somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি সত্যি ঘটনা অবলম্বনে..................(১৮ বয়সের নিচে প্রবেশ নিষেধ)

২৬ শে নভেম্বর, ২০১২ রাত ১১:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এক
কানের কাছে ফোনে অ্যালার্ম বেজে ঊঠলো। কাল রাত্রে দেরিতে শুয়েছিলাম। আসলে কাল রাত্র থেকে অনেক উত্তেজনা ফিল করছিলাম। আর তাই শুতে দেরী হয়ে গিয়েছিল। যাই হোক লাফ দিয়ে বিছানা ছাড়লাম। আজ রেহার জন্মদিন। ভুলে কাল রাত্রে ওকে ওয়িশ না করে ঘুমিয়ে গিয়াছিলাম, জানি ও এটা আশা করেনি, কিন্তু আমিও লজ্জিত কারন ১২ টা পর্যন্ত ওয়েট করার আগে ঘুম পাইছিল। আর তাই ওয়িশ না করে ঘুমিয়ে গিয়াছিলাম। যাই হোক চোখ খুলেই ওকে কল দিলাম, দেখি ও জেগে বসে আছে। আমার উপর অনেক রাগ করত, কিন্তু ঘুম থেকে ও মাত্র উঠছে, তারপর আমার কল দেখে রাগ সব পানি হয়ে গেল। অনেক খুশি হল, বলল আজ জন্মদিন উপলক্ষে ওর সাথে দেখা করতে, আমি বললাম কোন গিফট কিনি নাই, ও বলল লাগবে না, আমি যদি সাথে কিছুক্ষণ থাকি, ওতে ও খুশি, যাইহোক বললাম ঠিক আছে রাজি, কিন্তু বেশিক্ষণ থাকতে পারবোনা। কারন আমি তখন ইন্টার্নই করি ইসলামি ব্যাঙ্কে, যাত্রাবাড়ী ব্রাঞ্চে। সুতুরাং খুব সকালে বের হতে হবে যাতে বেশিক্ষণ থাকা যায়। বললাম কোথায়ে যাবা। বলল ওর ছোট বোনের কলেজ এর পাশে লেকে যাবে। বললাম ঠিক আছে তাহলে রেডি হই। তারপর রেডি হতে লাগলাম, কি পরবো বুঝতে পারছিনা, যদিও একটা পরলেই হয়, কারন রেহার সাথে আমার শুধু ফ্রেন্ডশিপ সম্পর্ক। কিন্তু আজ ১ম ফর্মাল দেখা হবে। এতোদিন আমরা দুজন দুজনকে দেখি নাই। শুধু ফোনে কথা হইছে। যাই হোক অনেক চিন্তা করে ফরমাল ড্রেস পরে নিলাম, কারন ওখান থেকে আবার অফিস আছে। রেডি হয়ে দেখি সাড়ে ৬ টা বাজে। আম্মু বলল এতো সকালে কোথাই যাই। আমি আবার কাউকে মিথ্যা কথা বলতে পারিনা, তাই আম্মুকে বললাম, এক ফ্রেন্ড এর বার্থডে। তাকে ওয়িশ করতে যাব, ওখান থেকে ব্যাঙ্কে যাব। আম্মু তেমন কিছু বলার আগে, ঘর থেকে বের হয়ে আসলাম। দৌড়ে যাত্রাবাড়ী ব্রিজ এর উপর দাঁড়ালাম, ওদের ফোন করলাম, বলল ওরা মাত্র যাত্রাবাড়ী নামছে, এখন বাস পালটাবে। আমি উপর থেকে খুজছি, কে হতে পারে। রাস্তায় এখনও অনেক মানুষ। ১০ সেকেন্ডের মধ্যে ২ টা মেয়ে দেখলাম, রাস্তা পার হচ্ছে। অনুমান করলাম, ওরাই। তারপর আবার কল দিয়ে কনফার্ম হলাম। তারপর ওরা যে বাস এ উঠল, ওটাতে আমিও উঠলাম। তারপর এগিয়ে যেয়ে পরিচিত হলাম। ওদের দুজনকে আমি আজ ১ম দেখছি, কিন্তু ওরা দুজন আমাকে আগেই ছবিতে দেখছে। সুতুরাং কোন সমস্যা হলনা। নেহা গিয়ে এক লোকের পাশে গিয়ে বসলো, রেহা বসলো একটা খালি সিটে। এখন আমি পাশে গিয়ে না বসলে অন্য মানুষ বসবে,আর তাই বাধ্য হয়ে আমাকে বসতে হল। যতোটা সম্ভব ভদ্রতা করে দূরত্ব বজায় রাখলাম। দুজনেই চুপ করে আছি। কি বলব বুঝতে পারছি না। ২০ মিনিটে বাস শাহবাগ পৌঁছে গেল, তারপর ওখান থেকে নেমে নেহা একটা রিকশা ঠিক করল, বলল দ্বিপ ভাই আপনি উপরে উঠেন, আমি বললাম দরকার কি আর একটা রিক্সা নিলেই হয়। কিন্তু ওই সময় আর কোন রিকশা পাওয়া গেল না। আমি খুব বিব্রত অনুভব করছিলাম, কারন কখনও ওভাবে দুইটা মেয়ের মাঝে বসব কল্পনাও করি নাই, তাও প্রথম দিন। যাইহোক বাধ্য হয়ে উঠলাম। কিছুক্ষণ পর কলেজ এসে গেল, নেহা চলে গেল। আর আমি ও রেহা লেকে গিয়ে বসলাম। সামনাসামনি রেহা কে দেখে আমি কথা হারিয়ে ফেললাম। বুঝতে পারছিলাম না কি বলব, চিন্তা করছিলাম, কিভাবে কিছুদিনের ভিতর আমাদের সম্পর্ক গড়ে উঠছে। অনেক তাড়াতাড়ি।
প্রথম রেহার সাথে আমার কথা হয় ১৬ জুলাই। আজ ১০ আগাস্ট। এক মাসও হয়নি। অথচ এরমধ্যে আমাদের দুজনের অনেক কথা হয়ছে। দুজনের মধ্যে অনেক মিল ছিল, আর তাই ফ্রেন্ডশিপ হতে সময় লাগেনি। এক হিসেবে রেহা আমার শালি হয়। কারন আমাকে একটা মেয়ে অনেক পছন্দ করে, মনিকা, আমিও করি। আর রেহা হল ওর ক্লাসমেট। যদিও রেহা এখন আর পড়াশুনা করেনা। রেহার সাথে আমার পরিচয় ঘটে মনিকার কারনে। মনিকা প্রথম আমাকে ১৪ ফেব্রুয়ারী জানাই আমাকে সে পছন্দ করে। অনেক পছন্দ করে, আমার মত ছেলে সে আগে কখনও দেখে নাই। সম্পর্কে আমি মনিকার ভাইয়ের ফ্রেন্ড। আমি নাকি ঠিক ওর ভাইয়ের মত। আমার মত ভাল ছেলে নাকি এই জগতে আর দেখে নাই। গত বছর আমার জন্মদিনে আমার জন্য একটা গিফট কিনেছিল, কিন্তু আমাকে দিতে পারেনি। এখন আজ দিল, সাথে একটা চিঠি। একটা অনেক দামি ঘড়ি, হাতঘড়ি। জীবনে প্রথম কোন মানুষ আমাকে এভাবে কোন গিফট দিল, আর তাই এর কোন তুলনা ছিল না। তার উপর এতো দামি, আমি অনেক অবাক হলাম। এরপর থেকে মাঝেমাঝে মনিকার সাথে কথা হত, এরপর আস্তে আস্তে ও আমার সম্পর্কে সব জানল বুজলও। আমিও জানলাম, বুঝলাম। ওর সাথে কথা বলতে ভাল লাগত। একসময় ১০ এপ্রিল আমি বুঝতে পারলাম, মনিকার প্রতি এক অজানা ভাল লাগা সৃষ্টি হইছে। ১৪ এপ্রিল খুব সকালে মনিকা আমাকে ফোন করে বলে ওর সাথে দেখা করার জন্য, আমি খুব অবাক হলাম। কিন্তু ওকে খুশি করার জন্য ওর বাসার সামনে গেলাম। ও আমার হাতে একটা ব্যাগ ধরিয়ে দিল। তারপর আমি খুব তাড়াতাড়ি ওখান থেকে সরে গেলাম, কারন কখন কে দেখে কি মনে করে। বাসা এসে ব্যাগ খুলে দেখি আরও একটা গিফট। একটা অন্যরকম পাঞ্জাবী, কলম ও একটা চিঠি। চিঠিটা অনেক যত্ন করে লেখা। চিঠি পরে বুঝলাম, ও আমাকে অনেক ভালবাসে, আমি যেন আজ ১ম বৈশাখ উপলক্কে এই পাঞ্জাবী পরে বেড়াতে যাই। আমি তাই করলাম, ওর পাঞ্জাবী পরে ফ্রেন্ডদের সাথে দেখা করতে গেলাম। সারাদিনে আরও ৩/৪ বার ফোনে কথা হল। এরপর থেকে আস্তে আস্তে আমি ওকে নিয়ে ভাবতে শুরু করি। মনিকা দেখতে এতো সুন্দর না, আমার মত শুকনা, কিন্তু অনেক বেশি ফর্শা। এরপরও আমি ওর সুন্দর মনকে দাম দিই। আস্তে আস্তে আমরা আর বেশি কথা বলা শুরু করলাম, এর মধ্যে ৩০ মে ওর জন্মদিন ছিল। আমি তেমন কোন গিফট দিই নাই। শুধু একটা চকলেট কিনে দিলাম। এরপর প্ল্যান করলাম, না আর এভাবে না, এখন আমাদের লাইফ গড়ার সময়, এভাবে সময় নষ্ট করলে লাইফ নষ্ট হয়ে যাবে। আর আমরা দুজনেই স্টুডেন্ট, দুজনের আলাদা স্বপ্ন আছে অনেক বড় হবার। আর তাই দু জনে সিদ্ধান্ত নিলাম, এখন থেকে কথা কম বলব, নিজেদের জীবন আগে শক্ত করি, তারপর ভাবা যাবে এসব। আর তাই সিদ্ধান্ত নিলাম, আগামী ৮ মাস আমরা কথা বলব না, আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারী আমাদের আবার দেখা হবে ও কথা হবে, এর মধ্যে আর দেখা ও কথা হবে না। কিন্তু পারলাম না, মাত্র ৩ দিনের মাথায়ে আমরা কথা ব্রেক করলাম। ৫ তারিখ ১ম মনিকার সাথে বাইরে দেখা করলাম, একটা কফি শপে। এরপর মাঝেমাঝে আমরা বাইরে দেখা করতে শুরু করলাম। এরপর চিন্তা করলাম, নাহ! এভাবে হবে না, আস্তে আস্তে বন্ধ করতে হবে। যাইহোক আস্তে আস্তে আমাদের সম্পর্ক আরো বেশি গভীর হল। আমি আমার ফ্রেন্ডদের জানালাম, ওর কথা। ৩১ জুন হটাত আপু আমার ঘড়িটা দেখে ফেলে। ও জিজ্ঞেস করে কখন কিনলাম, আমি অবলীলায় স্বীকার করি মনিকা দিছে, সাথেসাথে ঘর পুরো আগুন হয়ে গেল। প্রথমে আম্মু অনেকক্ষণ মনিকাকে নিয়ে আজেবাজে কথা বলল, আসলে আমাদের পরিবার কখন এসব জিনিস সহজে মেনে নিতে পারে না। যাইহোক অনেক তর্ক বিতর্কের পর আম্মুকে ঠাণ্ডা করালাম। আম্মু বলল দুজনের পড়ালেখা শেষ হলে ৫/৬ বছর পর দেখা যাবে। এর আগে যেন আমি কিছু চিন্তা না করি, যাইহোক আমি অনেক খুশি অন্তত আমার কথার দাম দিচ্ছে, আমার পরিবার। ৩ জুলাই আমরা শেষ বার বাইরে দেখা করলাম। এরপর থেকে মনিকার মধ্যে একটা পরিবর্তন ধরা পড়ল। ও বলল ওর কলেজ এর একটা ছেলে ওকে ফোন করে কথা বলতে চায়, ওকে নাকি অনেক পছন্দ করে, ৮ জুলাই বলল ওকে নাকি বিয়ের প্রস্তাব পাঠাবে। এটা শুনে আমি ভেঙ্গে পড়লাম। এই আবার কোন উপদ্রব। এরমধ্যে মনিকা ওর ফোন বন্ধ করে রাখল। পুরু ৬ দিন আমি ওর সাথে কথা বলতে পারিনি। পরে বাধ্য হয়ে ১৬ জুলাই রেহাকে ফোন দিই। রেহা প্রথমে অবাক হয়, কিন্তু পরে আমাকে সাহায্য করতে রাজি হয়। রেহার আন্তরিকতা দেখে আমি অনেক মুগ্ধ হই। রেহা অনেক বুদ্ধিমতি মেয়ে। ও মনিকার বাসায়ে যেয়ে আমার সাথে মনিকার কথা বলিয়ে দেয়। যাইহোক এর মধ্যে যখন খুব মনিকার সাথে কথা বলতে ইচ্ছা করত, তখন রেহাকে ফোন দিতাম। এভাবে আস্তে আস্তে রেহার সাথে আমার আন্তরিকতা গড়ে উঠে। ২৪ জুলাই রেহার কারনে আবার মনিকার সাথে কথা হল। তখন চিন্তা করলাম, নাহ! আগে আমার পড়ালেখা শেষ করা উচিত। নইলে মনিকাকে হারাতে হবে। কিন্তু ২৫ তারিখ মনিকা এমন একটা কথা বলল যে আমি পুরো বেকুব হয়ে গেলাম। মনিকা আমাকে ও রেহাকে নিয়ে সন্দেহ করলো। আমি স্বীকার করি, আমি রেহার সাথে কথা বলছি বেশ কিছুবার, কিন্তু সেটা আন্তরিকতা থেকে। কিন্তু মনিকা সন্দেহ করা শুরু করল। আমি সবসময়ই সত্যি কথা বলি, এটাই মনে হয় অপরাধ হইছে। আর মনে হল রেহা এমন কিছু বলছে, যা মনিকার মনে সন্দেহ জন্ম দিছে। ওইদিন রাত্রে আমার শরীর খারাপ হয়ে গেল। রাত্রে রেহা ফোন দিল, আমি অনেক ভয়ে ভয়ে কথা বললাম, ভাবলাম আবার না কোন প্যাঁচ লাগে। এরপরের দিন চিন্তা করলাম, এটা কি হল, যাকে আমার আর মনিকার মাঝে সেতু মনে করেছিলাম, সেই কিনা দেয়াল হয়ে দাঁড়াল। এরপর রেহার সাথে মাঝেমাঝে কথা বলতাম, ২৯ জুলাই রেহা বলল আমি যেন মনিকা কে ভুলে যাই, কারন মনিকার মাঝে আমার জন্য কোন অনুভতি দেখে নাই। সুতুরাং শুধু শুধু আশা করাটা বোকামি। কিন্তু আমি রেহার কথা শুনলাম না, আমি আশা করতে লাগলাম। গতকাল রাত্রে আমার ফোন বন্ধ ছিল, রেহা বলল সে নাকি আমাকে ৮ বার কল দিছে, বললাম কেন দিছে, বলল খুব আমার কথা মনে পড়ছিল, আর তাই কল দিছিল। যাই হোক দুদিন আমি আর কারও সাথে কথা বললাম না, আমার ছোট বোনকে দিয়ে মনিকার বাসায় কল দিলাম। জানলাম, মনিকা রেহাদের বাসায়ে। সাথে সাথে রেহাকে ফোন দিয়ে জানলাম, যায় নাই, তার মানে আমাকে সন্দেহ করে পাশ কাটাতে চাচ্ছে। খুব কষ্ট লাগল, কারন আমি কি ওরে প্রথম প্রেমের অফার করছিলাম নাকি, যে আমার সাথে এখন এরকম তামাশা করছে। আমি ফোন বন্ধ করে রাখলাম। পরের দিন আমার ইন্টার্নই ছিল ইসলামি ব্যাঙ্কে। আমি ফোন বন্ধ করে বাসায়ে রেখে গেলাম। রাত্রে বাসায়ে ফিরে ফোন ওপেন করে দেখি আজ সারাদিনে রেহা আমাকে ২০ বার কল দিছে, ২০ টা মিস কল এসএমএস। আমি অনেক অবাক হলাম, রেহা বলল যদি আমি ওর সাথে ফ্রেন্ডশিপ রক্ষা করতে চাই, তবে সারাদিন ফোন ওপেন রাখতে হবে। রেহার যখন মন চাবে, কথা বলতে হবে। আমি অনেক অবাক হলাম, কারন ঠিক এই কথা আমি মনিকাকে বলেছিলাম, আমিও ঠিক এটাই চাইতাম। এখন দেখি রেহাও এটাই চাই। তাও একবারের জন্য ঘুনাক্ষরে অন্য কিছু ভাবিনি। পরেরদিন ফজরের সময় ঘুম থেকে উঠে দেখি, রেহা সকাল ৫টা বাজে আমাকে কল দিয়াছিল। অবাক হলাম, কারন আমি জানতাম, রেহা যদিও মাদ্রাসায় ৩ বছর পড়াশুনা করেছিল, কিন্তু নামাজ একেবারে পরে না। তাহলে এতো ভোরে কি করে। রেহা বলল খুব আমার কণ্ঠ শুনতে ইচ্ছা করছিল, তাই কল দিছে, যাইহোক কিছুক্ষণ কথা বলে অফিস চলে গেলাম। অফিস থেকে বাসায়ে না ফিরে এক ফ্রেন্ড ফয়সালের বাসায়ে গেলাম। রাত্রে ফোনের চার্জ শেষ হয়ে গেল। ফোন বন্ধ হয়ে গেল, পরের দিন ফয়সালের বাসা থেকে অফিস গেলাম, অফিস থেকে দুপুরে বাসায়ে ফিরে ফোন সামান্য চার্জ দিলাম। ফোন খুলে দেখি রেহা এরমধ্যে আমাকে ২০ বার কল দিছে, ২০ টা মিস কল এসএমএস। পুরো বেকুব হয়ে গেলাম। ঘটনা কি, সাথে সাথে রেহা কে কল দিলাম, তখন রেহা আমাকে বলল আমি মনিকাকে ছেড়ে অন্য কিছু ভাবছি কিনা, যদি আমি এখনও মনিকা নিয়ে চিন্তা করি, তাইলে ওর সাথে আমার ফ্রেন্ডশিপ থাকবে না, লাঞ্ছ করছিলাম তখন। সামনে আম্মু ছিল বলে বললাম ৫ মিনিট পর জানাচ্ছি। এরপর লাঞ্ছ না করে বের হয়ে গেলাম। ঠিক ৫ মিনিট পর রেহা কল দিল, বললাম না, এটা সম্ভব না, এখনও আমি মনিকাকে নিয়ে আশা করছি, এরপর অফিস ঢোকার পর লাইন কেটে দিলাম, ঠিক ৩.৩০ সময় রেহা আবার কল দিল, আমি তখন অফিস এ। অনেক বেস্ত থাকাতে বললাম, অফিস থেকে বের হয়ে বাসায়ে গিয়ে কল দিব। ও বলল জরুরি কথা আছে, অবশ্যই যেন মনে করে কল দিই। অফিস থেকে যখন বাসায়ে ফিরি তখন জ্বর জ্বর লাগছিল। বাসায়ে পৌঁছে কল দিয়ে যা শুনলাম, তাতে পুরো জ্বর এসে গেল, রেহা বলল রাত্রে ও সকালে দু বেলা ওর সাথে কথা বলিনি বলে ওই দুবেলা ও কিছু খাইনি, স্কুলে পড়াতে যায়নি, ওর নাকি খুব কাঁদতে ইচ্ছা করছিল। আমি তখন মনে মনে প্রমাদ গুনতে শুরু করলাম, কাহিনী কোন দিকে যাচ্ছে ভেবে। আমার মত অতি সিম্পল একটা ছেলে কে নিয়ে দুই দুটা মেয়ের মাঝে ঝামেলা সৃষ্টি হবে, এটা আমি কল্পনাও করিনি। রেহা বলল আমি নাকি ঠিক তার মনমত। ওর ১৮ বছরের জীবনে এই প্রথম আমার মত একটা ছেলে খুজে পাইছে। জীবনে ওর পিছনে অনেক ছেলে ঘুরছে, কিন্তু কাউকে এতো ভাল লাগেনি। শুধু মনিকার জন্য রেহা ঠিকমত আমাকে নিয়ে চিন্তা করতে পারছে না। এসব শুনে আমি আকাশ থেকে পড়লাম, আমি রেহাকে শুধু বন্ধু ভেবেছিলাম, আর অন্যকিছু মাথায়েই আনিনি। অথচ এই কোন বিপদে পড়লাম। পরেরদিন সাড়ে ৫ টার সময় অফিস এ হটাত মনিকা কল দিল, বুঝলাম মনিকার শরীর অনেক খারাপ, কিন্তু মনিকার কথা শুনে আমি নিজেও অসুস্থ হয়ে পড়লাম, মনিকা বলল আমি নাকি ওর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করছি, আমাকে ও রেহা কে নিয়ে আজেবাজে কথা বলল। বলল আর জীবনে যেন ওদের বাসায় না যাই। আমাকে রেহাকে নিয়ে চিন্তা করতে বলল, এতগুলো মিথ্যা অপবাদ শুনে আমি আর সহ্য করতে পারলাম না, অফিস এর এতগুলো লোকের সামনে কেঁদে দিলাম। সবাই অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল কি হইছে, কাউকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ছুটি নিয়ে বের হয়ে এলাম। অফিস থেকে বের হবার সাথে সাথে রেহা কল দিল, আমি কেটে দিলাম, এরপর রেহা আরও ৩ বার কল দিল, শেষপর্যন্ত কল রিসিভ করলাম। ওর সাথে কথা বলতে খারাপ লাগছিল, কারন ওর জন্য আজ মনিকা এমন খারাপ ব্যাবহার করতে পারল। রেহা বুজলও আমার মন খারাপ, শরীর আগেই খারাপ ছিল, আমাকে বলল ডাক্তার দেখাতে। বললাম না গেলে সমস্যা কি, বুজলও মনিকার শরীর খারাপ দেখে আমার মন খারাপ। বলল যেভাবে পারে আগামীকাল মনিকার সাথে কথা বলিয়ে দিবে। কিন্তু আমি মনে করলাম লাভ কি, রেহা ও আমি চেষ্টা করেই বা লাভ কি। বিনা কারনে আমাকে নিয়ে সন্দেহ করল। কারো প্রতি আমার বিন্দুমাত্র ভালবাসা থাকলে আমি প্রানপনে সেটা রাখার চেষ্টা করি, অথচ এই কি হল। যাইহোক ৭ তারিখ রেহার জন্মদিন ছিল। ওর সার্টিফিকেট এ ১০ তারিখ, কিন্তু আসলে ৭ তারিখ জন্মদিন। যাইহোক আমি সিদ্ধান্ত নিলাম ১০ তারিখ ফরমাল ভাবে রেহার সাথে আমার দেখা হবে। ৭ তারিখ প্রথম রেহার সাথে সারারাত কথা বললাম। জানিনা কোন এক অজানা কারনে সারারাত রেহা কাঁদল, কিন্তু আমাকে বুঝতে দিল না। সারারাত ওর চোখ দিয়ে পানি জরল, কিন্তু আমাকে বুঝতে দিতে চাইল না। ফজরের সময় ওর আব্বু ঘুম থেকে উঠে মসজিদে যায়, তাই ওই সময় ও ফোন রেখে দিল। একটু পর আবার কল দিল, বললাম যাও নামাজ পরে এসো, তখন ও প্রায় ৩ বছর পর ফজরের নামাজ পড়ল। নামাজ পরে আমাকে বলল, দেখা করতে, আমি রাজি হলাম না। বললাম আমি যেটা প্ল্যান করছি, সেটাই ফাইনাল। ১০ তারিখের আগে আমি ওর চেহারা দেখব না। পরে জোরাজোরি করার পর আমি ওদের বাসার সামনে গেলাম। ওর দিকে ভুলেও একবার তাকাইনি, দৌড়ে বাসার সামনে দিয়ে চলে গেলাম। ২/৩ সেকেন্ডে যা দেখার দেখে নিল। বেলা ১ টার দিকে আমি আবার ওদের এলাকায় গিয়াছিলাম, ভাবলাম আসলাম যখন কিছু দিয়ে যাই, আর তাই কিছু চকলেট কিনলাম। যেহেতু দেখা করব না বলেছিলাম, আর তাই ওদের বারান্দা দিয়ে চকলেটগুলো দিয়ে আসলাম। ও এতে অনেক রাগ করল, বলল এই কেমন ভদ্রতা, এভাবে কেউ কিছু দেয় নাকি। আমাকে বলল ফেরত নিয়ে যেতে। আমি মাথা নিচু করে আসলাম, এসে ফেরত নিয়ে চলে গেলাম। তারপর আবার রেহা ফোন দিয়ে বলল, এটা কেমন হল, একবার কেউ কিছু দিলে ফেরত নেয় নাকি, বলল আবার এসে ওর হাতে দিয়ে যেতে। আমি খুব অবাক হলাম। আবার এসে মাথা নিচু করে ওর হাতে দিলাম। ভুলেও ওর দিকে তাকাইনি। এরপর ওখান থেকে চলে গেলাম। এরপর শুধু ফোন এ কথা হইছে।
১২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মপোলব্ধি......

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৫১

আত্মপোলব্ধি......

একটা বয়স পর্যন্ত অনিশ্চয়তার পর মানুষ তার জীবন সম্পর্কে মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যায়। এই বয়সটা হল পঁয়ত্রিশ এর আশেপাশে। মানব জন্মের সবকিছু যে অর্থহীন এবং সস্তা সেটা বোঝার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি !

লিখেছেন হাসানুর, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩২



হঠাৎ ইলিশ মাছ খেতে ইচ্ছে হল । সাথে সাথে জিভে ..জল... চলে এল । তার জন্য একটু সময়ের প্রয়োজন, এই ফাঁকে আমার জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প ক্ষমতায় আসছে এটা ১০০% নিশ্চিত। আমেরিকায় ইতিহাসে মহিলা প্রেসিডেন্ট হয়নি আর হবেও না।

লিখেছেন তানভির জুমার, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৩৩

আর এস এস সহ উগ্র হিন্দুদের লিখে দেওয়া কথা টুইট করেছে ট্রাম্প। হিন্দুদের ভোট-আর ইন্ডিয়ান লবিংএর জন্য ট্রাম্পের এই টুইট। যার সাথে সত্যতার কোন মিল নেই। ট্রাম্প আগেরবার ক্ষমতায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প জিতলে কঠোর মূল্য দিতে হবে ইউসুফ সরকারকে?

লিখেছেন রাজীব, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৪২

ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক মন্তব্যে বাংলাদেশের মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে। ৫ তারিখের নির্বাচনে ট্রাম্প জিতলে আরেকবার বাংলাদেশের মিষ্টির দোকান খালি হবে।

আমি এর পক্ষে বিপক্ষে কিছু না বললেও ডায়বেটিসের রুগী হিসেবে আমি সবসময়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×