এই পোস্ট পড়ে লেখা
প্রতিটা ঋণ দেওয়ার সময় একটা উদ্দেশ্য থাকে। কেউ হয়তো গবাদি পশু পালন অথবা অন্য যেকোন অর্থনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনার জন্য ঋণ নিয়ে থাকে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সে তা না করে ঋণের টাকা অন্য কাজে লাগায়। শুরুতেই সে যা করে তা হলো তার পুরনো জরাজীর্ণ ঘর কে একটু ঠিকঠাক করে। যা সে পরেও করতে পারতো। কিন্তু সে আগেই তার সুখের দিক চিন্তা করে। আমার মনে হয় যদি ঋণের টাকা যথাযথ কাজে লাগায় তবে তার কিস্তি দিতে কোন অসুবিধা হবার কথা নয়। কিন্তু এই টাকার নগন্য অংশই সে তার অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে ব্যয় করে। যথন কিস্তি দেবার সময় হয় তখন সে যা করে তা হলো তার ঋণের টাকা থেকেই কিস্তি দেয়া শুরু করে। এভাবে তার কিছু দিন বেশ ভালোই কাটে। কিন্তু দিন এখানেই শেষ হয় না। আস্তে আস্তে তার ঋণের টাকা শেষ হয়ে আসে। তখন সে যায় তার পুরনো মহাজনের কাছে চড়া সুদে ঋণ নিতে। অথবা কিস্তির শেষ পর্যায়ে সে মোটা অংকের টাকা সুদে ধার করে কিস্তি পরিশোধ করে। অনেক এনজিও কিস্তি হিসাবে শুধু সুদের টাকা নেয়। তাদের খপ্পরেই মানুষ আরো দরিদ্র হয়। সুদের টাকা ভালো ভাবে দিতে পারলেও সে আসল টাকা শোধ করতে পারে না। ফলে যা হবার তাই হয়। আবারো মহাজনই ভরসা। এককালীন অনেক টাকা এনে এ যাত্রা সে রক্ষা পায়। কিন্তু খেলাটা শুরু হয় এর পরেই। যেহেতু সে ঋণের টাকা ভালোভাবেই শোধ করতে পেরেছে তাই এনজিওগুলো তাকে আরো বেশি টাকা ঋণ অফার করে। এবং ভুল টা সে আবারো করে। এভাবে পর্যায়ক্রমে তার ঋণের বোঝা ভারী হয়ে উঠে। এটা এতটাই ভারী হয় যে তার সহায় সম্বল বিক্রি করেও তা সে পরিশোধ করতে পারে না। ফলাফল দাঁড়ায় সে আগে যা ছিল তারচেয়েও দরিদ্র হয়ে যায়।
বিষয় টা এখানেই শেষ নয়। এনজিওগুলো তাকে শেখায় একটা ভালো জীবন যাপন প্রণালী। তার হাতে যখন ঋণের টাকা আসে সে তখন ভালো জীবন যাপনের চেষ্টাই করে। এতে করে তার ঋনের টাকাই কিন্তু ব্যয় হয়। অর্থনৈতিক কর্মকান্ড থেকে তা মোটেও সে আনে না। এভাবে সে যে ফাঁদে পড়ে তা থেকে বের হবার উপায় আমার জানা নেই। যদি আপনাদের কারো জানা থাকে তবে জানালে ভালো হবে।
এসব কিছুই নাও হতে পারতো যদি সে ঋণের টাকা যথাযথ ভাবে কাজে লাগাতে পারতো।