জীবন ভালই কেটে যাচ্ছিল।বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তী পরীক্ষা নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে যাওয়া।সাথে অন্যান্য কাজ নিয়ে ব্যাস্ত সময় পার।
অতঃপর মনমত সুযোগ না পেয়ে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তী।
প্রথম বছর ভালই কাটল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস আর বন্ধুবান্ধব নিয়ে।
২য় বর্ষের প্রথম সেমিস্টারে ক্লাস শেষে কোন এক বিকেলে গেছি এক বন্ধুর বাসায়।
হঠাৎ করে একটি অপরিচিত নাম্বার থেকে কল,স্বভাবতই ধরলাম না।
দ্বিতীয়বার কল আসতে রিসিভ করে অপর প্রান্তের কন্ঠ শুনে বুকটা ধ্বক করে উঠল।একটা হিমশীতল স্রোত বয়ে গেল শরীর বেয়ে।
প্রায় দুইবছর পর আবার,আবার সেই কন্ঠ! সেই সুরেলা গলা রিনঝিন শব্দে বেজে উঠল-
কেমন আছ ?
ভাল,তুমি ?
ভাল,কন্ঠটা ছিনতে পারার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
কলটা দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।তা এতদিন পর,কি মনেকরে ? (মনে মনে বললাম,কন্ঠটা কি এই জীবনে আর ভুলে থাকা হবে)
মনে পড়ল তাই।
বন্ধুটি গেছিল কিছু খাওয়ার বন্দোব্স্ত করতে ।উত্তেজনার বশে কথা একটু জোরেই বলা হচ্ছিল।
বন্ধুটি এসে বলল,কথা একটু আস্তে বল,শুনা যাচ্ছে সব।
আরও কিছুক্ষণ কথা হল।জানতে পারলাম সে একই শহরে আছে এবং কাছেরই আরেকটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তী হয়েছে।
একটি ঘোরের মধ্যে বন্ধুটির বাসা থেকে বের হলাম।
প্রায় ২টি বছর পর আবার যোগাযোগ!
যে কারণে ওর কাছ থেকে দুরে সরে আসা,এর মধ্যে অনেক কিছুই ঘটে যেতে পারত।কিন্তু সেরকম কিছু ঘটেনি বলে মনটা খুশীতে ভরে উঠল।
ঘোরের মধ্যেই সারাটা দিন গেল।
সকালে ঘুম থেকে উঠে মনে পড়ল,নাম্বারটাইতো সেভ করা হয়নি।
রিসিভ কলে গিয়ে নাম্বারটা পেলাম না! তিতা হয়ে গেল মনটা।তিতা স্বাদ নিয়েই দিনটি কাটল।
পরেরদিন স্তাতিস্তিক ক্লাস করছি ,অপরিচিত নাম্বার থেকে অনবরত ফোন।
তৃতীয়বারে ধরলাম ক্লাসে বসা থাকা অবস্থায়ই।
তুমি কি একটু দেখা করতে আসতে পারবা ?
অবশ্যই,আসতেছি।(বুকের ভেতর হাতুড়ি পেটাচ্ছে,দুই বছর পর পুনরায় দেখা করতে যাব।তাও আবার টাশ করে বলে দিয়েছি-অবশ্যই,আসতেছি! )
ক্লাসের মাঝামাঝি অবস্থায়ই বেড়িয়ে পড়লাম ভার্সিটি থেকে ।
দেখা হলো দুটি বছর পর,বিনা বাক্য বিনিময়ে দুজন দুজনের দিকে থাকিয়ে থাকলাম।
যেন অনন্ত অনন্তকাল চলে যাচ্ছে আমাদের স্পর্শ করে!
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই মার্চ, ২০১৬ দুপুর ২:৩০