somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে শুভ কামনা

১৫ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ১২:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার বাংলাদেশ – তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নশীল একটি দেশ। আর এদেশের মানুষের একক অনেক প্রাপ্তি থাকলেও দলগত যে কোন বিষয়ে, তা খেলাধুলাতেই হোক বা অন্য যে কোন ক্ষেত্রেই হোক, সাফল্য ধরা দিয়েছে খুব কমই। দলগত যে কোন ব্যাপারেই আমরা কেন যেন বরাবরই পিছিয়ে থাকি, অন্যের সাথে দল গঠন করে কাজ করার মাঝে কেন যেন আমাদের বেশ ভালো রকমের ঘাটতি রয়েছে। কিন্ত্ত ক্রিকেট খেলার মাঠে এর বৈপরীত্য আমাকে অনেক আশাবাদী করে তোলে, মনে হয় অন্তত এই একটি ব্যাপারে একজোট হয়ে পারফর্ম করার মতো মানসিকতা আমাদের তৈরী হয়েছে।

২০১৫ সাল আমাদের দেশে একটা চরম এবং চলমান ধোঁয়াটে পরিস্থিতির মাধ্যমে শুরু হয়েছে। অবরোধ, হরতাল, পেট্রোল বোমা, ককটেল আক্রমণসহ নানান কারণে আমরা একটি বিতশ্রদ্ধ পরিস্থিতির সম্মুক্ষীণ হয়েছি। বিশ্বকাপ ক্রিকেট যেন কিছুটা হলেও এ উত্তাপের মাঝে আমাদের জীবনে এক পশলা স্বস্তির বৃষ্টি হয়েই এসেছে। আর তাতে শান্তির পরশ বুলিয়ে দিয়েছে আমাদের ক্রিকেট দলের উজ্জীবিত পারফর্মেন্স। আমি নিজেই এর মাধ্যমে উজ্জীবিত হয়েছি ব্যাপকভাবে। কিভাবে হয়েছি, সে গল্প আরেকদিনের জন্য তোলা রইলো।

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের উপস্থিতি বরাবরই কম, আর খেলাধুলার ক্ষেত্রেও এর ব্যাত্যয় ঘটেনি। আর এ কারণেই ক্রিকেটের আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও আমাদের পক্ষে কথা বলার মানুষের সংখ্যাও নেহাতই নগণ্য। এর প্রমাণ আমরা পাই শুধুমাত্র টিভি ধারাভাষ্যকারদের দিকে তাকালেই। অ্যাসোসিয়েট দেশগুলো বাদে প্রতিটি টেস্ট খেলুড়ে দেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন, এমন সবারই উপস্থিতি অন্তত টিভি ধারাভাষ্যকার হিসেবে আছেই, কেবল বাংলাদেশ বাদে। জানি না, ইংরেজী জ্ঞান দুর্বল বলেই কিনা, আমাদের কোন ক্রিকেটারকে ধারাভাষ্যকার হিসেবে আমরা পেলাম না। কিন্ত্ত আমার সে কষ্টটাও কেটে গেছে আমাদের ক্রিকেট দলের খেলার ধার দেখে।

১৯৯৯, ২০০৩, ২০০৭, ২০১১ – বিগত চারবারেরর বিশ্বকাপ ক্রিকেটের খেলা দেখেছি, আর এবারের খেলাও দেখছি। আমার দেশের ক্রিকেটাররা তাদের বিস্ময়কর পারফর্মেন্সের যে মাত্রাযোগ করেছেন এবারের আসরে, আশা করি তার রেশ সহসাই কাটবে না। এ বছর, তার পরের বছর, তার পরের পরের বছর, তারও পরে…তাদের উত্তরোত্তর উন্নতি যেন তাদের দলগত সমঝোতার এক অনন্য উদাহরণ হিসেবে আমাদের মাঝে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবে অধিষ্ঠান লাভ করে, সে কামনাই করছি।

আমার ভালো লাগে, আমারই কোন ছোট ভাই, বড় বোন, কোন দুঃসম্পর্কের চাচা, বা এমন কোন মানুষ, যার সাথে আমার কোন সম্পর্কই নেই, যখন ক্রিকেট খেলা এবং আমাদের ক্রিকেট দল নিয়ে অনেক আশা করে, বিশেষ করে এবারেরর আসরের বাংলাদেশ ক্রিকেট দল নিয়ে যখন বলে, “দেখো ভাইয়া, এবার কিন্ত্ত আমরা ফাইনাল খেলবোই খেলবো”, “দেখিস আনোয়ার, আমাদের টিম কিন্ত্ত এবার ভারতকে গো-হারা হারাবে”, “ভাতিজা, মনটা ভইরা আমাগো দলের খেলা দেহি, কি কও মিঞা, সাকিব তামিম তো অখন বাদ, অখন সবেতেই খেলবার পারে”, “ভাই, দেখেন দেখেন, কি আউটটা করছে দেখেন!” – তখন আমার সব কষ্ট কয়েক লহমার জন্য যেন কোথায় হারিয়ে যায়।

যে দেশের মানুষ এখনো দলগত সব ব্যাপারেই এখনো দ্বিমত পোষন করে, একটা ক্রিকেট খেলার মাঠে তারা সবাই যেন কেমন করে এক হয়ে যায়। এসএসসি পরীক্ষার মতো কঠিন সময়ে হরতাল শিথিল করতে আমাদের রাজনৈতিক বোদ্ধাদের অনেক ভাবতে হয়, সমঝোতার আলোচনাতে বসা যাবে কিনা, তা ভাবতে ভাবতে কতগুলো সাধারনের প্রাণ ঝরে পড়ে, কিন্ত্ত ক্রিকেট ম্যাচ জিতলেই সে হরতাল শিথিল হয়ে যায়, আলোচনার কথা ভুলে আনন্দ মিছিলের জন্য সবাইকে আহবান জানানো হয়। আমি অনেক খুশী, অন্তত এই একটি ব্যাপারে আমরা একমত হতে পেরেছি। তাতে করে আমার বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা ভারতের সাথে হারুক কি জিতুক, বাংলাদেশ ক্রিকেট দল সেমি-ফাইনাল খেলুক কি চাই না খেলুক, আমার আর কিছু যায় আসে না। আমাদের ক্রিকেটারদের কল্যাণে “আমি” থেকে যে “আমরা” হয়ে উঠেছি, তার প্রাপ্তি আমার কাছে অনেক।

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে আমার, থুরি, আমাদের, অনেক অনেক শুভ কামনা রইলো !
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

কওমী মাদ্রাসায় আলেম তৈরী হয় না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৬২ জুমুআ, ২ নং আয়াতের অনুবাদ।
২। তিনিই উম্মীদের মধ্যে একজন রাসুল পাঠিয়েছেন তাদের মধ্য হতে, যে তাদের নিকট আবৃত করে তাঁর আয়াত সমূহ; তাদেরকে পবিত্র করে এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

'জুলাই যোদ্ধারা' কার বিপক্ষে যুদ্ধ করলো, হ্তাহতের পরিমাণ কত?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫১



সর্বশেষ আমেরিকান ক্যু'কে অনেক ব্লগার "জুলাই বিপ্লব" ও তাতে যারা যুদ্ধ করেছে, তাদেরকে "জুলাই যোদ্ধা" ডাকছে; জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ ছিলো পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, ছাত্রলীগ; জুলাই বিপ্লবে টোটেল হতাহতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×