আমাদেরকে পড়ানো হত খুব সকাল থেকে। নরমাল ক্লাস টাইমে আমরা শুধু আলোচনা করতাম। আর বিশেষ যে কাজটি করতাম তা হল বাঁদামি। ওর গাছের বেল তো তার গাছের কুল...। আমের সময় তো দুপুরের খাবার আমের ওপর দিয়েই চলে যেত। মাঝে মধ্যে অবশ্য ঝামেলাও পড়তে হয়েছে ঢের।
তো একবার আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম নতুন কোন কিছু করতে হবে। খুঁজে কিছু না পেয়ে টার্গেট করলাম পাশের গ্রাম। ওখানে এক আনারস চাষী আছে। ওর বাগানে নাকি ভাল আনারস আছে। খাল পার হয়ে চলে গেলাম পাশের গ্রামে। প্রথমে তার কাছে আনারস খেতে চাই লাম-
- চাচা আমরা আনারস খেতে চাই।
- বাজারে আছে না। বাবারে কও কিনে দিতে।
শালা তো বেতমিজ মন্দ না। ঠিক আছে। আমরাও পারি। কিছু সময় পরে লুকিয়ে অতর্কিতে হামলা। পাঁচ জনে পাঁটি ডাসা আনারস বাগিয়ে যে ইনা চলে আসছি- ওব্যাটা দিল পালটা ধাওয়া । দেঁৗড়াতে দেঁৗড়াতে একদম স্কুলে।
যথারীতি নালিশ। বিচারের দায়িত্বও যথারীতি আমার বাবার ওপর। উনি ভীষণ নীতি কঠোর। আগে পাঁচজনকে ডেকে দিল রাম ধোলাই। তারপর বিচার-
সিদ্ধান্ত হল পাঁচ আনারস চোরকে যার যারটা মাথায় করে বয়ে নিয়ে মালিকের বাড়ি পেঁৗছে দিতে হবে। কি আর করা-
বেরসিক বাগান মালিক অবশ্য শেষ পর্যন্ত চুরি করা আনারস ফেরত নেয়নি। আমরাই স্কুলের পিছনে বসে গলধকরণ করেছিলাম।
সম্পূর্ণটা সাবাড় করে তৃপ্তির ঢেুকুর তুলতে তুলতে ভাবছিলাম-
চোর খেতাব পেলেও তো আনারস খাওয়া গেল...
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০