আহা টিঁলাগাও স্টেশন,আমাদের টিঁলাগাও স্টেশন।সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার জেলার,কুলাউরা থানার অন্তর্গত ছোট একটি লোকাল স্টেশন।পাশেই একটি ছোট স্থানীয় বাজার।স্টেশন থেকে হেঁটে বাড়ি যেতে লাগত মাত্র ১০ মিনিট।স্টেশনে নেমে গ্রামের দিকে থাকালে ছবির মত মনে হত গ্রামটিকে।এই স্টেশন এর আশে পাশে কেটেছে আমার অদম্য শৈশব আর কৈশোর।
সেই ব্রিটিশ আমল থেকেই গ্রামের স্টেশন হিসেবে ভালই জমজমাট ছিল।এখানে হুমায়ূন আহমেদ,কর্নেল তাহের থেকে শুরু করে অনেক বিখ্যাত মানুষের ছোটবেলা কেঁটেছে।আমার শৈশব আর কৈশোর এই টিঁলাগাও স্টেশনের আশেপাশে বন্ধদের সাথে আড্ডা দিয়েই পার করেছি।তখনও এত অবহেলিত ছিলনা স্টেশনটা,এখন শুনি স্টেশনমাস্টার বিহীন এই স্টেশন প্রায় সারাদিনই বন্ধ থাকে।দুএকটা লোকাল ট্রেন থামে তাও নাকি বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে দুদিন পর পর সুর উঠে।এখন স্টেশন এর এই করুণ অবস্থা দেখে কষ্টই লাগে।
দেশের প্রায় প্রতিটা লোকাল স্টেশনের নাকি একই অবস্থা।ইউরোপ এর কথা না হয় বাদই দিলাম;আমাদের পার্শবর্তী দেশ ভারত আর চীনের রেলওয়ে বেশ ভাল অবস্থানে আছে,সেখানে আমাদের দেশের রেল বিভাগের এই করুন অবস্থা।ধুঁকে ধুঁকে মারা যাচ্ছে যেন দিনকে দিন।একটু সঠিক পর্যবেক্ষণ আর রক্ষণাবেক্ষণ করলে এই বিভাগটি হতে পারত একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠান।এই খাতে আমাদের,সরকারের আরেক্ট সুনজর দেওয়া উচিৎ নয়কি?
কর্নেল তাহেরকে নিয়ে লেখা "ক্র্যাচের কর্নেল" থেকে কিছুটা অংশ তুলে দিলাম - "এক স্টেশনে বছর তিনেক পার হলেই কর্নেল তাহের এর মা আশরাফুন্নেসা ছেলেমেয়েদের বলেন,আমার পা চুলকাচ্ছে,তোদের বাবা আবার বোধহয় বদলি হবেন।
ব্যাপারটা তাই হত।কিছুদিনের মধ্যেই দেখা যেত বদলির অর্ডার এসে হাজির হয়েছে।হয়ত আসাম সিলেট সীমান্তের জুরি স্টেশন থেকে টিলাগাও স্টেশন।
টিঁলাগাও স্টেশনে থাকতে একবার কাছাকাছি এক জায়গায় আসাম থেকে বক্ততা করতে এসেছিলেন মাওলানা ভাসানী" (যাকে আমরা লাল মাওলানা নামে ছিনি)।
লোকাল স্টেশন হিসেবে আমাদের টিঁলাগাও স্টেশন এর ইতিহাস বেশ সমৃদ্ধ ।
সবাই যদি একটু সচেতন হই ট্রেন যাত্রার সময়,সামান্য কটা টাকাইতো মাত্র,কত টাকা নষ্ট করি আমরা এমনিতেই;শুধু সামান্য কয়টা টাকা দিয়ে ট্রেনের টিকেটটা কেটে নিলেই অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যেত।এরকম অনেক লোকাল স্টেশন বেঁচে যেত বন্ধ হওয়া বা হারিয়ে যাওয়ার হাত থেকে।