আর মাত্র দুই দিন পর অর্থাৎ আগামী ২৮ এপ্রিল হতে যাচ্ছে ঢাকা উত্তর, দক্ষিণ এবং চট্রগাম সিটি করপোরেশনের বহুল প্রতিক্ষিত মেয়র এবং কাউন্সিলর নির্বাচন। সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীরা ইতিমধ্যে তাদের নির্বাচনী ইস্তেহার প্রকাশ করেছেন। এতে অনেক প্রতিশ্রুতি প্রদান করা হয়েছে। মেয়র এবং কাউন্সিলর প্রার্থীরা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। রাস্তাঘাটে যেখানে যাকে পাচ্ছেন জড়িয়ে ধরছেন, কুলা কুলি করছেন। এমনকি রিক্সাওয়ালা, ভিক্ষুক বা পথচারী কেউ বাদ যাচ্ছে না। কিন্তু আমাদের এই প্রার্থীরা একটি বিশাল জনগোষ্ঠীর কথা বেমালুম ভুলেই গেছেন। এটাও হতে পারে তারা এই নাগরিকদের হয় তো গুরুত্ব সহকারে দেখছেন না। এমন কিন্তু না যে খুঁজলে এই জনগোষ্ঠীর অন্তরর্ভূক্ত মানুষ তাদের আম্তীয়-স্বজনদের মধ্যে পাওয়া যাবে না। এই নাগরিকদের ভোট হয় তো তাদের দরকার-ই নেই। যদি এই ভোট গুলো তাদের প্রয়োজন হতো, তবে তাদের নির্বাচনী ইস্তেহার বা তাদের প্রচারনায় এই জনগোষ্ঠীর কথা, তাদের অধিকারের কথা কিংবা তাদের সুযোগ-সুবিধার কথা উঠে আসতো।
হ্যাঁ, আমি প্রতিবন্ধী মানুষের কথা বলছি। ঢাকা উত্তর, দক্ষিণ এবং চট্রগাম সিটি করপোরেশনে বসবাস করে বিশাল সংখক প্রতিবন্ধী ভোটার। যাদের প্রতিবন্ধীতা থাকা শর্তেও জাতীয় উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে দেখা যায়। অথচ তাদের যাতায়াতের জন্য নেই উপযোগী রাস্তাঘাট, নেই উপযুক্ত কাজের পরিবেশ। এমন কি তাদের বসবাসের স্থানটুকুও উপযোগী নয়। অথচ আমাদের এই সন্মানিত প্রার্থীরা এই মানুষদের অবহেলার চোখে দেখছেন। মূল্লায়ন করছেন না এই মানুষগুলোর গুরুত্বপূর্ণ ভোট। আবার যারা নির্বাচিত হবেন তাদের যেহেতু প্রতিবন্ধী মানুষদের নিয়ে কোন মাথা ব্যাথা নেই, সেহেতু আমরা আশাও করতে পারি না যে এই মানুষগুলো প্রতিবন্ধী মানুষদের জীবণ মান উন্নয়নে কোন প্রকার ভূমিকা রাখবেন।
এখন মানুষ ভোট দেয় দেখে, শুনে, বুঝে। যে সব প্রার্থীরা মানুষের বিশ্বাস অর্জন করতে পারবেন, জনগণ তাদের-ই ভোট দিয়ে জয় যুক্ত করবে। কিন্তু আমার প্রশ্ন হচ্ছে যেহেতু কোন প্রার্থী প্রতিবন্ধী মানুষের অধিকার আর সমস্যা নিয়ে ভাবছেন না তবে প্রতিবন্ধী মানুষরা ভোট দানে অংশগ্রহণ করবেন কিনা? কিংবা আমাদের অংশ নেয়া উচিৎ হবে কিনা? ব্যাপারটি নিয়ে ভাবা উচিৎ।
সব সময় প্রতিবন্ধী মানুষকে বারবার তাদের অধিকারের কথা চিৎকার করে বলতে হয়েছে। তাই আমার মতে এবার প্রতিবন্ধী মানুষদের-ই তাদেরকে অবহেলা করবার কারণে একটা প্রতিবাদ করা উচিৎ। নতুবা এদেশের তথা কথিত জনপ্রতিনীধিরা কখনই আমাদের অধিকার দিবে না।