আষাঢ় মাসে ভাসা পানি
পূবালী বাতাসে
বাদাম দেইখ্যা চাইয়া থাকি
আমারনি কেউ আসে…
…ভাগ্য যাহার ভালরে নাইওর
যায়রে আষাঢ় মাসে
উকিলের হইব নাইওর
কার্তিক মাসের শেষে...
হায়রে! বন্ধু নাই দেশে
পত্র লইয়া যাওরে কোকিল
আমার বন্ধুর উদ্দেশ্যে…
প্রিয় মেঘনা তোমাকে একটু ছুঁয়ে দেখবো বলে তোমায় দিলাম আমার একটি পুরো সকাল। প্রতিদিন কত মাঝি স্বপ্ন দেখে তোমার বুকে নৌকা ভাসিয়ে, কত শত গাড়ি ছুটে চলে তোমার দুই কূলের সেতু বন্ধনে, কত রমনী ভেজা আঁচলে প্রণয়ের বাসর সাঁজায় তোমার জল ফেরি করে, আমি সেসবের মাঝে খুঁজে ফিরি অবরূপ বাংলার প্রতিচ্ছবি। তাইত বার বার ছুটে আসি তোমার শীতলায় একটু ভেজাবো বলে আমার দেহের ধুলো মাখা গ্লানিগুলোকে, যেন ধুয়ে যায় ব্যথাতুর বেদনারা চির প্রশান্তির মায়া জালে। স্নিগ্ধতা তোমারই জন্যে; তোমাকে একটু তাই ছুঁয়ে দেখবো বলে আমার পথ চলা তোমার উত্তাল তরঙ্গে।
প্রিয় কবি জীবনানন্দ দাশের ভাষায় প্রিয় মেঘনা তোমাকে শোনাবো কবিতা;
...হয়তো মানুষ নয়- হয়তো বা শঙ্খচিল শালিকের বেশে,
হয়তো ভোরের কাক হয়ে এই কার্তিকের নবান্নের দেশে
কুয়াশার বুকে ভেসে একদিন আসিব কাঁঠাল ছায়ায়।
হয়তো বা হাঁস কোনো- কিশোরীর- ঘুঙুর রহিবে লাল পায়
সারাদিন কেটে যাবে কল্মীর গন্ধভরা জলে ভেসে ভেসে।
আবার আসিব আমি বাংলার নদী মাঠ ক্ষেত ভালোবেসে
জলাঙ্গীর ঢেউএ ভেজা বাংলারই সবুজ করুণ ডাঙ্গায়।
... ঘোলা জলে হয়তো কিশোর এক সাদা ছেঁড়া পালে
ডিঙ্গা বায়; রাঙ্গা মেঘ সাঁতরায়ে অন্ধকারে আসিতেছে নীড়ে
দেখিবে ধবল বক; আমারে পাবে তুমি ইহাদের ভীড়ে।
কিংবা তোমাকে শোনাবো কবি হুমায়ুন কবিরের কবিতা মেঘনায় ঢল;
শোন্ মা আমিনা, রেখে দে রে কাজ ত্বরা করি মাঠে চল,
এল মেঘনায় জোয়ারের বেলা এখনি নামিবে ঢল।
নদীর কিনার ঘন ঘাসে ভরা
মাঠ থেকে গরু নিয়ে আয় ত্বরা
করিস না দেরি- আসিয়া পড়িবে সহসা অথই জল
মাঠ থেকে গরু নিয়ে আয় ত্বরা মেঘনায় নামে ঢল।
এখনো যে মেয়ে আসে নাই ফিরে- দুপুর যে বয়ে যায়।
ভরা জোয়ারের মেঘনার জল কূলে কূলে উছলায়।
নদীর কিনার জলে একাকার,
যেদিকে তাকাই অথই পাথার,
দেখতো গোহালে গরুগুলি রেখে গিয়েছে কি ও পাড়ায়?
এখনো ফিরিয়া আসে নাই সে কি? দুপুর যে বয়ে যায়।
ভরবেলা গেলো, ভাটা পড়ে আসে, আঁধার জমিছে আসি,
এখনো তবুও এলো না ফিরিয়া আমিনা সর্বনাশী।
দেখ্ দেখ্ দূরে মাঝ-দরিয়ায়,
কাল চুল যেন ঐ দেখা যায়-
কাহার শাড়ির আঁচল-আভাস সহসা উঠিছে ভাসি?
আমিনারে মোর নিল কি টানিয়া মেঘনা সর্বনাশী।
মেঘনা বাংলাদেশের সবচেয়ে দীর্ঘতম এবং প্রশস্ততম নদী। মেঘনা নদী নরসিংদী জেলাকে করেছে শস্য সমৃদ্ধ। এ জেলার মাছের চাহিদার অনেকটাই পূরণ করে মেঘনা নদী। ছেলেবেলা থেকে অসংখ্যবার নদীটিরে দেখেছি ; দেখে অবাক হয়ে গেছি। মেঘনার বিপুল জলসম্ভার ভয়ার্ত এবং মুগ্ধ চোখে দেখেছি। বাঙালি নারীদের মধ্যেও মেঘনা নামটি চিরকালই আছে । মেঘনা নদী বাংলাদেশ এর একটি অন্যতম প্রধান নদী। পূর্ব ভারতের পাহাড় থেকে উদ্ভূত মেঘনা নদী সিলেট অঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে চাঁদপুরের কাছে পদ্মা নদীর সাথে মিলিত হয়ে মেঘনা নামে বঙ্গোপসাগর এ প্রবাহিত হয়েছে। আর দুই যুগ আগে জাপান সরকারের অনুদান এবং ঋণ দিয়ে এর দুই কূলের মাঝে বন্ধন হিসেবে তৈরি করা হয়েছিলো মেঘনা সেতু। সেই সেতু দিয়েই আজকের দিনে পাঁচ গুণ বেশি গাড়ি যাতায়াত করে। সেই সেতু দিয়েই আমি খুঁজে ফিরি মেঘনার জল ছুঁয়ে আমার স্বপ্নশিশির।
আব্দুল আলীম - মেঘনার কূলে ঘর বান্ধিলাম
আব্দুল আলীম - কল কল ছল ছল নদী করে টল মল
আব্দুল আলীম - রুপালী নদীরে রূপ দেইখা তোর হইয়াছি পাগল
আব্বাস উদ্দিন আহমেদ - ও নদীর কূল নাই
শাহনাজ রহমতুল্লাহ - এক নদী রক্ত পেরিয়ে
রুনা লায়লা - নদীর মাঝি বলে এসো নবীন
ফরিদা পারভীন - এই পদ্মা এই মেঘনা
ফেরদৌসি রহমান - ও আমার দরদী আগে জানলে তোর ভাঙা নায়ে উঠতাম না
রুনা লায়লা - আমায় ভাসাইলিরে আমায় ডুবাইলিরে
ফেরদৌস আরা - কূল ভাঙা নদীরে
হেমন্ত মুখোপাধ্যায় - ও নদীরে একটি কথাই শুধাই শুধু তোমারে
মাহমুদুন্নবী - আমি ছন্দহারা এক নদীর মত ভেসে যাই
আব্দুল জব্বার - ওরে নীল দরিয়া আমায় দেরে দে
আব্বাস উদ্দিন আহমেদ - ও নদীর কূল নাই
অনুপ ঘোষাল - নদীর নাম সই অঞ্জনা
আরতি মুখোপাধ্যায় - নদীর যেমন ঝর্ণা আছে
রেনেসাঁ - ও নদীরে তুই যাস কোথায় রে
জেমস - তুমি যদি নদী হও
টুটুল - নদীর নাম ময়ূরাক্ষী
অন্যায় অবিচার - রুই কাতলা ইলিশ
অন্যায় অবিচার - ছেড়না ছেড়না হাত
ও নদীরে,
কী আছে তোর গহীন জলের আঁধারে ?
তোর ঢেউয়ে ভাইসা চলে আমার ছায়া কোন সে বাহারে !
আমার দেহের মাপের একখান ঘর দিস তোর গহীন অন্তরে।
ও নদীরে,
তোর জলেতে যেই বা প্রেমিক একবার ভাসে সে কী আর ফিরিতে পারে !
সেই পারে কি নিয়া যাবি আমার প্রেমের পীড়ন ?
তোর জলেতে যেইবা ভাসায় একবার দেহ সে কী আর ফিরিতে পারে !
জন্ম যাহার তোর দেহেতেই সেইত জন্মান্তর;
এই পারে তোর প্রেমের ভূমি,
ওই পারেতে মরন;
সেই পারে কী নিয়া যাবি আমার দেহের গড়ন ?
ও নদীরে,
কী আছে তোর গহীন জলের আঁধারে ?
তোর ঢেউয়ে ভাইসা উঠে সূর্যের মায়া কোন সে বাহারে !
আমার প্রেমের একখান নারী দিস তোর জলের সাঁতারে।