স্কুলভিত্তিক রাজনীতি বাংলাদেশে নতুন কিছু না। বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন থেকে হাল আমলের বাম রাজনীতি কিংবা মৌলবাদী রাজনীতি সবখানেই কিশোররা রাজনীতিতে সক্রিয় ছিল এবং আছে।
বর্তমান সময়ে স্কুলভিত্তিক রাজনীতি থেকে সবচেয়ে লাভবান হল জামাত-শিবির। জোট সরকারের আমলে শিবিরের স্কুলভিত্তিক ব্যপক কার্যক্রম ছিল। কুইজ প্রতিযোগীতা থেকে শুরু করে বৃত্তি সব জায়গাতেই শিবিরের লক্ষ্য ছিল সম্ভাব্য কর্মী এবং সহানুভূতিশীল গোষ্ঠী তৈরি করা। বলা যায়, শিবির তাদের লক্ষ্যে অনেকাংশেই সফল। কিশোর কন্ঠ পাঠক ফোরাম কিংবা সাইমুম, স্পন্দন নানা নামে নানা আড়াল তৈরি করে শিবির তার শেকড় বিস্তার করেছে এবং এখনও তার প্রভাব আমাদের সমাজে অনুভব করা যায়।
বাম ছাত্র সংগঠনগুলোও স্কুলের কিশোর বয়সীদের নিয়ে রাজনৈতিকভাবে শিক্ষিত করার চেষ্টা করেছে। সরাসরি কিংবা সাংস্কৃতিক সংগঠনের নামে তাদের মাথায় সমাজতন্ত্রের বীজ স্থাপন করেছে। পাঠচক্র, সভা, সেমিনারে তাদেরকে লক্ষ্য করে নেতাদের বক্তৃতাও কম না।
ছাত্রলীগ স্কুলে তাদের কার্যক্রম চালু করার ঘোষনা দিয়েছে এবং সেটা রীতিমত কমিটি ঘোষনা করে। প্রশ্ন হচ্ছে স্কুলে ছাত্রলীগের কাজ কি হবে ? তারা সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের সাথে যুক্ত থাকবে ? পাঠচক্র কিংবা দেয়াল পত্রিকা, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা এগুলো কি তাদের লক্ষ্য হবে ?
মোটা দাগে যে ছাত্রলীগকে আমরা চিনি তারা কমিটির পোস্ট নিয়ে সংঘর্ষ করা ছাত্রলীগ, চাঁদার ভাগ নিয়ে কিংবা হলের নিয়ন্ত্রন নিয়ে খুনোখুনিতে লিপ্ত হওয়া ছাত্রলীগ। ধর্ষকের খেতাব পাওয়া ছাত্রলীগ নেতাই কি স্কুলে গিয়ে আদর্শের কথা শোনাবে ? স্কুল ছাত্রলীগ কি এর বাইরে গিয়ে সত্যিকার অর্থেই আদর্শের রাজনীতি নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতে পারবে ? কারা তুলে ধরবে ?
ছাত্রলীগের উদ্যোগটি আমি সমর্থন করি। বিশেষ করে যেখানে জামাত শিবিরের একক আধিপত্য সেখানে তাদের চ্যালেঞ্জ করার মত শক্তি একমাত্র ছাত্রলীগেরই আছে। কিন্তু যে আদর্শিক উচ্চতায় শিবিরের কর্মীরা এই সব কোমলমতি শিশুদের সামনে নিজেদের উপস্থাপন করতে পারে তার চাইতে উঁচুতে কিংবা সমান উচ্চতায় ছাত্রলীগের নেতারা কি নিজেদের উপস্থাপন করতে পারবেন ?
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:৪৯