রাতের খাবারের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। তখনও পুরোপুরি খাবার তৈরী হয়নি। তবে নিশ্চয়তা ছিল – খাবার কপালে জুটবে।
ক্ষুধার তীব্র যন্ত্রণা কিছু ক্ষনের জন্য শরীরে উপস্থিতি জানালো। তখনই মনে হল তাহলে বৈশ্বিক ক্ষুধার পরিস্থিতি কি তা একটু লক্ষ্য করা যাক। আরও লক্ষ্য করা যাক- ‘উন্নতি’, ‘উন্নয়ন’, ‘সূচক বৃদ্ধি’, ‘এগিয়ে যাচ্ছে’ বলে যারা চেচাচ্ছেন, তারা কতটুকু তৃপ্তি নিয়ে চেচাচ্ছেন, না কি শুধুই স্বারথদ্ধারের পায়তারা। (এতটুকু লিখতে লিখতে খাবার উপস্থিত হয়ে গেছে)।
‘Global Hunger Index 2014: The Challenge of Hidden Hunger’ নামে একটি সমীক্ষা প্রকাশ করে ‘Welt Hunger hilfe’ ‘International Food Policy Research Institute’ এবং ‘Concern Worldwide’ এর যৌথ প্রচেস্টায়। এই সমীক্ষা অনুযায়ী ৩য় বিশ্বের ৭৬টি দেশের মধ্যে ক্ষুধার তীব্রতার দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান ৫৭তম।(উর্ধক্রম হতে তীব্রতর)। ২০১৪ সালের GHI (Global Hunger Index) স্কোর হলো- ১৯.১।
১৯৯০ সালে বাংলাদেশের সস্কোর ছিল ৩৬.৬। ১৯৯৫ সালে এই স্কোর ছিল ৩৪.৪। তারপর ২০০০ সালে এই স্কোর উল্লেখযোগ্য ভাবে কমে দাঁড়ায় ২৪.০ এ। যা নিঃসন্দেহে তৎকালীন আওয়ামী সরকারের সাফল্য। ২০০৫ সালে এই স্কোর হয় ১৯.৮। এখানেও তৎকালীন বিএনপি সরকারের সাফল্য দেখা যায়। কিন্তু ২০১৪ সালে স্কোর হলো ১৯.১। অর্থাৎ এই ১০ বছরে উন্নতি মাত্র .৭ । আর উক্ত সময়ের অধিকাংশ সময় আওয়ানীলীগ ক্ষমতায় ছিল।
অথচ ভিয়েতনাম, মঙ্গোলিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মালি, ভারত, এমনকি সিয়েরালিওন এর উন্নতি দেখে আমাদের লজ্জা লেগে যাবে।
পাশাপাশি ‘Global Food Security Index 2014’ যা ‘The Economist’ থেকে প্রকাশিত হয়, সেখানে বাংলাদেশের অবস্থা আর খারাপ। ১০৯টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৮৮তম। স্কোর ৩৬.৩। খাদ্য নিরাপত্তার দিক থেকে মায়ানমার, নেপাল, নাইজেরিয়া, সিরিয়া, পাকিস্তান, ভারত, শ্রীলঙ্কা, এমনকি যুদ্ধ বিধ্বস্ত বেনিনও আমাদের তুলনায় ভালো অবস্থানে রয়েছে।
আমাদের রাজনীতিবিদ ও তাদের সুবিধাভোগী এজেন্টরা জনগনের সাথে ফাকাফাকি না করে, কিছুটা কাজে সততা আর আন্তরিকতা দিলে এই অবস্থা থাকে না। কিন্তু বেড়ালের গলায় ঘন্টি বাধবে কে.........?
আমাদের সবার স্বপ্ন হোক ক্ষুধামুক্ত বিশ্ব..................
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:৪৮