তোমাকে,
শেষবারের মতো বলছি- প্রেম দাও। নইলে বিষ দাও। তোমার নিয়মতান্ত্রিক প্রত্যাখানের চেয়ে বিষ ঢের ভালো। আমার সামনে দিয়ে আর সবাই প্রেম করবে আর আমি বসে বসে... নাহ্, এই নির্মম পরিহাসের চেয়ে মৃত্যু ঢের ভালো। বলো প্রেম দিবে কিনা।
আজকের দুনিয়া চলছে প্রেমেরে ওপর। আর আমি...। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস আজ প্রেমময়। সকালে প্রেম;বিকালে প্রেম; আদালত আঙিনায় প্রেম; রেস্টুরেন্টে, সাইবার ক্যাফেতে সবখানে প্রেম। প্রেম-ভালোবাসার কারণে নেটওয়ার্ক ফ্রিকোন্সিও জ্যাম। ওরাও আজ ব্যস্ত ভালোবাসাবাসরি সুজোগে করে দিতে। প্রেম ছাড়া বাঁচা আর পানিহীন নদীতে সাঁতার কাটা সমান। “বাঁচতে চাইনা আমি প্রেমহীন হাজার বছর...”।
ওই যে ওবাড়ির ছেলে রবি! আমার সামনে দিয়ে কেমন ড্যাগ ড্যাগ করে হেটে যায়। ভাবখানা এমন যেন প্রেম-ভালোবাসা একচেটিয়া ওদের জন্য। আসলে ঠাট্টা করে, ঠাট্টা; আমার সাথে ওরা সবাই ঠাট্টা করে। করবেই বা না কেন। আমার কী যোগ্যতা আছে। পারি না একটা প্রেম করেত...
মিলি, এই এতটুকু মেয়ে। দু’দিন ইউনিভার্সিটে পা দিয়েই জুটিয়ে নিলে। বাব্বাহ! মতা আছে ওর। আমাকে বলে কিনা দাদা বিয়ে বরছেন না কেন? তুমিই বলো, এটা কি সহ্য করা যায়? প্রেম করে বেড়াবে ওরা আর আর্লি বিয়ে আমাদেরকেই করতে হবে?
বাল্যবন্ধু বন্ধু রাজীব; এক সাথেই পড়েছি। সাাত কলির কেষ্ট। একেক দিন একেক জনের সাথে...। যেন প্রেম বিলাতে এসেছে। আমার কপালে নাকি প্রেম জুটবেনা কোন দিন। প্রেম করার জোগ্যতা নাকি আমার নাই।
...পঁচিশটি বসন্ত একে একে চলে গেল! অবশ্য বসন্তের বাতাস গায়ে লাগতে শুরু করেছে মাত্র বছর কয়েক। গাতানুগতিকভাবেই বসন্ত আসে, চলেও যায়। এটা আবার এতো গুরুত্ববহ কেন- ভাবতেই পারতাম না। ৩৬৫ দিনের মধ্যে ভালোবাসাবাসির জন্য যে আলাদা কোন দিন থাকতে পারে- এটা কেমন আহাম্মকি- আমার মাথায় ঢোকে না। বড় বড় অনেকেই নাকি প্রেম করতেন। লুকিয়ে লুকিয়ে। প্রেম করে জেলও নাকি খেটেছেন ওঁদের কেউ কেউ। হাসি পায়। বুদ্ধিমানেরা নাকি ভীষণ নির্বোধ হয়। ভেবে আনন্দ পেতাম- অন্তত আমি দলের নই। কিন্তু...। সব কিছুর মূলে ওই যে ঐ ‘ডেমোনেস্ট্রশন ইফেক্ট...’
সে যাই বল না কেন। আমি কিন্তু হাল ছাড়ছিনা। যে করেই হোক প্রেম আমাকে করতেই হবে। আচ্ছা তুমি বলে দাওনা তোমার ভালোবাসা পাওয়ার জন্য আমাকে কি কি করতে হবে? তুমি চাইলে- “দূরন্ত ষাঁড়ের চোখে বাঁধতে পারি লাল কাপড়”, বিশ্বসংসার তন্ন তন্ন করে খুঁজে আনতে পারি ১০৮টা নীল পদ্ম”। না কি তাতেও খুশি নও?
সত্যি বলছি আমি ভালোবাসার কাঙাল। পঁচিশের কমকরে ১০টি রোমান্টিক বছর ছিল... খুলনা থেকে সিলেট, মেহেরপুর থেকে চট্টগ্রাম হয়ে কক্সবাজার- ছুটেছি। গোলাপ হাতে বসে থেকেছি ঘন্টার পর ঘন্টা- যদি তার দেখা মেলে। কিন্তু হতাশ হয়েছি। আবারও চেষ্টা করেছি। ব্যর্থ হয়েছি। কিন্তু “আমারও তো স্বাধ ছিল আশা ছিল মনে, ভালোবাসা নিয়ে আমি থাকবো জীবনে...”।
ভালোবাসা কি, প্রেম কি- আমি জানতাম না। এই তুমি আমাকে ভালোবাসতে শেখালে। তোমার জন্যই প্রথম ভালোবাসার পরশ পেলাম। আজ সেই তুমি “ভালোবাসার আগুন জ্বেলে কেন চলে যাও...”
তোমাকে আমি সাত দিনের সময় দিলাম। এর মধ্যে হয় প্রেম দেবে, না হয় বিষ। তাও যদি না পার তবে বলে দাও। তোমার পথের কাটা হয়ে আর থাকবো না। ভাববো আমার ভালোবাসা মরে গেছে। বুঝবো সত্যি সত্যি আমার ভালোবাসার জোগ্যতা নাই। আর তার পর “... থেকে আর ভালোবাসার নাম নেবো না আমি...”
(প্রেম বিষয়ক যোগাযেগের জন্য [email protected])