হাজারো সমস্যা ধার কমিয়ে দেয় দাম্পত্যে। যা থেকে বেরিয়ে আসা একান্ত জরুরী। কী করণীয় জেনে নিন। বিয়ের পর আগের মতো যখন-তখন, যেখানে-সেখানে, যতক্ষণ খুশি আড্ডায় যাওয়া বন্ধ করা ভালো। ভাবছেন খারাপ লাগবে? মোটেও নয়, উল্টো দারুণ মজা হতে পারে। বরং একটা নতুন লাইফ স্টাইল পাবেন। নতুন মানুষের সঙ্গে। বিয়ের আগে যদি প্রেমে পড়ে থাকেন আর ঠিক করে থাকেন যে প্রেমিকাকে বিয়ে করবেন, তাহলে বাবা-মা যতই বাধাঁ দিন না কেন আপনার প্রেমিকের পাশে দাড়ান। তাহলে দেখবেন বিয়ের পরও সে এজন্য আপনাকে কত ভরসা করবে। যদি প্রেম করে বিয়ে করেন তাহলে তো কোন সমস্যাই নেই। আর যদি সম্বন্ধ করে বিয়ে হয় তাহলে এক কাজ করুন- পাত্রের ছবি নিয়ে বারবার দেখুন। মাঝে মধ্যে কোথাও তার সঙ্গে দেখা করতে পারেন। এতে তার প্রতি আপনার মনে ধীরে ধীরে ভালোবাসা জন্মাবে। সেও আপনার প্রতি আকৃষ্ট হবে। সিনেমার নায়কের মত আপনার স্বামী হবে দারুণ অ্যাট্রাকটিভ, ভীষণ শক্তিশালী আর আইডিয়াল- এমন মনে করবেন না প্লিজ! পর্দার বাইরের শাহরুখ্ খান নিশ্চয়ই একা একদল গুন্ডার সঙ্গে লড়ার কথা ভাববেন না। হবু স্বামীকে বদলে গড়েপিটে আপনার মনের মতো করে নেবেন। এই আশা নিয়ে কখনো বিয়ের পিঁড়িতে বসবেন না। মনে রাখতে হবে, মানুষ নিজেকে বদলাতে পারে অন্যকে নয়। আর একটা কথা, একজনের সবকিছু কখনো আরেক জনের মনের মতো হতে পারে না। বিয়ের আগে পাঁচজনে পাঁচ রকম কথা বলবে। অনেকে পাত্রের দোষ খুঁজে বের করবে। শ্বশুরবাড়ি সম্বন্ধে নানা রকম ভয় দেখানোর চেষ্টা করবে। আজেবাজে পরামর্শ দেবে। এসব কথায় একদম কান দেবেন না। লক্ষ্য করে দেখবেন যারা এসব করছে, তাদের কারোই স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে সম্পর্ক ভালো নয়। আমি দেখতে তেমন সুন্দরী নই, আমাকে ওর পচ্ছন্দ হবে তো? এরকম নেগেটিভ চিন্তা একেবারেই করবেন না। সৌন্দর্য মোটেই বাইরের চেহারার উপর নির্ভর করে না। ব্যক্তিত্বের ও ভালোবাসার ওপর নির্ভর করে। চারিদিক চেয়ে দেখুন, কত সাধারণ চেহারার মেয়ে বিবাহিত জীবনে সুখী। অন্যদিকে সুন্দরী স্ত্রীকে ছেড়ে স্বামী চলে গেছে এমন ঘটনাও ঘটে। আপনার স্বামীকে বলুন- আমি তোমায় ভালোবাসি। বিয়ে পুরনো হলেও বলুন। মুখে যদি না বলতে পারেন তাহলে চোখে চোখে বলুন, সামান্য একটু ছোঁয়া দিতে বলুন। চিরকুট লিখে দিন মনের কথা। শরীর দিয়ে ভালোবাসার কথা বলুন। স্বামী-স্ত্রীর যৌনতার মধ্যে কোন লজ্জা নেই, আছ স্বর্গীয় আনন্দ।
পরস্পরের পছন্দ অপছন্দ বুঝে চলুন। স্বামী আপনার পছন্দ বুঝে চলবেন আর আপনি আপনার স্বামীর পছন্দ বুঝে চলবেন। কী শোধবোধ হয়ে গেল তো? এবার নিশ্চয়ই কারোরই ‘ইগো’ তে লাগছে না। শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখুন। আপনি শ্বশুর বাড়িতে থাকুন বা নাই থাকুন। আপনার দাম্পত্য সুখের রিমোট কন্ট্রোল কিন্তু শ্বশুর-শাশুড়ির হাতে। আপনি তাদের অবহেলা করলে আপনার স্বামী রেগে যাবেন ও কষ্ট পাবেন। আপনার বাাবা-মাকে আপনার স্বামী অবহেলা করলে আপনার রাগ হয় না? কষ্ট হয় না?
স্বামীর নিন্দা করবেন না। নিন্দ মুখে মুখে ছড়িয়ে যায়। আপনি স্বামীর নিন্দা করলে তা আপনার স্বামী জানবেনই। আর জেনে নিশ্চয়ই দুঃখ পাবেন। তখন সম্পর্কও ভালো থাক না। অনেকে মনে করেন বিয়ের আগে আমি কত স্বাধীন ছিলাম, এখন পরাধীন। এই ধারনা এক্কেবারে ভুল। নিজেকে প্রশ্ন করুন- আপনি কি বিয়ের আগে মা-বাবার অধীনে ছিলেন না? আপনার স্বামীই বা কতটা স্বাধীন? আপনি কি আপনার স্বামীকে আপনার অধীনে রাখতে চান না?
ঘ্যান ঘ্যান করবেন না। তুমি আমায় এই দিলে না সেই দিলে না এধরনের দোষারোপ করলে মানুষ সবচেয়ে বিরক্ত হন। মনে রাখবেন, কেঁদে সোহাগ আর যেচে মন পাওয়া যায় না।
ছেলেমেয়ের কাছে আপনার স্বামীর নামে অভিযোগ করবেন না- তোর বাবা আমাকে এটা দেয়নি, ওটা দেয়নি, এই করেছে, সেই করেছ বললে বাবার ওপর ছেলেমেয়ের মন বিগড়ে যাবে। তাদের ব্যবহারেই আপনার স্বামী সেটা টের পাবেন। তখন তার মন খারাপ হবে।
সুতরাং দাম্পত্য জীবনে সুখের জন্য এই নিয়ম কানুন মেনে চলতে চেষ্টা করুন।
দৈনিক ডেসটিনি
সোমবার ১০ আগষ্ট ২০০৯
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই অক্টোবর, ২০১০ সকাল ১১:০২