অধ্যাপক বদরূল ইমাম :
বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের সমুদ্র সীমানা নির্ধারণে আš-র্জাতিক ট্রাইব্যুনালের রায় বাংলাদেশের পে গেছে, কারণ মিয়ানমারের দাবি অনুযায়ী এই সীমানা নির্ধারণে সমদূরত্বের নীতি অবলম্বন করা হয়নি বরং বাংলাদেশের দাবি অনুযায়ী ন্যায়পরায়নতার নীতি অবলম্বন করা হয়েছে। তবে এ রায়কে বাংলাদেশের জন্য সমুদ্র বিজয় বলা যায় না। এ রায়টি নিয়ে সরকারি মহল ও এর সঙ্গে সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিক্রিয়াকে ‘ওভারবোন’ বা ‘অতিরিক্ত ফুলিয়ে ওঠানো’ বলা যেতে পারে। প্রথমত. এ রায়ে নির্ধারিত সীমানার ফলে বাংলাদেশ পূর্বদিকে মিয়ানমার সমুদ্র সীমানাসংলগ্ন বেশ কয়েকটি গ্যাস বক হারাবে, অর্থাৎ বাংলাদেশে গভীর সমুদ্র গ্যাস বক নং ১৮, ২৩ ও ২৮ পুরোটাই মিয়ানমারের পে চলে যাবে। অধিকন্তু বাংলাদেশের আরো কয়েকটি গভীর সমুদ্র বকের (১৭, ২২, ২৩ ও ১৩ নং) অংশ বিশেষ মিয়ানমারের পে চলে যাবে।
দ্বিতীয়ত. বাংলাদেশের সমুদ্র উপকূল থেকে ৪৫০ কিলোমিটার পর্যš- বর্ধিত মহীসোপান বা এক্সটেন্ডেড কন্টিনেন্টাল শেলফ এলাকাটি বাংলাদেশের দাবি অনুযায়ী দেয়া হয়নি। যদিও বাংলাদেশ জাতিসংঘ সমুদ্র আইন অনুযায়ী অনুসরণ করে বৈজ্ঞানিক উপাত্ত পেশ করেছে যেÑ বাংলাদেশের গভীর সমুদ্র তলদেশে প্রাকৃতিকভাবে পলি জমে (ভূবিজ্ঞানের ভাষায় ডিপ সি ফ্যান) ভূখণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বর্ধিত অংশ বিদ্যমান। তবে জাতিসংঘের সমুদ্র আইন অনুযায়ী প্রত্যেকটি দেশ উপকূল থেকে ২০০ নটিক্যাল মাইল পর্যš- একাš- অর্থনৈতিক এলাকা হিসেবে পেয়ে থাকার নিয়ম, সেটি বাংলাদেশ পেয়েছে। ভারত ও মিয়ানমার এ ব্যাপারে তাদের অমত দাবি করেছিল।
লেখক : অধ্যাপক, ভূতত্ত্ব বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
সূত্র : দৈনিক আমাদের সময় , ১৮-মার্চ-২০১২