গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় ধর্ম নিছক একটি ব্যক্তিগত ব্যাপার। ব্যাক্তিগতভাবে এতে ধর্মীয় বিশ্বাস ও আচার অনুষ্ঠানের স্বাধীনতা স্বীকৃত। কিন্তু রাষ্ট্রীয় ব্যাপারে মানুষ হবে সম্পূর্ণ স্বাধীন। এই নীতিতে রাষ্ট্রীয় ব্যাপারে আল্লাহ ও তার রসুলের কোনো কর্তৃত্ব স্বীকৃত হয় না।
গণতন্ত্রের দৃষ্টিতে মানুষই সমস্ত ক্ষমতার উৎস। আইন রচনাকারী তারাই। মানুষের ঊর্ধ্বে এমন কোনো উচ্চতর সত্তা এখানে স্বীকৃত নয় যার বিধান পালন করতে মানুষ বাধ্য। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় মানুষের সমষ্টিগত ইচ্ছা ও বাসনাই হয় আসল লক্ষ্য এবং তা পূর্ণ করার জন্যই রাষ্ট্র একান্তভাবে নিয়োজিত থাকে।
গণতন্ত্রের মূল থিউরি হল, ‘গভর্নমেন্ট অব দি পিপল, বাই দি পিপল, ফর দি পিপল’ - ‘মানুষের উপর মানুষের দ্বারা পরিচালিত মানুষের শাসন।’
গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় জনগণ যেহেত সমস্ত ক্ষমতার উৎস, তাই ভাল-মন্দ, কল্যাণ-অকল্যাণ, এমনকি বৈধ ও অবৈধ ইত্যাদি বিষয়াদি সাব্যস্ত করার অধিকার মানুষের। এখানে ভোটাধিকারের মাধ্যমে সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোটে যে কোনো ব্যক্তি রাষ্ট্রপ্রধান হতে পারেন এবং তা একটি নির্ধারিত মেয়াদে। এটি মানুষের মনগড়া মতবাদে পরিচালিত একটি রাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থা।
ইসলাম ও গণতন্ত্রের মধ্যে পার্থক্যটা যেখানে
আগেই বলা হয়েছে যে, রাষ্ট্রের মৌলিক উপাদান চারটি।
১. জনসমষ্টি
২. নির্দিষ্ট ভূখণ্ড
৩. সরকার
৪. সার্বভৌমত্ব
ইসলাম, রাষ্ট্রের মৌলিক চারটি উপাদানের প্রথম তিনটিকে স্বীকার করে। কিন্তু এই সার্বভৌমত্বের ব্যাপারে তা একমাত্র আল্লাহ তাআলার জন্য নির্দিষ্ট করে। আল্লাহ্ তাআলার প্রভুত্ব, একচ্ছত্র মালিকানা এবং নিরঙ্কুশ শাসন-ক্ষমতা সকল দিক থেকেই অখণ্ড, অবিভাজ্য এবং অংশীদারহীন। আল কুরআনে বর্ণিত হচ্ছে, ‘তার সার্বভৌমত্বে কারো কোনো অংশীদার নেই।’ (১৭ : ১১১)
মূলকথা হচ্ছে, আল্লাহ তা‘আলাই একমাত্র সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী আর এটাই তাওহীদের মূলমন্ত্র। এ আকীদা পোষণ করা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য আবশ্যক।
কুরআনে বর্ণিত হচ্ছে, ‘আর আল্লাহ্, তিনি ব্যতীত কার সার্বভৌমত্ব নেই, যিনি চিরঞ্জীব ও চিরস্থায়ী।’ (৩ : ২)
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই আগস্ট, ২০১৩ ভোর ৬:১১