somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, মুসলিম এবং সকল মানবজাতির প্রতি - ১ম পর্ব

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৭ রাত ১১:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মনে করুন আপনি একজন এমবিএ (মাস্টার্স অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) সনদধারী। আপনার নামের সাথে ’এমবিএ’ সনদটি তথা ডিগ্রিটি শোভা পাচ্ছে। ভালো চাকুরী কিংবা ব্যবসা করছেন। বিবাহিত। ধরা যাক আপনার একটি সন্তান হল। সন্তানের নাম রাখার সময় আপনার ইচ্ছা হল আদরের সন্তানের নামের পাশে আপনার ’এমবিএ’ সনদটিও থাকবে! অসুবিধা কী? আপনি ’…..’ ধর্মের মানুষ তাই সন্তানের নাম যদি ধর্মানুযায়ী হতে পারে তবে আপনার ঔরসজাত সন্তানের নামের শেষে আপনার অর্জিত সনদটি থাকলে দোষ কোথায়, তাই না? কিন্তু আপনি এমনটি করবেন না। বলবেন, ’এমবিএ’ সনদটি আপনার সাধনার ফসল এবং এর প্রমাণও (বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদপত্র) আপনার কাছে আছে। সন্তান যদি বড় হয়ে সনদটি অর্জন করতে পারে তবেই তার নামের পাশে ’এমবিএ’ শোভা পাবে। এটি যদি সত্যি হয় তবে আমরা কীভাবে আমাদের নামের শেষে ঠাকুর কিংবা বড়ুয়া কিংবা রোজারিও কিংবা খান ইত্যাকার পদবী যোগ করে বিভিন্ন ধর্মে ভাগ হয়ে যাই? আপনি যে নিজেকে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, মুসলিম বা অন্য কোন ধর্মের লোক ভাবছেন কোন প্রমাণ কি আছে? সন্তানের নাম রাখার আগে আকাশ থেকে কি কোন ধর্মের সনদপত্র আসে যে সন্তানটি অমুক ধর্মের? হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, মুসলিম কিংবা বিভিন্ন ধর্মের অনুসারীদের ঘরে জন্মগ্রহণ করে যদি সেই ধর্মের লোক হওয়া যায় তবে একজন এমবিএ কিংবা চিকিৎসক কিংবা প্রকৌশলীর ঘরে জন্ম নিলে কেন সেই সব পদবীর অধিকারী হওয়া যাবে না? এটা গায়ের জোরে ধর্মান্তকরণ নয় কি?

একটা শিশুর কোন ধর্ম থাকে না। তাকে ধর্মান্তকরণ করা হয়। মনে রাখা ভাল গায়ের জোরে একমাত্র গুন্ডা কিংবা বদমাশ হওয়া যায় কিন্তু সত্যের নাগাল পাওয়া যায় না। মানুষের মাধ্যমে পৃথিবীতে আপনার আগমন, মানুষের কোলাহলে বিচরণ আবার মানুষ থেকে বিছিন্ন হয়ে যেখান থেকে এসেছেন সেখানে একাকী প্রস্থান। কেন? তবে আপনি কোথা হতে আসলেন আবার কোথায় যাবেন কখনো চিন্তা করেছেন কি? দু’বেলা দু’মুঠো খেয়ে জৈবিক চাহিদা মেটানোর জন্য এ পৃথিবীতে আপনি কত কী-ই না করে বেড়াচ্ছেন কিন্তু একবারও কি ভেবে দেখেছেন আসলে আপনি ”কে”? তিলে তিলে কলুর বলদের মত খেটে পায়ে হাঁটা যুগের পৃথিবী থেকে আমরা এখন রকেট যুগে চলে এসেছি। জ্ঞান-বিজ্ঞানের হাজারো শাখা খুলে নিমজ্জিত আছি নতুন আবিষ্কারের নেশায়। নিজেকে পরিবর্তন না করে মেতে আছি পৃথিবীকে পরিবর্তনের নেশায়। অথচ হাজার বছর আগে বাঘ যেভাবে হরিণ শিকার করে খেত এখনো সেভাবেই খায়, ঘুমায় এবং এক সময় বনের মাঝে হারিয়ে যায়। আমাদের কী হল যে আমরা কেউ একশ জন থাকার মত একটা প্রাসাদ দখল করে থাকি চার-পাঁচজন আর কারো থাকার ঠিকানা হয় রাস্তায়! জন্তুরা সবাই বনের ভেতর সহাবস্থান করতে পারল আর আমরা বিশ্বায়নের নামে, ধর্মের নামে, ছোওয়াবের নামে, স্বর্গে থাকার নামে, শান্তি আনয়নের নামে বোমা মেরে এক রাতেই হাজার হাজার মানুষকে শরণার্থী করে দিচ্ছি! নিজের বিবেককে কখনো প্রশ্ন করেছেন কি?

কেন এই ধর্ম? ধর্ম আসলে কী? কেন আমরা এতগুলো ধর্মে ভাগ হয়ে গেলাম? পুরোহিত – ভান্তে – যাজক – মোল্লা এদের জিজ্ঞেস করুন। কেউ উত্তর দেবে না কারণ ধর্ম এদের কাছে পাপ-পুণ্য নয়, ব্যবসা। সবাই আপনাকে স্বর্গে পাঠাতে ব্যস্ত তবে মৃত্যুর আগে নয়, পরে! তার মানে বাকির ব্যবসা। মারা গেলেই বলে স্বর্গীয় ’তমুক’ কিংবা ’অমুককে’ যেন বেহেশত নসীব করেন! নরকে কেউ যেতে চায় না সবাই চায় স্বর্গে যেতে! কিন্তু কারো একরত্তি সময় নেই নিজেকে চেনার কিংবা আত্মদর্শনের সাধনায় নিমগ্ন হবার। জন্মের সময় না হয় আপনার অজান্তে আপনাকে ধর্মান্তরিত করা হল কিন্তু এখন তো আপনি আর শিশুটি নন। নিজেকে বিজ্ঞানী, দার্শনিক, প্রকৌশলী, চিকিৎসক, নভোচারী, রাষ্ট্রপতি, সমাজপতি, চাকুরীজীবি, ব্যবসায়ী, লেখক, কবি, পুরোহিত, ভান্তে, যাজক, মোল্লা, ভন্ড, খুনি, মাতাল, লম্পট, বেশ্যা ইত্যাদি বানালেন কিন্তু একবারও খবর নিলেন না আসলে আমার ধর্মটা কী? আমি তো শিশু ছিলাম, তারপর কিশোর-যুবা-প্রৌঢ়-বৃদ্ধ। কীভাবে আমি হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, মুসলিম বা অন্য কোন ধর্মের লোক হলাম? আমি বারবার বলছি আপনাকে ধর্মান্তরিত করা হয়েছে তার মানে আপনার একটি ধর্ম জন্মের পূর্ব থেকেই ছিল? কী সেই ধর্ম? [চলবে]
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৭ রাত ১১:৪৬
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

নাসা কি সত্যিই ফেরেশতাদের জিকিরের শব্দ রেকর্ড করেছে?

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২৫ সকাল ৭:১৩

নাসা কি সত্যিই ফেরেশতাদের জিকিরের শব্দ রেকর্ড করেছে?

ছবিঃ অন্তর্জাল থেকে সংগৃহিত।

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি খবর ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে বলা হচ্ছে, "নাসা মহাকাশ থেকে ফেরেশতাদের শব্দ রেকর্ড করেছে"। ইসলামি শরিয়াহ... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশের স্বাধীণতাকামীদের ঐক্যবদ্ধ করার মত কাউকে মাঠে দেখা যাচ্ছে না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২৫ সকাল ৮:৩৯



একাত্তরের স্বাধীণতার পক্ষে ছিল বা আছে এবং এখন ভারতের সাথে যুক্ত হতে চায় না- দেশের রাজনীতির মাঠে এমন পক্ষের উপস্থিতি একান্ত প্রয়োজন, কিন্তু তারা গর হাজির। পাকিস্তান পক্ষের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকে 30 লক্ষ শহীদের রক্তের দিয়ে অর্জিত 72 এর সংবিধান ছুড়ে ফেলার কথা বলা হয়।

লিখেছেন আহসানের ব্লগ, ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১২:০২

শেখ মুজিবের ভাষণ পোস্ট দিয়ে আপামর জন সাধারণ কে রাস্তায় নামাইসেন। খোদ সার্জিস একনলেজ করসে 80% ছাত্রলীগ আপনাদের আন্দোলনে সাথে ছিল। রাস্তায় ছিল।
এমন কি আমি নিজে আমার কলিগ কে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকা ও পাকিস্তান বাংলাদেশ নিয়ে ফুটবল খেলতে পারছে কেন?

লিখেছেন জেনারেশন৭১, ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৫



কারণ, আমাদের জনসংখ্যার মাঝে শতকরা হারে ভারত, নেপাল কিংবা শ্রীলংকার চেয়ে ক্রিমিনাল, ডোডো, চোর-ডাকাত, বর্ণচোরা ও অশিক্ষিত বেশী।

ইহুদী ও ফিলিস্তিনীদের মুল কিন্তু একই, সুদুর অতীতে ওরা একই... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই ব-দ্বীপে ঐক্যের স্থায়িত্বকাল স্বার্থসিদ্ধির আগ পর্যন্ত

লিখেছেন গেঁয়ো ভূত, ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:২০



বাংলাদেশ, এক রহস্যময় ভূখণ্ড, যেখানে রাজনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক আন্দোলনের মূলসূত্রেই রয়েছে ঐক্য। কিন্তু এই ঐক্যের স্থায়িত্ব কতটুকু? ইতিহাস বারবার আমাদের দেখিয়েছে, এদেশে ঐক্য প্রায়শই স্বার্থসিদ্ধির... ...বাকিটুকু পড়ুন

×