সকালে ঘুম থেকে উঠে রেডি হচ্ছি, আজ আমার এয়ারটেল এ একটা ইন্টার্ভিউ আছে, কাকলিতে। সকালে রেডি হতে গিয়ে মেজাজ খারাপ হয়ে গেল, প্যান্ট ধোয়া হয়নি, হটাত করে কল আসাতে কোন প্রস্তুতি ছিল না, গতকাল হটাত করে বিকালে একটা নাম্বার থেকে কল এসে বলল, কাল আমার ইন্টার্ভিউ। যাইহোক কোন রকমে রেডি হয়ে যাত্রাবাড়ী গিয়ে দেখি একটা বাসও খালি নাই, অনেকক্ষণ দাঁড়াবার পর যখন পেলাম না, মেজাজ খারাপ করে আর গেলাম না। আমার একটা সমস্যা আছে, আমি খুব চুজি। মোটামুটি আমাকে বেশ কিছু কোম্পানি জব ইন্টার্ভিউ কল করে, কিন্তু আমি ১/২ টা যাই, মানুষকে কল করে না, আর আমাকে কল করলে যাই না। আমি জব করলে কোন ভাল কম্পানিতে জব করব, বেতন কম থাকুক, পোস্ট ভাল হতে হবে। আর আমি কক্ষন মার্কেটিং জব চুজ করিনা। অথচ ওই জব বেশি পাই।
আমার ব্যাপারে বলা হয় নাই, আমি পলাশ। যদিও আমার সার্টিফিকেট নাম পলাশী মাহমুদ। ক্লাস নাইনে স্যার ভুল করে পলাশী নাম পাঠাইছে বোর্ডে। পরে আর চেঙ্গ করিনি, আমি প্রচণ্ড খামখেয়ালি টাইপ একটা ছেলে। আমার যখন যেটা ইচ্ছা করে আমি তাই করি, আমি আমার সমর্থের মধ্যে অনেক কিছু আশা করি, আমি যা চাই আমাকে পেতে হয়। কারন এমন কোনোকিছু আমি আশা করিনা, যা কক্ষনো পাওয়া সম্ভব না, এখন পর্যন্ত আমি আমার সব ইচ্ছা পুরন করছি, আমি সবসময় একা চলতে পছন্দ করি, আমি আড্ডা খুব একটা দিই না, আমি সবার সাথে অবলীলায় মিশতে পারি, সে ৬০ বছরের বুড়ো হোক বা ২ বছরের বাচ্চা হোক। আমি কক্ষনো গরিব মানুষকে অবহেলা করিনা, অবজ্ঞা করিনা, আমি সবসময় কিছু নীতিবাক্য মেনে চলি। কক্ষনো আমি আমার নীতির বাইরে কাজ করিনা, আমার ইচ্ছা হলে লাখ টাকা পানিতে ফেলে দিই, আবার অনেক সময় ১ টাকার জন্য জান দিয়ে ফেলি। আসলেই আমি অনেক অদ্ভুত। মাঝেমাঝে মনে হয় আমার মাঝে অনেক পাগলামি আছে, আমি টেলিপ্যাথি বিশ্বাস করি এবং হয়ত আমি পারতাম, যেমন আমি ঘরে বসে বুঝতে পারতাম, রেহা এখন কি হাসছে, না কাঁদছে, কোন রুমে বসে কথা বলছে, কি জামা পরছে, আমাকে কি সত্যি খোঁচা দিচ্ছে, নাকি দুস্তামি করছে। এটা আমি সবসময় পারিনা, যখন একটা মানুষকে অনেক বেশি ভালবাসি, তখন পারি। মাঝে মাঝে রেহা অবাক হয়ে যেত, কিন্তু বিশ্বাস করত না। যাইহোক, আমি পারতাম। আরও একটা ব্যাপার পারি, সেটা নাহয় সিক্রেট থাকুক। সবসময় সবকিছু প্রকাশ করতে নাই। আমি আমার পরিবারের ২য় সন্তান। প্রচণ্ড আদরে বড় হয়ছি, আমার আব্বু ও আম্মু আমাদের কোন ইচ্ছা অপূর্ণ রাখেন নাই কক্ষনো, যদি সাদ্ধের মধ্যে হয়। ঘরের মধ্যে আমি সবচেয়ে বেশি স্বাধীন থাকার চেষ্টা করি, আমরা আব্বুর চেয়ে আম্মুকে বেশি ভয় পাই, কারন আম্মু অনেক বেশি সতর্ক থাকে, খালি প্রশ্ন করে, আর আমি কক্ষনো মিথ্যা কথা বলতে পারিনা। কক্ষনো না। এটা অসম্ভব। বলতে গেলে আমি ধরা খেয়ে যাই। আমি খুব ভাল মানুষের চোখের ভাষা পড়তে পারি, শুধু মেয়েদেরটা সবসময় পারি না। মেয়েরা আসলেই অনেক মায়াবী। আল্লাহ ওদের অদ্ভুতভাবে সৃষ্টি করছে। আমি ছোটকাল থেকে কোন এক অজানা কারনে মেয়েদের ভয় পেতাম, খালি মনে হতো মেয়ে মানে ঝামেলা, বিপদ। অথচ আমার জীবনে সেটাই অনিবার্য হয়ে দাঁড়াল। আমি সবসময় মেয়েদের অনেক বেশি সন্মান করি। কারন হয়ত আমার ছোট বোন ও বড় বোন দুইটাই আছে বলে। আমি যখন কলেজ এ পড়তাম, তখন এক মহাবিপদ ছিল, রাস্তায় কোন মেয়ে দেখলেই মনে হতো এটা নয় আমার বড় বোনের মত আর নয় আমার ছোট বোনের মত। সুতুরাং তাদের সন্মান করা উচিত। আমি ভাল খারাপ সবরকম মানুষদের সাথে মিশি, কিন্তু আমার বেস্ট ফ্রেন্ডসার্কেল অনেক ছোট। আমি আমার জীবনের প্রতিটি অংশে ১ জনকে সবচেয়ে বেশি বিশ্বাস করি, ভালবাসি, নিজেকে উজার করে ভালবাসি। যেমন স্কুলে সজিব, কলেজ জুয়েল, বিবিএ তানভির, আর এমবিএ তে এখনও নির্বাচন হয় নাই। যাইহোক এতেই বোঝা যায় কি পরিমান খামখেয়ালি আমি। আমি খুব কম মানুষকে বিশ্বাস করি, যাকে বিশ্বাস করি তাকে অন্ধের মত বিশ্বাস করি। আমি সবসময় চেষ্টা করি যে কাউকে সাহায্য করতে। মানুষকে সাহায্য করতে আমার খুব ভাল লাগে। যদিও রেহা এটা পছন্দ করতনা। আর তাই শুধু ওর কথা রাখতে যেয়ে আমি আমার সব বন্ধুদের ছেড়ে দিয়াছিলাম, আর তাছাড়া আমি জানিনা কেন জানি, আমার কোন বন্ধু আজ পর্যন্ত ওর ব্যাপারে সাপোর্ট দেয় নাই, সবাই আমাদের সম্পর্কের বিপক্ষে ছিল, সারাদিন আমার কানের কাছে বাজনা বাজাতো, দ্বিপ তুই এরচেয়ে অনেক ভাল মেয়ে পাবি, এটা ছেড়ে দেয়। কিন্তু আমি ছাড়তাম না, কারন আমার মন দরকার, মেয়ে না। আমি রেহাকে আমার নিজের চেয়ে বেশি বিশ্বাস করতাম, ভালবাসতাম। আমার জীবনে প্রথম আমি ভালবাসি একটা ছেলেকে, আমার জীবনের সবচেয়ে ভাল বন্ধু সজিবকে। কিন্তু আমি জানিনা কেন আল্লাহ আমার সাথে এমন করে, আমি যাকে অনেক ভালবাসি, আল্লাহ তাকে আমার জীবন থেকে দূরে অনেক দূরে নিয়ে যাই। আজ থেকে ৬ বছর আগে একটা দুর্ঘটনা সজিব কে আমার জীবন থেকে সরিয়ে দেয়। সজিব্ অনেক দারুন একটা ছেলে ছিল, আমার সব কিছু ও শুনত, বুঝতও। আমি ওকে অনেক জালাতাম, যদি জানতাম আল্লাহ ওকে এতো তাড়াতাড়ি নিয়ে যাবে, তাহলে এতো জালাতাম না, কক্ষনো না। আমি যখন যাকে ভালবাসি, তাকে ততবেশি জ্বালাই, যে যত বেশি আমার জালাতন সহ্য করতে পারে, সে তত বেশি আমার আপন। তাকে তত বেশি আমি ভালবাসি।
আগের গুলো এখানে
চলবে.................