আমাদের স্বপ্নকে বাচান, যদি আমরা মেধাবী হয় তবে প্রকৃত মেধাবীদেরকে দেশ গড়ার সুযোগ দিন।
তথ্যপ্রযুক্তির এই স্বর্ণযুগে চাকরি নামের সোনার হরিণটি খুব সহজেই ধরা যায় শুধুমাত্র একটি এসএমএস এর মাধ্যমে। কতৃপক্ষ স্বীকার করুক বা নাই করুক এটাই প্রকৃ্ত বাস্তবতা। এসএমএস দুরনিতির প্রবল জোয়ারে মেধাবীরা আজকাল লিখিত পরীক্ষায় তাঁদের সফলতা দেখাতে পারলেও নৈরবত্তিক বা MCQ পরীক্ষায় তাঁদের পূর্বোক্ত সফলতা দেখাতে পারছে না শুধুমাত্র ডিজিটাল পদ্বতির এই এসএমএস নকল এর কারনে।
যেভাবে ঘটছে এই ডিজিটাল দুর্নীতিঃ
সাধারণত পরীক্ষা হলে প্রশ্ন পাওয়ার সাথে সাথে কিছু ছাত্র সেই প্রশ্নের ছবি তুলে তা এম এম এস বা ইন্টারনেট এর মাধ্যমে সেই প্রশ্নের একটি কপি বাইরে প্রেরণ করে, ক্ষেত্রবিশেষে কিছু শিক্ষক ও এ ব্যাপারে জড়িত থাকেন। অতঃপর ডিজিটাল দুর্নীতি পরিচালনাকারি সিন্ডিকেট গুলো খুব দ্রুত সেই প্রশ্নের সমাধান করে তাদের সাথে চুক্তিবদ্ব শত শত শিক্ষার্থীকে প্রেরণ করে। এতে এস এম এস প্রাপ্ত ছাত্ররা ১০০ তে ৯৫ এর উপর মার্ক পায় এবং ফলস্বরূপ পাস মার্ক গিয়ে দাঁড়ায় ৮০ এর উপর, যা এস এম এস ব্যাতিত পাওয়া প্রায় অসম্ভব। একারনে দেখা যাচ্ছে যে, যেসব পরীক্ষায় আগে মেধাবীরা ৫০ থেকে ৬০ পেয়ে নিশ্চিত চান্স পেয়ে যেত সেখানে আজকাল তারা ৭০ শতাংশ মার্ক পেয়েও উত্তীর্ণ হতে পারছে না। যদিও আমি মনে করি ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষ এসব ব্যাপারে জড়িত নয় কিন্তু তারা উদাসীন, আর তাঁদের এই উদাসীনতা জাতিকে মেধাশুন্য অন্ধকার ভবিষ্যৎ এর দিকে ঢেলে দিচ্ছে। যদিও এখানে আমি আপনাদের বিরুদ্বে অভিযোগ করতে আসি নি, কেননা যেসব রাজনৈতিক সিন্ডিকেট এইসব এসএমএস দুর্নীতিকে তাঁদের পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছে তারা ক্ষেত্র বিশেষে আপনাদেরও নিয়ন্ত্রণের বাইরে, তথাপি নিন্মোক্ত সুপারিশ গুলো এই এসএমএস দুর্নীতি রোধে অনেকাংশে সহয়তা করবে বলে আমার বিশ্বাস।
কতৃপক্ষের করনীয়ঃ
শুক্রবার ১০ টা হতে ১২ টা সময়ে এস এম এস বন্দ্ব রাখা
মূলত অসুদুপায় অবলম্বনকারীরা sms এর মাধ্যমে প্রশ্নের উত্তর পেয়ে থাকে, তাই কতৃপক্ষের উচিৎ পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে সবধরনের sms ও mms off রাখা। যেহুতু অধিকাংশ ভর্তি ও চাকরির পরীক্ষা ঢাকায় শুক্রবার সকাল ১০ টা হতে ১২ টা সময়ে হয়ে থাকে তাই কতৃপক্ষের উচিৎ মোবাইল অপারেটরদের সাথে কথা বলে পুরা ঢাকা শহরে শুক্রবার ১০ টা হতে ১২ টা সময়ে সবধরনের sms এর ইঙ্কামিং ও আউটগোয়িং বন্ধ রাখা।
এস এম এস লিমিটিং
যদি পূর্বোক্ত কঠিন পদক্ষেপ সম্ভব না হয় তাহলে কতৃপক্ষ অপারেটরদের এস এম এস লিমিটিং এর অনুরোধ করতে পারে- এর অর্থ হল শুক্রবার সকাল ১০ টা হতে ১২ টা সময়ে ঢাকা শহরের যে কোন মোবাইল ব্যাবহারকারি একটির বেশি (সর্বোচ্চ ১৬০ অক্ষর) এস এম এস গ্রহণ করতে পারবে না। উত্তরপত্র সহ এস এম এস পাঠাতে ৫ হতে ৬ টির মত এস এম এস লাগে। এ ধরেনের লিমিটিং এর ফলে অসুদুপায় অবলম্বনকারীদের নকল পক্রিয়া অনেকাংশে ব্যাহত হয়ে পড়বে।
এস এম এস মনিটরিং ও ফিল্টারিং
যেহুতু উত্তরপত্র সহ এস এম এস গুলো শুধুমাত্র নিউমিরিক নাম্বার( ১,২,৩,৪...) ও ইংরেজি অক্ষর A থকে E নিয়ে গঠিত তাই মোবাইল অপারেটররা চাইলেই সহজে এ ধরনের এস এম এস ট্র্যাক করে সেগুলোকে বাতিল বা বিলম্বিত করতে পারে। যেমনঃ 1a 2d 3e 4a 5c 6b… এই ধরনের এস এম এস চাইলেই সহজেই ট্র্যাক করা সম্বভ।
বিবিধ
১) MCO পরীক্ষায় অন্তত ৬টি সেট করা উচিৎ এবং সেট কোড দায়িত্বরত শিক্ষক কতৃক পূরণ করা বাঞ্ছনীয়।
২) ঢাকা শহরে বিভিন্ন সরকারি কলেজগুলি হচ্ছে এস এম এস দুর্নীতির আখড়া, কেননা এইখানে শিক্ষকেরা ছাত্ররাজনিতীর হাতে জিম্মি। সম্ভব হলে এই কলেজ গুলোকে কেন্দ্র হিসেবে নির্বাচন না করাই উত্তম।
৩) পরীক্ষার্থীদের সীট প্লান কেবল পরীক্ষার আগেরদিন প্রকাশ করা উচিৎ, এতে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক সিন্ডিকেট গুলো পরীক্ষার্থীদের সাথে যোগাযোগ করার তেমন সময় পাবে না।
কতৃপক্ষের প্রতি আমার অনুরোধ দেশের ভবিষ্যৎ দ্রষ্টা ও রুপকল্পকার হিসেবে সমসাময়িক দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি আপনাদের রয়েছে ভবিষ্যৎের প্রতিও দায়বদ্বতা। তাই ভবিষ্যৎ বাংলাদেশকে একটি মেধা সম্পন্ন জাতি উপহার দেয়ার দায়িত্বও আপনাদের উপর বর্তায়।
[email protected]
[ পরশিষ্টঃ
১) আপনারা যারা আমার সাথে একমত তাঁদের বলছি চলুন প্রেস ক্লাব বা টি এস সি তে কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য মানব বন্ধন করি। এই ব্যাপারে কমেন্টে আপনাদের সুচিন্তিত মতামত আশা করছি।
২) সামুর প্রতি অনুরোধ এই পোস্টটিকে স্টিকি করে আম ছাত্র জনতার দৃষ্টি আকর্ষণের ব্যাবস্থা করা।
৩) আপনাদের কারও যদি প্রথম আলো বা অন্য কোন জনপ্রিয় পত্রিকায় পরিচিতি থাকে তাহলে কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য এই লিখাটি পত্রিকায় ছাপানোর উদ্যোগ নিতে পারেন, ধন্যবাদ। ]