ভর্তী হয়েছি ইঞ্জিনিয়ারিং শাখায় ওমেকা কোচিং এ আমরা কয়েকটা বন্ধু প্লান করে একসাথে ।খুব সম্ভবত ১৫-১৬ তম ক্লাসে কোন এক ক্লাস টেস্ট চলছিল।আমরা বন্ধুরা অতিরিক্ত ফাজিল টাইপের হওয়ায় (যদিও আমি তখন কিছুটা গম্ভীর হওয়ার ভাব ধরেছিলাম) কোচিংএর পরিচালক খুব সম্ভবত রাজীব/তারেক ভাই (নামটা সঠিক মনে করতে পারছি না) আমাদের আলাদা আলাদা বসালেন।
দূর্ভাগ্যক্রমে বলি অথবা সুভাগ্যক্রমেই বলি আমার সামনের চেয়ারে পড়ল একটি মেয়ে।প্রথম দেখেই টাশকি খেলাম ,মনে হল আফ্রোদিতি এই ধরায় নেমে এসেছেন!
অনেক চেষ্টা করেও ওরে আর পেছনের দিকে দৃষ্টি আকর্ষন করাতে পারলাম না, টেস্ট শেষ না হওয়ার আগ পর্যন্ত ।শেষ হওয়ার পর পরই চলে গেল সে!
নামটা জানা হলনা ,এদিকে ভিতরে তোলপাড় চলতেছে।বন্ধুদের সাথে আলোচনা,কি করা যায়?
ঠিক এর কিছুদিন আগেই আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধুদের একজন ক্রাশ খাইছে আরেকজনের উপর! সেও অস্থির হয়ে আছে!
সমাধানে আসল,আগে এটলিস্ট ওর নাম আর নাম্বারটা জানতে হবে ।এতদিনে এডমিনিস্ট্রেশনের বারী ভাই আর অমলদার সাথে ভালই রিলেশন গড়ে উঠেছে আমাদের।যেই ভাবা সেই কাজ
ধরলাম উনাদের,অমলদা রাজি হলেন না ।অমলদা বেরিয়ে যাওয়ার পর চেপে ধরলাম বারী ভাইকে হাজার হোক নিজের এলাকার লোক হন উনি। অনেক অনুরুধের পর অবশেষে ঢেঁকি গিললেন ।রেজিষ্ট্রি ঘেঁটে নাম জানালেন কিন্তু নাম্বার দেয়া বড় ভাইয়ের!! উপায় ?
ত্রাণকর্তা রুপে আবার হাজির হলেন বারী ভাই।এইদিনের লেকচারশীট ও নিয়ে যায়নাই।
বরী ভাইরে বললাম আমার কাছে দিয়া দেন প্লিজ আর ওরে কাল আসলে বলবেন শীট শেষ হয়ে গেছে । ওরে আমার নাম্বারটা দিয়ে বলবেন আমার কছে মেইন কপি দিয়েছেন ফটোকপি করার জন্য। আমারে ফোনে বলে দিলেই আমি এক কপি একস্ট্রা করে নিয়ে আসব পরে আমারে ও টাকা দিয়ে দিলেই হল।বারী ভাই রাজী হলেন।
যেই প্লান সেই কাজ। সে অবিশ্বাস করার চাঞ্ছই নাই, হাজার হুক বারী ভাই অফিস মেন্টেন করেন উনি যখন বলেছেন এটা মিথ্যা হওয়ার প্রশ্নই আসেনা।
নাম্বার পেলাম, কিন্তু মনে সন্ধেহ নাম্বার ওরতো না অন্য কারও। এইসব চিন্তা করতে করতেই দুএকদিন চলে গেল মনে সাহস আর আসে না ওর সাথে কথা বলে নাম্বারটা ভেরিফাই করে নেওয়ার(যদিও আমি এতটা ভীতু ছিলামনা)
বন্ধুরা অনেক সাহস দিল মনে!
ওদের দেওয়া সাহস আর নিজের সব সাহস একত্রিত করে ক্লাস শেষ হওয়ার পর রিক্সার জন্য দাড়িয়ে আছি দুজনেই,এমন অবস্হায় একটু কছে গিয়ে ফি আমানিল্লাহ বলে কথা শুরু করলাম।
দুএক কথা সাথে নাম জানার পর(যদিও ওর নাম আমি আগেই জেনেছি)বলা,
গতদিন যে ফোন দিছলা ঐটাকি তোমার নাম্বার ?
তারপর (খুব সম্ভব বলেছিলাম )আমরা যখন একসাথে কোচিং করি তখন মাজেমধ্যে যদি দরকার হয় তাই ফোন নাম্বারটা জেনে রাখাটা ভালনা,কি বল?
যেমন গতদিন তোমার লেকচারশীট এর দরকার হল!
বাইদাওয়ে আমার নামবারটাতো তোমার কাছে আছেই তোমার নাম্বারটা শিওর হলেই হল।এরমধ্যে ও রিক্সা পেয়ে গেছে।
যাওয়ার আগে শুধু মিস্টি করে হেসে বলে গেল,হ্যাঁ যেটা দিয়ে ফোন করেছিলাম ওটাই আমার নাম্বার!
রিক্সা চলতে লাগল,আমি পিছনে দাড়িয়ে রিক্সার দিকে তাকিয়ে রইলাম আরও কিছুক্ষন অপলক দৃষ্টিতে!যেন রিক্সার চলে যাওয়া চেয়ে দেখা ছাড়া পৃথিবীতে আর কোন কাজ নেই,হা করে গিলছি!
কিছুক্ষনের মধ্যেই শরীরে হালকা একটা আলোড়ন উপলব্ধি করলাম!