somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুক্তিযুদ্ধে অস্ট্রেলিয়ার অবদান নিয়ে তথ্যচিত্র ‘তাহারা’

২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে অস্ট্রেলিয়ার অবদান নিয়ে এবার নির্মিত হলো তথ্যচিত্র ‘তাহারা’। অস্ট্রলিয়ার দৃমকহলিক প্রোডাকশন হাউসের প্রথম প্রযোজনায় চার অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী বাংলাদেশি এই তথ্যচিত্রটি নির্মান করেছেন। নির্মাতারা হলেন- ওয়াসিম আতিক কিশোর, জহিরুল মল্লিক জুয়েল, এ কে এম ইমরান এবং নাজনীন আনোয়ার ইভা।


নির্মাতারা জানান, একাত্তরে এদেশে শিশু ও নারীসহ ভয়াবহ বেসামরিক গণহত্যা, ভারত সীমান্তবর্তী এলাকায় কোটি কোটি শরনার্থীর চরম দুর্ভোগ এবং সর্বোপরি একচেটিয়া চাপিয়ে দেয়া অনৈতিক যুদ্ধের মোকাবিলা করার দৃঢ়তায় বাংলাদেশের প্রতি বিশ্ববাসীর মনোযোগ আকর্ষিত হয়। একদিকে পাকিস্তানের পক্ষে তথা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আমেরিকা ও চীন প্রকাশ্যে অবস্থান গ্রহণ করে, অন্যদিকে মুক্তিকামী বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে ভারত ও সোভিয়েত ইউনিয়ন সুস্পষ্ট সমর্থন জানায়। এরই মাঝে তৎকালীন দুই পরাশক্তি সোভিয়েত-মার্কিন স্নায়ুযুদ্ধের প্রভাবকে উপেক্ষা করে শুধুমাত্র মানবিক বিপর্যয়ের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়ে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে এগিয়ে এসেছিল অস্ট্রেলিয়ার সাধারণ নাগরিক, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, রাজনৈতিক ব্যক্তি ও স্কুল, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা।

তারা জানান, শুধু বর্তমান প্রজন্মই নয়, মুক্তিযুদ্ধ সময়কার প্রজন্মের অনেক বাংলাদেশীই অস্ট্রেলিয়ানদের এই অবদানের কথা সেভাবে জানেন না। ‘তাহারা’ নির্মানের প্রেক্ষাপট এখান থেকেই শুরু। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বন্ধুপ্রতিম অস্ট্রেলিয়ানদের অবদান, কাজের ধরন এবং পরিপ্রেক্ষিতের কথা সবাইকে বিশেষ করে বাংলাদেশীদের জানানোই এটি নির্মানের মূল উদ্দেশ্য। এছাড়াও ‘তাহারা’ তথ্যচিত্রের মাধ্যমে এইসব অস্ট্রেলিয়ানদের কাছে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করারও একটি ছোট্ট প্রয়াস।

তথ্যচিত্রটি নির্মানের প্রেক্ষাপট বর্ণনা করতে গিয়ে নির্মাতারা জানান, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের উপর অস্ট্রেলিয়ার অবদানমূলক একটি গবেষণা কাজের জন্য কয়েকটি অস্ট্রেলিয়ার দৈনিক পত্রিকার খবর সংগ্রহের কাজ চলছিলো। অপ্রত্যাশিতভাবেই বলা চলে, অনেক বেশি খবর ও তথ্য পাওয়া যায়। তখনই এবিষয়ে একটি আর্কাইভ করার সিদ্ধান্ত হয়।

তারা জানান, একটি খবরের সূত্র ধরে চমকে যাবার মতো কিছু খবর পাওয়া গেল। বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে শুধুমাত্র বাংলাদেশকে সমর্থন ও সহযোগিতা করার জন্য তিনটি এস্টেটে (ভিক্টোরিয়া, সিডনি ও ক্যানবেরা) তিনটি ভিন্ন কমিটি কাজ করেছিলো “Support Committee for Bangladesh Liberation War” নামে। বিভিন্ন ইউনিভার্সিটির (মোনাশ, মেলবোর্ন, সিডনি, অস্ট্রলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি) শিক্ষক, গবেষক, সাংবাদিক, রাজনৈতিক ব্যক্তি ও প্রবাসী বাংলাদেশীরা এই কমিটিতে কাজ করেছেন; জনগনকে সচেতন করেছেন, জনমত গঠন করেছেন, কিভাবে যুদ্ধ ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য আর্থিক সাহায্য সংগ্রহ করে পাঠানো যায়, সেজন্য কাজ করেছেন। এমন একটা তথ্যই মূলত তথ্যচিত্রটি নির্মানের মূল অনুপ্রেরণা হিসাবে কাজ করেছে।

‘তাহারা’য় অন্তর্ভূক্ত বিষয়গুলো হচ্ছে- ১৯৭১ এ প্রকাশিত অস্ট্রেলিয়ার দৈনিক পত্রিকার খবর (দি সিডনি মর্নিং হেরাল্ড, কান্বেরা টাইমস, দি এইজ, দি অস্ট্রেলিয়ান ইত্যাদি), অস্ট্রেলিয়ার সেই সময়ে প্রকাশিত কয়েকটা বইয়ের কপি (সোনার বাংলা ও অন্যান্য), যুক্ত ব্যক্তিবর্গ ও সাপোর্ট কমিটির ব্যক্তিদের সন্ধান ও তাদের নাতিদীর্ঘ প্রাসঙ্গিক সাক্ষাত্কার, যারা ১৯৭১ এর বাংলাদেশের জন্য ভূমিকা রেখেছিল (হেরব ফেইথ, ডেভিড ফেইথ, জেফ লেছি, সেলি রায়, মার্ক রাপার, টিম কলবাচ, বেরি দয়েস্তের, জন ডানহাম, জন ওদিন্ঘাম, চার্লস কপার, সম্সুজহা লোহানী, নজরুল ইসলাম উল্লেখযোগ্য), তৎকালীন অস্ট্রলিয়ান টিভি রিপোর্টের ফুটেজ ও যুদ্ধের ভিডিও এবং ১৯৭১ এ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের উপর অস্ট্রেলিয়া সরকারের বিবৃতি ও নথি।

তথ্যচিত্রটি নির্মানে সূত্র হিসাবে নির্মাতার ব্যবহার করেছেন- ১৯৭১ এ অস্ট্রেলিয়া সরকারের বিবৃতি ও নথি, ১৯৭১ ও পরবর্তী সময়ে প্রকাশিত বই ও পত্র-পত্রিকার কপি, টেলিভিশন এর রিপোর্ট ও ফিচার এবং সাক্ষাৎকার ( বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার যুক্ত ব্যক্তিবর্গ)।

এই মুহুর্তে তথ্যচিত্রের কাজ প্রায়ই শেষ; পোস্ট প্রোডাক্টসনের কাজ চলছে। নির্মাতারা আশা করছেন, ২৬ মার্চ, ২০১৫ তারিখে (স্বাধীনতা দিবস) তথ্যচিত্রটি রিলিজ করতে পারবেন।
উৎসঃ http://www.priyo.com/2014/12/18/124112.html
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মার্কিন নির্বাচনে এবার থাকছে বাংলা ব্যালট পেপার

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:২৪


আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাংলার উজ্জ্বল উপস্থিতি। একমাত্র এশীয় ভাষা হিসাবে ব্যালট পেপারে স্থান করে নিল বাংলা।সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর খবর অনুযায়ী, নিউ ইয়র্ক প্রদেশের ব্যালট পেপারে অন্য ভাষার সঙ্গে রয়েছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সত্যি বলছি, চাইবো না

লিখেছেন নওরিন হোসেন, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:০৮



সত্যি বলছি, এভাবে আর চাইবো না।
ধূসর মরুর বুকের তপ্ত বালির শপথ ,
বালির গভীরে অবহেলায় লুকানো মৃত পথিকের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা কি 'কিংস পার্টি' গঠনের চেষ্টা করছেন ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:১০


শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর থেকেই আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন নামক সংগঠন টি রাজনৈতিক দল গঠন করবে কিনা তা নিয়ে আলোচনা চলছেই।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখস্থান.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৫

শেখস্থান.....

বহু বছর পর সম্প্রতি ঢাকা-পিরোজপু সড়ক পথে যাতায়াত করেছিলাম। গোপালগঞ্জ- টুংগীপাড়া এবং সংলগ্ন উপজেলা/ থানা- কোটালিপাড়া, কাশিয়ানী, মকসুদপুর অতিক্রম করার সময় সড়কের দুইপাশে শুধু শেখ পরিবারের নামে বিভিন্ন স্থাপনা দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×