রাজ বাড়ি টা ছিল খুব উচু স্তম্ভের উপর। খারা সিড়ি দিয়ে উপরে উঠতে হয়। যখন সিড়িটা দেখলাম আবাক হয়ে ভাবলাম এত খাড়া সিড়ি করলেন কেন রাজা।
কারন আমার জন্যই উপরে ওঠা ছিল ভয়াবহ ব্যপার। পরে মনে হলো মনে হল সিড়ির উপরে তামা বা লোহার পাত বা রুপোর পাত ছিল। তাতে হয়তো চওড়া হতো সিড়িটা আরো একটু। প্রথম লেভেলে রানীদের ঘর। আর চুরোর একমাত্র ঘরটি রাজার।
এর পর গেলাম দেখতে বিশাল স্টেজ যেখানে রাজারা বসে হাতি, ঘোড়ার লড়াই দেখতেন। প্রায় আধামাইল লম্বা স্টেজ। সেখনে আবার অনেক গুলো টাওয়ার আছে যেখনে অপ্সরারা নেচে নেচে এক টাওয়ার থেকে অন্য টাওয়ারে যেত দড়ির উপর দিয়ে হেটে হেটে, হাতির লড়াই শেষ হলে রাজা তার রানি আর পরিষদ নিয়ে অপ্সরাদের সেই নাচ দেখতেন।
সেখান থেকে গেলাম দেখতে সেই টেম্পল যেখানে টুম্ব রেইডার সিনেমার সুটিং হয়েছে।
টেম্পলের গায়ে বিশাল বিশাল গাছ জড়িয়ে রেখেছে দেয়াল আর ঘড় গুলোকে।
টেম্পলের গায়ে অসংক্ষ গর্ত যেখানে একসময় নানান রকমের মুল্যবান পাথর বসান ছিল। আরা টেম্পলের দেয়ালে ছিম তামা বা রুপোর কারুকাজ। রাজার মা'র ঘরটা ছিল মনি মুক্তা খচিত। গর্ত গুলো এখনো আছে।
ওখান থেকে আরেক টেম্পলে গেলাম লম্বা পরিক্ষা আর বিশাল গেট পার হয়ে । এক সময় ঐ পরিক্ষায় কুমিড় রাখা হতো শত্রুদের আটকাবার জন্য।
সেখানে টেম্পলের দেয়ালে এনগ্রেভ করে ইতিহাস লিখে রাখা হয়েছে। যেন নকশি কথা।
দেয়ালে দেয়ালে ইতিহাসের গল্প!!! যুদ্ধ জয়ের গল্প!!! প্রেমের গল্প!!! আরো কতো গল্প!! আমি ঐ সব গল্পের ভেতর হরিয়ে গিয়ে নিজেকেই এক সময় গল্পের চরিত্র ভাবতে শুরু করলাম!!! হা হা হা অসাধারন অনুভুতি!!।
টেম্পলে দেয়াল আর গুবুজ গুলো যেন পাজ্ল করে বানান, টুকরো টুকরো পাথড়ের পাজ্ল একটার উপর আরেকটা বসিয়ে কোন চুন সুরকি ছাড়া কিকরে ওরা এত উচু উচু গম্বুজ বানাল সেটা সেই পিরামিডের বিশ্বয়ের মতই এক বিশ্বয়!!
দেখলাম কিছু কেম্বডিয়ান সেখানে অপ্সরার আর বানরের পোশাক পড়ে নেচে নেচে পুরনদিনের সময় গুলো কে মনে করিয়ে দেবার চেষ্টা করছে।
এই জিনিস টা আমাকে খুব নাড়া দিল যে ওরা ওদের পুরন ঐতিয্যকে বজায় রাখবার জন্য এমনকি স্কুল খুলেছে যেখানে ওরা শেখায় কিভাবে পাথরে এনগ্রেভ করে বা পাথড় কেটে কেটে হুবহু একই রকম ছবি আকতে হয় বা মুর্তি বানতে হয়, ইতিহাস লিখতে হয়।
এর মধ্যে দেখি ছোট্ট একটা মেয়ে আমার কাপরের কোনা ধরে টানছে হাতে বানানো কিছু ছোট ছোট খেলনা বিক্রি করবার জন্য। মিষ্ট মুখটা মায়ায় ভরা!!
অসাধারন করুকাজ করা শত শত গম্বুজ আর বৌদ্ধ মুর্তি দেখলাম সর্বত্র। আর
সযত্নে সেগুলো রক্ষা করা হচ্ছে। আপনাদের সাথে ছবি গুলো আর অনুভুতি গুলো শেয়ার করলাম।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:৫৬