয়ে আছে।

ডান হাতঃ



বাম হাতঃ



আপনি যখনই হাততালি দেন তখন ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা পয়েন্টগুলোতে স্পর্শ লাগে এবং তা সচল হয়। ফলে কিছু নির্দিষ্ট রোগের উপশম হতে পারে। আর আপনি যদি সচেতন ভাবেই তা করেন তাহলে আপনাকে নির্দিষ্ট রোগ নিরাময়ের জন্য নির্দিষ্ট ভাবে হাততালি দিতে হবে। আপনার ডান হাতের চার আঙুল দিয়ে বাম হাতের তালুতে হাততালি দিয়ে আপনি হজমের সমস্যা দূর করতে পারেন। এ জন্য আপনাকে একই রকম ভাবে প্রতিদিন সকালে ১৫ মিনিট করে অভ্যাস করতে হবে। শিশুদের বেলায় হাততালি আরও বেশি কার্যকর ভূমিকা রাখে। শিশুর বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ, মানসিক দৃঢ়তার মতো বিষয়ে উন্নতির জন্য হাততালি কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। এমনকি হাতের লেখা সুন্দর এবং কম বানান ভুলের মতো বিষয়ও এর সাথে সম্পর্কিত। এরকমই আরও কিছু বিষয় জানতে আপনি ভিজিট করুন..।

ছন্দময় হাততালি একটা সুরের আবহ সৃষ্টি করে পরিবেশকে উন্নত করে।

নানা ভঙ্গিতে তালি দেওয়া শিখতে চান? তাহলে এই লিঙ্ক থেকে শিখে আসুন।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:৩৮
৬টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×