১.
আমি একটা রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখি। এ আমার কল্পরাষ্ট্র!
আমার কল্পরাষ্ট্রের একটাই নীতি-- মানুষ শুধু নিরাপদ- মুক্তজীবন যাপন করবে। সে রুদ্ধ থাকবে না ধর্মে, সমাজে, কর্মে, শিক্ষায় অথবা মত প্রকাশে।
এই পরিবেশটাই রাষ্ট্র ক্রিয়েট করবে। এটাই হবে রা্ষ্ট্র পরিচালনার মূলমন্ত্র।
আপনারা আমাকে বোকা বলতে পারেন অথবা যা কিছু বলতে পারেন। আমার কষ্ট লাগবে না। আমার স্বপ্ন সাধারণ জীবন যাপন করা।
আপনারা হাসতে পারেন। হাসুন!
২.
এখন নবারুণ ভট্টাচার্যের একটা কবিতার কথা মনে পড়ছে। কবিতার প্রথম চরণ তুলে দিচ্ছি। আপনারা যারা কবিতাটি পড়তে চান বা আবার পড়তে চান পড়তে পারেন এখানে
“যে পিতা সন্তানের লাশ সনাক্ত করতে ভয় পায়
আমি তাকে ঘৃণা করি-
যে ভাই এখনও নির্লজ্জ স্বাভাবিক হয়ে আছে
আমি তাকে ঘৃণা করি-
যে শিক্ষক বুদ্ধিজীবী কবি ও কেরাণী
প্রকাশ্য পথে এই হত্যার প্রতিশোধ চায় না
আমি তাকে ঘৃণা করি-”
৩.
তো আজ কী দেখি আমরা?
ভয় পাচ্ছেন বলতে?
থাক! বলতে হবে না।
বিশ্বকাপের ফাইনাল দেখেন।
৪.
প্রথম আলোর একটা খবরে দেখলাম মাত্র ৩০ হাজার টাকায় রোহিঙ্গারা বাংলাদেশি পাসপোর্ট করছে।
কে দিচ্ছে তাদের পাসপোর্ট?
বলতে ভয় করছে?
থাক! বলতে হবে না।
যেখানে সেখানে ক্ষমতার দাপট! কেরাণী দেখাচ্ছে তার দাপট- কর্তা দেখাচ্ছে তার!
নেতা-আমলা-পুলিশ-ধনবান-বড়লোক সবাই।
মরছে কে?
হা হা হা! সাধারণ মানুষ।
বাঙ্গালী আর ‘মানুষ’ হলো না!
৫.
আমরা বাঙ্গালী আজব লোক।
যে দিকে স্রোত সে দিকেই শরীর ভাসাই। যে দিকে মানুষ বেশি সেই দলেই ভিড়ে যাই। এটা একেবারে সাধারণ জনগন থেকে অধ্যাপক পর্যন্ত।
যখন কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্র-ছাত্রীরা রাস্তায় নেমে এলো- রাস্তা বন্ধ হয়ে গেলো, তখন আমাদের বড় বড় অধ্যাপক, সুশীল, বুদ্ধিজীবী সকলেই বল্লেন - হ্যাঁ হ্যাঁ... হেন-তেন।
আর আজ যখন অল্পকিছু ছাত্র শহীদ মিনার বা রাস্তায় দাড়িয়ে মার খায় তখন তারা মুখে থালা দিয়ে রাখেন।
কী মজা! কী মজা!
তোমরা যারা ফুটবল খেলা দেখো!
৬.
এখন সরকারী কোন সেবাটা আপনি অতিরিক্ত টাকা ছাড়া পেয়েছেন? বলতে পারবেন?
হাসপাতালে যান- দেখবেন বেলা একটার পর ডাক্তার নাই- কর্মচারী- কর্মকর্তা নাই।
ভূমি অফিসে যান... দুর ছাই! এসব লিখে কী হবে!
৭.
রাষ্ট্র!
হায় মানুষ! হায়!
৮
“এই মৃত্যু উপত্যকা আমার দেশ না” -নবারুন ভট্টাচার্য
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ৯:২৬