যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রশ্নে কোনো আপোষ নাই। কিন্তু এখন দেখছি যুদ্ধাপরাধের বিচারের দাবী'র আরেক দাবী জুইরা দেয়া হইছে। এই নতুন দাবীর প্রস্তাব করার আগে খুব সম্ভবত কোথাও কোনো পোস্টে এই নিয়া ব্লগারদের সাথে আলাপ হয়নাই। যাউক, সেইটা হয়তো খুব জরুরী না বইলাই করা হয়নাই। প্রথম জানা গেলো সংবাদ সম্মেলনে।
বাংলাদেশে প্রধান দুইটা দলই রাজনীতিতে ধর্মরে খাটায়। জামায়াতও তাই। তবে তারা দাবী করে যে তারা ধর্ম-ভিত্তিক রাজনীতি করে। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ নিপীড়িত শ্রেনীর দিক থেকে আসলে ধর্মাশ্রয়ী এবং ধর্মভিত্তিক; দুইটাই এক।(এই প্রসঙ্গে আমার ভাবনা পরিস্কার করার জন্য মনজুরুল ভাইকে ধন্যবাদ।)
তয় ব্লগীয় যুদ্ধাপরাধ বিরোধী প্রচারনারে নিজেগের মত কইরা যারা ব্যবহার করতে চাইতাছে তাদের দাড়ানোর জায়গা কিন্তু নিপীড়িত শ্রেনীর জায়গা না। যেইটা আমার, আরো অনেকের। (এই প্রসঙ্গে আবার শেষে আসবো)। আমাদের দাড়ানোর আর যুদ্ধাপরাধের বিচারে দাবীকে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির বিরোধি রাজনীতির ব্লগীয় ফ্রন্টে রুপ দিতে যানেওয়ালাদের জায়গা এক না। তারা দাড়ায়া আছে নিতান্তই শাসক শ্রেনীর প্রতিনিধির জায়গায়। যেইখানে শাসক শ্রেনি রাজনীতিতে ধর্মরে সুযোগ মত ব্যবহার কইরা বা না কইরা নিপীড়ন বহাল রাখে। সেই বহাল থাকা নিপীড়নের মধ্য থাইকা যাতে এই সংখ্যাগরিষ্ঠ নিপীড়িত জনগন সত্য সত্যই নিজেদের ধর্মীয় আত্মপরিচয়রে আশ্রয় কইরা শাসক-শোষকের বিরুদ্ধে মুক্তির লড়াই শুরু করতে না পারে। (ঠিক এইখানে আমি 'ধর্মাশ্রয়' ও 'ধর্মভিত্তি'র প্রসঙ্গে নিপীড়িত জনগনের লাভালাভের বিষয়ে আপনের অবস্থানের কিছুটা বাইরে আলাদা পর্যবেক্ষন জানাইলাম )। ধর্ম এবং ধর্মীয় বিধিবিধানের ওপর ভর কইরা, এই গুলানের মধ্য থেইকা সংখ্যালঘু শাসক শোষক শ্রেনীর বিরুদ্ধে প্রবল এবং সফল রাজনীতি দাড় করাইছে নিপীড়িত জনগন। অনেকবারই। ইতিহাসের নানা সময়ে। দুনিয়ার নানা অঞ্চলে।
অবশ্যই অতীতে ঘটে যাওয়া মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের ন্যায়গত প্রতিকার নিশ্চিত করা না করার প্রশ্নের সাথে এই প্রশ্নের কোনা সাদৃশ্য নাই।(যেই সাদৃশ্য অনেকে 'বাঙালী জাতীয়তাবাদী'রা আবিস্কার করেন ৪৭ এ রাষ্ট্র হিসেবে পাকিস্তানের জন্মের ধরন আর পাকিস্তান রাষ্ট্রের প্রকৃতিরে প্রকৃতভাবে বুঝতে না পাইরা, কিংবা এই সময়ে এসে বুঝতে না চাইয়া)।
বাংলাদেশে ৭১ যে যুদ্ধাপরাধ হইছে সে যুদ্ধাপরাধের প্রমানাদি অনেক আছে নিশ্চয়। পিয়াল ভাইয়ের কাছে অনেক আছে। সেইগুলানে নিশ্চয় দেখা যাইতাছে যে, ধর্মরে ব্যবহার কইরা এই যুদ্ধাপরাধ ঘটানো হইছে। পাকিস্তান এইটাতে নেতৃত্ব দিছে, প্রধান ভূমিকা নিয়া সংঘটন করছে, প্রিন্সিপালি অফেন্ড করছে, বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামী এইটারে অ্যাবেট করছে। অর্থাৎ সহযোগীরা, অ্যাবেটররা হইলো জামায়াতে ইসলামী। এইটাতো আমাদের জন্য, আপনাদে জন্য ভালো হইলো।
আপনেরা বরং সরাসরি বাংলাদেশের রাজনীতিতে জামায়াত ইসলামীরে নিষিদ্ধ করার প্রচারনা শুরু করেন। ডাকাইত ছুরি ব্যবহার করছে বইলা আপনে ডাক্তাররেও ছুরি ব্যবহার করতে দেবেন না! জামায়াত ধর্মের দোহাই দিয়া যুদ্ধাপরাধে লিপ্ত হইছে বইলা প্রমান থাকায় আপনে সংখ্যাগরিষ্ঠ নিপীড়িত জনগনের ধর্মীয় আত্মপরিচয়ার রাজনীতিরে চাপা দিতে চাইবেন? এই অধিকার আপনারে আমারে কেউ দেয় নাই।
আমি বলি- বরং জামায়াত ইসলামীকে নিষিদ্ধ করার প্রচারনা চালানো হউক।
হিটলার স্বস্তিকা লইছে দেইখা আপনে সনাতন ধর্মের পরিচয়ওয়ালাদের স্বস্তিকা ব্যবহার করতে দেবেন না?
আমি আবার বলি- বরং জামায়াত ইসলামীকে নিষিদ্ধ করার প্রচারনা চালানো হউক।
তাতে করে যুদ্ধাপরাধের বিচারের দাবী বরং ইতিবাচক মাত্রা পাবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:৫৩