somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি সত্যি ঘটনা অবলম্বনে................. দশ পর্ব

১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এই ঘটনার ৬ দিন পর রেহার জন্য একটা ফোন কিনলাম। তারপর সাথে কিছু টাকা ও ফোন দিয়ে ওর ভাইকে দিয়ে পাঠালাম। এরমধ্যে শুনলাম বাসার অবস্থা খুব খারাপ। আঙ্কেল ঘরে কোন বাজার করে না, কিছু দিনের ভিতর আঙ্কেল রেহার বিয়ে দিয়ে দিবে। ওই ঘটনা রেহার চাচাদের জানান হইছে। সবাই মিলে ওরে বিয়ে দিয়ে দিবে। তখন আল্লাহকে প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহ!!! আমার কপালটা এমন কেন, শুধু শুধু একটা মানুষ আমার জন্য এতো কষ্ট পাবে? যদিও ওই দিনের ঘটনাতে আমার কোন দোষ ছিল না, কিন্তু প্রতিনিয়ত নিজেকে দোষ দিতাম। চিন্তা করলাম, যেভাবেই পারি এই বছরের মধ্যে একটা জব গোছাতে হবে, নইলে রেহাকে পাবার আশা বাদ দিতে হবে। এর মধ্যে রেহার সব স্বাধীনতা কেড়ে নেয়া হল। যে ছিল আগে ঘরের রাজরানী, সে হয়ে গেল ঘরের দাসীর চেয়ে খারাপ। ঘরের পোষা বিড়ালেরও কিছুটা স্বাধীনতা থাকে, কিন্তু রেহার তাও নাই। রেহার আম্মু ওকে অনেক মারল, ভাইরা তিরস্কার করলো, শুধু নেহা ওকে সাপোর্ট দিয়ে গেল, নইলে ওকে বাঁচানো সম্ভব ছিল না। আর আমিও পারতাম না ওদের এলাকায় যেতে। রেহা সবসময় সুইসাইড করতে চাইত। আমি অনেক কষ্টে ওকে বোজাতাম, বলতাম মরলে এক সাথে মরব, বাঁচলে এক সাথে বাচব। আরো একটা ব্যাপার ছিল যা রেহাকে প্রতি নিয়ত কষ্ট দিত, যা আমি অনেক পড়ে জানতে পারি। আর তাই প্রতি নিয়ত ও চাইত মরে যেতে। যাইহোক এরপর আমাদের আর দেখা হতো না, মাঝে মাঝে ফোনে কথা হতো। রেহা রাত ছাড়া কথা বলতে পারত না। রেহার আব্বু সবসময় ঘর থেকে বের করে দেবার কথা বলত। আর আমি চিন্তা করতাম, যদি ঘর থেকে বের করে দেয়, তখন আমি কি করব, রেহাকে বিয়ে করা এককথায় এখন অসম্ভব। কিন্তু যেভাবেই হোক ওকে আমার বাঁচাতে হবে। প্ল্যান করলাম যদি রেহার আব্বু এখনি বিয়ে দিয়ে দিতে চায়, তবে ওকে হোস্টেলে এনে রাখবো, রেহা নিজেও কাজ পারে, সুতুরাং একভাবে না একভাবে কেটে যাবে। এর মধ্যে আমি একটা জব মেনেজ করব। তাও ওকে মরতে দিবনা, কারন আমি জানতাম ও জীবনেও ওইসময় বিয়ে করবেনা, দরকার হলে মরে যাবে। এরপর থেকে ওর জন্য টাকা জমানো শুরু করি, খেয়ে না খেয়ে গাদার মত খেটে ওর জন্য টাকা জমাতাম, যখন যেখানে যাই কাজ পারতাম, করতাম, কিন্তু কক্ষনও রেহাকে বুঝতে দিতাম না। যদিও পরে বুঝতে পারি সেটা আমার লাইফের চরম ভুল ছিল। প্রতিদিন রাত্রে রেহা আমার সাথে কথা বলতে চাইতো, সারারাত কথা বলতে চাইতো, আমি যথাসম্ভব চেষ্টা করতাম, কোনোরকমে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে ওর সাথে কথা চালিয়ে যেতাম। রেহা সারাক্ষণ মরে যাবার কথা বলত, শুধু আমার জন্য পারত না, আমি আর নেহা মিলে বুঝাতাম, আমি সবসময় বলতাম, রেহা চিন্তা করোনা, যদি একান্ত তোমার আব্বু তোমাকে বিয়ে দিতে চায়, তবে তুমি ঘর থেকে বের হয়ে যেয়ো। আমি তোমাকে দরকার হলে হোস্টেলে রেখে পড়াশুনা করাব। আর তাছাড়া তুমি খুব ভাল হাতের কাজ পারো, সুতুরাং তেমন কোন অসুবিধা হবে না। এরপর যদি আমি তোমাকে সাপোর্ট দিতে না পারি, তবে তোমার যা খুশি কর। আমি আর বাধা দিব না। ইনশাল্লাহ, সব ঠিক হয়ে যাবে। এভাবে আস্তে আস্তে আমি ওর মনে বিশ্বাস আনতে শুরু করি, রেহা আবার নুতুন করে বাচার চিন্তা করে। এরপরও ওর মনে আরও একটা ভয় কাজ করে, যা আমাকে সে বলতে পারত না। বললে যদি আমি ওকে ছেড়ে চলে যাই। কিন্তু আর সবার মত রেহাও ভুলে গিয়াছিল, আমি দ্বিপ। কক্ষন বেইমানী করে না, মিথ্যা বলে না, কোনোকিছু ভয় পায় না, যাইহোক সেই কথা পরে আসছি, নভেম্বর মাস থেকে আমি পুরু চেঞ্জ হয়ে গেলাম। কারন আমার পরিবার, রেহার চিন্তা, আমার পড়ালেখা, জব সবকিছু মিলিয়ে আমার মাথা অনেক গরম থাকতো, এরপরে আবার রাত্রে রেহাকে সময় দেয়া। আমি দিন দিন শুকিয়ে যেতে শুরু করলাম, তাও রেহাকে বুঝতে দিতাম না। ওইদিনের পর ওর আব্বু ওকে আর বের হতে দিতনা, প্রায় সময় আজেবাজে কথা বলত। ওর আম্মুকে বকা দিত। সারাদিন ঘরের মধ্যে চিল্লাচিল্লি করে রাখত। রেহা যা খেতে চাইতো, জানত কিন্তু আনত না। রেহা প্রায় সময় না খেয়ে থাকতো, আর তাই আমি সবসময় বকা দিতাম। মাঝেমাঝে আমি রেহার জন্য চিকেন সুপ কিনে দিয়ে আসতাম। যখনি আমাদের বাসায়ে কোন ভাল খাবার রান্না হতো বা কেউ আনত, তখন আমি সেটা রেখে দিতাম, দেখা হলে দিতাম। যাইহোক আমাদের আর দেখা হতনা, আমিও এলাকায় যেতে পারতাম না, এভাবে দুজনের কঠিন দিন কাটতে লাগলো।

আগের গুলো এখানে

চলবে.................
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:৫৮
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান।

লিখেছেন আহা রুবন, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫০





ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান। আমরা দিন দিন কোথায় যাচ্ছি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আপনার দলের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলবাজি নিয়ে তো মহাব্যস্ত! সে পুরাতন কথা। কিন্তু নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৩




সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৩

ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)

সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×